পাহাড়েও জিয়াই নন্দ ঘোষ! by আতাউস সামাদ
বাংলাদেশের বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ বহুদিন ধরেই জেনারেল জিয়াউর রহমানের ব্যাপারে ভীষণ স্পর্শকাতর। এই নিহত রাষ্ট্রপতির নাম শুনলেই এখনকার শাসক দলের প্রায় প্রত্যেকের যেন চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত জ্বলে ওঠে।
তাঁদের অনেকেই মুখ বাঁকান ও নাক সিটকান কোথাও তার নাম উচ্চারিত হওয়া মাত্রই। তারা এমন একটা ধারণা দেন যেন বাংলাদেশের সমস্ত নষ্টের মূলে আছেন জিয়াউর রহমান। আবার এও সত্য যে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কেও জেনারেল জিয়ার প্রতিষ্ঠা করা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে (বিএনপি) বহু সদস্য একই রকম দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন। বর্তমানে বিএনপির সদস্যদের অনেকেই শেখ মুজিবুর রহমানকে জনগণ ভালোবেসে যে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দিয়েছিল ১৯৬৯ সালে সেই সম্মানসূচক শব্দটি তো তার নামের আগে ব্যবহার করেনই না এমনকি দেশের স্থপতি রাষ্ট্রপতিও বলেন না। তাদের চোখে শেখ মুজিবুর রহমান একজন গণতন্ত্র ধ্বংসকারীর বিরুদ্ধে মতাবলম্বীদের নির্যাতনকারী এবং ক্ষমতালিপ্সু একনায়কতান্ত্রিক শাসক যিনি দেশের জন্য রেখে গেছেন দুর্নীতি, অভাব আর অপশাসন। এর সম্মানজনক ব্যতিক্রম যে একেবারে নেই তা নয়। যেমন, ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদে মুক্তিযোদ্ধা মরহুম কর্নেল আকবর বিএনপির সদস্য হিসেবেই বলেছিলেন, ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে, নেতার নাম বলেছি বঙ্গবন্ধু এবং সে কথা মনে করলে এখনও শরীরে শিহরণ হয়, গায়ের লোম দাঁড়িয়ে পড়ে। তবে এ কথাও স্বীকার করতে হবে যে, তিনি পরবর্তী সময়ে অনেক ভুল করেছেন।’ অবশ্য সেদিনও কর্নেল আকবরের খুব বেশি সমর্থক মেলেনি। কিন্তু আজ যখন দেশের জন্য প্রয়োজন সামনের দিকে ছুটে চলা তখন এই বিদ্বেষ, হিংসা ও সন্দেহের বিষবাষ্প যে আমাদের অসুস্থ করে ফেলে, আমাদের অগ্রযাত্রা থামিয়ে দেয়, অতঃপর পেছনের দিকে ঠেলে দেয়। তা যেন আমরা ভাবতে চাই না।
ফেব্রুয়ারির ১৮ তারিখ থেকে এ পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রামে যে দুঃখজনক ঘটনাগুলো ঘটল তা বাংলাদেশের সরকার তো বটেই জনগণের জন্যও খুবই দুশ্চিন্তার বিষয়। সেজন্যই এই সমস্যা সম্পর্কে সবারই খুব সতর্কভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা উচিত। কিন্তু সরকারের কেউই তা করলেন না। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাঘাইছড়ি ও খাগড়াছড়ির সহিংসতার জন্য সব দোষ চাপালেন ‘যুদ্ধাপরাধী ও সরকার বিরোধীদের’ উপর। আর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম গত শনিবার বললেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা সৃষ্টি করেছেন জিয়াউর রহমান। তিনি সমতল থেকে বাঙালিদের নিয়ে গিয়ে সেখানে তাদের পুনর্বাসন করায় দেখা দিয়েছে আজকের যত সমস্যা।
আর একজন পুলিশ কর্মকর্তা ঘোষণাই করলেন যে, ঢাকা থেকে পাঠানো টাকা ব্যবহার করে স্থানীয় কিছু উস্কানিদাতা এসব ঘটিয়েছে।
এখন একজন নাগরিকের দেশের যে কোনো স্থানে আইন মেনে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করার সাংবিধানিক অধিকার আছে এই বিষয়ে মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম কী বলেন তা জানতে চাওয়া যায়। কিন্তু সেসব বিতর্কে না গিয়ে ইতিহাসের ধারা দেখিয়ে যদি বলা হয় যে, পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা শুরু হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখন থেকেই কারণ, ১৯৭০ সালে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে