যে খবর নাড়া দেয়-অনাকাঙ্খিত ঘুম
সকালে উঠে স্কুলে যাওয়ার কথা মিতু আর খাদিজার। ওদের মা শিরিনা খাতুনের সঙ্গে ওরা ঘুমাচ্ছিল নির্বিঘ্নেই। নিজ বাড়িতে কোনো অপঘাত আসতে পারে—এমন কোনো দুর্ভাবনাই তাদের ছিল না। কিন্তু নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার গোজাখালিকান্দা গ্রামে ৩১ মার্চটি এসেছিল অস্বাভাবিকভাবে।
একটি বালুবোঝাই ট্রাক হঠাৎ করে রাস্তা থেকে নেমে হানা দিল ওই গ্রামে ওদেরই বাড়িতে। তিনজনই নিহত হলো। আর ওদের বাবা মিজানুর রহমান, যিনি চাকরিসূত্রে ছিলেন খাগড়াছড়িতে, তিনি মুহূর্তের মধ্যেই হারালেন প্রিয়জনদের। এই শোক বহন করার ক্ষমতা কি তাঁর আছে—জানতে চায় মন, আবার মনে হয়, এটা কি জিজ্ঞেস করার মতো প্রশ্ন; উত্তর তো সবারই জানা। খবরটি প্রথম আলোয় বেরিয়েছে ১ এপ্রিল।
কল্পনায় যেন দেখতে পাচ্ছি ১৩ আর ৭ বছরের দুটি ফুটফুটে মেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে মায়ের চারপাশে। মা হয়তো রাঁধছেন তাদেরই জন্য। একটু পরে পড়ার বই খুলে বসে ওরা। কিংবা বাবার কথা ভাবতে থাকে। ছুটি পেলে বাবা নিশ্চয় ওদের কাছে আসবেন। তখন সব আবদার করা যাবে। ওদের চোখের অমীমাংসিত স্বপ্নগুলো তো আমরা কল্পনা করে বের করতে পারব না, কিন্তু জানি, রূপকথার গল্পের মতোই কিছু স্বপ্ন ছিল ওদের দুজনের চোখে। স্বপ্ন ছিল ওদের মায়ের চোখে। কিন্তু ভোররাতের ট্রাক সেই স্বপ্নগুলোকে চিরদিনের মতো বিদায় করে দিল।
অমসৃণ রাস্তাঘাট কিংবা প্রশিক্ষণহীন যানচালকের প্রতি বিষোদ্গার করাই যায়। কিন্তু এ খবর পড়ে এ ঘটনার জন্য কে দায়ী, এ ধরনের প্রশ্নের চেয়ে অন্য একটি ভাবনাই আমাকে বিহ্বল করে তুলছে। জ্বলজ্যান্ত তিনটি মানুষকে বাড়িতে রেখে যিনি খাগড়াছড়িতে গিয়েছিলেন মাসকাবারে বেতনের জন্য, তিনি যখন তিনটি লাশ দেখলেন বাড়ি ফিরে, তাঁর চোখের পানি কি পৃথিবীর মহাসাগরের উথাল-পাতাল লবণাক্ত পানির চেয়ে একটুও কম?
—জাহীদ রেজা নূর
কল্পনায় যেন দেখতে পাচ্ছি ১৩ আর ৭ বছরের দুটি ফুটফুটে মেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে মায়ের চারপাশে। মা হয়তো রাঁধছেন তাদেরই জন্য। একটু পরে পড়ার বই খুলে বসে ওরা। কিংবা বাবার কথা ভাবতে থাকে। ছুটি পেলে বাবা নিশ্চয় ওদের কাছে আসবেন। তখন সব আবদার করা যাবে। ওদের চোখের অমীমাংসিত স্বপ্নগুলো তো আমরা কল্পনা করে বের করতে পারব না, কিন্তু জানি, রূপকথার গল্পের মতোই কিছু স্বপ্ন ছিল ওদের দুজনের চোখে। স্বপ্ন ছিল ওদের মায়ের চোখে। কিন্তু ভোররাতের ট্রাক সেই স্বপ্নগুলোকে চিরদিনের মতো বিদায় করে দিল।
অমসৃণ রাস্তাঘাট কিংবা প্রশিক্ষণহীন যানচালকের প্রতি বিষোদ্গার করাই যায়। কিন্তু এ খবর পড়ে এ ঘটনার জন্য কে দায়ী, এ ধরনের প্রশ্নের চেয়ে অন্য একটি ভাবনাই আমাকে বিহ্বল করে তুলছে। জ্বলজ্যান্ত তিনটি মানুষকে বাড়িতে রেখে যিনি খাগড়াছড়িতে গিয়েছিলেন মাসকাবারে বেতনের জন্য, তিনি যখন তিনটি লাশ দেখলেন বাড়ি ফিরে, তাঁর চোখের পানি কি পৃথিবীর মহাসাগরের উথাল-পাতাল লবণাক্ত পানির চেয়ে একটুও কম?
—জাহীদ রেজা নূর
No comments