হুমকির মুখে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ-বালু উত্তোলন থামান
পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজের তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন ও দেদার মাটি কাটার ফলে ব্রিজটি চরম হুমকির মুখে পড়েছে বলে বুধবার সমকালে লোকালয় পাতায় প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছে। প্রকাশিত খবরের মধ্যে পিলে চমকানোর মতো তথ্যটি হলো, ব্রিজের নিরাপত্তা বিবেচনায় এর গাইডব্যাংক এলাকায় দুই হাজার ফুট এবং ব্রিজের স্প্যান থেকে এক
কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা থাকলেও সেখান থেকেই বেশি করে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, এ ঘটনায় রেলের সংশ্লিষ্ট সেতু প্রকৌশলী ও রেলওয়ে কর্মকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করা ছাড়া কোনো প্রতিরোধক ব্যবস্থা নিতে সাহস পাচ্ছেন না। কারণ, যিনি বা যারা এই জাতীয় স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছে তারা ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় পর্যায়ের নেতার আসন অলঙ্কৃত করছেন। কিন্তু এটাও তো ঠিক যে, অবিলম্বে নিষিদ্ধ এলাকা থেকে বালু উত্তোলন ও মাটি কাটা বন্ধ না করা গেলে প্রাচীন এই ব্রিজটির পিলারগুলো নড়বড়ে হয়ে যেতে পারে। এতে মালবাহী ভারী ট্রেন চলাচলের সময় ব্রিজটি ধসে পড়ে উত্তরবঙ্গের রেল যাতায়াত সংকটাপন্ন করতে পারে। এতে যাত্রী ও মাল পরিবহন_ উভয় ক্ষেত্রেই ক্ষতি হবে।প্রশ্ন হলো, যেহেতু কর্তৃপক্ষ এসব স্পর্শকাতর স্থাপনা এলাকাকে নিরাপদ রাখতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সক্ষমতার পরিচয় দিতে পারে না রাজনৈতিক ক্ষমতাবাজির কারণে, তাই সামান্য অর্থলাভের চিন্তা ত্যাগ করে সরকার এসব এলাকায় বালু উত্তোলন বা মাটি কাটার কাজের অনুমোদন না দিলেই পারে। সরকারি এক কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন, কয়েকদিন আগে তারা হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকা থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করেছিলেন। তারপরও কীভাবে ওই স্পর্শকাতর এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে! থানা পুলিশকে জানানোর পরও বালু উত্তোলন থামানো যাচ্ছে না। যারা বালু উত্তোলন করছে তারা অত্যন্ত ক্ষমতাবান ও বিত্তবান। তাই পুলিশ বিষয়টি দেখেও না দেখার ভান করছে বলেই এটা সম্ভব হচ্ছে। আমরা হার্ডিঞ্জ ব্রিজ রক্ষায় এর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন ও মাটি কাটা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করার জন্য সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাই। বড় রকমের ক্ষতি হওয়ার আগেই যেন বালুখেকোদের পাততাড়ি গুটাতে হয়েছে, সেটা জাতীয় স্বার্থেই দেখতে চাই।
No comments