ট্রানজিট বিতর্ক এবং সমতাভিত্তিক বাণিজ্য by আনু মাহমুদ
ট্রানজিট নিয়ে দেশজুড়ে চলছে অনেক বাকবিতণ্ডা। সরকারি দল বলছে, ভারতকে ট্রানজিট দিলে আমাদের লাভ হবে। আবার বিরোধী দলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ভারতকে ট্রানজিট দেওয়াটা হবে তার জন্য আত্মঘাতী হওয়ার শামিল। বিশিষ্টজনদের মধ্যেও বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য আসছে ট্রানজিট সম্পর্কে।
ট্রানজিট ইস্যু সম্পর্কে আলোচনা ইদানীং বেশি হলেও ভারত দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ট্রানজিট সুবিধা চাইছে। আমাদের পাশের দেশ ভারত একটি বিশাল দেশ। একসময় আমরাও ভারতীয় উপমহাদেশের অংশ ছিলাম। এখন দুটি দেশ আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্র। ভারত আমাদের পরীক্ষিত বন্ধুরাষ্ট্র। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধে ভারত আমাদের যে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে, তা আমরা কোনোদিন ভুলব না।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর করেন। ওই সময় দুই দেশের যৌথ ঘোষণায় ট্রানজিট সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তারপর থেকেই বিষয়টি ব্যাপক আলোচনায় আসে। মিডিয়ায় আমরা ট্রানজিটের ব্যাপারে অনেক প্রতিবেদন প্রকাশিত হতে দেখেছি। তবে বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞ এই অভিমত পোষণ করেছেন যে ট্রানজিট দিলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সুবিধা পাবে। আর ভারত তার পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে তাদের পণ্যসহ প্রয়োজনীয় মালামাল পাঠানোর ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা পাবে। এতে ভারতের একদিকে যেমন খরচ কম হবে, তেমনি সময়ও কম লাগবে। বাংলাদেশ সরকার ট্রানজিটের ব্যাপারে শুরু থেকেই ভারতের পাশাপাশি নেপাল ও ভুটানকে যুক্ত করে। বিভিন্ন দৈনিকের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, পূর্ণাঙ্গ ট্রানজিট সুবিধা দেওয়ার মতো অবকাঠামো বর্তমানে বাংলাদেশের নেই। ট্রানজিটের জন্য অবকাঠামো নির্মাণে একদিকে যেমন সময় দরকার, তেমনি প্রয়োজন অনেক অর্থ। কিন্তু ভারত সরকার চাইছে বিষয়টি দ্রুত করতে। বাংলাদেশ সরকারের ট্রানজিটের ব্যাপারে গঠন করা একটি বিশেষ কমিটির প্রতিবেদনে ট্রানজিটের বিকল্প হিসেবে আপাতত ট্রান্সশিপমেন্ট দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। বাংলাদেশ সফরকালে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী আনন্দ শর্মা বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেছেন, আন্তর্জাতিক রীতিনীতি মেনেই ট্রানজিটের জন্য বাংলাদেশকে মাসুল পরিশোধ করবে ভারত।
আধুনিক বিশ্ব এক ধরনের ইউনিটির মাধ্যমে চলছে। আমরা দেখছি, পুরো ইউরোপ এখন একটি ইউনিয়ন গড়ে তুলেছে। অথচ একসময় ইউরোপের দেশগুলো পরস্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত ছিল। এতে লাভ হয়নি কারোই। হয়েছে ক্ষতি। আমাদেরও আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে হবে। সার্কের মতো একটি সংগঠন গড়ে তোলা হলেও তা আজ পর্যন্ত তেমন কোনো কাজ করতে পারছে না। আমরা মনে করি, কেবল লোক দেখানো সংগঠন গড়ে তুললেই হবে না, রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে গড়ে তুলতে হবে আন্তরিকতা। আর এর জন্য চাই পারস্পরিক সুযোগ-সুবিধার প্রতি বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর নজর রাখা। বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে অনেক সমস্যা আছে। আমরা মনে করি, সময় এসেছে সব সমস্যা সমাধানের।
