দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করতে বিএনপির নতুন মিশন- নারী নির্যাতন ও জয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ
ইস্যু সৃষ্টিতে এবার নতুন মিশন নিয়ে মাঠে
নেমেছে বিএনপি। পরিকল্পিত মিশন দু’টি হচ্ছে- তারেক জিয়া ও সজীব ওয়াজেদ
জয়কে এককাতারে নামানো এবং কল্পিত নারী নির্যাতনের অভিযোগ তুলে আন্তর্জাতিক
অঙ্গনে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা।
হাস্যকর অভিযোগের
সঙ্গে মনগড়া-উদ্ভট তথ্য জুড়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় এবং
নারী নির্যাতন সম্পর্কে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করতে বিএনপির এই নতুন মিশন
নিয়ে সর্বত্র আলোচনার ঝড় বইছে। দুর্নীতির প্রতিশব্দ হিসেবে তারেক রহমানের
ধ্বংসপ্রাপ্ত ইমেজ পুনরুদ্ধারেই কী বিএনপির এই নতুন মিশন, এ নিয়েও রাজনৈতিক
অঙ্গনে রীতিমতো আলোচনার ঝড় বইছে। তবে এই মিশনেও বিএনপির ব্যর্থ হওয়ার
আলামত ষ্পষ্ট বলেই মনে করছেন সংশিস্নষ্টরা। অনেক চেষ্টা করেও সরকারবিরোধী
কোন জোরালো ইসু্য সৃষ্টি করতে না পেরে হঠাৎ করেই যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী
তথ্যপ্রযুক্তিবিদ সজীব ওয়াজেদ জয়ের কিন ইমেজ কীভাবে নষ্ট করা যায়, সে মিশন
শুরম্ন করে বিএনপি। '১৩ মাসে দেশের ২০ ভাগ নারী বর্তমান সরকারের হাতে
নির্যাতনের শিকার হয়েছে'_ বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া এমন অভিযোগ তুলে
সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলার চেষ্টা করেন। কিন্তু সরকারী দল আওয়ামী লীগ
থেকে নারী নির্যাতনের তালিকা প্রকাশের জন্য খালেদা জিয়ার প্রতি পাল্টা
চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলে ইসু্যটি নিয়ে নিশ্চুপ হয়ে যান বিএনপির নীতিনির্ধারকরা।
এরপর নতুন মিশন শুরম্ন হয় দলটির। হঠাৎ করেই বিরোধী দলীয় চীফ হুইপ জয়নুল আবদীন ফারম্নক সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে অভিযোগ করেন- 'অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায় প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের দুনর্ীতিতে জড়িত থাকার তথ্য-প্রমাণ আছে।' বিরোধীদলীয় চীফ হুইপের এমন অভিযোগে রীতিমতো সমালোচনার ঝড় ওঠে। আওয়ামী লীগ শনিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে জয়নুল আবদীন ফারম্নকের প্রতি পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেছে, কোন তথ্যপ্রমাণ থাকলে তা জাতির সামনে প্রকাশ করম্নন। নইলে আইনী ও রাজনৈতিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তারেক-কোকোর কুৎসিত চেহারা ও বিএনপির নষ্ট রাজনীতিকে আড়াল করার জন্যই আধুনিক শিৰায় শিৰিত কিন ইমেজের সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরম্নদ্ধে অপপ্রচারের আশ্রয় নিয়েছে বলে অভিযোগ করে ৰমতাসীন দলটি।
