সীমান্তে ফের বিএসএফের গুলিঃ সম্পর্ক উন্নয়নের বিপক্ষে উস্কানি
সম্প্রতি একাধিক ইস্যুতে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের টানাপড়েন ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। অমীমাংসিত পানিবণ্টন ইস্যুর পাশাপাশি সীমানা বিরোধ এবং সীমান্তে বিসিএফের হাতে বাংলাদেশী নাগরিক খুন ও গোলাগুলির ঘটনা থেকে তা সহজেই আন্দাজ করা যায়।
একইসঙ্গে পরপর বাংলাদেশে নিয়োজিত ভারতের দু’জন কূটনীতিকের শিষ্টাচারবহির্ভূত মন্তব্য বন্ধুপ্রতিম দু’দেশের সম্পর্কোন্নয়নের ধারাকে সংশয়পূর্ণ করে তুলেছে। এসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি দু’দেশের জনমনেও নানা ধরনের সংশয়-সন্দেহ উস্কে দিচ্ছে।
ফেব্রুয়ারি মাসেই পরপর কয়েক দফা বিএসএফ-বিডিআর গুলিবিনিময় হয়েছে সিলেটের জৈন্তাপুরে। বিএসএফের প্রহরায় কিছু ভারতীয় দুর্বৃত্ত বাংলাদেশে ঢুকে কেন্দ্রি ও ডিবি বিলে পাওয়ার পাম্প লাগিয়ে মাছ ধরে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে বিডিআর ও স্থানীয় জনগণ বাধা দিলে কয়েকবার গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ উভয়পক্ষকে মাছ ধরা থেকে বিরত রাখার ঘোষণা দেয় এবং দু’পক্ষের মধ্যে ফ্ল্যাগ মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গোলাগুলি বন্ধ করার কথা থাকলেও বিএসএফ পূর্বাপরের মতো কথা রাখেনি। একপর্যায়ে পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করার মতো শর্ত ভঙ্গ করে আলোচ্য বিলের পার্শ্ববর্তী বাসিন্দাদের লক্ষ্য করে গুলিও ছোড়ে। অভিযোগ আছে, মাছ ধরার নামে আসলে কেন্দ্রি ও ডিবি বিলের ৩শ’ একর বাংলাদেশী জমি দখল করার জন্য ভারতীয় নাগরিকরা যে পাঁয়তারা করছে, তাতে সরাসরি মদত দিচ্ছে বিএসএফ। উল্লেখ্য, এই জমি স্থানীয় বাংলাদেশী নাগরিকরা সরকারের কাছ থেকে লিজ নিয়েও বিএসএফের বাধার মুখে মাছ ধরতে পারছে না। এদিকে তেঁতুলিয়া সীমান্তে মহানন্দা নদীর পাশে বাংলাদেশের সীমানা পিলারের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। এই সুযোগে বিএসএফ বাংলাদেশের ভেতরে প্রবেশ করে নতুন পিলার বসানোর চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে তেঁতুলিয়ার জনগণের তীব্র আপত্তির মুখে পিলার বসানো বন্ধ রয়েছে। কিন্তু আশঙ্কা কাটেনি।
সীমান্তে স্থায়ী শান্তি স্থাপনে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ পূর্বাপর তাদের দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি। গত ১২ জুলাই ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিডিআর-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকে বিএসএফ পরিচালক বলেছিলেন, ‘আর কোনো নিরীহ বাংলাদেশী সীমান্তে হত্যার শিকার হবে না।’ তার কথা সম্পূর্ণ মিথ্যাচারে পর্যবসিত হয়েছে। সীমান্তে হত্যাকাণ্ড চলছে, গোলাগুলি চলছে।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিএসএফের জবরদখলের উদ্যোগের ঘটনা নতুন কিছু নয়। এর আগেও স্বয়ং বিএসএফ এবং তাদের সহযোগিতায় ভারতীয় নাগরিকরা অনধিকার অনুপ্রবেশ করেছে। এ অবস্থায় আর সংশয় থাকে না যে, বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে বিদ্যমান সব বিরোধের অবসান চাইলেও তা উপেক্ষিত হচ্ছে। সীমান্তে বিএসএফ কর্মকর্তাদের কর্মকাণ্ড আর ভারতের একাধিক কূটনীতিকের আচরণ দেখে মনে হচ্ছে, বিরোধ মীমাংসার ব্যাপারে তাদের আগ্রহ তো নেই-ই, বরং সচেতনভাবে নানা ধরনের উদ্বেগ-উত্কণ্ঠার