ইতিউতি-ভারতে দুর্নীতি এখন আকাশছোঁয়া by আতাউস সামাদ

ভারতের গণতন্ত্র ও পার্লামেন্ট নিয়ে পাকিস্তানি শাসনামলেও আমাদের মধ্যে আগ্রহ যিছল অনেক। এর প্রধান কারণ ছিল যে একই সময়ে উপনিবেশবাদী ব্রিটেনের অধীনতা থেকে মুক্তি পেলেও যখন ভারতে গণতান্ত্রিকভাবে সংবিধান তৈরি করে সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে পার্লামেন্ট ও সরকার প্রতিষ্ঠা করে দেশ চালানো হচ্ছে,


তখন পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন তো হলোই না, এমনকি অনেক কষ্টে ১৯৫৬ সালে যে সংবিধান রচিত হলো, ১৯৫৮ সালে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আইয়ুব খান ক্ষমতা দখল করে সেই সংবিধান বাতিল করে দিলেন এবং সামরিক শাসন জারি করলেন। কাজেই পাকিস্তানে, বিশেষ করে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে যাঁরা গণতন্ত্র চাইতেন তাঁরা বলতেন ভারতে গণতন্ত্র, সংবিধান ও পার্লামেন্ট চলতে পারলে পাকিস্তানে তা হবে না কেন? তাঁরা আরো বলতেন, ভারত ওয়েস্টমিনস্টার বা ব্রিটিশ পার্লামেন্ট থেকে দৃষ্টান্ত নিয়ে তাদের লোকসভা বা পার্লামেন্ট সৃষ্টি করেছে, আমরাও সেটা করতে পারি। ভারতে পার্লামেন্ট ও প্রদেশগুলোর বিধানসভার জন্য নিয়মিত নির্বাচন হচ্ছে, তাহলে পাকিস্তানে তেমন হবে না কেন? সেনাশাসক আইয়ুব খান ও তাঁর সঙ্গী সেনাপতিরা যুক্তি দেখাতেন যে পাকিস্তান দুটি অঞ্চলে বিভক্ত এবং মধ্যখানে রয়েছে বৈরী শক্তি ভারত, তাই পাকিস্তানের নিরাপত্তার জন্য শক্তিশালী কেন্দ্রীয় শাসন লাগবে। তা ছাড়া দুই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে ঐক্যের চেতনা গড়ার জন্য বিশেষ রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা লাগবে। আর পাকিস্তানের দরিদ্র জনগণ যাতে তৃণমূলে উন্নয়নের ছোঁয়া পায় সে জন্যও আলাদা ধরনের শাসন পদ্ধতি হতে হবে। তাই পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র হতে হবে দেশটির মানুষের চেতনা, দৃষ্টিভঙ্গি ও বুদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আইয়ুব খানের ভাষায়_'অ ংুংঃবস ংঁরঃবফ ঃড় ঃযব মবহরঁং ড়ভ ঃযব ঢ়বড়ঢ়ষব'। সত্যি কথা বলতে কী, আমি আজ পর্যন্ত উপরোক্ত বাক্যে 'জিনিয়াস' শব্দটি কী অর্থে ব্যবহার করেছেন আইয়ুব খান, তা উদ্ধার করতে পারিনি।
আজও মনে পড়ে আইয়ুব খান, যিনি নিজেকে ইতিমধ্যে ফিল্ড মার্শাল উপাধিতে ভূষিত করে ফেলেছিলেন, তাঁর প্রতি বাংলার মানুষ ও রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ ও ঘৃণা তাঁর দ্বারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করার সময়ের চেয়েও অনেক তীব্র হয়ে গিয়েছিল তিনি ওই 'জিনিয়াস অব দ্য পিপল' তত্ত্বটি ঘোষণার পর। তা যে কেন সে কথা সহজবোধ্য। প্রথমত, আইয়ুব খানের কথায় রাজনীতিবিদের প্রতি এক ধরনের ব্যঙ্গ প্রকাশ পেয়েছিল যে, তোমরা জনগণের চাহিদা বোঝো না, কিন্তু আমি বুঝি। দ্বিতীয়ত, জনগণ আসলে নিজেদের ভালোটাও বোঝে না, তাদের জন্য কী হবে তা তারা যথার্থভাবে প্রকাশ করতে পারবে 'আমার' দেওয়া বিশেষ ব্যবস্থায়। তৃতীয়ত, ওটা ছিল আইয়ুব খান ও পাকিস্তানি সেনা শাসকদের ধাপ্পাবাজি, যাতে জনগণকে গণতান্ত্রিক অধিকার না দিতে হয়। ফলে সাবেক পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের আইয়ুব খান তাঁর তত্ত্ব গেলাতে পারেননি।
