এইচএসসি পরীক্ষা উপলক্ষে কতিপয় ফেসবুক আসক্ত পরীক্ষার্থীর একটি মানবিক আবেদনপত্র
ফেসবুক শুধু বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমই নয়, এখন ফেসবুকের ‘নোট’ অপশন লেখালেখিরও জায়গা বটে। তবে হালে এই ফেসবুকের মাধ্যমে পরীক্ষা উপলক্ষে দোয়াও চাওয়া হচ্ছে। পরীক্ষা শুরু হওয়ার দুই দিন আগে চট্টগ্রামের পাঁচ এইচএসসি পরীক্ষার্থী ফেসবুকের মাধ্যমে দোয়া চেয়ে একটি ‘নোট’ দিয়েছে।
‘নোট’ লেখকের যথাযথ অনুমতি নিয়ে দোয়ার আবেদনপত্রটি রস+আলোয় প্রকাশিত হলো।—বি.স.
দয়া করিয়া এই আবেদনপত্রটি পড়ুন...
শ্রদ্ধেয় শিক্ষক/বাবা/মামা/মাসি/পিসি/দাদাভাই/দাদামণি/দাদা/ভাইয়া/দিদি/ছোট ভাই,
মানুষ হয়ে জন্মে যে পাপ করেছিলাম, সে পাপের মাশুল দেওয়ার জন্য কিছুদিন পরপরই বিভিন্ন মেয়াদে পরীক্ষা নামক নির্মম শাস্তিকে বরণ করতে হয় আমাদের মতো কোমলমতি কচিকাঁচাদের। আমাদের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সময়টা আমরা এসব শাস্তি গ্রহণ করতে করতে আর শাস্তির প্রস্তুতি নিতে নিতেই কাটিয়ে দিই, ব্যাপারটা বড়ই দুঃখজনক! যাক গে, পরীক্ষাং নামকং শাস্তিরঃ স্বাদৎ প্রত্যেকং মনুষ্যকেইঃ নিতেৎ হইবেঃ।
পরশু থেকে শুরু হওয়া দেড় মাস মেয়াদি এই শাস্তি আমাদের নীলাকাশসবুজঘাসমাঠেরগরুগরুরলেজের সৌন্দর্য থেকে বঞ্চিত রাখবে; চট্টগ্রামের তামাম রাস্তাঘাট আমাদের পদধূলির অভাবে কান্নাকাটি করবে; সর্বত্রবিস্তৃত চাটগাঁর ফুটপাতের খাবারের দোকানের মামারা আমাদের বিহনে দীর্ঘশ্বাস ফেলবে; টিএমটি + কাশ্মীরি ফুডসের রোজকার ব্যবসা লস খাবে; পাবলিক লাইব্রেরি-চেরাগী-ডিসিহিল-সিআরবি-জিইসি-কোতোয়ালি-পাথরঘাটা খাঁ খাঁ করবে; পুরোনো বইয়ের দোকানগুলোতে বেচাবিক্রি কমে যাবে; অন্তর্জাল তার কিছু ভক্ত হারাবে; রিকশাওয়ালা চাচাদের আয় কমে যাবে...আরও কত শত ক্ষতি হবে জগতের, সে কথা আর না-ই বা বললাম!
কিন্তু প্রবলভাবে লাভবান হবে মুঠোফোন কোম্পানি, কেননা পড়াশোনার মাঝামাঝি সময়ে বন্ধুদের কল দিয়ে বলতে হবে, ‘দোস্ত! ভরের আপেক্ষিকতা সূত্রটা বুঝায় দে!’ অথবা ‘হাকেল তত্ত্ব খায়া ফেলছি রে! একটু কইয়া দে কেমতে কী হয়।’ এভাবেই লেখাপড়ার মতো ‘অর্থহীন’ কাজের কথা মুঠোফোনে বলতে বলতে দেশের অর্থ পাচার হতে থাকবে বিদেশে। দেশের অর্থনীতি আর উন্নয়নকে পঙ্গু করার জন্য ষড়যন্ত্র মেনে নেওয়া ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই। কেননা আমরা এখনো নূরলদীন হতে পারিনি।
যা হোক, প্রাণচাঞ্চল্যে ঢাকা এ চাটগাঁর বাটেঘাটেহাঁটেমাঠের বদলে দীর্ঘ এ সময়টাতে আমরা পাঠে থাকব। বাংলারবকবকি, ইংরেজিরইংকিপিংকি, কেমেস্ট্রিরকচকচি, ফিজিক্সেরফরফরি, ম্যাথেরম্যারম্যারি আর বায়োলজিরবিরবিরিই আমাদের সঙ্গী হবে এই দেড় মাস (তীব্র যন্ত্রণার ইমো হবে)।
এই দেড় মাস আমরা সবাইকে মিস করতে থাকি আর আমাদেরও আপনারা/তোমরা/তোরাও মিস করতে থাকুন/থাকো/থাক। আর বেশি বেশি বেশি প্রার্থনা করতে থাকুন/থাকো/থাক পরমেশ্বরের কাছে যেন আপনাদের/তোমাদের/তোদের এই ছোট বাচ্চাকাচ্চাগুলো উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষাটা ভালো করে দিতে পারে এবং একটা ভালো রেজাল্টের খবর দিতে পারে এবং পাঁচ মাস পর এই পাঁচজন চবির শাটল ট্রেনের কুওওওও ঝিক ঝিক ঝিক ঝিক ঝিক শব্দের সঙ্গে গলা মেলাতে পারে!
