মদ বিক্রির টাকায় বেতন-ভাতা, কেরুর ২৫ কোটি টাকা চিনি অবিক্রিত by আনজাম খালেক
বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের আওতাধীন দেশের সর্ববৃহৎ চিনিকল চুয়াডাঙ্গার দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ২০১১-১২ উৎপাদন মৌসুমের ২৫ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের ৪ হাজার ৬৬৫ দশমিক ৬০ মেট্রিক টন চিনি অবিক্রিত অবস্থায় গুদামে পড়ে রয়েছে।
ডিস্ট্রিলারি বিভাগের মদ বিক্রির টাকা দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দেওয়া হচ্ছে। এসত্বেও চিনিকলটি বর্তমানে চরম আর্থিক সংকটে পড়েছে।
চিনিকল সূত্রে জানা গেছে, জেলার একমাত্র ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি চিনিকল। চলতি বছর কেরুর চিনিকলে ৪ হাজার ৪৭৩ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদিত হয়েছে। গত মৌসুমের অবিক্রিত চিনি রয়েছে ১৯২ দশমিক ৬০ মেট্রিক টন।
সরকার নির্ধারিত দরে এ চিনির বাজার মূল্য প্রায় ২৪ কোটি ৭০ লাখ ৮৭ হাজার টাকা। এ চিনিকলের উৎপাদিত চিনি গুণগত মান সম্পন্ন হওয়ার পরও বেসরকারি রিফাইনারি মিলগুলো মুক্তবাজার অর্থনীতির সুযোগে সরকারের নির্ধারিত দরের চেয়ে কমদামে বাজারে চিনি বিক্রি করছে।
ফলে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত চিনি অবিক্রিই থেকে যাচ্ছে। গুদামজাত চিনি বিক্রি করার জন্য ব্যবসায়ীদের দ্বারে দ্বারে ধর্ণা দিলেও আশানুরুপ চিনি বিক্রি করতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি।
কেরু চিনিকলের উৎপাদিত চিনির বাজার মূল্য বেশি হওয়ায় ডিলাররাও তাদের নির্ধারিত কোটার চিনি উত্তোলন করা থেকে বিরত আছে। ইতোমধ্যে চিনিশিল্পের সদর দফতর খোলাবাজারে চিনি বিক্রির অনুমতি দিলেও এখন পর্যন্ত কেরু কর্তৃপক্ষ চিনি বিক্রি করেছে মাত্র ৭৪ দশমিক ৬০ মেট্রিক টন।
সূত্র আরও জানায়, ২০১১-১২ আখ মাড়াই মওসুমে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো ১৩ হাজার একর জমির দেড়লাখ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে চিনি উৎপাদন করবে ১১ হাজার ৫৫০ মেট্রিক টন। ১২০ মাড়াই দিবস নির্ধারণ ছিলো।
পরে চিনিকল কর্তৃপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে তা সংশোধন করা হয়। মিলের নিজস্ব ১ হাজার ৭৪ একর জমিসহ সর্বমোট ৯ হাজার ২৫ একর জমিতে ১ লাখ মেট্রিকটন আখ থাকায় কার্যদিবস কমিয়ে আনা হয় ৮0তে। যা মাড়াই করে চিনি উৎপাদন হওয়ার কথা ছিলো ৭ হাজার ৭শ মেট্রিক টন।
চিনি আহরণের গড় হার ধরা হয়েছিলো ৭ দশমিক ৭০। বেশ কয়েকদিন ধরে আখ না থাকায় মিলে আখ সরবরাহ বন্ধ থাকে। দফায় দফায় নো ক্যানের কারণে মিল বন্ধ রাখতে হয়েছে। ১২ ফেব্রুয়ারি চলতি বছরের আখ মাড়াই কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে।
সূত্র বলেছে, এবারো লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলো না কেরু চিনিকলের। ৫৮ মাড়াই দিবসে কেরু চিনিকল কর্তৃপক্ষ ৬৩ হাজার ৫৩৬ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে চিনি উৎপাদন করেছে মাত্র ৪ হাজার ১৮৮ দশমিক ৩৫ মেট্রিক টন। যা লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকের সামান্য বেশি।
