ঢাকা-দিল্লি অমীমাংসিত ইস্যু সমাধানে সর্বাত্মক চেষ্টা-আসছেন ভারতের দুই মন্ত্রী ও সচিব by ইমরান আলম
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার এবং ভারতে কংগ্রেস
নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট সরকার ক্ষমতার মেয়াদের শেষপর্যায়ে এসে দুই দেশের
অনিষ্পন্ন ইস্যুগুলো সমাধানে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা হাতে নিয়েছে।
এ চেষ্টার অংশ হিসেবে আগামী এক মাসের মধ্যে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী,
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্রসচিব, বিদ্যুৎসচিব ও যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি)
কারিগরিপর্যায়ের কর্মকর্তারা ঢাকা আসছেন। এর বাইরে দুই দেশের পররাষ্ট্র
মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রথমবারের মতো জয়েন্ট কনসালটেটিভ
কমিশনের (জেসিসি) আওতায় পৃথকভাবে বৈঠকে মিলিত হবেন।
দুই দেশের সার্বিক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে আলোচনার এখতিয়ার জেসিসির রয়েছে। এ বৈঠকে যোগ দিতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদ ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা আসছেন। বৈঠকের খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য দেশটির পররাষ্ট্রসচিব রঞ্জন মাথাই আসছেন ৯ ফেব্রুয়ারি। আর গত বছর দিল্লিতে অনুষ্ঠিত জেসিসির প্রথম বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৮ ফেব্রুয়ারি দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আলোচনায় মিলিত হবেন।
দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বর্তমানে অনিষ্পন্ন ইস্যুগুলোর অন্যতম হচ্ছে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি সই, ছিটমহল বিনিময়, অপদখলীয় ভূমি হস্তান্তর ও অনিষ্পন্ন সীমানা নির্ধারণে সীমান্ত চুক্তি ও প্রটোকল অনুস্বাক্ষর এবং ট্রানজিট-ট্রানশিপমেন্ট। তিস্তা চুক্তি বাংলাদেশের এবং ট্রানজিট-ট্রানশিপমেন্ট ভারতের অগ্রাধিকারের শীর্ষে রয়েছে। আর সীমান্ত চুক্তি ও প্রটোকলের সাথে দুই দেশের স্বার্থ জড়িয়ে আছে।
জেসিসির ভিন্ন প্রেক্ষাপট : গত বছর ৭ মে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত জেসিসি বৈঠকে ভারতের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের মতানৈক্যের কারণে তিস্তার পানিবণ্টনে অগ্রগতি না হলেও ট্রানজিট-ট্রানশিপমেন্টে সম্মতি দিয়েছে বাংলাদেশ। দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এ বৈঠকে বাংলাদেশ নদী, রেল ও সড়কপথে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের মাধ্যমে ভারতীয় পণ্য আনা-নেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা জরুরি ভিত্তিতে সম্পন্ন করতে সম্মত হয়েছে। উভয় দেশ ভারতের সহায়তায় আশুগঞ্জে অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল (আইসিডি) নির্মাণ ও আশুগঞ্জ নদীবন্দরের মাধ্যমে ট্রানশিপমেন্ট শুরু করতেও রাজি হয়েছে। এ ছাড়া যাত্রী ও পণ্যবাহী মালামাল চলাচলের জন্য দুই দেশ দ্রুততার সাথে মোটর ভেহিক্যাল অ্যাগ্রিমেন্ট চূড়ান্ত করতে একমত পোষণ করেছে।
কিন্তু আট মাস পর ঢাকায় অনুষ্ঠেয় জেসিসির দ্বিতীয় বৈঠকের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। সরকারের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের মতানৈক্যের অবসান না হওয়ায় ট্রানজিট- ট্রানশিপমেন্ট নিয়ে ভারতের প্রত্যাশা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে বিরোধের জের ধরে কেন্দ্রীয় ইউপিএ সরকারের ওপর থেকে সমর্থন তুলে নেয়ায় তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে পরিস্থিতি আরো জটিল আকার ধারণ করেছে। তৃণমূলের মতে, ১৯৯৬ সালে সম্পাদিত গঙ্গা চুক্তির কারণে পশ্চিমবঙ্গ রাজনৈতিক ভুলের খেসারত দিচ্ছে। এর ফলে কলকাতার হলদিয়া বন্দরের নাব্যতা কমে গেছে। আর তিস্তা নদীর ওপর পশ্চিমবঙ্গের বিশাল এলাকার চাষাবাদ নির্ভরশীল। তাই পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থহানি ঘটিয়ে বাংলাদেশের সাথে এ ব্যাপারে কোনো চুক্তি হতে পারে না।