ওই সময়টা পাকিস্তানের বাঙালিদের জন্য ছিল বিপজ্জনক। সেই যে 'রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই' আন্দোলনের সময় থেকে পাকিস্তানি শাসককুল বাঙালিদের 'দেশবিরোধী' অপবাদ দিতে শুরু করেছিল, সে কথাই তাঁরা সরাসরি অথবা ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বলতেন এই অঞ্চলের জন্য অথবা পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক শাসনের জন্য দাবি তুললেই। তবুও সাবেক পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক দলগুলো ও নেতারা বারবার বলতেন, আমরা ব্রিটেনের আদলে গণতন্ত্র ও নির্বাচন চাই। আরো বলতেন যে ভারতে ব্রিটেনের মতো রাজনৈতিক পদ্ধতি কার্যকর হতে পারলে পাকিস্তানেও তা সম্ভব। উপরন্তু পাকিস্তানের সব অঞ্চলের মানুষ দেশ পরিচালনায় অংশদারির অনুভূতি পেলে তবেই দেশটি ঐক্যবদ্ধ ও মজবুত থাকবে এবং তা সম্ভব সব প্রাপ্তবয়স্কের ভোটাধিকার ও তাদের ভোটে নির্বাচিত ফেডারেল পার্লামেন্ট ও প্রাদেশিক পরিষদ প্রতিষ্ঠা করা গেলে এবং ওই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সরকারের দায়িত্বে থাকলে। এ প্রসঙ্গে আবারও ভারতের উদাহরণ আসত। তদুপরি ভারতে একেকবার জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচন হতো, আর ওই দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি আমাদের মনে সম্মান বোধ বাড়ত।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার প্রধান মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক ফয়েজ আহমদ যখন আমাকে ভারতের জন্য বিশেষ সংবাদদাতা করে দিলি্ল পাঠানোর ব্যবস্থা করলেন তারপর থেকে মনে আর মাথায় একই কথা ঘুরেছে। বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশের বিখ্যাত পার্লামেন্ট দেখব নিয়মিত। ওই উত্তেজনায় দিলি্লতে আমার প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেওয়া (কারণ তাঁর বাংলাদেশ সফরের দিন তখন ঘনিয়ে আসছে), তা আমাকে খুব বেশি চিন্তিত করছিল না। অবশ্য সাক্ষাৎকারের সময় পাওয়ার জন্য যেটুকু দৌড়াদৌড়ি, চাপাচাপি করতে হয় তা করেছিলাম এবং কিছু প্রশ্ন ভেবে রেখেছিলাম।
ভারতে যত দিন ছিলাম তত দিন অধিবেশন চলার সময় প্রায় প্রতিদিন লোকসভায় যেতাম। পার্লামেন্টে উপস্থাপন করা দলিলপত্র, প্রশ্নোত্তর ও মন্ত্রীদের বিবৃতি ছিল আমার জন্য সংবাদ সংগ্রহের প্রধান উৎস। কিন্তু সম্ভবত পাকিস্তানের অধীনে বা অংশ হিসেবে থাকার সময় আমাদের গণতন্ত্রের জন্য যে দীর্ঘ সংগ্রাম করতে হয়েছিল সে জন্য ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় পার্লামেন্ট আমাকে আলাদাভাবে আকর্ষণ করত। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের কথা মাঝে মাঝে ভাবতাম, কিন্তু দরিদ্র দেশের গরিব সাংবাদিকটির সেখানে কোনো দিন যাওয়া হবে না, এটা ধরেই নিয়েছিলাম। অবশ্য অনেক পরে শুধু হাউস অব কমন্সের অধিবেশন খানিকক্ষণ দেখতে এবং কয়েকজন ব্রিটিশ এমপির সঙ্গে বিবিসির বহিঃপ্রচার নিয়ে আলাপ করতে একবার গিয়েছিলাম ওয়েস্টমিনস্টারে। আমি দিলি্ল পেঁৗছার পরপরই বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে। কয়েকজন বঙ্গভাষী ডাকসাইটে সাংবাদিক আমাকে সব রকমের সাহায্য করতেন। এঁদের মধ্যে আমি বিশেষভাবে ঋণী সুকুমারদার কাছে (তাঁর পুরো নাম বোধ হয় সুকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়)। তিনি