‘কাশফিয়া’ ধর্ষণ মামলার আসামিরা লাপাত্তা by এ কে এম রিপন আনসারী
পুলিশের অভিযানেও কাশফিয়া (বাংলানিউজের
দেওয়া নাম) ধর্ষণের আসামিদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে পুলিশ জানিয়েছে,
যে কোনো মুহূর্তে তারা গ্রেফতার হতে পারেন।
বুধবার মামলার
তদন্তকারী কর্মকর্তা উত্তরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলি মাহমুদ
বাংলানিউজকে বলেছেন, “আসামিদের নিজ বাড়ি ও শশুর বাড়িতে অভিযান চালানো
হয়েছে। তাদের ব্যবহৃত সব মোবাইলফোন বন্ধ রয়েছে। চেষ্টা করা হচ্ছে, শিগগিরই
আসামিরা ধরে পড়বেন।”
অনুসন্ধানে
জানা যায়, ধর্ষণ ও নির্যাতনের প্রায় দুই সপ্তাহ পর সংবাদ মাধ্যমে আলোচনা ও
সামলোচনার ঘূর্ণিঝড় তোলে অবশেষে কাশফিয়া ধর্ষণ মামলা হয়েছে ঢাকা
মেট্রোপলিটন সিটির উত্তরা থানায়। মামলা নম্বর ৩৪।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সংশোধিত ২০০৩ এর ৯(১),৪(২)/৩০ ধারায় দায়েরকৃত মামলায় ধর্ষণ ও গরম তেলের দ্বারা নির্যাতনের কথা এজাহারে উল্লেখ রয়েছে।
উত্তরা থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন বাংলানিউজকে সংবাদটি নিশ্চিত করেছেন। মামালার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) আলি মাহমুদ।
পুলিশ ও দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, মানবাধিকার সংগঠনের তত্ত্বাবধানে কাশফিয়া বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে ওই মামলা দায়ের করেন। মামলাটি রাতেই রেকর্ডভুক্ত হয়।
মামলা আসামিরা হলেন, গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া) আসনের সাংসদ সিমিন হোসেন রিমির (তিনি অস্বীকার করেছেন) এপিএস কাজল মোল্লা, তার স্ত্রী রেখা আক্তার, কাজল মোল্লার ভাই সুমন মোল্লা, সহায়তাকারী আসাদুল্লাহ ওরফে আসাদ। মামলায় আরো অজ্ঞাতপরিচয় আসামী রয়েছে। আসামিদের বাড়ি কাপাসিয়া উপজেলার রায়েদ ইউনয়নের বড়হর ও সদর ইউনিয়নের বড়টেক গ্রামে।
কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, “উত্তরা থানায় মামলার খবর পেয়েছি। আমাকে অফিসিয়ালি জানানো হয়নি।”
কাশফিয়ার অবরুদ্ধ ১৫ দিন
কাপাসিয়া উপজেলার কাশফিয়াকে (১৮) প্রতিবেশী আসাদ মিয়া ঢাকায় গৃহপরিচারিকার (ঝি) কাজ দেয়। উত্তরার ১১নং সেক্টরের ১০ নম্বর বাড়ির মালিক মো. সাইফুল হাকিম মোল্লা ওরফে কাজল মোল্লা আড়াই মাস পূর্বে ভিকটিমকে ঝিয়ের কাজে নিয়োগ দেন। কাজল মোল্লার পিতার নাম মৃত আব্দুল হেকিম মোল্লা। বাড়ি কাপাসিয়া উপজেলার রায়েদ গ্রামে। হেকিম মোল্লা ও বঙ্গতাজ তাজউদ্দিন আহমদ ছিলেন মামা-ভাগ্নে। ওই দিক থেকে কাজল মোল্লা স্থানীয় সাংসদ সিমিন হোসেন রিমির পরিবারের নিকটাত্মীয় বা মামা-ভাগ্নী সম্পর্কের বলে সূত্রের দাবি। কাজল মিয়া সাংসদ সিমিন হোসেন রিমির এপিএস হিসেবে এলাকায় পরিচিত।
এদিকে, ৪ জানুয়ারি কাজল মোল্লা ও তার স্ত্রী কাজের মেয়েকে (১৮) নির্মম নির্যাতন করেন। ৫ ও ৬ জানুয়ারি উত্তরার বাসায় বাথরুমে আটকে রাখে ওই দম্পতি। ৭ জানুয়ারি সকাল ১০টার দিকে একটি প্রাইভেটকারে করে কাজল মোল্লা অসুস্থ কাজের মেয়েটিকে বড়টেক গ্রামে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে চলে যান। এলাকাবাসী বেলা ৩টার দিকে মেয়েটিকে কাপাসিয়া উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। বিকাল সোয়া ৪টায় কাপাসিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কাশফিয়া মোবাইলফোনে বাংলানিউজকে জানিয়েছিল, মাসিক বেতন চাওয়ার পর বাড়ির মালিক কাজল মিয়া ও তার স্ত্রী রেখা বেগম তাকে কাজে অবহেলার অভিযোগে নির্মম নির্যাতন করেন। হাত, পা, মাথায় ও পিঠে রড দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করেন। এই অবস্থায় দুই দিন বাথরুমে আটকে রেখে একপর্যায়ে সোমবার সকালে তাকে কাপাসিয়ায় গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
