বিশেষ সাক্ষাৎকার-ভারত লাভবান হলে ফি দিতে সমস্যা কোথায় by আশফাকুর রহমান

পেশাদার কূটনীতিক আশফাকুর রহমানের জন্ম ঢাকায়। অর্থনীতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেওয়ার পর পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন ১৯৭০ সালে। ’৭৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও জেলায় দায়িত্ব পালন শেষে তিনি যোগ দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।


কূটনীতিক হিসেবে লন্ডন, তেহরান, স্টকহোম ও মস্কোতে দায়িত্ব পালন করে তিনি ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন বেশ কয়েক বছর। এরপর সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পান ১৯৯৬ সালে। পরবর্তী সময়ে তিনি জার্মানি, চীনে রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে ২০০৭ সালে অবসর গ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি সেন্টার ফর ফরেন অ্যাফেয়ার্স স্টাডিজের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
 সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এ কে এম জাকারিয়া

প্রথম আলো  ২০১০ সালের জানুয়ারিতে ভারত সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সম্পর্কের এক নতুন যুগের সূচনা হলো। এরপর এক বছরেরও বেশি সময় পার হয়ে গেছে। বিষয়টি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
আশফাকুর রহমান  দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়কে তাৎক্ষণিকভাবে দেখা যায় না। আর এর কোনো ফলাফলও দ্রুত পাওয়া যায় না। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় দুই পক্ষের মধ্যে অনেক বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে, যা কার্যকর ও বাস্তবায়ন করতে সময় লাগবে। এ ক্ষেত্রে যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো প্রাধান্য ঠিক করা, মানে কোন বিষয়গুলো আগে বাস্তবায়িত হবে, তা ঠিক করা এবং সে অনুযায়ী কাজ করা। দুই দেশকে একমত হয়েই এই প্রাধান্য ঠিক করতে হবে।
প্রথম আলো  দুই পক্ষ যে বিষয়গুলোতে একমত হয়েছে, সেখানে এখন পর্যন্ত ভারতের বিষয়গুলোই বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।
আশফাকুর রহমান  সেটা বলা যায়। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের পর যে দ্বিপক্ষীয় বিষয়গুলোতে অগ্রগতি দৃশ্যমান, তাতে দেখা যাচ্ছে, ভারতের বিষয়গুলোই প্রাধান্য পেয়েছে।
প্রথম আলো  যেমন?
আশফাকুর রহমান  বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারতের সবচেয়ে বড় বিবেচনার বিষয় হচ্ছে নিরাপত্তা। বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে যতটুকু করা সম্ভব, ইতিমধ্যেই তা করেছে। উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের বিচ্ছিন্নতাবাদী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর এ দেশে আশ্রয়-প্রশ্রয়ের অভিযোগ ছিল। বাংলাদেশ সরকার এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নিয়েছে। বিশেষ করে উলফার যেসব নেতা গোপনে বাংলাদেশে অবস্থান করছিলেন, তাঁদের আটক করা হয়েছে এবং অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। এসব ইস্যুতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার আর কোনো সুযোগ ভারতের নেই।
প্রথম আলো  ট্রানজিটের ক্ষেত্রেও তো বড় অগ্রগতি হয়েছে। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য যন্ত্রপাতি বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে পরিবহন করা হচ্ছে।
