ভোটার তালিকা হালনাগাদ-তত্ত্বাবধায়কের সুযোগ রাখছে না ইসি by কাজী হাফিজ
ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থায় নির্বাচনের কোনো সুযোগ রাখছে না বর্তমান নির্বাচন কমিশন। তেমন কোনো সম্ভাবনাও তারা আমলে নিতে নারাজ। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী অনুসারে বর্তমান সরকারের মেয়াদের শেষ তিন মাসে অন্তর্বর্তীকালীন নির্বাচনের লক্ষ্যেই ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
এ অবস্থায় বিশেষজ্ঞ মহলের আশঙ্কা, রাজনৈতিক সংকট এড়াতে সরকার শেষ পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থায় ফিরে গেলে বা মেয়াদ শেষে অন্য কোনো নিরপেক্ষ ব্যবস্থায় নির্বাচনে সম্মত হলেও এই ভোটার তালিকা সে ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
নির্বাচন কমিশন ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি যাঁদের বয়স ১৮ বছর বা তার বেশি হবে, তাঁদেরই ভোটার করছে। অথচ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চের দিকে। ওই নির্বাচনী বছরের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৮ বছর পূর্ণ হবে এমন প্রায় ২৫ লাখ মানুষ ভোটার হতে পারবেন না। বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশন আইনি চ্যালেঞ্জের মুখেও পড়তে পারে। আবার এ বিষয়ে ভিন্নমতও রয়েছে।
ড. এ টি এম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন আগের নির্বাচন কমিশনের পরিকল্পনা ছিল, ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারিতে যাঁদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হবে, তাঁদের তথ্যও ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় সংগ্রহ করে রাখা হবে। এ অবস্থায় বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষে নির্দলীয় কোনো ব্যবস্থায় নির্বাচন হলে সে নির্বাচনের আগে সহজেই তাঁদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যাবে। আর অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থায় নির্বাচন হলে ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে ১৮ বছর পূর্ণ হওয়াদের মধ্যেই ভোটার হালনাগাদ কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখা হবে।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন এ বিষয়ে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমাদের ধারণা, শেষ পর্যন্ত এ সরকারের মেয়াদ শেষে নির্দলীয় কোনো ব্যবস্থার মাধ্যমেই ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চের দিকে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। এই সম্ভাবনার চিন্তা মাথায় রেখেই আমরা ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারির মধ্যে যাঁদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হবে, তাঁদেরও ভোটার তথ্য সংগ্রহ করতে চেয়েছিলাম। কারণ সরকারের মেয়াদ শেষে আগের ব্যবস্থায় নির্বাচন করতে হলে ভোটারযোগ্য কাউকে বাদ রেখে তা করা যাবে না। বিষয়টি নিয়ে আদালতে চ্যালেঞ্জ হতে পারে।'
অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জাবেদ আলী এ প্রতিবেদককে বলেন, 'শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক সমঝোতা হবে কি হবে না, তা নিয়ে আমাদের ভাবার অবকাশ নেই। আমরা সংবিধান অনুযায়ী কাজ করব। বর্তমান সংবিধানে সরকারের মেয়াদের শেষ তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলা আছে। আমরা সেই লক্ষ্যেই ভোটার তালিকা হালনাগাদ করছি।'
নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা জানিপপের প্রধান অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ এ বিষয়ে বলেন, 'আমার ধারণা বর্তমান নির্বাচন কমিশন আগের নির্বাচন কমিশনের মতো উচ্চাভিলাষী কোনো লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে চাচ্ছে না। ইভিএম, ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন- এসব বিতর্কিত ইস্যু নিয়ে এই কমিশন খুব সতর্কতার সঙ্গে কথা বলছে। প্রধান বিরোধী দল শুরুতেই তাদেরকে গুরুত্ব দিতে চায়নি। তাদের সতর্কতার এটি একটি কারণ হতে পারে। এই সতর্কতার কারণেই ভোটার তালিকার বিষয়ে আগের কমিশনের পরিকল্পনা তাদের কাছে পুরোপুরি গ্রহণযোগ্য না-ও হতে পারে। কোন পরিকল্পনা ঠিক তা সময়ই বলে দেবে।'
এদিকে বলা হচ্ছে, এবারও ভোটার তালিকা হালনাগাদ হচ্ছে বিদ্যমান আইন লঙ্ঘন করেই। 'ভোটার তালিকা আইন-২০০৯'-এর ১১ নম্বর ধারা ও ভোটার তালিকা বিধিমালার ৩৩ নম্বর বিধিতে প্রতিবছর ২ থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার বিধান রয়েছে। এই আইন লঙ্ঘন করেই আগের নির্বাচন কমিশন দীর্ঘ সময় নিয়ে ২০০৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর যাঁদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছিল, তাঁদেরও ওই সময় ভোটার করে রাখে। আইনটি পুরোপুরি প্রয়োগযোগ্য এবং প্রযুক্তি উপযোগী করতে ভোটার তালিকা আইন ও বিধিমালার সংশোধন চেয়েছিল আগের নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে তারা একটি খসড়াও প্রস্তুত করে রেখে যায়।
ওই প্রস্তাব অনুযায়ী আইন সংশোধন হলে নির্বাচন কমিশন তাদের সুবিধামতো সময়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ সম্পন্ন করতে পারবে। এ ছাড়া প্রতিবছর বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তথ্য সংগ্রহ করার বদলে একবারে ভবিষ্যৎ ভোটারদের তথ্যও সংগ্রহ করে রাখার বিধানের কথা বলা হয়। কিন্তু আইনের সংশোধন ছাড়াই এবারও ৯ মাসব্যাপী ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের ঘোষণা দিয়েছে বর্তমান নির্বাচন কমিশন।
এই আইন লঙ্ঘন প্রশ্নে ইসি জাবেদ আলী বলেন, 'আমরা এটাকে সরাসরি ভোটার তালিকা হালনাগাদ বলছি না। বলছি, ভোটার তালিকা হালনাগাদের লক্ষ্যে তথ্য সংগ্রহ। এ ছাড়া আইন নিশ্চয়ই সংশোধন হবে।'
প্রসঙ্গত, গত ৮ মার্চ নতুন নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা হালনাগাদের কার্যক্রম ঘোষণা করে। ওই ঘোষণা অনুসারে গত ১০ মার্চ থেকে ৬৪টি জেলার ৬৪টি উপজেলায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। মোট চার পর্বে এ কাজ সম্পন্ন হবে।
নির্বাচন কমিশন ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি যাঁদের বয়স ১৮ বছর বা তার বেশি হবে, তাঁদেরই ভোটার করছে। অথচ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চের দিকে। ওই নির্বাচনী বছরের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৮ বছর পূর্ণ হবে এমন প্রায় ২৫ লাখ মানুষ ভোটার হতে পারবেন না। বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশন আইনি চ্যালেঞ্জের মুখেও পড়তে পারে। আবার এ বিষয়ে ভিন্নমতও রয়েছে।
ড. এ টি এম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন আগের নির্বাচন কমিশনের পরিকল্পনা ছিল, ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারিতে যাঁদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হবে, তাঁদের তথ্যও ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় সংগ্রহ করে রাখা হবে। এ অবস্থায় বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষে নির্দলীয় কোনো ব্যবস্থায় নির্বাচন হলে সে নির্বাচনের আগে সহজেই তাঁদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যাবে। আর অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থায় নির্বাচন হলে ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে ১৮ বছর পূর্ণ হওয়াদের মধ্যেই ভোটার হালনাগাদ কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখা হবে।