সূত্র জানায়, ৭ জানুয়ারি সোমবার বেলা ৪টার দিকে কাপাসিয়া উপজেলার বড়টেক গ্রামের এলাকাবাসী গুরুতর আহত ওই মেয়েটিকে কাপাসিয়া উপজেলা হাসপাতালে আনলে কর্তৃপক্ষ আশংকাজনক অবস্থায় তাকে গাজীপুর সদর হাসপাতালে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন। অতঃপর তাকে গাজীপুর নিয়ে আসতে চাইলে রাস্তা থেকে ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় লোক মেয়েটিকে পুনরায় কাপাসিয়া হাসপাতালে নিয়ে যায়।
একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, কাপাসিয়া হাসপাতালে অবস্থানকালীন জরুরি বিভাগের ডাক্তারের কাছে একটি ফোন আসে। এরপর বাবার কোনো অভিযোগ নেই মর্মে জানিয়ে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন নির্যাতিতা মেয়েটিকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যায়।
ওই দিন রাত ৭টা ২৪মিনিটে কাপাসিয়া উপজেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডাক্তার খাজা হাবিব বাংলানিউজকে জানিয়েছিলেন, কোনো রোগী চলে গেলে তার রেকর্ড থাকে না। তবে গোপন সূত্রমতে, কাপাসিয়া উপজেলা হাসপাতালের ভর্তি রেজিস্ট্রারে (রোগী নম্বর ৩১/৩১ সময় বিকাল ৪টা) নিবন্ধন রয়েছে।
কাপাসিয়া উপজেলা হাসাপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার খাজা হাবিব বাংলানিউজের অনুসন্ধান দলকে জানান, মেয়েটির হাতে পায়ে পিঠ ও স্তনসহ সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। মেয়েটি অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত বলেও ডাক্তার জানান।
কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন ভিকটিমের বরাদ দিয়ে বাংলানিউজকে জানিয়েছিলেন, ১৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে মেয়েটি নির্যাতনের কথা অস্বীকার করেছেন। তবে ঘটনাটি কাপাসিয়া থানার না হওয়ায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
মিডিয়ার ধারাবাহিক সংবাদের পর হাইকোর্ট ২১ জানুয়ারি মেয়েটিকে আদালতে উপস্থিত করার আদেশ দেন। ২১ জানুয়ারি মেয়েটিকে আদালতে উপস্থিত করা হলে আদালতের নির্দেশে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। চিকিৎসাধীন থাকার অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে উত্তরা থানায় মামলা হয়।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সংশোধিত ২০০৩ এর ৯(১),৪(২)/৩০ ধারায় দায়েরকৃত মামলায় ধর্ষণ ও গরম তেলের দ্বারা নির্যাতনের কথা এজাহারে উল্লেখ রয়েছে।
উত্তরা থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন বাংলানিউজকে সংবাদটি নিশ্চিত করেছেন। মামালার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) আলি মাহমুদ।
পুলিশ ও দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, মানবাধিকার সংগঠনের তত্ত্বাবধানে কাশফিয়া বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে ওই মামলা দায়ের করেন। মামলাটি রাতেই রেকর্ডভুক্ত হয়।
মামলা আসামিরা হলেন, গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া) আসনের সাংসদ সিমিন হোসেন রিমির (তিনি অস্বীকার করেছেন) এপিএস কাজল মোল্লা, তার স্ত্রী রেখা আক্তার, কাজল মোল্লার ভাই সুমন মোল্লা, সহায়তাকারী আসাদুল্লাহ ওরফে আসাদ। মামলায় আরো অজ্ঞাতপরিচয় আসামী রয়েছে। আসামিদের বাড়ি কাপাসিয়া উপজেলার রায়েদ ইউনয়নের বড়হর ও সদর ইউনিয়নের বড়টেক গ্রামে।
কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, “উত্তরা থানায় মামলার খবর পেয়েছি। আমাকে অফিসিয়ালি জানানো হয়নি।”
কাশফিয়ার অবরুদ্ধ ১৫ দিন