জয়কে বিতর্কিত করে বিএনপির রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা এটাই প্রথম নয়। কিছুদিন আগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এক জ্বালানি উপদেষ্টার পত্রিকায় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী ও প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরম্নদ্ধে পাঁচ মিলিয়ন ডলার ঘুষ নেয়ার অভিযোগ তুলে একটি সংবাদ পরিবেশন করা হয়। এ সংবাদ নিয়ে রং চড়িয়ে বিএনপি রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। সজীব ওয়াজেদ জয় ও তৌফিক-ই-এলাহী অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উড়িয়ে দেন। অভিযোগ প্রমাণে দালিলিক তথ্যউপাত্ত তুলে ধরতে ব্যর্থ হওয়ায় ড. এলাহী উচ্চ আদালতে মানহানির মামলাও করেছেন। এ ছাড়াও ওই পত্রিকাটির বিরম্নদ্ধে ঢাকাসহ সারাদেশে পৃথক প্রায় ২৫টি মামলা হয়েছে। যা এখনও আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। ওই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর বিএনপির পৰ থেকে এবার সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরম্নদ্ধে ভিওআইপি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়।
এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) জিয়া আহমেদ জনকণ্ঠকে বলেন, অবৈধ ভিওআইপি ব্যবস্থা বন্ধে সরকার থেকে প্রতিদিনই কঠোর অভিযান চালানো হচ্ছে। এ সময় এমন অভিযোগ সত্যিই হাস্যকর। সজীব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কাজ করছেন। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চ ডিগী্র অর্জনকারী তথ্যপ্রযুক্তিবিদ জয়ের এই কাজকে দেশের মানুষ মন দিয়ে গ্রহণ করেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ হলে দেশ উন্নত হবে এটা মানতে অনেকের হয়ত কষ্ট হচ্ছে, তাই এমন অসত্য অভিযোগ আনা হচ্ছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে জয়ের নামে কালিমা দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলেও মনে করেন তিনি।
অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা সম্পর্কে তিনি বলেন, বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে এই অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে হওয়া ভবনের সংশিস্নষ্ট থাকার অভিযোগ ছিল। তাই ওই সময় অভিযান চালানো হয়নি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অভিযানের সময় ওই ভবনের অনেক লোকই ধরা পড়েছেন। আর জোট সরকারের আমলে প্রতিদিন বৈধ ইনকামিং কল হতো দেড় থেকে দুই কোটি মিনিট। তখন অবৈধ কল হয়েছে ৫ থেকে ৬ কোটি মিনিট। বর্তমান সরকার ৰমতায় আসার পর থেকে এই কল বেড়ে সাড়ে তিন কোটি থেকে পৌনে পাঁচ মিনিট হচ্ছে। এ ছাড়া অবৈধ ভিওআইপি বন্ধের জন্য প্রতিদিনই চালানো হচ্ছে অভিযান।
হঠাৎ করে কেন সজীব ওয়াজেদ জয় বিএনপির টার্গেটে পরিণত হলো_ এ নিয়েও রাজনৈতিক মহলে আলোচনার ঝড় উঠেছে। সংশিস্নষ্টদের মতে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দুই পুত্রের বিরম্নদ্ধে এনত্মার দুনর্ীতির অভিযোগ রয়েছে। মা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তারেক রহমানের হাওয়া ভবনের মাধ্যমে সমানত্মরাল প্রশাসন সৃষ্টি করে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ, হাজার কোটি টাকা দুনর্ীতির সঙ্গে যুক্ত থাকা, বিদেশে অর্থ পাচারসহ নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা মানুষের মুখে মুখে। ছোটপুত্র কোকোর বিরম্নদ্ধেও রয়েছে নানা দুনর্ীতির অভিযোগ। ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তারেক-কোকোর গ্রেফতার হওয়া, রাজনীতি ছেড়ে দেয়ার মুচলেকা দিয়ে বিদেশে চলে যেতে হয়েছে তাঁদের। এখনও ফিরতে পারেননি। তাঁদের বিরম্নদ্ধে দেশে চলছে অনেক দুনর্ীতির মামলা। এমনকি মার্কিন ফেডারেল কোর্টের রায়েও খালেদা জিয়ার দুই পুত্রের দুনর্ীতির বিষয়টি উলেস্নখ করা হয়েছে। সেৰেত্রে একদমই ব্যতিক্রম বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। রাজনীতি, ৰমতা ও অর্থ কোন কিছুই স্পর্শ করতে পারেনি তাঁকে। জাতির জনকের উত্তরাধিকার জয় তাঁর মা গতবার প্রধানমন্ত্রী থাকার সময়ও দূরে থেকেছেন ৰমতার কাছ থেকে। এখনও যুক্তরাষ্ট্র থেকে মাঝে মধ্যে এসে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে তাঁর মেধা-মনন ও অভিজ্ঞতা দিয়ে সাহায্য করছেন মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। রাজনীতি বা ৰমতার মোহে না জড়িয়ে ছোটবেলা থেকেই প্রবাসে থেকে পড়াশোনা করে বিশ্বখ্যাত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চ ডিগী্র নিয়েছেন, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হয়েছেন। মা দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও জয় ও তাঁর স্ত্রী ক্রিস্টিন যুক্তরাষ্ট্রে চাকরি করেই নিজেদের জীবন চালাচ্ছেন।
জয়-তারেকের এমন বিপরীত চরিত্রকে কেন বিএনপি এক কাতারে আনতে চাইছে- এ নিয়ে চুলচেরা বিশেস্নষণ চলছে। সংশিস্নষ্টদের মতে, তারেক-কোকো নামের পিছনে দুনর্ীতির প্রতিশব্দটি আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে। তারেক রহমানের ধ্বংসপ্রাপ্ত ইমেজ পুনরম্নদ্ধারে কাউন্সিলের নামে বিএনপির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদ দিয়েও লাভ হয়নি। দেশের নতুন প্রজন্মের কাছে তারেক-কোকোর গ্রহণযোগ্যতা শূন্যের কোঠায় বলেই মনে করেন তাঁরা। দুনর্ীতির অভিযোগে মুচলেকা দিয়ে বিদেশে অবস্থানরত তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে এনেও নতুন প্রজন্মের মাঝে তেমন সাড়া ফেলা সম্ভব হবে না তা অনেকটাই নিশ্চিত দলটির হাইকমান্ড।
অন্যদিকে সবসময়ই অর্থ, ৰমতা ও রাজনীতি থেকে দূরে থাকা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী উচ্চশিৰিত ও তথ্যপ্রযুক্তিবিদ সজীব ওয়াজেদ জয়ের সম্প্রতি রাজনীতিতে আগমনী বার্তাতেই দেশের নতুন প্রজন্মের মাঝে এক অন্যরকম ক্রেজের সৃষ্টি করেছে। নিজ থেকে রাজনীতিতে সক্রিয় না হলেও পিতৃভূমি রংপুরের পীরগঞ্জের নেতাকমর্ীরা সজীব ওয়াজদ জয়কে আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য পদ দিয়েছে। জয় রাজনীতিতে সক্রিয় হলে নতুন প্রজন্মের তরম্নণরা তাঁর দিকেই আকৃষ্ট হবে, এটা বুঝতে পেরেই জয়ের চরিত্র হননে বিএনপি এই নতুন মিশনে নেমেছে বলেই মনে করছেন সংশিস্নষ্টরা।
এ প্রসঙ্গে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু জনকণ্ঠের কাছে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, এ ধরনের কোন ঘটনার সঙ্গে জয় জড়িত নয়। বিএনপির জয়নুল আবদীন ফারম্নক এই অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারলে তার দায়দায়িত্ব তাঁকেই বহন করতে হবে। তাঁর অভিযোগ, বিএনপি-জামায়াত জোটের পুরো সময় হাওয়া ভবনের লোকেরাই অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা করেছে। এই খাত থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তাঁদের সেই নোংরা অতীত ঢাকতেই জয় সম্পর্কে মিথ্যাচার করা হচ্ছে বলে মনত্মব্য করেন তিনি।