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন এ বিষয়ে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমাদের ধারণা, শেষ পর্যন্ত এ সরকারের মেয়াদ শেষে নির্দলীয় কোনো ব্যবস্থার মাধ্যমেই ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চের দিকে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। এই সম্ভাবনার চিন্তা মাথায় রেখেই আমরা ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারির মধ্যে যাঁদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হবে, তাঁদেরও ভোটার তথ্য সংগ্রহ করতে চেয়েছিলাম। কারণ সরকারের মেয়াদ শেষে আগের ব্যবস্থায় নির্বাচন করতে হলে ভোটারযোগ্য কাউকে বাদ রেখে তা করা যাবে না। বিষয়টি নিয়ে আদালতে চ্যালেঞ্জ হতে পারে।'
অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জাবেদ আলী এ প্রতিবেদককে বলেন, 'শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক সমঝোতা হবে কি হবে না, তা নিয়ে আমাদের ভাবার অবকাশ নেই। আমরা সংবিধান অনুযায়ী কাজ করব। বর্তমান সংবিধানে সরকারের মেয়াদের শেষ তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলা আছে। আমরা সেই লক্ষ্যেই ভোটার তালিকা হালনাগাদ করছি।'
নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা জানিপপের প্রধান অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ এ বিষয়ে বলেন, 'আমার ধারণা বর্তমান নির্বাচন কমিশন আগের নির্বাচন কমিশনের মতো উচ্চাভিলাষী কোনো লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে চাচ্ছে না। ইভিএম, ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন- এসব বিতর্কিত ইস্যু নিয়ে এই কমিশন খুব সতর্কতার সঙ্গে কথা বলছে। প্রধান বিরোধী দল শুরুতেই তাদেরকে গুরুত্ব দিতে চায়নি। তাদের সতর্কতার এটি একটি কারণ হতে পারে। এই সতর্কতার কারণেই ভোটার তালিকার বিষয়ে আগের কমিশনের পরিকল্পনা তাদের কাছে পুরোপুরি গ্রহণযোগ্য না-ও হতে পারে। কোন পরিকল্পনা ঠিক তা সময়ই বলে দেবে।'
এদিকে বলা হচ্ছে, এবারও ভোটার তালিকা হালনাগাদ হচ্ছে বিদ্যমান আইন লঙ্ঘন করেই। 'ভোটার তালিকা আইন-২০০৯'-এর ১১ নম্বর ধারা ও ভোটার তালিকা বিধিমালার ৩৩ নম্বর বিধিতে প্রতিবছর ২ থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার বিধান রয়েছে। এই আইন লঙ্ঘন করেই আগের নির্বাচন কমিশন দীর্ঘ সময় নিয়ে ২০০৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর যাঁদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছিল, তাঁদেরও ওই সময় ভোটার করে রাখে। আইনটি পুরোপুরি প্রয়োগযোগ্য এবং প্রযুক্তি উপযোগী করতে ভোটার তালিকা আইন ও বিধিমালার সংশোধন চেয়েছিল আগের নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে তারা একটি খসড়াও প্রস্তুত করে রেখে যায়।
ওই প্রস্তাব অনুযায়ী আইন সংশোধন হলে নির্বাচন কমিশন তাদের সুবিধামতো সময়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ সম্পন্ন করতে পারবে। এ ছাড়া প্রতিবছর বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তথ্য সংগ্রহ করার বদলে একবারে ভবিষ্যৎ ভোটারদের তথ্যও সংগ্রহ করে রাখার বিধানের কথা বলা হয়। কিন্তু আইনের সংশোধন ছাড়াই এবারও ৯ মাসব্যাপী ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের ঘোষণা দিয়েছে বর্তমান নির্বাচন কমিশন।
এই আইন লঙ্ঘন প্রশ্নে ইসি জাবেদ আলী বলেন, 'আমরা এটাকে সরাসরি ভোটার তালিকা হালনাগাদ বলছি না। বলছি, ভোটার তালিকা হালনাগাদের লক্ষ্যে তথ্য সংগ্রহ। এ ছাড়া আইন নিশ্চয়ই সংশোধন হবে।'
প্রসঙ্গত, গত ৮ মার্চ নতুন নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা হালনাগাদের কার্যক্রম ঘোষণা করে। ওই ঘোষণা অনুসারে গত ১০ মার্চ থেকে ৬৪টি জেলার ৬৪টি উপজেলায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। মোট চার পর্বে এ কাজ সম্পন্ন হবে।
No comments