প্রতিক্রিয়া-জনশক্তি-বাজার প্রসারে সঠিক উদ্যোগ কাম্য by হাসান আহমেদ চৌধুরী
সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সরকারের পক্ষ থেকে মানবপাচার আইন, ২০১১ নামে একটি নতুন আইন মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে। এই আইনের মূল লক্ষ্য সব ধরনের মানবপাচার রোধ এবং এর সঙ্গে যে বা যাঁরা সংশ্লিষ্ট থাকবেন, তাঁরা অবশ্যই প্রচলিত আইনে দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত হবেন।
নিঃসন্দেহে যেকোনো ধরনের মানবপাচারের ঘটনা ঘৃণিত, অমানবিক এবং অবশ্যই সেটি বড় ধরনের অপরাধ বলেই গণ্য। নতুন প্রণীত এই আইনটি মানবপাচার প্রতিরোধ এবং মানবপাচারকারীদের শাস্তির বিষয়টি নিশ্চিত করলেও এই আইনের কতিপয় ধারা-উপধারা জনশক্তি রপ্তানি-প্রক্রিয়ার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে প্রতীয়মান হয়েছে। এই ধারা-উপধারার কারণে যেসব ব্যক্তি ও জনশক্তি রপ্তানিকারক সংগঠন সরকারের সব নিয়মনীতি এবং বহির্গমন অধ্যাদেশ, ১৯৮২ অনুসরণ করে জনশক্তি ব্যবসায় নিযুক্ত, তাদের ক্ষতিগ্রস্ত, হয়রানি ও অভিযুক্ত হওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। মানবপাচারের কথিত অভিযোগ এনে যেকোনো সময় যেকোনো জনশক্তি রপ্তানিকারককে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো এবং দণ্ডাদেশ প্রদান করা যাবে।
দেশের জনশক্তি রপ্তানিকারকদের জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) পক্ষ থেকে বিষয়টির প্রতিবাদও জানানো হয়েছে। নতুন মানবপাচার আইনের কতিপয় ধারার সঙ্গে বহির্গমন অধ্যাদেশ, ১৯৮২-এর সাংঘর্ষিক একটি পটভূমি তৈরি হওয়ার কারণেই জনশক্তি রপ্তানিকারকদের মাঝে সংশয় তৈরি হয়েছে। এই সংশয় থেকে বাদ পড়েনি প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ও। মূলত প্রস্তাবিত মানবপাচার আইনের ৩ ধারার ২ উপধারা নিয়ে আপত্তি তোলা হয়েছে। ওই ধারায় বলা হয়েছে, ‘এই ধারায় উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, যদি কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বা ভূখণ্ডের বাহিরে অসৎ উদ্দেশ্যে অপর কোনো ব্যক্তিকে আইনী পন্থায় বা অন্যভাবে কাজের বা চাকরীর উদ্দেশ্যে গমন, অভিবাসন বা বহির্গমন করিতে প্রলুব্ধ বা সহায়তা করে ইহা জানা সত্ত্বেও যে ঐ অপর ব্যক্তি আসলে বাধ্যতামূলক শ্রম বা সার্ভিচিউডের অনুরূপ শোষণমূলক শ্রম-পরিস্থিতিতে অথবা এই ধারায় বর্ণিত কোনো প্রকার শোষণমূলক পরিস্থিতিতে নিপতিত হইবে তাহা হইলে ঐ ব্যক্তির উক্ত কর্ম উপধারা (১)-এর সংজ্ঞায়িত “মানবপাচার”-এর অন্তর্ভুক্ত হইবে।’
প্রস্তাবিত আইনের ওপরে উদ্ধৃত ৩(২) ধারার বিধান পাঠে স্পষ্ট যে, ‘বহির্গমন অধ্যাদেশ ১৯৮২-এর আওতায় সম্পাদিত/সংঘটিত অভিবাসন কার্যক্রমকেও মানবপাচার রূপে গণ্য বা পরিগণিত করা যাবে, কেননা এই অনুচ্ছেদে ব্যক্তি আসলে বাধ্যতামূলক শ্রম বা সার্ভিচিউডের অনুরূপ শোষণমূলক শ্রম-পরিস্থিতিতে অথবা এই ধারায় বর্ণিত কোনো প্রকার শোষণমূলক পরিস্থিতিতে নিপতিত হইবে তাহা হইলে ঐ ব্যক্তির উক্ত কর্ম উপধারা (১) এর সংজ্ঞায়িত “মানবপাচার”-এর অন্তর্ভুক্ত হইবে।’ এ বিষয়টি নিয়ে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ও আপত্তি তুলেছিল। তারাও স্পষ্টত বলতে চেয়েছে, এই ধারা-উপধারা বহাল থাকলে জনশক্তি রপ্তানির ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে।