ট্রানজিটের বিনিময়ে যে মাসুলের কথা আমরা ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে শুনলাম, সে ব্যাপারে এখনই আমাদের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটি করতে হবে। লাভের অঙ্কটা যেমন সঠিক হতে হবে, তেমনি মাসুল আদায়ে কৌশলী হতে হবে। কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না। পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে অমীমাংসিত সব বিষয়ের মীমাংসাও এখনই করতে হবে।
বিশ্বব্যাপী আন্তরাষ্ট্রীয় সম্পর্কের সূচক এখন বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের ভিত্তিতে ওঠানামা করে। ইউরোপের দেশগুলো বহুকালের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত ভুলে যখন বৃহত্তর ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাঠামোর মধ্যে নতুন অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক নির্মাণের পথে বহুদূর এগিয়ে গেছে, আমাদের পার্শ্ববর্তী আসিয়ানভুক্ত দেশগুলো যখন শক্তিশালী অর্থনৈতিক জোট গড়ে নিজেদের উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে এগিয়ে নিচ্ছে, এমনকি আফ্রিকার দেশগুলোও যখন এ ব্যাপারে কার্যকর কর্মপন্থা নির্ধারণ করেছে, তখনো দক্ষিণ এশিয়া অনেকটা পিছিয়ে। রাজনৈতিক সম্পর্কের টানাপড়েন এখানকার আঞ্চলিক সহযোগিতার জোট সার্ককে সক্রিয় হতে দিচ্ছে না। ফলে এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যকার বাণিজ্যিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্কের ভিত্তিতে জোটবদ্ধতার উদ্যোগগুলো প্রত্যাশিত গতিতে বাস্তবায়িত হতে পারছে না। অবশ্য সাম্প্রতিককালে আশান্বিত হওয়ার মতো বেশ কিছু উদ্যোগ এসেছে। এ অঞ্চলের বৃহৎ রাষ্ট্র ভারত প্রতিবেশীদের সঙ্গে নতুন সম্পর্ক নির্মাণের জন্য সক্রিয় হয়েছে। ভারতের দিক থেকে দৃষ্টিভঙ্গিগতভাবে কিছু অগ্রগতি হয়েছে।
বাংলাদেশেও অতীতে যেমন ভারতবিরোধী মনোভাব দেখা যেত, তা এখন অনেকটাই অপসৃত। দেশ দুটি এখন নতুন অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক নির্মাণের জন্য প্রস্তুত। শুধু ভারতই নয়, আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ বৃহত্তর ভূমিকা রাখতে চায়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের পর বাংলাদেশের ইতিবাচক মনোভাব স্পষ্ট হয়েছে। কিন্তু মনোভাবের ইতিবাচকতাই একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত নয়। এর জন্য চাই সঠিক ও পরিকল্পিত কর্মোদ্যোগ। এ অঞ্চলের অর্থনীতি ও বাণিজ্যের গতিশীলতার জন্য যেমন ভারতসহ প্রতিবেশীদের জন্য বাংলাদেশের বন্দর ও সড়ক-রেলপথের সুবিধা উন্মোচিত হওয়া দরকার, তেমনি বাংলাদেশের সুবিধা নিশ্চিত করতে ভারতের করণীয় অনেক। বিনিয়োগ, অবকাঠামো উন্নয়ন, কর্মসংস্থান এবং শুল্ক সুবিধাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্পষ্ট চাওয়া-পাওয়ার ব্যাপার আছে। দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতি দূর করার ক্ষেত্রেও নানা প্রত্যাশা আছে। ঢাকায় ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী আনন্দ শর্মার সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রীর বৈঠকে দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্কের বাধা ও সম্ভাবনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। শুধু মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠকই নয়, ব্যবসায়ীসমাজের সঙ্গে আলোচনায়ও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে। বস্তুত বাণিজ্য সম্পর্কের বাধাই নয়, দুই দেশের সীমান্ত সংকট, সমুদ্রসীমা নিয়ে যে বিরোধ আছে, সেগুলো সমাধানেও আন্তরিকতার পরিচয় দিতে হবে। কেননা একদিকে সমস্যা জিইয়ে রেখে অন্যদিকে সমাধানের উদ্যোগ সম্পর্ককে দৃঢ় করতে দেবে না। আমাদের সম্পর্কের সম্ভাবনা অপার, মিলনের ক্ষেত্র বিশাল, পারস্পরিক লাভের অঙ্ক বড়।