যে পাঁচজন দণ্ড পেয়েছে: (বয়সানুক্রমে)
ধ্রুব মল্লিক,
সোপান সরকার মুন্না,
নাসিফ মাহমুদ,
তাসনিম জাফর সামিন ও
মৌসুমী জাহান নিশা।
*এই পাঁচজনের জন্য ইসপিশাল ফেরেশ দোয়া পাঠাইয়া দেন/দেও/দে। সবাই ভালো থাকুক, এই কামনাই ব্যক্ত করি! এবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি! (ফুঁপিয়ে কান্নার ইমো হবে)
দয়া করিয়া এই আবেদনপত্রটি পড়ুন...
শ্রদ্ধেয় শিক্ষক/বাবা/মামা/মাসি/পিসি/দাদাভাই/দাদামণি/দাদা/ভাইয়া/দিদি/ছোট ভাই,
মানুষ হয়ে জন্মে যে পাপ করেছিলাম, সে পাপের মাশুল দেওয়ার জন্য কিছুদিন পরপরই বিভিন্ন মেয়াদে পরীক্ষা নামক নির্মম শাস্তিকে বরণ করতে হয় আমাদের মতো কোমলমতি কচিকাঁচাদের। আমাদের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সময়টা আমরা এসব শাস্তি গ্রহণ করতে করতে আর শাস্তির প্রস্তুতি নিতে নিতেই কাটিয়ে দিই, ব্যাপারটা বড়ই দুঃখজনক! যাক গে, পরীক্ষাং নামকং শাস্তিরঃ স্বাদৎ প্রত্যেকং মনুষ্যকেইঃ নিতেৎ হইবেঃ।
পরশু থেকে শুরু হওয়া দেড় মাস মেয়াদি এই শাস্তি আমাদের নীলাকাশসবুজঘাসমাঠেরগরুগরুরলেজের সৌন্দর্য থেকে বঞ্চিত রাখবে; চট্টগ্রামের তামাম রাস্তাঘাট আমাদের পদধূলির অভাবে কান্নাকাটি করবে; সর্বত্রবিস্তৃত চাটগাঁর ফুটপাতের খাবারের দোকানের মামারা আমাদের বিহনে দীর্ঘশ্বাস ফেলবে; টিএমটি + কাশ্মীরি ফুডসের রোজকার ব্যবসা লস খাবে; পাবলিক লাইব্রেরি-চেরাগী-ডিসিহিল-সিআরবি-জিইসি-কোতোয়ালি-পাথরঘাটা খাঁ খাঁ করবে; পুরোনো বইয়ের দোকানগুলোতে বেচাবিক্রি কমে যাবে; অন্তর্জাল তার কিছু ভক্ত হারাবে; রিকশাওয়ালা চাচাদের আয় কমে যাবে...আরও কত শত ক্ষতি হবে জগতের, সে কথা আর না-ই বা বললাম!
কিন্তু প্রবলভাবে লাভবান হবে মুঠোফোন কোম্পানি, কেননা পড়াশোনার মাঝামাঝি সময়ে বন্ধুদের কল দিয়ে বলতে হবে, ‘দোস্ত! ভরের আপেক্ষিকতা সূত্রটা বুঝায় দে!’ অথবা ‘হাকেল তত্ত্ব খায়া ফেলছি রে! একটু কইয়া দে কেমতে কী হয়।’ এভাবেই লেখাপড়ার মতো ‘অর্থহীন’ কাজের কথা মুঠোফোনে বলতে বলতে দেশের অর্থ পাচার হতে থাকবে বিদেশে। দেশের অর্থনীতি আর উন্নয়নকে পঙ্গু করার জন্য ষড়যন্ত্র মেনে নেওয়া ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই। কেননা আমরা এখনো নূরলদীন হতে পারিনি।
যা হোক, প্রাণচাঞ্চল্যে ঢাকা এ চাটগাঁর বাটেঘাটেহাঁটেমাঠের বদলে দীর্ঘ এ সময়টাতে আমরা পাঠে থাকব। বাংলারবকবকি, ইংরেজিরইংকিপিংকি, কেমেস্ট্রিরকচকচি, ফিজিক্সেরফরফরি, ম্যাথেরম্যারম্যারি আর বায়োলজিরবিরবিরিই আমাদের সঙ্গী হবে এই দেড় মাস (তীব্র যন্ত্রণার ইমো হবে)।
এই দেড় মাস আমরা সবাইকে মিস করতে থাকি আর আমাদেরও আপনারা/তোমরা/তোরাও মিস করতে থাকুন/থাকো/থাক। আর বেশি বেশি বেশি প্রার্থনা করতে থাকুন/থাকো/থাক পরমেশ্বরের কাছে যেন আপনাদের/তোমাদের/তোদের এই ছোট বাচ্চাকাচ্চাগুলো উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষাটা ভালো করে দিতে পারে এবং একটা ভালো রেজাল্টের খবর দিতে পারে এবং পাঁচ মাস পর এই পাঁচজন চবির শাটল ট্রেনের কুওওওও ঝিক ঝিক ঝিক ঝিক ঝিক শব্দের সঙ্গে গলা মেলাতে পারে!
যে পাঁচজন দণ্ড পেয়েছে: (বয়সানুক্রমে)
ধ্রুব মল্লিক,
সোপান সরকার মুন্না,
নাসিফ মাহমুদ,
তাসনিম জাফর সামিন ও
মৌসুমী জাহান নিশা।
*এই পাঁচজনের জন্য ইসপিশাল ফেরেশ দোয়া পাঠাইয়া দেন/দেও/দে। সবাই ভালো থাকুক, এই কামনাই ব্যক্ত করি! এবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি! (ফুঁপিয়ে কান্নার ইমো হবে)
No comments