এ দিকে ভারতের সাথে ট্রানজিট নিয়ে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখন প্রধান সমন্বয়কের ভূমিকায় রয়েছে। তিস্তা না হলে ট্রানজিট নয়Ñ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কঠোরভাবে এ নীতি অনুসরণ করছে। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরকালে বহুল প্রত্যাশিত তিস্তা চুক্তি সই না হওয়ায় বাংলাদেশ এ অবস্থান নেয়।
তিস্তা না হলে ট্রানজিট নয় : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ভারত তিস্তা চুক্তি নিয়ে অগ্রগতি দেখাতে না পারলে আসন্ন জেসিসি বৈঠকেও বাংলাদেশ নদী, রেল ও সড়কপথে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের মাধ্যমে ভারতীয় পণ্য আনা-নেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা জরুরি ভিত্তিতে সম্পন্ন করতে আবারো তার সম্মতির কথা জানাবে।
এ দিকে ট্যারিফ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মজিবুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত ট্রানজিটসংক্রান্ত কোর কমিটির দেয়া প্রতিবেদন নিয়ে ২০১২ সালের জানুয়ারির পর থেকে আর কোনো অগ্রগতি নেই।
লোকসভায় উঠল না সীমান্ত চুক্তি : পশ্চিমবঙ্গ ভূমি হারাবে, বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতের ছিটমহলগুলোর সব বাসিন্দা পশ্চিমবঙ্গে চলে আসবেÑ এমন সব আশঙ্কা ব্যক্ত করে মমতা ব্যানার্জি ছিটমহল বিনিময়, অপদখলীয় ভূমি হস্তান্তর ও অচিহ্নিত সীমানা নির্ধারণে সই হওয়া প্রটোকলেরও বিরোধিতা করছেন। মনমোহনের ঢাকা সফরকালে এ প্রটোকল সই হয়েছিল। আর ১৯৭৪ সালে স্বাক্ষর হয়েছিল ইন্দিরা-মুজিব সীমান্ত চুক্তি। ভারতের সংবিধান সংশোধন করে এ চুক্তি ও প্রটোকল অনুস্বাক্ষর করতে লোকসভায় দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন প্রয়োজন। ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় এ ধরনের সমর্থন আদায় কেন্দ্রীয় সরকারের জন্য আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন কঠিন হয়ে পড়বে। ভারতের নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশকে বারবার আশ্বস্ত করার পরও সংবিধান সংশোধনী প্রস্তাব লোকসভায় উত্থাপন করতে পারছে না।
বন্দী বিনিময় ও ভিসা সহজীকরণ চুক্তি নিয়ে সংশয় : আগামী ২৮ জানুয়ারি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার সিন্ধের ঢাকা সফরকালে দুই দেশের মধ্যে বন্দী বিনিময় চুক্তি ও ভিসা সহজীকরণ চুক্তি সই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে উচ্চপর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে এ ব্যাপারেও খুব একটা আশার বাণী শোনা যায়নি। তাদের মতে, বন্দী বিনিময় চুক্তিটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। এরপর তা মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হতে হবে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া বেশ কঠিন। আর ভিসা সহজীকরণে বাংলাদেশের প্রস্তাবগুলো সম্পর্কে ভারত এখনো কোনো উত্তর দেয়নি।
বিদ্যুৎকেন্দ্র বিনিয়োগ চুক্তি : ৩০ জানুয়ারি ঢাকা আসছেন ভারতের বিদ্যুৎসচিব উমা শঙ্কর। তিনি বাগেরহাটে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিনিয়োগ চুক্তি সই করবেন। এই চুক্তির আওতায় বিভিন্ন কর সুবিধা নিয়ে এখনো দরকষাকষি চলছে। এ ছাড়া প্রকল্প এলাকা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উপযোগী করে তোলার কাজে বাংলাদেশ বেশ পিছিয়ে আছে।