লেখক : প্রাবন্ধিক
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর করেন। ওই সময় দুই দেশের যৌথ ঘোষণায় ট্রানজিট সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তারপর থেকেই বিষয়টি ব্যাপক আলোচনায় আসে। মিডিয়ায় আমরা ট্রানজিটের ব্যাপারে অনেক প্রতিবেদন প্রকাশিত হতে দেখেছি। তবে বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞ এই অভিমত পোষণ করেছেন যে ট্রানজিট দিলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সুবিধা পাবে। আর ভারত তার পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে তাদের পণ্যসহ প্রয়োজনীয় মালামাল পাঠানোর ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা পাবে। এতে ভারতের একদিকে যেমন খরচ কম হবে, তেমনি সময়ও কম লাগবে। বাংলাদেশ সরকার ট্রানজিটের ব্যাপারে শুরু থেকেই ভারতের পাশাপাশি নেপাল ও ভুটানকে যুক্ত করে। বিভিন্ন দৈনিকের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, পূর্ণাঙ্গ ট্রানজিট সুবিধা দেওয়ার মতো অবকাঠামো বর্তমানে বাংলাদেশের নেই। ট্রানজিটের জন্য অবকাঠামো নির্মাণে একদিকে যেমন সময় দরকার, তেমনি প্রয়োজন অনেক অর্থ। কিন্তু ভারত সরকার চাইছে বিষয়টি দ্রুত করতে। বাংলাদেশ সরকারের ট্রানজিটের ব্যাপারে গঠন করা একটি বিশেষ কমিটির প্রতিবেদনে ট্রানজিটের বিকল্প হিসেবে আপাতত ট্রান্সশিপমেন্ট দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। বাংলাদেশ সফরকালে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী আনন্দ শর্মা বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেছেন, আন্তর্জাতিক রীতিনীতি মেনেই ট্রানজিটের জন্য বাংলাদেশকে মাসুল পরিশোধ করবে ভারত।
আধুনিক বিশ্ব এক ধরনের ইউনিটির মাধ্যমে চলছে। আমরা দেখছি, পুরো ইউরোপ এখন একটি ইউনিয়ন গড়ে তুলেছে। অথচ একসময় ইউরোপের দেশগুলো পরস্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত ছিল। এতে লাভ হয়নি কারোই। হয়েছে ক্ষতি। আমাদেরও আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে হবে। সার্কের মতো একটি সংগঠন গড়ে তোলা হলেও তা আজ পর্যন্ত তেমন কোনো কাজ করতে পারছে না। আমরা মনে করি, কেবল লোক দেখানো সংগঠন গড়ে তুললেই হবে না, রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে গড়ে তুলতে হবে আন্তরিকতা। আর এর জন্য চাই পারস্পরিক সুযোগ-সুবিধার প্রতি বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর নজর রাখা। বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে অনেক সমস্যা আছে। আমরা মনে করি, সময় এসেছে সব সমস্যা সমাধানের।
ট্রানজিটের বিনিময়ে যে মাসুলের কথা আমরা ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে শুনলাম, সে ব্যাপারে এখনই আমাদের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটি করতে হবে। লাভের অঙ্কটা যেমন সঠিক হতে হবে, তেমনি মাসুল আদায়ে কৌশলী হতে হবে। কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না। পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে অমীমাংসিত সব বিষয়ের মীমাংসাও এখনই করতে হবে।