আশফাকুর রহমান  সংযোগ বা কানেকটিভিটি বলতে যা বোঝায়, তা আমরা ভারতকে দিয়েছি। তা কার্যকর হতে শুরু করেছে। এতে অর্থনৈতিকভাবে ভারত উপকৃত হবে। তবে এখানে একটি বিষয় পরিষ্কার করা প্রয়োজন, ট্রানজিট ও করিডরের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। ট্রানজিট হচ্ছে এক দেশ থেকে অন্য দেশে প্রবেশের জন্য তৃতীয় কোনো দেশের ভূখণ্ড ব্যবহার। ত্রিপুরায় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ভারত থেকে আসা পণ্য যেহেতু ভারতেই প্রবেশ করছে, তাই তাকে আসলে ট্রানজিট বলা যাবে না। এটা আসলে করিডর। আমরা ভারতকে করিডর দিচ্ছি তাদের পণ্য পরিবহনের সুবিধার জন্য।
প্রথম আলো  ট্রানজিট ফি নিয়ে এখন বিতর্ক শুরু হয়েছে। ফি থাকবে কি থাকবে না, এ নিয়ে নীতিনির্ধারক ও বিভিন্ন মহলের মধ্যে বিতর্ক চলছে।
আশফাকুর রহমান  দেখুন, ট্রানজিট একটি আন্তর্জাতিক বিষয়। এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নিয়মনীতি মেনেই আপনাকে ফি নির্ধারণ করতে হবে। ট্রানজিটের ক্ষেত্রে শুল্ক, মাশুল বা ফি—যা-ই বলি না কেন, সে ব্যাপারে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিএ) বিধান রয়েছে। সে অনুযায়ী বিষয়টি কার্যকর করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ভূখণ্ড ব্যবহারকারী বিভিন্ন আন্তর্জাতিক যানবাহনের অবস্থানের সময়, যাতায়াতের দূরত্ব, পণ্যের পরিমাণ, পরিবেশগত ও জাতীয় বিভিন্ন বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হয় এবং সে অনুযায়ী নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।
প্রথম আলো  আর করিডরের ক্ষেত্রে?
আশফাকুর রহমান  করিডর একটি দ্বিপক্ষীয় বিষয়। এটা দ্বিপক্ষীয়ভাবেই নির্ধারিত হওয়া উচিত। বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ভারত যদি আর্থিকভাবে লাভবান হয়, তবে এর জন্য শুল্ক বা মাশুল অবশ্যই দেওয়া উচিত। এর পরিমাণ কত হবে, কী হবে, তা দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে ঠিক করতে হবে।
প্রথম আলো  সরকারের অনেক নীতিনির্ধারক তো ফি না নেওয়ার কথা বলছেন।
আশফাকুর রহমান  ভারত যেহেতু বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছে, সে ক্ষেত্রে তা ভাগাভাগি করতে সমস্যা কোথায়। বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার না করে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোতে ভারত যে পণ্য পরিবহন করতে পারবে না, বিষয়টি এমন নয়। সমস্যা হচ্ছে যে এতে সময় ও অর্থ দুটিই বেশি খরচ হবে। এই বিবেচনা থেকে বাংলাদেশ তার ভূখণ্ডকে ব্যবহার করতে দিতে রাজি হয়েছে। ধরুন, ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে পণ্য পরিবহনে যে খরচ পড়ত, বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করায় খরচ ১০০ টাকা কম হলো। ভারতের যে ১০০ টাকা বেঁচে গেল, এ থেকে ৩০ টাকা বাংলাদেশ পেতে পারে। এটি একটি উদাহরণ। আমার কথা হচ্ছে, ভারতের যে লাভ হবে, তা থেকে কিছু অংশ অবশ্যই বাংলাদেশের পাওয়া উচিত। সেই অংশটি কত হবে, সেটা আলাপ-আলোচনা করে ঠিক করা যেতে পারে।
প্রথম আলো  বাংলাদেশ ভারতের নিরাপত্তার বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়েছে। ট্রানজিট, করিডর বা কানেকটিভিটি—যা-ই বলি না কেন, তা নিশ্চিত হয়েছে। এগুলো সবই দৃশ্যমান। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রীর সফরের পর কী পেল, তা কিন্তু জনগণের কাছে খুব দৃশ্যমান নয়। তা ছাড়া সীমান্তে হত্যার মতো বিষয়গুলো ঘটেই চলেছে। বিষয়টি আপনি কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন?
