বিমানবাহিনীর কর্মকর্তার মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হয়নি

র‌্যাবের দুই কোটি টাকা লুটের ঘটনা তদন্ত করতে চট্টগ্রামে এসে মারা যাওয়া বিমান-বাহিনীর কর্মকর্তা স্কোয়াড্রন লিডার মামুনুর রশিদের লাশ গতকাল শুক্রবার বাদ আসর ঢাকার তেজগাঁওয়ে অবস্থিত বিমানবাহিনীর নিজস্ব কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।


এর আগে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত হয়। ময়নাতদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, কিছু পরীক্ষা এখনো বাকি আছে। তাই কী কারণে মামুনুর মারা গেছেন, সে বিষয়ে এখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল সকাল সাড়ে নয়টায় বিমানবাহিনীর কর্তৃপক্ষের কাছে লাশ হস্তান্তর করে পুলিশ। দুপুরে চট্টগ্রামে বিমানবাহিনীর জহুরুল হক ঘাঁটিতে লাশের প্রথম জানাজা হয়।
মামুনুর রশিদের পারিবারিক সূত্র জানায়, প্রথম দফা জানাজার পর দুপুর আড়াইটার দিকে একটি হেলিকপ্টার লাশ নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে উড়াল দেয়। এ সময় মামুনুরের ছোট ভাই ও মামাশ্বশুর এবং বিমানবাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তারা হেলিকপ্টারে ছিলেন। বিকেল তিনটা ৫৫ মিনিটে হেলিকপ্টারটি ঢাকার কুর্মিটোলায় অবতরণ করে।
মামুনুরের শ্যালক প্রকৌশলী মো. ওয়ালিদ বিন কাশেম প্রথম আলোকে জানান, বাদ আসর লাশের দ্বিতীয় দফা জানাজা হয় বিমানবাহিনীর সদর দপ্তর এলাকায়। পরে তেজগাঁও বিমানবাহিনীর নিজস্ব কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
পারিবারিক সূত্র জানায়, মামুনুরের জানাজায় বিমানবাহিনীর প্রধানসহ পদস্থ কর্মকর্তা ও আত্মীয়রা অংশ নেন। ওয়ালিদ বলেন, ‘দুলাভাইয়ের (মামুনুর) রক্তচাপ ছিল। তবে হূদেরাগের সমস্যার কথা শুনিনি।’ গতকাল মামুনুরের লাশের ময়নাতদন্ত করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক প্রদীপ কুমার নাথ। তিনি বলেন, ‘মামুনুরের শরীরে জখমের কোনো চিহ্ন নেই। তাঁর হার্টে একটু সমস্যা ছিল বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। তবে বিষয়টি নিশ্চিত করতে আমরা ভিসেরা প্যাথলোজিতে পাঠাব। এ ছাড়া তাঁর উচ্চ রক্তচাপ ছিল বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে। বুধবার রাতে খাবারের পর তিনি নাকি বমি করেছেন। এসব আসলে হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ। তবে এখনই চূড়ান্ত মন্তব্য করা যাবে না।’ কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) থেকে ভিসেরা প্রতিবেদন ও ল্যাব থেকে প্রতিবেদন দ্রুত সংগ্রহ করার চেষ্টা চলছে। সাপ্তাহিক ছুটির কারণে ফরেনসিক নমুনার পরীক্ষা হয়নি।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশ নগরের স্টেশন রোডের হোটেল সিলভার ইনের ২১৩ নম্বর কক্ষ থেকে মামুনুরের লাশ উদ্ধার করে। তিনি ঢাকার কুর্মিটোলায় বিমানবাহিনীর দপ্তরে কর্মরত ছিলেন। আনোয়ারার তালসরা দরবারে র‌্যাবের দুই কোটি টাকা ডাকাতির ঘটনায় বিমানবাহিনীর একজন কর্মকর্তার সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি তদন্ত করতে তিনি মঙ্গলবার চট্টগ্রামে এসেছিলেন। বুধবার দিনভর তিনি তদন্ত করেন। বৃহস্পতিবার বেলা তিনটার গাড়িতে তাঁর ঢাকায় চলে যাওয়ার কথা ছিল।

No comments

Powered by Blogger.