নির্বাচিত এবং পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রপতির ফরমান বলে বাংলাদেশের গণপরিষদ সদস্যে রূপান্তরিত, শ্রী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা ওই আমলেই বাংলাদেশের সব নাগরিক বাঙালি তত্কালীন প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা মেনে নেননি। বরঞ্চ শ্রী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা বঙ্গবন্ধুর আমলেই পার্বত্য জনসংহতি সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন। ওই আমলেই তার অনুজ শ্রী সন্তু লারমা শান্তিবাহিনী প্রতিষ্ঠা করেন এবং দুই ভ্রাতা চাকমা বিদ্রোহ আরম্ভ করেন। সেই সময় রামগড় থানায় সম্ভবত একটি হামলাও করে বিদ্রোহীরা। বঙ্গবন্ধুর প্রবল জনপ্রিয়তা তো এই বিদ্রোহের অবসান ঘটাতে পারেনি! তর্কের খাতিরে আপাতত ধরে নেয়া যাক যে মুক্তিযোদ্ধা রাষ্ট্রপতি জেনারেল জিয়াউর রহমান, বীর উত্তম, পার্বত্য চট্টগ্রামে বাংলাদেশের সমতল এলাকা থেকে নদী ভাঙনে গৃহহীন হয়ে যাওয়া গরিব কৃষকদের পার্বত্য চট্টগ্রামে পাঠান এবং তাতে পাহাড়ে বসবাসকারীরা খুবই ক্ষুব্ধ হন ও এর ফলে বিদ্রোহীরা তাদের তত্পরতা বৃদ্ধি করে। তারা সমতল থেকে আগত বসত স্থাপনকারী বহু ব্যক্তিকে হত্যাও করে। জেনারেল জিয়াউর রহমান এই বিদ্রোহ দমন করার জন্য ওই এলাকায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করেন। সেনা সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে পাহাড়ি বিদ্রোহীরাও নিহত হতে থাকেন। কিন্তু এরপরও দেখা যাচ্ছে যে, জেনারেল এরশাদ রাষ্ট্রপতি হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর শক্তি আরও বৃদ্ধি করেন। এই বিষয়ে জেনারেল এরশাদ একাধিকবার প্রকাশ্য মন্তব্য করেছেন যে, বাংলাদেশের সেনাবাহিনী বিদ্রোহীদের দমন না করলে পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকা বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত। সেখানে সেনাবাহিনীর সাফল্যের জন্য তাদেরকে অভিনন্দন জানানো উচিত। তিনি মন্তব্য করেছেন। আওয়ামী লীগ গত নির্বাচন করেছে একটা মহাজোট করে। এই মহাজোটের শরিকদের মধ্যে আওয়ামী লীগের পরই সবচেয়ে বড় দল হচ্ছে জাতীয় পার্টি। এই জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হলেন জেনারেল এরশাদ। তিনি বর্তমান জাতীয় সংসদের একজন সদস্যও বটে। এই জেনারেল এরশাদের আমলে তার নির্দেশনায় ও নেতৃত্বে, বাংলাদেশের সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদ্রোহী শান্তি বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করেছে, তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে পুরো নয়টি বছর। এখন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম তাদের মহাজোটের অন্যতম নেতা জেনারেল এরশাদকে সে জন্য বকাবকি করবেন, না কি তার কাছ থেকে পরামর্শ চাইবেন যে বর্তমান সমস্যা সমাধান করার জন্য কী করলে ভালো হয়। এ ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেবেন সেটা মহাজোটের মহাশরিক আওয়ামী লীগের নেতারা স্থির করবেন, কারণ প্রাথমিকভাবে এটা তাদের ব্যাপার। কিন্তু আমরা এটুকু বলতে পারি—পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার জন্য জেনারেল জিয়াকে গালমন্দ করলে জেনারেল এরশাদকেও তাদের সমালোচনার মধ্যে পড়তে হবে। আশা করি তারা এদিকটা ভালোভাবে ভেবে দেখবেন। আমার মনে হয় বর্তমান পরিকল্পনামন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল একে খোন্দকারও কিছু পরামর্শ দিতে পারবেন। কারণ তিনি জেনারেল এরশাদের সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন বলে মনে পড়ছে (তার পদের নাম অন্য কিছু থাকলেও)।
পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা প্রসঙ্গে আরও দুটো কথা বলা যায়। কাপ্তাই জলবিদ্যুত্ প্রকল্পের জন্য কাপ্তাই হ্রদ কৃত্রিমভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে। এ কাজটির ফলে চাকমা রাজার আদি বাড়িটিসহ মস্তবড় একটি বসতি ও বহু উর্বর জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। তখন পার্বত্য এলাকায় বসবাসকারী বহু মানুষ গৃহহীন ও ভূমিহীন হন। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয় পাকিস্তান আমলে। সেই সময়েও আওয়ামী লীগ একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক দল ছিল। ওই দলটি কী তখন কাপ্তাই পানি বিদ্যুত্ প্রকল্পের বিরোধিতা করেছিল? আমার তেমন কিছু মনে পড়ছে না। মজার ব্যাপার হলো, ওই বিদ্যুত্ কেন্দ্রের উত্পাদন থেকে এক ওয়াট বিদ্যুত্ও তখন পার্বত্য চট্টগ্রাম পায়নি। তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার জন্য শুধু এক ব্যক্তিকে দোষারোপ করা কেন? দ্বিতীয় কথাটি হলো, বৈশ্বিক আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে যদি বাংলাদেশের বর্তমান উপজাতীয় অঞ্চল সত্যিই ডুবে যায় এবং দেশের ভেতরে নদী ভাঙন বৃদ্ধি পেয়ে বেশকিছু জনবসতি লোপ পায় তাহলে ওইসব এলাকার বাস্তুহারারা তো একটা বাসস্থানের জন্য শুষ্ক জায়গা খুঁজবে। তাদের অনেকে যদি তখন পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ের কোলে গিয়ে আশ্রয় নেয়, সে সময় তখন তাদের মানা করা বা নিবৃত্ত করা যাবে কোন যুক্তিতে? আমি তো মনে করি যে, সরকারের উচিত এখন থেকেই ওই রকম পরিস্থিতির জন্য তৈরি হওয়া। আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে এও বলি যে, বাংলাদেশে কখনও যদি আণবিক শক্তি, গ্যাস, কয়লা, সৌরশক্তি ও বাতাসের শক্তি দিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিদ্যুত্ উত্পাদন করা যায় তাহলে কাপ্তাই পানি বিদ্যুত্ প্রকল্পটির প্রয়োজন থাকবে না এবং তখন ওটি বন্ধ করে দিয়ে কাপ্তাই বাঁধটি অবলুপ্ত করে হ্রদের পানি ছেড়ে দিয়ে জলমগ্ন সমস্ত ভূমি পুনরুদ্ধার করে ওখান থেকে উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলোকে সেখানে পুনর্বাসন করা যেতে পারে। হিসাব করলে দেখা যায় যে, এখনই সারা দেশের বিদ্যুত্ উত্পাদনের একটি ছোট অংশ আসছে কাপ্তাই থেকে। তবে যেহেতু আমাদের চাহিদার তুলনায় বর্তমানে বিদ্যুত্ উত্পাদনে ঘাটতি আছে, তাই ওই কয়েকশ’ মেগাওয়াট বিদ্যুতও আমাদের প্রয়োজন পড়ছে। তবে ভবিষ্যতে অন্য দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করার কথা বিবেচনায় রাখা উচিত ।
পার্বত্য চট্টগ্রামে যে পাহাড়ি-বসতকারী দাঙ্গা হয়ে গেল এটা একই সঙ্গে লজ্জাজনক ও দুশ্চিন্তাকর। সরকার ও প্রশাসন সজাগ এবং তত্পর থাকলে ক্ষয়ক্ষতি এত ব্যাপক হতো না। এখানে সবারই মনে রাখা দরকার যে এই হাঙ্গামায় পাহাড়ি এবং বসতিস্থাপনকারী দুই ধরনের মানুষেরই অনেক ক্ষতি হয়েছে। এদিকে বর্তমান অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে মাছ শিকার করতে নেমেছেন কেউ কেউ। যেমন কোনো কোনো রাজনীতিক মন্তব্য করেছেন যে, সেনাবাহিনী যেখানে ছিল হাঙ্গামা সেখানেই হয়েছে, যেমন সাজেক এলাকা। এর উত্তরে বলতে হয়, সেনাবাহিনী যেখানে ছিল না সেখানে আরও ভয়ঙ্কর এবং ব্যাপকতর হাঙ্গামা ও অগ্নিসংযোগ হলো কীভাবে, যেমন—খাগড়াছড়ি শহর ও আশপাশের এলাকায়? অতীতে পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যার ব্যাপারে বিদেশিরা হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করেছে, ভারত তো এতে ছিলই, এবারও তারা অগ্নিতে ঘৃতাহুতি দেয়ার জন্য তত্পর হয়ে উঠেছে। অতীতেও পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যাকে