আশফাকুর রহমান  ভারত আমাদের যেমন প্রতিবেশী রাষ্ট্র, তেমনি বন্ধুরাষ্ট্রও। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে এই দেশটির ভূমিকার কথা কেউ অস্বীকার করবে না। কিন্তু এটাও সত্য যে ভারতের ব্যাপারে বাংলাদেশের জনগণের সন্দেহ-অবিশ্বাস রয়েছে, যা কাটিয়ে ওঠা দরকার দুই দেশের স্বার্থেই। এ ক্ষেত্রে ভারতের দায়িত্ব কিছু বিষয় আমাদের জনগণের কাছে দৃশ্যমান করা। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক এখন যথেষ্ট উষ্ণ। এ অবস্থায় যদি সীমান্তে একের পর এক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে থাকে, তবে বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে তা মেনে নেওয়া কঠিন। আধুনিক যুগে কোনো দেশের সীমান্তে এভাবে গুলি করে মানুষ হত্যা করা হয় না। চোরাচালান বা সীমান্তে অনুপ্রবেশ—এ ধরনের ঘটনা রোধে নানা ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে, কিন্তু গুলি করে মানুষ হত্যার কোনো নিয়ম হতে পারে না। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের অধিকাংশ স্থানে এখন বেড়া দেওয়া আছে। সীমান্ত গেটগুলোও নিয়ন্ত্রণ করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী। এ অবস্থায় গুলি করে মানুষ হত্যা মানবাধিকারের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। ভারতকে এই বিষয়টি সবার আগে বিবেচনায় নিতে হবে এবং এ ধরনের হত্যা পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে।
প্রথম আলো  আর কোন কোন বিষয়ে ভারতের নজর দেওয়া উচিত বলে মনে করেন?
আশফাকুর রহমান  দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে অভিন্ন নদীগুলোর পানি বণ্টন একটি বড় সমস্যা হিসেবে বিবেচিত। এসব সমস্যা সমাধানে ভারতকে আন্তরিকতার প্রমাণ দিতে হবে। বিশেষ করে তিস্তা নদীর বিষয়টি যত দ্রুত সম্ভব মীমাংসা করা উচিত। বাণিজ্য ক্ষেত্রে শুল্ক-অশুল্ক বাধাগুলো দূর করার ব্যাপারেও ভারতকে আন্তরিক হতে হবে। বিভিন্ন সময় এ ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি মিললেও বাস্তবে বাধাগুলো থেকেই যায়।
প্রথম আলো  বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যে বিষয়গুলোতে সমঝোতা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে, বাণিজ্যিক কারণে দুই দেশ পরস্পরের নৌ, রেল ও সড়কপথ ব্যবহার করবে। সে ক্ষেত্রে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে নেপাল ও ভুটানে ট্রানজিটের বিষয়টি রয়েছে। ভারত থেকে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি বা ১০০ কোটি ডলার ঋণ—এই বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে অগ্রগতি কতটুকু?
আশফাকুর রহমান  আগেই বলেছি, ভারতের বিষয়গুলো প্রাধান্য পেয়েছে বেশি। তবে কোনো কিছুতেই রাতারাতি ফল পাওয়া যায় না। এ জন্য সময় লাগে। ভুটান ও নেপালে প্রবেশের জন্য বাংলাদেশকে ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দিতে ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে রাজি হয়েছে। বিষয়টি শুধু ভারত ও বাংলাদেশের ব্যাপার নয়। এ নিয়ে নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশ ও ভারতের আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছে। সবকিছু ঠিক করতে কিছু সময় তো দিতে হবে। ভারত থেকে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি খুবই ইতিবাচক। এটাও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য গ্রিড তৈরি করতে হবে, যা রাতারাতি সম্ভব নয়। আর ১০০ কোটি ডলার ঋণের ব্যাপারে বলতে পারি, এই অর্থ কবে, কীভাবে আসবে, আর সুনির্দিষ্টভাবে কোন কোন খাতে কী পরিমাণ অর্থ খরচ হবে, তা সরকার এখনো প্রকাশ করেনি।