বিশ্বব্যাপী আন্তরাষ্ট্রীয় সম্পর্কের সূচক এখন বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের ভিত্তিতে ওঠানামা করে। ইউরোপের দেশগুলো বহুকালের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত ভুলে যখন বৃহত্তর ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাঠামোর মধ্যে নতুন অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক নির্মাণের পথে বহুদূর এগিয়ে গেছে, আমাদের পার্শ্ববর্তী আসিয়ানভুক্ত দেশগুলো যখন শক্তিশালী অর্থনৈতিক জোট গড়ে নিজেদের উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে এগিয়ে নিচ্ছে, এমনকি আফ্রিকার দেশগুলোও যখন এ ব্যাপারে কার্যকর কর্মপন্থা নির্ধারণ করেছে, তখনো দক্ষিণ এশিয়া অনেকটা পিছিয়ে। রাজনৈতিক সম্পর্কের টানাপড়েন এখানকার আঞ্চলিক সহযোগিতার জোট সার্ককে সক্রিয় হতে দিচ্ছে না। ফলে এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যকার বাণিজ্যিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্কের ভিত্তিতে জোটবদ্ধতার উদ্যোগগুলো প্রত্যাশিত গতিতে বাস্তবায়িত হতে পারছে না। অবশ্য সাম্প্রতিককালে আশান্বিত হওয়ার মতো বেশ কিছু উদ্যোগ এসেছে। এ অঞ্চলের বৃহৎ রাষ্ট্র ভারত প্রতিবেশীদের সঙ্গে নতুন সম্পর্ক নির্মাণের জন্য সক্রিয় হয়েছে। ভারতের দিক থেকে দৃষ্টিভঙ্গিগতভাবে কিছু অগ্রগতি হয়েছে।
বাংলাদেশেও অতীতে যেমন ভারতবিরোধী মনোভাব দেখা যেত, তা এখন অনেকটাই অপসৃত। দেশ দুটি এখন নতুন অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক নির্মাণের জন্য প্রস্তুত। শুধু ভারতই নয়, আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ বৃহত্তর ভূমিকা রাখতে চায়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের পর বাংলাদেশের ইতিবাচক মনোভাব স্পষ্ট হয়েছে। কিন্তু মনোভাবের ইতিবাচকতাই একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত নয়। এর জন্য চাই সঠিক ও পরিকল্পিত কর্মোদ্যোগ। এ অঞ্চলের অর্থনীতি ও বাণিজ্যের গতিশীলতার জন্য যেমন ভারতসহ প্রতিবেশীদের জন্য বাংলাদেশের বন্দর ও সড়ক-রেলপথের সুবিধা উন্মোচিত হওয়া দরকার, তেমনি বাংলাদেশের সুবিধা নিশ্চিত করতে ভারতের করণীয় অনেক। বিনিয়োগ, অবকাঠামো উন্নয়ন, কর্মসংস্থান এবং শুল্ক সুবিধাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্পষ্ট চাওয়া-পাওয়ার ব্যাপার আছে। দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতি দূর করার ক্ষেত্রেও নানা প্রত্যাশা আছে। ঢাকায় ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী আনন্দ শর্মার সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রীর বৈঠকে দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্কের বাধা ও সম্ভাবনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। শুধু মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠকই নয়, ব্যবসায়ীসমাজের সঙ্গে আলোচনায়ও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে। বস্তুত বাণিজ্য সম্পর্কের বাধাই নয়, দুই দেশের সীমান্ত সংকট, সমুদ্রসীমা নিয়ে যে বিরোধ আছে, সেগুলো সমাধানেও আন্তরিকতার পরিচয় দিতে হবে। কেননা একদিকে সমস্যা জিইয়ে রেখে অন্যদিকে সমাধানের উদ্যোগ সম্পর্ককে দৃঢ় করতে দেবে না। আমাদের সম্পর্কের সম্ভাবনা অপার, মিলনের ক্ষেত্র বিশাল, পারস্পরিক লাভের অঙ্ক বড়।
লেখক : প্রাবন্ধিক
No comments