সুস্বাস্থ্য আয়ু বৃদ্ধি করে by কাজী নওশাদ হোসেন
প্রতি বছরের মতো এ বছরও ফিরে এসেছে 'বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস'। এবারের স্লোগান_ 'সুস্বাস্থ্য জীবনে নতুন বছরের সংযোজন করে।' ৭ এপ্রিল বিশ্বব্যাপী এ দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে। ১৯৪৮ সালের ৭ এপ্রিল 'বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার' জন্মদিনকে স্মরণীয় করার নিমিত্তে প্রতি বছর এ বিশেষ দিনকে উদযাপন করা হয় বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ বছর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে মানবজীবনের মূলধারায় অর্থাৎ সুস্বাস্থ্য বা সুস্থ স্বাস্থ্যের ওপর, যার আক্ষরিক প্রয়োজনীয়তার চেয়ে জাগতিক জীবনে সুস্থভাবে জীবনধারণ ও জীবনযাপন করার প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি।
প্রতি বছর একটি নতুন বিষয়ের ওপর দৃষ্টিপাত করার মাধ্যমে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস একটি সমন্বিত ও সম্মিলিত কার্যক্রম পরিচালনার মধ্য দিয়ে সর্বসাধারণের সুস্বাস্থ্য অর্জনের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। এ বছরের থিম লাইন হচ্ছে এজিং অ্যান্ড হেলথ। আমরা জানি, এজিং হচ্ছে একটি প্রাকৃতিক ও অবিসংবাদিত সত্য। বর্তমানে চিকিৎসাবিজ্ঞান তথা বিজ্ঞানের নানা শ্রেষ্ঠ আবিষ্কারের মাধ্যমে বেড়েছে আমাদের গড় আয়ু, যার অমোঘ ফলাফল ভোগ করছি আমরা সবাই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে। তথ্যভিত্তিক বিভিন্ন বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অন্তর্ভুক্ত সাউথইস্ট এশিয়া রিজিয়নের সদস্য দেশগুলোর বর্তমান জনসংখ্যার ৮%; ৬০ বছরের বেশি, যা আগামী ২০২৫ সালে বেড়ে দাঁড়াবে ১২% এবং ২০৫০ সালে হবে ২০%-এরও বেশি। প্রবীণ সমাজ আমাদের সামাজিক জীবনে নানা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে 'পজেটিভ' গতির সঞ্চার করে; যেমন- আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে, আর্থ-সামাজিক সহযোগিতায়, হেলথ কেয়ার সিস্টেম পরিচালনায় এবং পাশাপাশি পরিবার, কমিউনিটি ও রাষ্ট্রের অগ্রগতির ক্ষেত্রে প্রবীণ সমাজের প্রত্যেক সদস্য নিরলস ভারসাম্যের সৃষ্টি করে থাকেন।
প্রতিটি রাষ্ট্র তার বিভিন্ন পরিকল্পনা ও পরিচালনায় বয়স্ক জনসাধারণকে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের নানা পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ক্ষেত্রগুলোতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করতে হবে, যা আমাদের ভবিষ্যৎ জীবনে উত্তরণের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। বন্ধুবৎসল প্রবীণ সমাজ তৈরি করতে স্বাস্থ্য ছাড়াও শিক্ষা, চাকরি, শ্রমবাজার, অর্থনৈতিক, সামাজিক নিরাপত্তা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, বাসস্থান এবং গ্রাম-নগরকেন্দ্রিক সামাজিক উন্নয়নে আমাদের অনেক বেশি গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। ডবি্লউএইচও রিসার্চ বিশেষজ্ঞ মনিক তাসাংয়ের মতে, চিকিৎসা বিজ্ঞানের নব নব অত্যাধুনিক আবিষ্কৃত প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বয়স্ক জনসাধারণ তার শারীরিক সুস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে উপকৃত হচ্ছেন, যা সামাজিক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বয়স্ক জনসংখ্যা বিশ্বব্যাপী খুব দ্রুত বর্ধনশীল অবস্থায় রয়েছে, যা ক্রমেই ২০৫০ সালে দুই বিলিয়নে দাঁড়াবে অথবা প্রতি চারজনের মধ্যে একজনের আয়ু ৬০ বছরের বেশি হবে ২০৫০-এর দিকে।