জেআরসি বৈঠক : ২৯ জানুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে জেআরসি কারিগরিপর্যায়ের বৈঠক। এতে গঙ্গা চুক্তি অনুযায়ী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকায় পানিপ্রবাহ পরিমাপের পাশাপাশি টিপাইমুখ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের যৌথ সমীক্ষা ও তিস্তা চুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।
দুই দেশের সার্বিক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে আলোচনার এখতিয়ার জেসিসির রয়েছে। এ বৈঠকে যোগ দিতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদ ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা আসছেন। বৈঠকের খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য দেশটির পররাষ্ট্রসচিব রঞ্জন মাথাই আসছেন ৯ ফেব্রুয়ারি। আর গত বছর দিল্লিতে অনুষ্ঠিত জেসিসির প্রথম বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৮ ফেব্রুয়ারি দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আলোচনায় মিলিত হবেন।
দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বর্তমানে অনিষ্পন্ন ইস্যুগুলোর অন্যতম হচ্ছে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি সই, ছিটমহল বিনিময়, অপদখলীয় ভূমি হস্তান্তর ও অনিষ্পন্ন সীমানা নির্ধারণে সীমান্ত চুক্তি ও প্রটোকল অনুস্বাক্ষর এবং ট্রানজিট-ট্রানশিপমেন্ট। তিস্তা চুক্তি বাংলাদেশের এবং ট্রানজিট-ট্রানশিপমেন্ট ভারতের অগ্রাধিকারের শীর্ষে রয়েছে। আর সীমান্ত চুক্তি ও প্রটোকলের সাথে দুই দেশের স্বার্থ জড়িয়ে আছে।
জেসিসির ভিন্ন প্রেক্ষাপট : গত বছর ৭ মে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত জেসিসি বৈঠকে ভারতের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের মতানৈক্যের কারণে তিস্তার পানিবণ্টনে অগ্রগতি না হলেও ট্রানজিট-ট্রানশিপমেন্টে সম্মতি দিয়েছে বাংলাদেশ। দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এ বৈঠকে বাংলাদেশ নদী, রেল ও সড়কপথে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের মাধ্যমে ভারতীয় পণ্য আনা-নেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা জরুরি ভিত্তিতে সম্পন্ন করতে সম্মত হয়েছে। উভয় দেশ ভারতের সহায়তায় আশুগঞ্জে অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল (আইসিডি) নির্মাণ ও আশুগঞ্জ নদীবন্দরের মাধ্যমে ট্রানশিপমেন্ট শুরু করতেও রাজি হয়েছে। এ ছাড়া যাত্রী ও পণ্যবাহী মালামাল চলাচলের জন্য দুই দেশ দ্রুততার সাথে মোটর ভেহিক্যাল অ্যাগ্রিমেন্ট চূড়ান্ত করতে একমত পোষণ করেছে।
কিন্তু আট মাস পর ঢাকায় অনুষ্ঠেয় জেসিসির দ্বিতীয় বৈঠকের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। সরকারের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের মতানৈক্যের অবসান না হওয়ায় ট্রানজিট- ট্রানশিপমেন্ট নিয়ে ভারতের প্রত্যাশা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে বিরোধের জের ধরে কেন্দ্রীয় ইউপিএ সরকারের ওপর থেকে সমর্থন তুলে নেয়ায় তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে পরিস্থিতি আরো জটিল আকার ধারণ করেছে। তৃণমূলের মতে, ১৯৯৬ সালে সম্পাদিত গঙ্গা চুক্তির কারণে পশ্চিমবঙ্গ রাজনৈতিক ভুলের খেসারত দিচ্ছে। এর ফলে কলকাতার হলদিয়া বন্দরের নাব্যতা কমে গেছে। আর তিস্তা নদীর ওপর পশ্চিমবঙ্গের বিশাল এলাকার চাষাবাদ নির্ভরশীল। তাই পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থহানি ঘটিয়ে বাংলাদেশের সাথে এ ব্যাপারে কোনো চুক্তি হতে পারে না।