সৃষ্টি করার দায়িত্বই পালন করছেন তারা। এর আগে বাংলাদেশে নিয়োজিত ভারতের হাইকমিশনার পিনাকরঞ্জন চক্রবর্তী বিভিন্ন সময় কূটনৈতিক শিষ্টাচারবিরোধী কথাবার্তা বলে অবাঞ্ছিত বিতর্কের সৃষ্টি করেছিলেন। একটি স্বাধীন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তার নাক গলানো নিয়ে জনগণ প্রতিবাদ করেছে। সেই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণেরই পুনরাবৃত্তি করলেন চট্টগ্রামে ভারতের সহকারী হাইকমিশনার একে গোস্বামী। ভারতের ভিসাপ্রাপ্তিতে জটিলতার বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি লাগামহীন ও কূটনৈতিক শিষ্টাচারের সীমা লঙ্ঘন করেছেন। ২৭ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত ভারত-বাংলাদেশ ব্যবসায়ীদের যৌথ মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, ‘সবাই বঙ্গবন্ধুর মতো বক্তৃতাবাজি করলে চলবে না’। এই মন্তব্যের প্রতিবাদ করে এরই মধ্যে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী নেতা ও সরকারদলীয় এমপি এমএ লতিফ ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বার্তা পাঠিয়ে তাকে প্রত্যাহার ও শাস্তির দাবি করেছেন। ফ্যাক্স বার্তাটি দেশে প্রধানমন্ত্রীসহ উচ্চপর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। উল্লেখ্য, আলোচ্য সভায় তার বক্তব্যের জন্য আসাম রাজ্যের শিল্প ও বিদ্যুত্মন্ত্রী ক্ষমা প্রার্থনা ও দুঃখ প্রকাশ করেন, যা অনেকটা গরু মেরে জুতাদানের শামিল। বলার অপেক্ষা রাখে না, এ ধরনের ধৃষ্টতা পুরো জাতিকেই অপমানিত করেছে। কাজেই সংশয় প্রকাশ স্বাভাবিক যে, সীমান্তে বিএসএফের অব্যাহত হত্যাকাণ্ড, অস্থিরতা সৃষ্টি, জবরদখলের পাঁয়তারার পাশাপাশি কূটনীতিকের অভব্য উচ্চারণ দু’দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় বৈকি। আমাদের প্রত্যাশা, বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারত দু’দেশের জনগণের মধ্যে প্রতিবেশীসুলভ সহাবস্থানের স্বার্থে এসব অন্তরায় দূর করার ক্ষেত্রে অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে।
ফেব্রুয়ারি মাসেই পরপর কয়েক দফা বিএসএফ-বিডিআর গুলিবিনিময় হয়েছে সিলেটের জৈন্তাপুরে। বিএসএফের প্রহরায় কিছু ভারতীয় দুর্বৃত্ত বাংলাদেশে ঢুকে কেন্দ্রি ও ডিবি বিলে পাওয়ার পাম্প লাগিয়ে মাছ ধরে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে বিডিআর ও স্থানীয় জনগণ বাধা দিলে কয়েকবার গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ উভয়পক্ষকে মাছ ধরা থেকে বিরত রাখার ঘোষণা দেয় এবং দু’পক্ষের মধ্যে ফ্ল্যাগ মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গোলাগুলি বন্ধ করার কথা থাকলেও বিএসএফ পূর্বাপরের মতো কথা রাখেনি। একপর্যায়ে পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করার মতো শর্ত ভঙ্গ করে আলোচ্য বিলের পার্শ্ববর্তী বাসিন্দাদের লক্ষ্য করে গুলিও ছোড়ে। অভিযোগ আছে, মাছ ধরার নামে আসলে কেন্দ্রি ও ডিবি বিলের ৩শ’ একর বাংলাদেশী জমি দখল করার জন্য ভারতীয় নাগরিকরা যে পাঁয়তারা করছে, তাতে সরাসরি মদত দিচ্ছে বিএসএফ। উল্লেখ্য, এই জমি স্থানীয় বাংলাদেশী নাগরিকরা সরকারের কাছ থেকে লিজ নিয়েও বিএসএফের বাধার মুখে মাছ ধরতে পারছে না। এদিকে তেঁতুলিয়া সীমান্তে মহানন্দা নদীর পাশে বাংলাদেশের সীমানা পিলারের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। এই সুযোগে বিএসএফ বাংলাদেশের ভেতরে প্রবেশ করে নতুন পিলার বসানোর চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে তেঁতুলিয়ার জনগণের তীব্র আপত্তির মুখে পিলার বসানো বন্ধ রয়েছে। কিন্তু আশঙ্কা কাটেনি।