প্রথম আলো  প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের পর দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির পক্ষ থেকে ওই সফর ও সফরের ফলাফলকে ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিরোধিতা একটি বড় বিষয়। এখন সরকার যদি বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে কোনো দৃশ্যমান ফল না দেখাতে পারে, তবে রাজনৈতিক বিরোধীরা তো এর সুযোগ নেবে।
আশফাকুর রহমান  এ ধরনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিরোধিতা ও জনগণের সংবেদনশীলতাকে কাজে লাগানো যায়, যদি জনগণ বিষয়টি সম্পর্কে অন্ধকারে থাকে। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক যে একটি নতুন পর্যায়ে গেল এবং আমরা অনেক ক্ষেত্রে যে সদিচ্ছার প্রমাণ রাখলাম, এর বিনিময়ে আমরা কী পেলাম, তা জনগণকে জানানোর বিষয়টি খুবই জরুরি। সেটা না জানলেই এর রাজনৈতিক বিরোধিতা সহজ হয়। আমি মনে করি, সরকারের উচিত বিষয়গুলো জনগণের সামনে পরিষ্কার করা যে আমরা কী কী ক্ষেত্রে লাভবান হচ্ছি। ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির ক্ষেত্রে অগ্রগতি কী, ১০০ কোটি ডলার কবে পাওয়া যাবে, কোন কোন খাতে সুনির্দিষ্টভাবে ব্যবহার হবে, তার কী ফল পাওয়া যাবে এই বিষয়গুলো খোলামেলাভাবে তুলে ধরা। এ নিয়ে সংসদে আলোচনা হওয়া উচিত। সেটা করা গেলেই জনগণের মন থেকে সংশয়, সন্দেহ ও অবিশ্বাস কাটতে শুরু করবে।
প্রথম আলো  উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোয় যাতায়াতের পথ সহজ করে দিতে ভারতকে বাংলাদেশ ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দিচ্ছে। এই রাজ্যগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়ানোর ক্ষেত্রে কিছু করার আছে কি?
আশফাকুর রহমান  আমি মনে করি, এই রাজ্যগুলোয় বাংলাদেশের বিনিয়োগে উদ্যোগ নেওয়া উচিত। কারণ ভারতে অন্যান্য অঞ্চল থেকে বিনিয়োগ আসার চেয়ে বাংলাদেশের পক্ষে এসব রাজ্যে বিনিয়োগ করা সহজ। এ জন্য এই রাজ্যে বাংলাদেশের জন্য ইপিজেড ধরনের কিছু করার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। যোগাযোগব্যবস্থা ও সবকিছুর বিবেচনায় আমি মনে করি, প্রাথমিক পর্যায়ে ত্রিপুরা রাজ্যে এ ধরনের কিছু করা যায় কি না।
প্রথম আলো  যেকোনো দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে যোগাযোগের পাশাপাশি জনগণের মধ্যে যোগাযোগের বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হয়। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে এ ধরনের বিষয় কতটুকু ভূমিকা রাখতে পারে?
আশফাকুর রহমান  জনগণের মধ্যে যোগাযোগের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যেও যোগাযোগ বাড়ানো দরকার। ভারত ও বাংলাদেশ দুটিই সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশ। এই দুটি দেশের পার্লামেন্টের মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ থাকা উচিত, বাড়ানো উচিত। বিচার বিভাগের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানো যায়। দুই দেশেই শক্তিশালী নাগরিক সমাজ রয়েছে, এদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানো যায়, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানো যায়। তবে এ ধরনের ক্ষেত্রে ভিসা সমস্যা বড় হয়ে দাঁড়ায়। ভারতকে ভিসা ব্যবস্থা সহজ করতে হবে। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে মৈত্রী ট্রেন রয়েছে, কিন্তু সীমান্তে ভিসা-পাসপোর্ট চেক করতেই পাঁচ ঘণ্টা সময় লেগে যায়, অথচ ট্রেনেই এই কাজটি সারা যায়। এ ধরনের ক্ষেত্রে ভারতের মনোভাব পাল্টানো জরুরি। তবে জনগণের মধ্যে যোগাযোগের বিষয়টি আরও বাড়বে, যা সন্দেহ ও অবিশ্বাস দূর করতে সহায়তা করবে।
প্রথম আলো  আপনাকে ধন্যবাদ।
আশফাকুর রহমান  ধন্যবাদ।

No comments

Powered by Blogger.