কোনো কোনো বিদেশি শক্তি ‘মুসলমানদের দ্বারা বৌদ্ধদের’ ধ্বংস করা চেষ্টা হিসেবে বর্ণনা করেছে। এবারও তাদের কেউ কেউ ধর্মের ধুয়া টেনে আনছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন অস্বীকার করেছে সেনাবাহিনী বনাম পাহাড়ি ইস্যু। আর ঘটনা শুরু হওয়ার পর কয়েকদিন পর্যন্ত নাম-ডাকওয়ালা ঢাকার কয়েকটি দৈনিক পত্রিকা কেবল ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর কথাই বলে গেছে। একইরকম ক্ষতিগ্রস্ত বাঙালি বসতকারীদের কথা প্রায় উল্লেখই করেনি।
এসব ব্যাপারে সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে। একটু কষ্ট করে অতীত অধ্যয়ন করতেই হবে টেকসই সমাধান বের করার জন্য। কিন্তু সরকারের মন্ত্রীদের কারও কারও কথা শুনলে মনে হয় না যে তেমন ইচ্ছা তাদের আছে। যেমন, গত শনিবার একজন উচ্চশিক্ষিত পূর্ণ মন্ত্রী টেলিভিশনের সামনে বললেন, ‘১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় সিমলা চুক্তি’। কথাটা একেবারে ভুল। ১৯৭১-এর যুদ্ধাবস্থা অবসানের জন্য সিমলায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে শীর্ষ বৈঠক করে একটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি করেন শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী ও জুলফিকার আলী ভুট্টো। সেটাই আজ পর্যন্ত সিমলা চুক্তি নামে বিখ্যাত আর বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নয়াদিল্লিতে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয় ১৯৭৪ সালে। এই চুক্তিতেই বাংলাদেশ ১৯৫ জন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী পাকিস্তানি সৈনিককে ক্ষমা করে দেয়। এই ক্ষমা প্রদর্শনের সিদ্ধান্তে তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উক্তির উল্লেখ আছে। এই চুক্তি সই করেন বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন, ভারতের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার শরণ সিং এবং পাকিস্তানের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আজিজ আহমেদ। তো থাকগে সে কথা। পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার সমাধানের বিষয়ে আগেও সরকারকে অনুরোধ করেছি সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে কাজ করতে। আজ আবারও একই অনুরোধ করছি।
লেখার শুরুতে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পারস্পরিক বিদ্বেষের কথা তুলেছিলাম। তা তুলেছিলাম একথা বলতে যে, ওই দুই রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান ও নেতাকে সব ব্যাপারে দোষারোপ করে বর্তমানের সব সমস্যার কারণ বা সমাধান পাওয়া যাবে না। বরঞ্চ তাদের দু’জনই এমনকিছু ভালো কাজ করেছেন যেগুলোর ফল আমরা এখনও পাচ্ছি এবং তাদের পরবর্তী সরকারগুলো সেসব কাজের ধারাবাহিকতা রাখতে বাধ্য হয়েছে। একটু খোঁজ-খবর করে সেসব বিষয় উল্লেখ করে বিস্তারিত লেখার ইচ্ছা রইল।
ফেব্রুয়ারির ১৮ তারিখ থেকে এ পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রামে যে দুঃখজনক ঘটনাগুলো ঘটল তা বাংলাদেশের সরকার তো বটেই জনগণের জন্যও খুবই দুশ্চিন্তার বিষয়। সেজন্যই এই সমস্যা সম্পর্কে সবারই খুব সতর্কভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা উচিত। কিন্তু সরকারের কেউই তা করলেন না। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাঘাইছড়ি ও খাগড়াছড়ির সহিংসতার জন্য সব দোষ চাপালেন ‘যুদ্ধাপরাধী ও সরকার বিরোধীদের’ উপর। আর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম গত শনিবার বললেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা সৃষ্টি করেছেন জিয়াউর রহমান। তিনি সমতল থেকে বাঙালিদের নিয়ে গিয়ে সেখানে তাদের পুনর্বাসন করায় দেখা দিয়েছে আজকের যত সমস্যা।
