মহাসড়কে চাঁদাবাজি-রক্ষকই যখন ভক্ষক

ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশের ওপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন রাখার। দূরপাল্লার যাত্রাপথে চালকরা যেন আইন লঙ্ঘন না করে সেটিও তাদের লক্ষ্য রাখার কথা। কিন্তু শনিবার সমকালের লোকালয় পাতায় 'দক্ষিণাঞ্চলগামী পণ্যবাহী ট্রাকে হাইওয়ে পুলিশের বেপরোয়া চাঁদাবাজি' শিরোনামের খবরে দেখা যায়, তাদের


অনেকেই অন্য ধরনের কাজে বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। ব্যবসায়ী ও ট্রাকচালকরা অভিযোগ করছেন, উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে আম, কাঁঠাল এবং সবজি নিয়ে বরিশাল ও পটুয়াখালীসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার সময় তাদের বাধ্যতামূলকভাবে চাঁদা দিতে হয়। একটি বা দুটি নয়, চাঁদা প্রদানের জন্য গাড়ি থামাতে হয় ২৫-৩০টি পয়েন্টে। এক একটি পয়েন্টে চাঁদার পরিমাণ ২০ থেকে ২০০ টাকা। এতে ব্যবসায়ী ও চালকদের ভোগান্তি বাড়ে, ব্যয় বেশি পড়ে ব্যবসায়ে এবং তার দায় চূড়ান্তভাবে পড়ে ভোক্তাদের ওপর। ফলে বাজারেও অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। বলা যায়, রক্ষকরাই এক্ষেত্রে ভক্ষকের ভূমিকা নিয়েছে। ট্রাকে যদি অতিরিক্ত মাল বোঝাই করা হয় কিংবা চালকরা যদি মহাসড়কে বেপরোয়া গতিতে চলতে থাকে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করাই যায়। প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট বসাতেও আপত্তি করার কথা নয়। এর পরিবর্তে জোরপূর্বক অর্থ আদায় কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। এসবের প্রতিকার তাহলে কে করবে? সড়ক ও মহাসড়কে চাঁদাবাজদের দাপট-দৌরাত্ম্যের কথা আমরা জানি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাজ হচ্ছে তাদের শায়েস্তা করা। কিন্তু পুলিশই যদি চাঁদাবাজ হয় তাহলে উপায়? তাদের এ কাজ সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদেরও উৎসাহ জোগাবে_ এটিই স্বাভাবিক। এ অভিযোগের ব্যাপারে হাইওয়ে পুলিশ বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে তা দেখার অপেক্ষায় থাকবে দেশবাসী। দেশের সড়কপথে এখন রয়েছে প্রায় অভিন্ন নেটওয়ার্ক। পদ্মায় সেতু নির্মিত হলে এ বৃত্ত পূর্ণাঙ্গ হবে। এ পথ নিরাপদ ও সচল রাখার দায়িত্ব পুলিশ বাহিনীর। কোথাও কেউ বিঘ্ন সৃষ্টি করলে তারা হস্তক্ষেপ করবে। তারা নির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন করে যাবে এবং অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকবে_ এটিই কাঙ্ক্ষিত।
 

No comments

Powered by Blogger.