থানায় নির্যাতন
পুলিশের অন্যায় আচরণ কি চলতেই থাকবে? পুলিশের দায়িত্ব মানুষের নিরাপত্তা দেওয়া; মানুষের নিরাপত্তা কেড়ে নেওয়া নয়। সে জন্যই পুলিশকে বলা হয়ে থাকে সাধারণের বন্ধু। কিন্তু বাংলাদেশ যেন ভিন্ন কোনো গ্রহের দেশ। আমাদের জন্য সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে_'সাধারণের বন্ধু' সেই পুলিশের নামেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের নানাবিধ অভিযোগ উঠছে।
আদালতে তাদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিতও হয়েছে। অভিযোগ আছে নিরীহ মানুষকেও তারা ছাড় দেয় না। তাদের নির্যাতন এমন জঘন্য হয়ে থাকে_কখনো কখনো নির্যাতিতকে প্রাণও হারাতে হয়। প্রাণ হরণের মতো অনাকাঙ্ক্ষিত কাজটি তারা সজ্ঞানেই করে এবং কোনো কোনো সময় এই কাজের জন্য তারা গর্ববোধও করে। তবে এহেন কাজ করে যেসব পুলিশ, তারা কিন্তু সংখ্যায় খুব বেশি নয়। সংখ্যালঘু এসব নির্যাতকের কারণে গোটা পুলিশ বাহিনীকে অপবাদ শুনতে হয়, দায় কাঁধে নিতে হয়। তারা নির্যাতন করে নানা কারণে। কখনো পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে, কখনো অতি উৎসাহের কারণে, কখনো বা লোভ-লালসার কারণে। এমন অবস্থা দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে। ভুক্তভোগীদের পক্ষে কথা বলার মানুষ থাকে কম। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নির্যাতন সইতে হয় চোখ বুঝে। কোনো কোনো ঘটনা জনসমক্ষে প্রকাশ হয়। প্রচারমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার কারণে হৈচৈও পড়ে। তেমনি একটি ঘটনা সম্প্রতি চোখে পড়েছে সবার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী আবদুল কাদেরকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করেছে। তাদের নির্যাতনের মাত্রা ছিল অস্বাভাবিক। এমন অভিযোগও করা হয়েছে, ঢাকার খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল কাদেরের পায়ে চাপাতি দিয়ে কুপিয়েছে। সারা শরীরে প্রহারের চিহ্ন। তার পরও আবদুল কাদেরের ভাগ্য ভালোই বলতে হয়, তথাকথিত ক্রসফায়ারের মুখে পড়তে হয়নি তাঁকে। আরো ভাগ্য ভালো, তাঁর এই ঘটনা জানাজানি হয়ে গেছে। আর সেই সুবাদে তাঁর সহপাঠীরা সোচ্চার হয়ে উঠেছেন এবং প্রচারমাধ্যমেও বিষয়টি ফলাও করে প্রকাশিত হয়েছে। একইভাবে উচ্চ আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপও করেছেন। আদালত বিস্ময় প্রকাশ করেছেন পুলিশ কর্মকর্তাদের আচরণে। কিছু নির্দেশনাও প্রদান করেছেন আবদুল কাদেরের চিকিৎসার ব্যাপারে। সেই বিবেচনায় আবদুল কাদেরের ভাগ্য ভালোই বলতে হবে। কারণ পুলিশের অপেশাদার আচরণের কোনো বিচার সচরাচর হয়েছে এমন চোখে পড়ে না। যদি হয়ও, সেটাও সাধারণ মানুষের জানার কথা নয়।
সব কিছু দেখেশুনে আমাদের মনে একটি প্রশ্নই জাগে, পুলিশের বাড়াবাড়ি কি কোনো দিনই বন্ধ হবে না? দেশের আনাচে-কানাচে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা এভাবে আদালতের নজরে আসার কথা নয়। তাহলে কি এমন ঘটনা ঘটতেই থাকবে? এ অনাচার থেকে পরিত্রাণের উপায় কী? ভাবতে অবাক লাগে, যে সময় এই ঘটনা ঘটেছে তার মাত্র কয়েক দিন আগে ২০ জুলাই দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ মিরপুর কমার্স কলেজের ছাত্র কামরুল ইসলাম মোমিনকে হত্যার অভিযোগে ওসি রফিকসহ তিনজনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন। এই রায়ের পর মনে করা হয়েছিল পুলিশের আচরণ বোধ হয় আর বাড়াবাড়ির পর্যায়ে যাবে না। এই রায় দেখে পুলিশ হয়তো নিজেকে কিছুটা হলেও সংযত করবে; কিন্তু আবদুল কাদেরের ওপর নির্যাতন দেখে মনে হতে থাকে, ক্ষমতার অপব্যবহারকারীরা যেন মানবাধিকারের বিষয়টি মোটেও আমলে নিতে চায় না। ধরাকে সরা মনে করার মানসিকতা পোষণকারীদের সংখ্যা যেন দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহল কি পুলিশের ভাবমূর্তি উন্নয়নে কোনো ভূমিকাই নিতে পারে না?
সব কিছু দেখেশুনে আমাদের মনে একটি প্রশ্নই জাগে, পুলিশের বাড়াবাড়ি কি কোনো দিনই বন্ধ হবে না? দেশের আনাচে-কানাচে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা এভাবে আদালতের নজরে আসার কথা নয়। তাহলে কি এমন ঘটনা ঘটতেই থাকবে? এ অনাচার থেকে পরিত্রাণের উপায় কী? ভাবতে অবাক লাগে, যে সময় এই ঘটনা ঘটেছে তার মাত্র কয়েক দিন আগে ২০ জুলাই দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ মিরপুর কমার্স কলেজের ছাত্র কামরুল ইসলাম মোমিনকে হত্যার অভিযোগে ওসি রফিকসহ তিনজনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন। এই রায়ের পর মনে করা হয়েছিল পুলিশের আচরণ বোধ হয় আর বাড়াবাড়ির পর্যায়ে যাবে না। এই রায় দেখে পুলিশ হয়তো নিজেকে কিছুটা হলেও সংযত করবে; কিন্তু আবদুল কাদেরের ওপর নির্যাতন দেখে মনে হতে থাকে, ক্ষমতার অপব্যবহারকারীরা যেন মানবাধিকারের বিষয়টি মোটেও আমলে নিতে চায় না। ধরাকে সরা মনে করার মানসিকতা পোষণকারীদের সংখ্যা যেন দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহল কি পুলিশের ভাবমূর্তি উন্নয়নে কোনো ভূমিকাই নিতে পারে না?
No comments