তবে প্রতি বছর ২ মাস করে মিলে আখ মাড়াই করলে কীভাবে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিয়ে পুষবে তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। চলতি আখ মাড়াই মওসুমে কেরু চিনিকল কর্তৃপক্ষের এ খাতে প্রায় ১৩ কোটি টাকা লোকসান গুনতে হবে।
১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত চিনি কলটিতে চিনি উৎপাদনের ক্ষেত্রে ৯০ দশকের পর থেকে লোকসান দিয়েই চলেছে। লোকসানের জন্য আমলাতান্ত্রিক জটিলতাই দায়ী বলে মনে করছেন সচেতনমহল।
এ বিষয়ে চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম সুদর্শন মল্লিক বাংলানিউজকে বলেন, ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত চিনির মূল্য কম হওয়ায় স্থানীয় ডিলারসহ বাইরের ডিলার তাদের বরাদ্দকৃত চিনি উত্তোলন করছেন না।
এখন শুধু ডিলার নয়- যে কেউ কিনতে আসলেই তার কাছে চিনি বিক্রি করা হবে। অন্যান্য মিলে চিনি বিক্রির টাকায় শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন নির্ভর হওয়ায় সেখানে জটিলতা থাকলেও এখানে তা নেই।
চিনির ডিলার আঃ রহিম ও আঃ খালেক বাংলানিউজকে বলেন, কেরু কোম্পানির ৫০ কেজি এক বস্তা চিনির দাম ২৭শ ৫০ টাকা, লেবার খরচ ২০ টাকা। বাজারে অন্য চিনির দাম ২৬শ ২০ টাকা।
তারা বলেন, বর্তমানে কেরুর উৎপাদিত চিনি ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের চিনির মত পরিষ্কার নয়। ফলে হোটেলগুলোতে খুব ক্রাইসিস না হলে কেরুর চিনি চলে না। এছাড়াও গত ডিসেম্বর মাসে ৩ টন চিনি বরাদ্দ পেয়েছিলাম। সে চিনি ডেলেভারি নিতে হবে চিটাগাং থেকে।
গাড়ি ভাড়া দিয়ে চিনি আনতে খরচ পড়বে অনেক। তারপরও ৫০ কেজির বস্তায় কম থাকবে ৫ কেজি। জেনে শুনেতো আর লোকসান গুনতে পারি না বলে তারা জানালেন।
মুক্তবাজার অর্থনীতির দোহাই দিয়ে সরকার খাদ্য শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদিত পণ্যের বাজার নষ্ট করছে। এভাবে চলতে থাকলে এসব প্রতিষ্ঠান একদিন এমনি এমনিই বন্ধ হয়ে যাবে।
চিনিকল সূত্রে জানা গেছে, জেলার একমাত্র ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি চিনিকল। চলতি বছর কেরুর চিনিকলে ৪ হাজার ৪৭৩ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদিত হয়েছে। গত মৌসুমের অবিক্রিত চিনি রয়েছে ১৯২ দশমিক ৬০ মেট্রিক টন।
সরকার নির্ধারিত দরে এ চিনির বাজার মূল্য প্রায় ২৪ কোটি ৭০ লাখ ৮৭ হাজার টাকা। এ চিনিকলের উৎপাদিত চিনি গুণগত মান সম্পন্ন হওয়ার পরও বেসরকারি রিফাইনারি মিলগুলো মুক্তবাজার অর্থনীতির সুযোগে সরকারের নির্ধারিত দরের চেয়ে কমদামে বাজারে চিনি বিক্রি করছে।
ফলে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত চিনি অবিক্রিই থেকে যাচ্ছে। গুদামজাত চিনি বিক্রি করার জন্য ব্যবসায়ীদের দ্বারে দ্বারে ধর্ণা দিলেও আশানুরুপ চিনি বিক্রি করতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি।
কেরু চিনিকলের উৎপাদিত চিনির বাজার মূল্য বেশি হওয়ায় ডিলাররাও তাদের নির্ধারিত কোটার চিনি উত্তোলন করা থেকে বিরত আছে। ইতোমধ্যে চিনিশিল্পের সদর দফতর খোলাবাজারে চিনি বিক্রির অনুমতি দিলেও এখন পর্যন্ত কেরু কর্তৃপক্ষ চিনি বিক্রি করেছে মাত্র ৭৪ দশমিক ৬০ মেট্রিক টন।