সাবেক টেলিযোগাযোগ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম জনকণ্ঠকে বলেন, জয় সম্পর্কে এটা বিএনপির জঘন্য মিথ্যাচার ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার অভিলাষ ছাড়া আর কিছুই নয়। বিদেশে থেকে জয় উচ্চশিৰায় শিৰিত হয়েছেন। সৎ, শিৰিত ও আধুনিক মানুষ হিসেবে দেশের লাখ লাখ তরম্নণের রোল মডেলে পরিণত হয়েছেন। আগেও শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, এখনও আছেন, কিন্তু ৰমতা থেকে সবসময়ই দূরে থেকেছেন জয়। মূল কথা হচ্ছে- জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর যোগ্য উত্তরাধিকারী সজীব ওয়াজেদ জয়কে কোটি নেতাকমর্ী-সমর্থক ও জনগণের ইচ্ছায় রাজনীতিতে আসতে হবে। আর জয় রাজনীতিতে এলে বিএনপির পঙ্কিল-নষ্ট রাজনীতির কবর রচিত হবে। এটা বুঝতে পেরেই পরাজিত এই শক্তিটি মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে জনগণকে বিভ্রানত্ম করতে চাইছে।
এরপর নতুন মিশন শুরম্ন হয় দলটির। হঠাৎ করেই বিরোধী দলীয় চীফ হুইপ জয়নুল আবদীন ফারম্নক সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে অভিযোগ করেন- 'অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায় প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের দুনর্ীতিতে জড়িত থাকার তথ্য-প্রমাণ আছে।' বিরোধীদলীয় চীফ হুইপের এমন অভিযোগে রীতিমতো সমালোচনার ঝড় ওঠে। আওয়ামী লীগ শনিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে জয়নুল আবদীন ফারম্নকের প্রতি পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেছে, কোন তথ্যপ্রমাণ থাকলে তা জাতির সামনে প্রকাশ করম্নন। নইলে আইনী ও রাজনৈতিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তারেক-কোকোর কুৎসিত চেহারা ও বিএনপির নষ্ট রাজনীতিকে আড়াল করার জন্যই আধুনিক শিৰায় শিৰিত কিন ইমেজের সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরম্নদ্ধে অপপ্রচারের আশ্রয় নিয়েছে বলে অভিযোগ করে ৰমতাসীন দলটি।
জয়কে বিতর্কিত করে বিএনপির রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা এটাই প্রথম নয়। কিছুদিন আগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এক জ্বালানি উপদেষ্টার পত্রিকায় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী ও প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরম্নদ্ধে পাঁচ মিলিয়ন ডলার ঘুষ নেয়ার অভিযোগ তুলে একটি সংবাদ পরিবেশন করা হয়। এ সংবাদ নিয়ে রং চড়িয়ে বিএনপি রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। সজীব ওয়াজেদ জয় ও তৌফিক-ই-এলাহী অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উড়িয়ে দেন। অভিযোগ প্রমাণে দালিলিক তথ্যউপাত্ত তুলে ধরতে ব্যর্থ হওয়ায় ড. এলাহী উচ্চ আদালতে মানহানির মামলাও করেছেন। এ ছাড়াও ওই পত্রিকাটির বিরম্নদ্ধে ঢাকাসহ সারাদেশে পৃথক প্রায় ২৫টি মামলা হয়েছে। যা এখনও আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। ওই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর বিএনপির পৰ থেকে এবার সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরম্নদ্ধে ভিওআইপি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়।
এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) জিয়া আহমেদ জনকণ্ঠকে বলেন, অবৈধ ভিওআইপি ব্যবস্থা বন্ধে সরকার থেকে প্রতিদিনই কঠোর অভিযান চালানো হচ্ছে। এ সময় এমন অভিযোগ সত্যিই হাস্যকর। সজীব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কাজ করছেন। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চ ডিগী্র অর্জনকারী তথ্যপ্রযুক্তিবিদ জয়ের এই কাজকে দেশের মানুষ মন দিয়ে গ্রহণ করেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ হলে দেশ উন্নত হবে এটা মানতে অনেকের হয়ত কষ্ট হচ্ছে, তাই এমন অসত্য অভিযোগ আনা হচ্ছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে জয়ের নামে কালিমা দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলেও মনে করেন তিনি।
অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা সম্পর্কে তিনি বলেন, বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে এই অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে হওয়া ভবনের সংশিস্নষ্ট থাকার অভিযোগ ছিল। তাই ওই সময় অভিযান চালানো হয়নি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অভিযানের সময় ওই ভবনের অনেক লোকই ধরা পড়েছেন। আর জোট সরকারের আমলে প্রতিদিন বৈধ ইনকামিং কল হতো দেড় থেকে দুই কোটি মিনিট। তখন অবৈধ কল হয়েছে ৫ থেকে ৬ কোটি মিনিট। বর্তমান সরকার ৰমতায় আসার পর থেকে এই কল বেড়ে সাড়ে তিন কোটি থেকে পৌনে পাঁচ মিনিট হচ্ছে। এ ছাড়া অবৈধ ভিওআইপি বন্ধের জন্য প্রতিদিনই চালানো হচ্ছে অভিযান।
হঠাৎ করে কেন সজীব ওয়াজেদ জয় বিএনপির টার্গেটে পরিণত হলো_ এ নিয়েও রাজনৈতিক মহলে আলোচনার ঝড় উঠেছে। সংশিস্নষ্টদের মতে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দুই পুত্রের বিরম্নদ্ধে এনত্মার দুনর্ীতির অভিযোগ রয়েছে। মা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তারেক রহমানের হাওয়া ভবনের মাধ্যমে সমানত্মরাল প্রশাসন সৃষ্টি করে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ, হাজার কোটি টাকা দুনর্ীতির সঙ্গে যুক্ত থাকা, বিদেশে অর্থ পাচারসহ নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা মানুষের মুখে মুখে। ছোটপুত্র কোকোর বিরম্নদ্ধেও রয়েছে নানা দুনর্ীতির অভিযোগ। ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তারেক-কোকোর গ্রেফতার হওয়া, রাজনীতি ছেড়ে দেয়ার মুচলেকা দিয়ে বিদেশে চলে যেতে হয়েছে তাঁদের। এখনও ফিরতে পারেননি। তাঁদের বিরম্নদ্ধে দেশে চলছে অনেক দুনর্ীতির মামলা। এমনকি মার্কিন ফেডারেল কোর্টের রায়েও খালেদা জিয়ার দুই পুত্রের দুনর্ীতির বিষয়টি উলেস্নখ করা হয়েছে। সেৰেত্রে একদমই ব্যতিক্রম বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। রাজনীতি, ৰমতা ও অর্থ কোন কিছুই স্পর্শ করতে পারেনি তাঁকে। জাতির জনকের উত্তরাধিকার জয় তাঁর মা গতবার প্রধানমন্ত্রী থাকার সময়ও দূরে থেকেছেন ৰমতার কাছ থেকে। এখনও যুক্তরাষ্ট্র থেকে মাঝে মধ্যে এসে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে তাঁর মেধা-মনন ও অভিজ্ঞতা দিয়ে সাহায্য করছেন মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। রাজনীতি বা ৰমতার মোহে না জড়িয়ে ছোটবেলা থেকেই প্রবাসে থেকে পড়াশোনা করে বিশ্বখ্যাত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চ ডিগী্র নিয়েছেন, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হয়েছেন। মা দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও জয় ও তাঁর স্ত্রী ক্রিস্টিন যুক্তরাষ্ট্রে চাকরি করেই নিজেদের জীবন চালাচ্ছেন।