কাপাসিয়া উপজেলার কাশফিয়াকে (১৮) প্রতিবেশী আসাদ মিয়া ঢাকায় গৃহপরিচারিকার (ঝি) কাজ দেয়। উত্তরার ১১নং সেক্টরের ১০ নম্বর বাড়ির মালিক মো. সাইফুল হাকিম মোল্লা ওরফে কাজল মোল্লা আড়াই মাস পূর্বে ভিকটিমকে ঝিয়ের কাজে নিয়োগ দেন। কাজল মোল্লার পিতার নাম মৃত আব্দুল হেকিম মোল্লা। বাড়ি কাপাসিয়া উপজেলার রায়েদ গ্রামে। হেকিম মোল্লা ও বঙ্গতাজ তাজউদ্দিন আহমদ ছিলেন মামা-ভাগ্নে। ওই দিক থেকে কাজল মোল্লা স্থানীয় সাংসদ সিমিন হোসেন রিমির পরিবারের নিকটাত্মীয় বা মামা-ভাগ্নী সম্পর্কের বলে সূত্রের দাবি। কাজল মিয়া সাংসদ সিমিন হোসেন রিমির এপিএস হিসেবে এলাকায় পরিচিত।
এদিকে, ৪ জানুয়ারি কাজল মোল্লা ও তার স্ত্রী কাজের মেয়েকে (১৮) নির্মম নির্যাতন করেন। ৫ ও ৬ জানুয়ারি উত্তরার বাসায় বাথরুমে আটকে রাখে ওই দম্পতি। ৭ জানুয়ারি সকাল ১০টার দিকে একটি প্রাইভেটকারে করে কাজল মোল্লা অসুস্থ কাজের মেয়েটিকে বড়টেক গ্রামে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে চলে যান। এলাকাবাসী বেলা ৩টার দিকে মেয়েটিকে কাপাসিয়া উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। বিকাল সোয়া ৪টায় কাপাসিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কাশফিয়া মোবাইলফোনে বাংলানিউজকে জানিয়েছিল, মাসিক বেতন চাওয়ার পর বাড়ির মালিক কাজল মিয়া ও তার স্ত্রী রেখা বেগম তাকে কাজে অবহেলার অভিযোগে নির্মম নির্যাতন করেন। হাত, পা, মাথায় ও পিঠে রড দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করেন। এই অবস্থায় দুই দিন বাথরুমে আটকে রেখে একপর্যায়ে সোমবার সকালে তাকে কাপাসিয়ায় গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
সূত্র জানায়, ৭ জানুয়ারি সোমবার বেলা ৪টার দিকে কাপাসিয়া উপজেলার বড়টেক গ্রামের এলাকাবাসী গুরুতর আহত ওই মেয়েটিকে কাপাসিয়া উপজেলা হাসপাতালে আনলে কর্তৃপক্ষ আশংকাজনক অবস্থায় তাকে গাজীপুর সদর হাসপাতালে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন। অতঃপর তাকে গাজীপুর নিয়ে আসতে চাইলে রাস্তা থেকে ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় লোক মেয়েটিকে পুনরায় কাপাসিয়া হাসপাতালে নিয়ে যায়।
একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, কাপাসিয়া হাসপাতালে অবস্থানকালীন জরুরি বিভাগের ডাক্তারের কাছে একটি ফোন আসে। এরপর বাবার কোনো অভিযোগ নেই মর্মে জানিয়ে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন নির্যাতিতা মেয়েটিকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যায়।
ওই দিন রাত ৭টা ২৪মিনিটে কাপাসিয়া উপজেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডাক্তার খাজা হাবিব বাংলানিউজকে জানিয়েছিলেন, কোনো রোগী চলে গেলে তার রেকর্ড থাকে না। তবে গোপন সূত্রমতে, কাপাসিয়া উপজেলা হাসপাতালের ভর্তি রেজিস্ট্রারে (রোগী নম্বর ৩১/৩১ সময় বিকাল ৪টা) নিবন্ধন রয়েছে।
কাপাসিয়া উপজেলা হাসাপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার খাজা হাবিব বাংলানিউজের অনুসন্ধান দলকে জানান, মেয়েটির হাতে পায়ে পিঠ ও স্তনসহ সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। মেয়েটি অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত বলেও ডাক্তার জানান।
কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন ভিকটিমের বরাদ দিয়ে বাংলানিউজকে জানিয়েছিলেন, ১৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে মেয়েটি নির্যাতনের কথা অস্বীকার করেছেন। তবে ঘটনাটি কাপাসিয়া থানার না হওয়ায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
মিডিয়ার ধারাবাহিক সংবাদের পর হাইকোর্ট ২১ জানুয়ারি মেয়েটিকে আদালতে উপস্থিত করার আদেশ দেন। ২১ জানুয়ারি মেয়েটিকে আদালতে উপস্থিত করা হলে আদালতের নির্দেশে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। চিকিৎসাধীন থাকার অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে উত্তরা থানায় মামলা হয়।
No comments