আর একজন পুলিশ কর্মকর্তা ঘোষণাই করলেন যে, ঢাকা থেকে পাঠানো টাকা ব্যবহার করে স্থানীয় কিছু উস্কানিদাতা এসব ঘটিয়েছে।
এখন একজন নাগরিকের দেশের যে কোনো স্থানে আইন মেনে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করার সাংবিধানিক অধিকার আছে এই বিষয়ে মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম কী বলেন তা জানতে চাওয়া যায়। কিন্তু সেসব বিতর্কে না গিয়ে ইতিহাসের ধারা দেখিয়ে যদি বলা হয় যে, পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা শুরু হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখন থেকেই কারণ, ১৯৭০ সালে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে নির্বাচিত এবং পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রপতির ফরমান বলে বাংলাদেশের গণপরিষদ সদস্যে রূপান্তরিত, শ্রী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা ওই আমলেই বাংলাদেশের সব নাগরিক বাঙালি তত্কালীন প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা মেনে নেননি। বরঞ্চ শ্রী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা বঙ্গবন্ধুর আমলেই পার্বত্য জনসংহতি সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন। ওই আমলেই তার অনুজ শ্রী সন্তু লারমা শান্তিবাহিনী প্রতিষ্ঠা করেন এবং দুই ভ্রাতা চাকমা বিদ্রোহ আরম্ভ করেন। সেই সময় রামগড় থানায় সম্ভবত একটি হামলাও করে বিদ্রোহীরা। বঙ্গবন্ধুর প্রবল জনপ্রিয়তা তো এই বিদ্রোহের অবসান ঘটাতে পারেনি! তর্কের খাতিরে আপাতত ধরে নেয়া যাক যে মুক্তিযোদ্ধা রাষ্ট্রপতি জেনারেল জিয়াউর রহমান, বীর উত্তম, পার্বত্য চট্টগ্রামে বাংলাদেশের সমতল এলাকা থেকে নদী ভাঙনে গৃহহীন হয়ে যাওয়া গরিব কৃষকদের পার্বত্য চট্টগ্রামে পাঠান এবং তাতে পাহাড়ে বসবাসকারীরা খুবই ক্ষুব্ধ হন ও এর ফলে বিদ্রোহীরা তাদের তত্পরতা বৃদ্ধি করে। তারা সমতল থেকে আগত বসত স্থাপনকারী বহু ব্যক্তিকে হত্যাও করে। জেনারেল জিয়াউর রহমান এই বিদ্রোহ দমন করার জন্য ওই এলাকায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করেন। সেনা সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে পাহাড়ি বিদ্রোহীরাও নিহত হতে থাকেন। কিন্তু এরপরও দেখা যাচ্ছে যে, জেনারেল এরশাদ রাষ্ট্রপতি হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর শক্তি আরও বৃদ্ধি করেন। এই বিষয়ে জেনারেল এরশাদ একাধিকবার প্রকাশ্য মন্তব্য করেছেন যে, বাংলাদেশের সেনাবাহিনী বিদ্রোহীদের দমন না করলে পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকা বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত। সেখানে সেনাবাহিনীর সাফল্যের জন্য তাদেরকে অভিনন্দন জানানো উচিত। তিনি মন্তব্য করেছেন। আওয়ামী লীগ গত নির্বাচন করেছে একটা মহাজোট করে। এই মহাজোটের শরিকদের মধ্যে আওয়ামী লীগের পরই সবচেয়ে বড় দল হচ্ছে জাতীয় পার্টি। এই জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হলেন জেনারেল এরশাদ। তিনি বর্তমান জাতীয় সংসদের একজন সদস্যও বটে। এই জেনারেল এরশাদের আমলে তার নির্দেশনায় ও নেতৃত্বে, বাংলাদেশের সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদ্রোহী শান্তি বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করেছে, তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে পুরো নয়টি বছর। এখন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম তাদের মহাজোটের অন্যতম নেতা জেনারেল এরশাদকে সে জন্য বকাবকি করবেন, না কি তার কাছ থেকে পরামর্শ চাইবেন যে বর্তমান সমস্যা সমাধান করার জন্য কী করলে ভালো