এ দিকে ভারতের সাথে ট্রানজিট নিয়ে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখন প্রধান সমন্বয়কের ভূমিকায় রয়েছে। তিস্তা না হলে ট্রানজিট নয়Ñ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কঠোরভাবে এ নীতি অনুসরণ করছে। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরকালে বহুল প্রত্যাশিত তিস্তা চুক্তি সই না হওয়ায় বাংলাদেশ এ অবস্থান নেয়।
তিস্তা না হলে ট্রানজিট নয় : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ভারত তিস্তা চুক্তি নিয়ে অগ্রগতি দেখাতে না পারলে আসন্ন জেসিসি বৈঠকেও বাংলাদেশ নদী, রেল ও সড়কপথে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের মাধ্যমে ভারতীয় পণ্য আনা-নেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা জরুরি ভিত্তিতে সম্পন্ন করতে আবারো তার সম্মতির কথা জানাবে।
এ দিকে ট্যারিফ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মজিবুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত ট্রানজিটসংক্রান্ত কোর কমিটির দেয়া প্রতিবেদন নিয়ে ২০১২ সালের জানুয়ারির পর থেকে আর কোনো অগ্রগতি নেই।
লোকসভায় উঠল না সীমান্ত চুক্তি : পশ্চিমবঙ্গ ভূমি হারাবে, বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতের ছিটমহলগুলোর সব বাসিন্দা পশ্চিমবঙ্গে চলে আসবেÑ এমন সব আশঙ্কা ব্যক্ত করে মমতা ব্যানার্জি ছিটমহল বিনিময়, অপদখলীয় ভূমি হস্তান্তর ও অচিহ্নিত সীমানা নির্ধারণে সই হওয়া প্রটোকলেরও বিরোধিতা করছেন। মনমোহনের ঢাকা সফরকালে এ প্রটোকল সই হয়েছিল। আর ১৯৭৪ সালে স্বাক্ষর হয়েছিল ইন্দিরা-মুজিব সীমান্ত চুক্তি। ভারতের সংবিধান সংশোধন করে এ চুক্তি ও প্রটোকল অনুস্বাক্ষর করতে লোকসভায় দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন প্রয়োজন। ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় এ ধরনের সমর্থন আদায় কেন্দ্রীয় সরকারের জন্য আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন কঠিন হয়ে পড়বে। ভারতের নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশকে বারবার আশ্বস্ত করার পরও সংবিধান সংশোধনী প্রস্তাব লোকসভায় উত্থাপন করতে পারছে না।
বন্দী বিনিময় ও ভিসা সহজীকরণ চুক্তি নিয়ে সংশয় : আগামী ২৮ জানুয়ারি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার সিন্ধের ঢাকা সফরকালে দুই দেশের মধ্যে বন্দী বিনিময় চুক্তি ও ভিসা সহজীকরণ চুক্তি সই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে উচ্চপর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে এ ব্যাপারেও খুব একটা আশার বাণী শোনা যায়নি। তাদের মতে, বন্দী বিনিময় চুক্তিটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। এরপর তা মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হতে হবে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া বেশ কঠিন। আর ভিসা সহজীকরণে বাংলাদেশের প্রস্তাবগুলো সম্পর্কে ভারত এখনো কোনো উত্তর দেয়নি।
বিদ্যুৎকেন্দ্র বিনিয়োগ চুক্তি : ৩০ জানুয়ারি ঢাকা আসছেন ভারতের বিদ্যুৎসচিব উমা শঙ্কর। তিনি বাগেরহাটে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিনিয়োগ চুক্তি সই করবেন। এই চুক্তির আওতায় বিভিন্ন কর সুবিধা নিয়ে এখনো দরকষাকষি চলছে। এ ছাড়া প্রকল্প এলাকা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উপযোগী করে তোলার কাজে বাংলাদেশ বেশ পিছিয়ে আছে।
জেআরসি বৈঠক : ২৯ জানুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে জেআরসি কারিগরিপর্যায়ের বৈঠক। এতে গঙ্গা চুক্তি অনুযায়ী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকায় পানিপ্রবাহ পরিমাপের পাশাপাশি টিপাইমুখ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের যৌথ সমীক্ষা ও তিস্তা চুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।
No comments