অমৃতবাজার পত্রিকা ও যুগান্তরের রাজনৈতিক সংবাদদাতা ছিলেন। তাঁর বাড়ি থেকে লোকসভায় যাওয়ার পথে আমাদের ফ্ল্যাটটা (সরকার প্রদত্ত) পড়ত, তাই তিনি প্রায় রোজই আমাকে তাঁর গাড়িতে তুলে নিতেন। নয়াদিলি্লর গ্রীষ্মের খরতাপ যাঁরা সয়েছেন, তাঁরা বুঝবেন যে সুকুমারদা লিফট দিয়ে আমাকে কত বড় সাহায্য করেছেন। সুকুমারদার আদি বাড়ি ছিল আমাদের বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলায়। একটু বাম ঘেঁষাও ছিলেন। আমাকে স্নেহ করেই 'এই বাঙ্গাল' বলতেন। এই সুকুমারদা একদিন লোকসভায় প্রেস গ্যালারিতে আমার উচ্ছ্বাস দেখে থামিয়ে দিলেন। তিনি বললেন, 'এই বাঙ্গাল। অত গদগদ হয়ে যেয়ো না। এমপির আসনে বসা সবাইকে তো চেন না। ওইদিকে দেখো। ওই দুই সারিতে ত্রিশটা আসন গোয়েংকাদের। আর ওখানে বিশটা বিড়লাদের। টাটাদেরও আছে কয়েকটা।' টাটা, গোয়েংকা, বিড়লারা যে ভারতীয় ধনকুবের, ব্যবসাজগতের কর্ণধার, সেটুকু জানতাম। বিড়লারা গান্ধীজির দেখভাল করতেন এবং তাঁর মাধ্যমে ভারতীয় কংগ্রেসের নীতি প্রভাবিত করতে চাইতেন, তাও শুনেছি, কিন্তু তাই বলে ওই ধনীরা লোকসভায় আসন রিজার্ভ করে রেখেছে, এমন কথা কখনো কল্পনায়ও আসেনি। সুকুমারদাকে প্রশ্ন করলাম, 'তা কী করে হয়?' তিনি বললেন, 'এইটাও বোঝে না, হইছে পলিটিক্যাল করেসপনডেন্ট।' তিনি বলে চললেন, 'শোনো বাঙ্গাল, কংগ্রেস দলের যে লোকগুলোকে বিড়লারা নিয়মিত পয়সা কড়ি দিয়ে তাদের কনস্টিটিউয়েন্সি ঠিক রাখে আর ভোটের সময় নির্বাচনের খরচ জোগায় তাদের মধ্যে অন্তত বিশজন এবারও এমপি হয়েছে। একইভাবে গোয়েংকাদের আছে ত্রিশ এমপি। টাটা-বিড়লা-গোয়েংকারা ওদের মনোনয়নটাও পাইয়ে দেয়। আর এমপি হওয়ার বিনিময়ে এরা ওই বণিকদের স্বার্থ আদায় করে দেয় সরকারের কাছ থেকে।' এবার বুঝলাম। ১৯৯৫ সালে ইন্দিরা গান্ধী এলাহাবাদ হাই কোর্টের রায়ে তাঁর লোকসভা সদস্যপদ হারানোর পর ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য যে জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন কংগ্রেস দলীয় লোকসভা সদস্যরা যে তাঁর বিরুদ্ধে টুঁ-শব্দটি করেনি তা দেখেও মনে হয়েছিল, এঁদের অনেকেই প্রকৃতভাবে স্বাধীন স্বত্বাধারী নন, কোথাও এঁদের স্বার্থ আছে, কোথাও এদের গাঁটছড়া বাঁধা। কঠিন সেন্সরশিপের নিগড়ে পড়ে সেই জরুরি অবস্থায় স্বৈরাচারী চেহারা আমিও দেখেছি। কোনো স্বাধীনচেতা রাজনীতিবিদ কী করে তা মানবেন, বিশেষ করে ভারতে, যেখানে গণতন্ত্রের শিকড় বহু গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত। এসব প্রশ্নের তো একটাই উত্তর হয়, কোনো না কোনো রকম স্বার্থের শিকলে বাঁধা আছেন এসব সদস্য।
ওই কথাগুলো কোনো দিনই ভুলতে পারিনি। আর যত দিন যাচ্ছে ততই দেখছি ভারতের সমাজে কিছু মাত্রাছাড়া ধনীর উত্থান এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে লোভ ও দুর্নীতির বিস্তার লাভ। ভারতে টুজি মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক স্থাপনের লাইসেন্স দেওয়ায় আকাশছোঁয়া পরিমাণ অর্থের দুর্নীতি হওয়ার অভিযোগ এনেছেন সেখানকার অডিটর জেনারেল। তার জের ধরে প্রকাশ পেয়েছে সরকারি কর ও এতদসংক্রান্ত বিভাগের গোয়েন্দারা নীরা রাদিয়া নামে এক নারী লবিকারীর এবং তাঁর গণসংযোগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ফোন ট্যাপ করে আবিষ্কার করেছেন যে ব্যবসায়িক স্বার্থ উদ্ধারের জন্য ভারতের তাবৎ বড়লোক ভারতের কেন্দ্র ও প্রদেশের রাজনীতিবিদদের উৎকোচ তো দেনই, তা ছাড়াও ওই ব্যবসায়ীরা নানাভাবে নিশ্চিত করেন, তাদের স্বার্থ রক্ষা করে দেবেন এমন ব্যক্তিরা যেন মন্ত্রীর পদ পান। টেলিফোনে আড়ি পেতে সরকারি গোয়েন্দারা মাকড়সার জালের মতো যেসব প্রভাব-নেটওয়ার্কের খবর পেয়েছেন তাতে রতন টাটা, মুকেশ আম্বানি, সুনীল মিত্তাল সবারই নাম এসেছে। ওই টুজি কেলেঙ্কারির নায়ক সাবেক টেলিযোগাযোগমন্ত্রী এ রাজা (তিনি সম্ভবত এখন আটক আছেন) ও নীরা রাদিয়ার আলাপ থেকে এও জানা গেছে, কেন্দ্রে সরকার গঠনের সময় তামিলনাড়ুর কিংবদন্তিতুল্য নেতা করুণানিধির এক সন্তানের মাধ্যমে তাঁকে প্রভাবিত করে এ রাজাকে টেলিযোগাযোগমন্ত্রী নিয়োগ করতে কংগ্রেসকে প্রভাবিত করা হয় (সূত্র : ইন্ডিয়া টুডে)।
এ সংক্রান্ত সর্বশেষ দুটি সংবাদ_ভারত সরকারের জন্য একটি ভালো এবং আরেকটি খারাপ। ভালো খবরটি হলো, বর্তমানে যে ভারতীয় সংসদীয় কমিটি টুজি কেলেঙ্কারি তদন্ত করেছে তারা প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে নির্দোষ বলেছে। আর খারাপ খবরটি হলো, বিশ্বখ্যাত উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ বলেছেন, তাঁর প্রতিষ্ঠানের হাতে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোর গোপন অ্যাকাউন্টধারীদের যে তালিকা ও তাঁদের লুকায়িত অর্থ সম্পর্কে তথ্য এসেছে, তা পড়ে তিনি দেখেছেন যে সুইস ব্যাংকে যে ব্যক্তিরা টাকা লুকিয়ে রেখেছেন তাঁদের মধ্যে সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি হচ্ছেন ভারতীয়রা। অর্থাৎ মানি লন্ডারিং ও দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করায় বিশ্বের শীর্ষস্থানে আছেন ভারতীয় ধনীরা। জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ বলেছেন, তিনি আরো বিস্মিত হয়েছেন এটা লক্ষ করে যে ভারত সরকার এসব গোপন অর্থ দেশে ফেরত নেওয়ার কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। অ্যাসাঞ্জ বলেছেন, বিষয়টি তাঁর কাছে এ জন্য আরো অবোধ্য ঠেকছে এই কারণে যে পাচার করা অর্থ নিজ দেশে ফিরিয়ে নিলে ভারত সরকার তো অনেক টাকা রাজস্ব পেত। জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ বলেছেন, তিনি আরো কিছু প্রমাণ সংগ্রহ করে সুইস ব্যাংকের গোপন অ্যাকাউন্টধারীদের নাম প্রকাশ করবেন।
ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার নির্বাচন চলছে। তাতেও কালো টাকা ব্যবহার করার বহু অভিযোগ উঠেছে। এসব মিলিয়ে ভারতের দুর্নীতি ও সে দেশের রাজনীতিতে এর প্রভাব নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। আমার মনে হয়, বিষয়টির প্রতি বাংলাদেশে আমাদেরও গভীর মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। কারণ আমরা ভারত ও ভারতীয় অতি ধনী এবং ভারতীয় ব্যবসায়ীদের জন্য মুক্ত বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও কানেক্টিভিটির ধুয়া তুলে আমাদের সব দরজা খুলে দিয়েছি। ভারতের বর্তমান দুর্নীতি কেলেঙ্কারিতে যাদের নাম এসেছে তাঁরাও বাংলাদেশে টেলিযোগাযোগসহ অন্যান্য ব্যবসায় শাখা-প্রশাখা বিস্তার করেছেন। আমরা এঁদের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছি কি?
লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট

No comments

Powered by Blogger.