হয়। এ ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেবেন সেটা মহাজোটের মহাশরিক আওয়ামী লীগের নেতারা স্থির করবেন, কারণ প্রাথমিকভাবে এটা তাদের ব্যাপার। কিন্তু আমরা এটুকু বলতে পারি—পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার জন্য জেনারেল জিয়াকে গালমন্দ করলে জেনারেল এরশাদকেও তাদের সমালোচনার মধ্যে পড়তে হবে। আশা করি তারা এদিকটা ভালোভাবে ভেবে দেখবেন। আমার মনে হয় বর্তমান পরিকল্পনামন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল একে খোন্দকারও কিছু পরামর্শ দিতে পারবেন। কারণ তিনি জেনারেল এরশাদের সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন বলে মনে পড়ছে (তার পদের নাম অন্য কিছু থাকলেও)।
পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা প্রসঙ্গে আরও দুটো কথা বলা যায়। কাপ্তাই জলবিদ্যুত্ প্রকল্পের জন্য কাপ্তাই হ্রদ কৃত্রিমভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে। এ কাজটির ফলে চাকমা রাজার আদি বাড়িটিসহ মস্তবড় একটি বসতি ও বহু উর্বর জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। তখন পার্বত্য এলাকায় বসবাসকারী বহু মানুষ গৃহহীন ও ভূমিহীন হন। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয় পাকিস্তান আমলে। সেই সময়েও আওয়ামী লীগ একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক দল ছিল। ওই দলটি কী তখন কাপ্তাই পানি বিদ্যুত্ প্রকল্পের বিরোধিতা করেছিল? আমার তেমন কিছু মনে পড়ছে না। মজার ব্যাপার হলো, ওই বিদ্যুত্ কেন্দ্রের উত্পাদন থেকে এক ওয়াট বিদ্যুত্ও তখন পার্বত্য চট্টগ্রাম পায়নি। তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার জন্য শুধু এক ব্যক্তিকে দোষারোপ করা কেন? দ্বিতীয় কথাটি হলো, বৈশ্বিক আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে যদি বাংলাদেশের বর্তমান উপজাতীয় অঞ্চল সত্যিই ডুবে যায় এবং দেশের ভেতরে নদী ভাঙন বৃদ্ধি পেয়ে বেশকিছু জনবসতি লোপ পায় তাহলে ওইসব এলাকার বাস্তুহারারা তো একটা বাসস্থানের জন্য শুষ্ক জায়গা খুঁজবে। তাদের অনেকে যদি তখন পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ের কোলে গিয়ে আশ্রয় নেয়, সে সময় তখন তাদের মানা করা বা নিবৃত্ত করা যাবে কোন যুক্তিতে? আমি তো মনে করি যে, সরকারের উচিত এখন থেকেই ওই রকম পরিস্থিতির জন্য তৈরি হওয়া। আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে এও বলি যে, বাংলাদেশে কখনও যদি আণবিক শক্তি, গ্যাস, কয়লা, সৌরশক্তি ও বাতাসের শক্তি দিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিদ্যুত্ উত্পাদন করা যায় তাহলে কাপ্তাই পানি বিদ্যুত্ প্রকল্পটির প্রয়োজন থাকবে না এবং তখন ওটি বন্ধ করে দিয়ে কাপ্তাই বাঁধটি অবলুপ্ত করে হ্রদের পানি ছেড়ে দিয়ে জলমগ্ন সমস্ত ভূমি পুনরুদ্ধার করে ওখান থেকে উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলোকে সেখানে পুনর্বাসন করা যেতে পারে। হিসাব করলে দেখা যায় যে, এখনই সারা দেশের বিদ্যুত্ উত্পাদনের একটি ছোট অংশ আসছে কাপ্তাই থেকে। তবে যেহেতু আমাদের চাহিদার তুলনায় বর্তমানে বিদ্যুত্ উত্পাদনে ঘাটতি আছে, তাই ওই কয়েকশ’ মেগাওয়াট বিদ্যুতও আমাদের প্রয়োজন পড়ছে। তবে ভবিষ্যতে অন্য দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করার কথা বিবেচনায় রাখা উচিত ।