সীমান্তে স্থায়ী শান্তি স্থাপনে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ পূর্বাপর তাদের দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি। গত ১২ জুলাই ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিডিআর-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকে বিএসএফ পরিচালক বলেছিলেন, ‘আর কোনো নিরীহ বাংলাদেশী সীমান্তে হত্যার শিকার হবে না।’ তার কথা সম্পূর্ণ মিথ্যাচারে পর্যবসিত হয়েছে। সীমান্তে হত্যাকাণ্ড চলছে, গোলাগুলি চলছে।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিএসএফের জবরদখলের উদ্যোগের ঘটনা নতুন কিছু নয়। এর আগেও স্বয়ং বিএসএফ এবং তাদের সহযোগিতায় ভারতীয় নাগরিকরা অনধিকার অনুপ্রবেশ করেছে। এ অবস্থায় আর সংশয় থাকে না যে, বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে বিদ্যমান সব বিরোধের অবসান চাইলেও তা উপেক্ষিত হচ্ছে। সীমান্তে বিএসএফ কর্মকর্তাদের কর্মকাণ্ড আর ভারতের একাধিক কূটনীতিকের আচরণ দেখে মনে হচ্ছে, বিরোধ মীমাংসার ব্যাপারে তাদের আগ্রহ তো নেই-ই, বরং সচেতনভাবে নানা ধরনের উদ্বেগ-উত্কণ্ঠার সৃষ্টি করার দায়িত্বই পালন করছেন তারা। এর আগে বাংলাদেশে নিয়োজিত ভারতের হাইকমিশনার পিনাকরঞ্জন চক্রবর্তী বিভিন্ন সময় কূটনৈতিক শিষ্টাচারবিরোধী কথাবার্তা বলে অবাঞ্ছিত বিতর্কের সৃষ্টি করেছিলেন। একটি স্বাধীন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তার নাক গলানো নিয়ে জনগণ প্রতিবাদ করেছে। সেই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণেরই পুনরাবৃত্তি করলেন চট্টগ্রামে ভারতের সহকারী হাইকমিশনার একে গোস্বামী। ভারতের ভিসাপ্রাপ্তিতে জটিলতার বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি লাগামহীন ও কূটনৈতিক শিষ্টাচারের সীমা লঙ্ঘন করেছেন। ২৭ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত ভারত-বাংলাদেশ ব্যবসায়ীদের যৌথ মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, ‘সবাই বঙ্গবন্ধুর মতো বক্তৃতাবাজি করলে চলবে না’। এই মন্তব্যের প্রতিবাদ করে এরই মধ্যে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী নেতা ও সরকারদলীয় এমপি এমএ লতিফ ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বার্তা পাঠিয়ে তাকে প্রত্যাহার ও শাস্তির দাবি করেছেন। ফ্যাক্স বার্তাটি দেশে প্রধানমন্ত্রীসহ উচ্চপর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। উল্লেখ্য, আলোচ্য সভায় তার বক্তব্যের জন্য আসাম রাজ্যের শিল্প ও বিদ্যুত্মন্ত্রী ক্ষমা প্রার্থনা ও দুঃখ প্রকাশ করেন, যা অনেকটা গরু মেরে জুতাদানের শামিল। বলার অপেক্ষা রাখে না, এ ধরনের ধৃষ্টতা পুরো জাতিকেই অপমানিত করেছে। কাজেই সংশয় প্রকাশ স্বাভাবিক যে, সীমান্তে বিএসএফের অব্যাহত হত্যাকাণ্ড, অস্থিরতা সৃষ্টি, জবরদখলের পাঁয়তারার পাশাপাশি কূটনীতিকের অভব্য উচ্চারণ দু’দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় বৈকি। আমাদের প্রত্যাশা, বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারত দু’দেশের জনগণের মধ্যে প্রতিবেশীসুলভ সহাবস্থানের স্বার্থে এসব অন্তরায় দূর করার ক্ষেত্রে অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে।
No comments