ক্রমউন্নয়নশীল দেশগুলোতে এ বৃদ্ধির হার হবে দ্রুত এবং অনেক বেশি, যার নানা চাহিদা মেটানোর ক্ষেত্রে বাস্তবভিত্তিক অর্থনৈতিক অবকাঠামো প্রয়োজনের তুলনায় হবে অনেক কম ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ। আরও স্পর্শকাতর বিষয়টি হচ্ছে, আগামী ২০৫০ সালের দিকে পৃথিবীর ৮০ ভাগ জনসংখ্যার বেশি প্রবীণ জনগণ বসবাস করবেন এসব কর্মউন্নয়নশীল দেশে। আর ঠিক এ কারণেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মনে করে, গতিশীল সময়োপযোগী রিসার্চ, উপযুক্ত চিকিৎসা সামগ্রীর উন্নয়ন ও বাজারজাতকরণ দ্রুত, কম ও মাঝারি আয়ের দেশগুলোতে কার্যকর করতে হবে।
ডা. কাজী নওশাদ হোসেন :বিভাগীয় প্রধান, ব্লাড ব্যাংক
আইসিডিডিআরবি, ঢাকা
প্রতি বছর একটি নতুন বিষয়ের ওপর দৃষ্টিপাত করার মাধ্যমে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস একটি সমন্বিত ও সম্মিলিত কার্যক্রম পরিচালনার মধ্য দিয়ে সর্বসাধারণের সুস্বাস্থ্য অর্জনের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। এ বছরের থিম লাইন হচ্ছে এজিং অ্যান্ড হেলথ। আমরা জানি, এজিং হচ্ছে একটি প্রাকৃতিক ও অবিসংবাদিত সত্য। বর্তমানে চিকিৎসাবিজ্ঞান তথা বিজ্ঞানের নানা শ্রেষ্ঠ আবিষ্কারের মাধ্যমে বেড়েছে আমাদের গড় আয়ু, যার অমোঘ ফলাফল ভোগ করছি আমরা সবাই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে। তথ্যভিত্তিক বিভিন্ন বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অন্তর্ভুক্ত সাউথইস্ট এশিয়া রিজিয়নের সদস্য দেশগুলোর বর্তমান জনসংখ্যার ৮%; ৬০ বছরের বেশি, যা আগামী ২০২৫ সালে বেড়ে দাঁড়াবে ১২% এবং ২০৫০ সালে হবে ২০%-এরও বেশি। প্রবীণ সমাজ আমাদের সামাজিক জীবনে নানা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে 'পজেটিভ' গতির সঞ্চার করে; যেমন- আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে, আর্থ-সামাজিক সহযোগিতায়, হেলথ কেয়ার সিস্টেম পরিচালনায় এবং পাশাপাশি পরিবার, কমিউনিটি ও রাষ্ট্রের অগ্রগতির ক্ষেত্রে প্রবীণ সমাজের প্রত্যেক সদস্য নিরলস ভারসাম্যের সৃষ্টি করে থাকেন।
প্রতিটি রাষ্ট্র তার বিভিন্ন পরিকল্পনা ও পরিচালনায় বয়স্ক জনসাধারণকে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের নানা পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ক্ষেত্রগুলোতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করতে হবে, যা আমাদের ভবিষ্যৎ জীবনে উত্তরণের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। বন্ধুবৎসল প্রবীণ সমাজ তৈরি করতে স্বাস্থ্য ছাড়াও শিক্ষা, চাকরি, শ্রমবাজার, অর্থনৈতিক, সামাজিক নিরাপত্তা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, বাসস্থান এবং গ্রাম-নগরকেন্দ্রিক সামাজিক উন্নয়নে আমাদের অনেক বেশি গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। ডবি্লউএইচও রিসার্চ বিশেষজ্ঞ মনিক তাসাংয়ের মতে, চিকিৎসা বিজ্ঞানের নব নব অত্যাধুনিক আবিষ্কৃত প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বয়স্ক জনসাধারণ তার শারীরিক সুস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে উপকৃত হচ্ছেন, যা সামাজিক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বয়স্ক জনসংখ্যা বিশ্বব্যাপী খুব দ্রুত বর্ধনশীল অবস্থায় রয়েছে, যা ক্রমেই ২০৫০ সালে দুই বিলিয়নে দাঁড়াবে অথবা প্রতি চারজনের মধ্যে একজনের আয়ু ৬০ বছরের বেশি হবে ২০৫০-এর দিকে।
ক্রমউন্নয়নশীল দেশগুলোতে এ বৃদ্ধির হার হবে দ্রুত এবং অনেক বেশি, যার নানা চাহিদা মেটানোর ক্ষেত্রে বাস্তবভিত্তিক অর্থনৈতিক অবকাঠামো প্রয়োজনের তুলনায় হবে অনেক কম ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ। আরও স্পর্শকাতর বিষয়টি হচ্ছে, আগামী ২০৫০ সালের দিকে পৃথিবীর ৮০ ভাগ জনসংখ্যার বেশি প্রবীণ জনগণ বসবাস করবেন এসব কর্মউন্নয়নশীল দেশে। আর ঠিক এ কারণেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মনে করে, গতিশীল সময়োপযোগী রিসার্চ, উপযুক্ত চিকিৎসা সামগ্রীর উন্নয়ন ও বাজারজাতকরণ দ্রুত, কম ও মাঝারি আয়ের দেশগুলোতে কার্যকর করতে হবে।
ডা. কাজী নওশাদ হোসেন :বিভাগীয় প্রধান, ব্লাড ব্যাংক
আইসিডিডিআরবি, ঢাকা
No comments