পার্বত্য চট্টগ্রামে যে পাহাড়ি-বসতকারী দাঙ্গা হয়ে গেল এটা একই সঙ্গে লজ্জাজনক ও দুশ্চিন্তাকর। সরকার ও প্রশাসন সজাগ এবং তত্পর থাকলে ক্ষয়ক্ষতি এত ব্যাপক হতো না। এখানে সবারই মনে রাখা দরকার যে এই হাঙ্গামায় পাহাড়ি এবং বসতিস্থাপনকারী দুই ধরনের মানুষেরই অনেক ক্ষতি হয়েছে। এদিকে বর্তমান অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে মাছ শিকার করতে নেমেছেন কেউ কেউ। যেমন কোনো কোনো রাজনীতিক মন্তব্য করেছেন যে, সেনাবাহিনী যেখানে ছিল হাঙ্গামা সেখানেই হয়েছে, যেমন সাজেক এলাকা। এর উত্তরে বলতে হয়, সেনাবাহিনী যেখানে ছিল না সেখানে আরও ভয়ঙ্কর এবং ব্যাপকতর হাঙ্গামা ও অগ্নিসংযোগ হলো কীভাবে, যেমন—খাগড়াছড়ি শহর ও আশপাশের এলাকায়? অতীতে পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যার ব্যাপারে বিদেশিরা হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করেছে, ভারত তো এতে ছিলই, এবারও তারা অগ্নিতে ঘৃতাহুতি দেয়ার জন্য তত্পর হয়ে উঠেছে। অতীতেও পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যাকে কোনো কোনো বিদেশি শক্তি ‘মুসলমানদের দ্বারা বৌদ্ধদের’ ধ্বংস করা চেষ্টা হিসেবে বর্ণনা করেছে। এবারও তাদের কেউ কেউ ধর্মের ধুয়া টেনে আনছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন অস্বীকার করেছে সেনাবাহিনী বনাম পাহাড়ি ইস্যু। আর ঘটনা শুরু হওয়ার পর কয়েকদিন পর্যন্ত নাম-ডাকওয়ালা ঢাকার কয়েকটি দৈনিক পত্রিকা কেবল ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর কথাই বলে গেছে। একইরকম ক্ষতিগ্রস্ত বাঙালি বসতকারীদের কথা প্রায় উল্লেখই করেনি।
এসব ব্যাপারে সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে। একটু কষ্ট করে অতীত অধ্যয়ন করতেই হবে টেকসই সমাধান বের করার জন্য। কিন্তু সরকারের মন্ত্রীদের কারও কারও কথা শুনলে মনে হয় না যে তেমন ইচ্ছা তাদের আছে। যেমন, গত শনিবার একজন উচ্চশিক্ষিত পূর্ণ মন্ত্রী টেলিভিশনের সামনে বললেন, ‘১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় সিমলা চুক্তি’। কথাটা একেবারে ভুল। ১৯৭১-এর যুদ্ধাবস্থা অবসানের জন্য সিমলায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে শীর্ষ বৈঠক করে একটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি করেন শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী ও জুলফিকার আলী ভুট্টো। সেটাই আজ পর্যন্ত সিমলা চুক্তি নামে বিখ্যাত আর বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নয়াদিল্লিতে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয় ১৯৭৪ সালে। এই চুক্তিতেই বাংলাদেশ ১৯৫ জন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী পাকিস্তানি সৈনিককে ক্ষমা করে দেয়। এই ক্ষমা প্রদর্শনের সিদ্ধান্তে তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উক্তির উল্লেখ আছে। এই চুক্তি সই করেন বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন, ভারতের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার শরণ সিং এবং পাকিস্তানের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আজিজ আহমেদ। তো থাকগে সে কথা। পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার সমাধানের বিষয়ে আগেও সরকারকে অনুরোধ করেছি সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে কাজ করতে। আজ আবারও একই অনুরোধ করছি।
লেখার শুরুতে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পারস্পরিক বিদ্বেষের কথা তুলেছিলাম। তা তুলেছিলাম একথা বলতে যে, ওই দুই রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান ও নেতাকে সব ব্যাপারে দোষারোপ করে বর্তমানের সব সমস্যার কারণ বা সমাধান পাওয়া যাবে না। বরঞ্চ তাদের দু’জনই এমনকিছু ভালো কাজ করেছেন যেগুলোর ফল আমরা এখনও পাচ্ছি এবং তাদের পরবর্তী সরকারগুলো সেসব কাজের ধারাবাহিকতা রাখতে বাধ্য হয়েছে। একটু খোঁজ-খবর করে সেসব বিষয় উল্লেখ করে বিস্তারিত লেখার ইচ্ছা রইল।
No comments