জয়-তারেকের এমন বিপরীত চরিত্রকে কেন বিএনপি এক কাতারে আনতে চাইছে- এ নিয়ে চুলচেরা বিশেস্নষণ চলছে। সংশিস্নষ্টদের মতে, তারেক-কোকো নামের পিছনে দুনর্ীতির প্রতিশব্দটি আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে। তারেক রহমানের ধ্বংসপ্রাপ্ত ইমেজ পুনরম্নদ্ধারে কাউন্সিলের নামে বিএনপির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদ দিয়েও লাভ হয়নি। দেশের নতুন প্রজন্মের কাছে তারেক-কোকোর গ্রহণযোগ্যতা শূন্যের কোঠায় বলেই মনে করেন তাঁরা। দুনর্ীতির অভিযোগে মুচলেকা দিয়ে বিদেশে অবস্থানরত তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে এনেও নতুন প্রজন্মের মাঝে তেমন সাড়া ফেলা সম্ভব হবে না তা অনেকটাই নিশ্চিত দলটির হাইকমান্ড।
অন্যদিকে সবসময়ই অর্থ, ৰমতা ও রাজনীতি থেকে দূরে থাকা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী উচ্চশিৰিত ও তথ্যপ্রযুক্তিবিদ সজীব ওয়াজেদ জয়ের সম্প্রতি রাজনীতিতে আগমনী বার্তাতেই দেশের নতুন প্রজন্মের মাঝে এক অন্যরকম ক্রেজের সৃষ্টি করেছে। নিজ থেকে রাজনীতিতে সক্রিয় না হলেও পিতৃভূমি রংপুরের পীরগঞ্জের নেতাকমর্ীরা সজীব ওয়াজদ জয়কে আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য পদ দিয়েছে। জয় রাজনীতিতে সক্রিয় হলে নতুন প্রজন্মের তরম্নণরা তাঁর দিকেই আকৃষ্ট হবে, এটা বুঝতে পেরেই জয়ের চরিত্র হননে বিএনপি এই নতুন মিশনে নেমেছে বলেই মনে করছেন সংশিস্নষ্টরা।
এ প্রসঙ্গে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু জনকণ্ঠের কাছে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, এ ধরনের কোন ঘটনার সঙ্গে জয় জড়িত নয়। বিএনপির জয়নুল আবদীন ফারম্নক এই অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারলে তার দায়দায়িত্ব তাঁকেই বহন করতে হবে। তাঁর অভিযোগ, বিএনপি-জামায়াত জোটের পুরো সময় হাওয়া ভবনের লোকেরাই অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা করেছে। এই খাত থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তাঁদের সেই নোংরা অতীত ঢাকতেই জয় সম্পর্কে মিথ্যাচার করা হচ্ছে বলে মনত্মব্য করেন তিনি।
সাবেক টেলিযোগাযোগ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম জনকণ্ঠকে বলেন, জয় সম্পর্কে এটা বিএনপির জঘন্য মিথ্যাচার ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার অভিলাষ ছাড়া আর কিছুই নয়। বিদেশে থেকে জয় উচ্চশিৰায় শিৰিত হয়েছেন। সৎ, শিৰিত ও আধুনিক মানুষ হিসেবে দেশের লাখ লাখ তরম্নণের রোল মডেলে পরিণত হয়েছেন। আগেও শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, এখনও আছেন, কিন্তু ৰমতা থেকে সবসময়ই দূরে থেকেছেন জয়। মূল কথা হচ্ছে- জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর যোগ্য উত্তরাধিকারী সজীব ওয়াজেদ জয়কে কোটি নেতাকমর্ী-সমর্থক ও জনগণের ইচ্ছায় রাজনীতিতে আসতে হবে। আর জয় রাজনীতিতে এলে বিএনপির পঙ্কিল-নষ্ট রাজনীতির কবর রচিত হবে। এটা বুঝতে পেরেই পরাজিত এই শক্তিটি মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে জনগণকে বিভ্রানত্ম করতে চাইছে।
No comments