সূত্র আরও জানায়, ২০১১-১২ আখ মাড়াই মওসুমে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো ১৩ হাজার একর জমির দেড়লাখ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে চিনি উৎপাদন করবে ১১ হাজার ৫৫০ মেট্রিক টন। ১২০ মাড়াই দিবস নির্ধারণ ছিলো।
পরে চিনিকল কর্তৃপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে তা সংশোধন করা হয়। মিলের নিজস্ব ১ হাজার ৭৪ একর জমিসহ সর্বমোট ৯ হাজার ২৫ একর জমিতে ১ লাখ মেট্রিকটন আখ থাকায় কার্যদিবস কমিয়ে আনা হয় ৮0তে। যা মাড়াই করে চিনি উৎপাদন হওয়ার কথা ছিলো ৭ হাজার ৭শ মেট্রিক টন।
চিনি আহরণের গড় হার ধরা হয়েছিলো ৭ দশমিক ৭০। বেশ কয়েকদিন ধরে আখ না থাকায় মিলে আখ সরবরাহ বন্ধ থাকে। দফায় দফায় নো ক্যানের কারণে মিল বন্ধ রাখতে হয়েছে। ১২ ফেব্রুয়ারি চলতি বছরের আখ মাড়াই কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে।
সূত্র বলেছে, এবারো লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলো না কেরু চিনিকলের। ৫৮ মাড়াই দিবসে কেরু চিনিকল কর্তৃপক্ষ ৬৩ হাজার ৫৩৬ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে চিনি উৎপাদন করেছে মাত্র ৪ হাজার ১৮৮ দশমিক ৩৫ মেট্রিক টন। যা লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকের সামান্য বেশি।
তবে প্রতি বছর ২ মাস করে মিলে আখ মাড়াই করলে কীভাবে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিয়ে পুষবে তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। চলতি আখ মাড়াই মওসুমে কেরু চিনিকল কর্তৃপক্ষের এ খাতে প্রায় ১৩ কোটি টাকা লোকসান গুনতে হবে।
১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত চিনি কলটিতে চিনি উৎপাদনের ক্ষেত্রে ৯০ দশকের পর থেকে লোকসান দিয়েই চলেছে। লোকসানের জন্য আমলাতান্ত্রিক জটিলতাই দায়ী বলে মনে করছেন সচেতনমহল।
এ বিষয়ে চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম সুদর্শন মল্লিক বাংলানিউজকে বলেন, ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত চিনির মূল্য কম হওয়ায় স্থানীয় ডিলারসহ বাইরের ডিলার তাদের বরাদ্দকৃত চিনি উত্তোলন করছেন না।
এখন শুধু ডিলার নয়- যে কেউ কিনতে আসলেই তার কাছে চিনি বিক্রি করা হবে। অন্যান্য মিলে চিনি বিক্রির টাকায় শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন নির্ভর হওয়ায় সেখানে জটিলতা থাকলেও এখানে তা নেই।
চিনির ডিলার আঃ রহিম ও আঃ খালেক বাংলানিউজকে বলেন, কেরু কোম্পানির ৫০ কেজি এক বস্তা চিনির দাম ২৭শ ৫০ টাকা, লেবার খরচ ২০ টাকা। বাজারে অন্য চিনির দাম ২৬শ ২০ টাকা।
তারা বলেন, বর্তমানে কেরুর উৎপাদিত চিনি ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের চিনির মত পরিষ্কার নয়। ফলে হোটেলগুলোতে খুব ক্রাইসিস না হলে কেরুর চিনি চলে না। এছাড়াও গত ডিসেম্বর মাসে ৩ টন চিনি বরাদ্দ পেয়েছিলাম। সে চিনি ডেলেভারি নিতে হবে চিটাগাং থেকে।
গাড়ি ভাড়া দিয়ে চিনি আনতে খরচ পড়বে অনেক। তারপরও ৫০ কেজির বস্তায় কম থাকবে ৫ কেজি। জেনে শুনেতো আর লোকসান গুনতে পারি না বলে তারা জানালেন।
মুক্তবাজার অর্থনীতির দোহাই দিয়ে সরকার খাদ্য শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদিত পণ্যের বাজার নষ্ট করছে। এভাবে চলতে থাকলে এসব প্রতিষ্ঠান একদিন এমনি এমনিই বন্ধ হয়ে যাবে।
No comments