গত ২৩ জানুয়ারি প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে উপসচিব সুধাকর দত্ত কর্তৃক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর যে চিঠি পাঠানো হয়, তাতে প্রবর্তিত নতুন ধারাটি নিয়ে সংশয় এবং বিকল্প মতামত প্রদান করা হয়। ওই মতামতে বলা হয়, ১৯৮২ সালের বহির্গমন অধ্যাদেশের আওতায় অভিবাসনের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের শতাধিক দেশে এ পর্যন্ত ৭০ লাখ কর্মী প্রেরণ করা হয়েছে। বিধিসম্মতভাবে কর্মরত এসব কর্মীর অভিবাসনসহ যাবতীয় বিষয় তত্ত্বাবধান করা, সমন্বয় করা চাকরিসহ বেতন-ভাতাদি নিশ্চিত করা, কোনো আইনি সমস্যা হলে তার বিষয়ে সহযোগিতা প্রদান করা ইত্যাদি এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্য সব কার্যক্রম ওই অধ্যাদেশের আলোকে হয়ে থাকে, যা প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় তত্ত্বাবধান করে থাকে। এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসসহ মন্ত্রণালয়, বিএমইটি, সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সি, পুলিশের বহির্গমন বিভাগ সংশ্লিষ্ট থাকে। চাহিদা প্রদানকারী দেশের নিয়োগকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়েরও সম্পৃক্ততা রয়েছে এই কার্যক্রমে। বহির্গমন অধ্যাদেশের আওতায় অভিবাসনকারী বিপুলসংখ্যক কর্মীর কষ্টার্জিত রেমিট্যান্স (প্রবাসী-আয়) দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখাসহ আর্থসামাজিক উন্নয়নে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। প্রস্তাবিত মানবপাচার প্রতিরোধ আইনের সঙ্গে অত্র মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন বহির্গমন অধ্যাদেশ, ১৯৮২-এর সম্পৃক্ততা থাকায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রণীত ‘মানবপাচার প্রতিরোধ আইন, ২০১১’ শীর্ষক খসড়া এই মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করা হয়েছে। পর্যালোচনায় প্রতীয়মান হয়েছে যে খসড়াটিতে এমন কিছু বিধান সন্নিবেশ করা হয়েছে, যা (প্রয়োগের ক্ষেত্রে) মানবপাচারের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সংজ্ঞা ও পরিধি অতিক্রম করে আইনগতভাবে সিদ্ধ দীর্ঘ প্রচলিত অভিবাসন কার্যক্রমকে ব্যাহত করতে পারে।
খোদ প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে এ ধরনের আরও সংশয় ব্যক্ত করা হয়েছে, বলার অপেক্ষা রাখে না যে উপর্যুক্ত অনুমান বা শর্ত এতটাই ভাববাচক যে একে অপ্রমাণ বা খণ্ডন করা বাস্তবিকই অসম্ভব হবে। প্রস্তাবিত আইনের ১৫(৩) উপধারায় এর অধীনে কোনো মামলায় অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে সরকারের পূর্বানুমতিরও প্রয়োজন হবে না মর্মে বিধান সংযোজন করা হয়েছে।
আমরা মনে করি, দেশের জনশক্তি রপ্তানির খাতকে আরও সচল-সক্রিয় রাখতে বর্তমান সরকারের উচিত এই খাতে যাতে কোনো ধরনের বাধা তৈরি না হয়, সে বিষয়ে সঠিক ও সতর্ক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় ৮০ লাখ অভিবাসী শ্রমিক বৈধভাবে কাজ করছে এবং এসব শ্রমিক জিডিপিতে প্রায় ১২ শতাংশ অবদান রাখছে। দেশের অর্থনৈতিক বিশ্লেষকেরাও বলেছেন, দেশের অর্থনীতি আরও সচল রাখতে হলে এই খাতকে আরও শক্তিশালী করতে হবে, যাতে আরও বেশি করে বিভিন্ন দেশে শ্রমিক পাঠানো যায়। কিন্তু আমরা দেখছি, বিভিন্ন সময় এই খাত ঘিরে নানা জটিলতা তৈরি হওয়ার কারণে এবং পুরোনো জটিলতাগুলোর সঠিক সমাধান না করতে পারার কারণে আমাদের এই খাত আরও যতটা প্রসারিত হওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি। জনশক্তি বাজারকে আরও প্রসারের লক্ষ্যে আইনের মারপ্যাঁচ নয়, সরকারের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ ও সুবিবেচনাই বেশি কাম্য।
হাসান আহমেদ চৌধুরী: চেয়ারম্যান, ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।
kirondebate@gmail.com
দেশের জনশক্তি রপ্তানিকারকদের জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) পক্ষ থেকে বিষয়টির প্রতিবাদও জানানো হয়েছে। নতুন মানবপাচার আইনের কতিপয় ধারার সঙ্গে বহির্গমন অধ্যাদেশ, ১৯৮২-এর সাংঘর্ষিক একটি পটভূমি তৈরি হওয়ার কারণেই জনশক্তি রপ্তানিকারকদের মাঝে সংশয় তৈরি হয়েছে। এই সংশয় থেকে বাদ পড়েনি প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ও। মূলত প্রস্তাবিত মানবপাচার আইনের ৩ ধারার ২ উপধারা নিয়ে আপত্তি তোলা হয়েছে। ওই ধারায় বলা হয়েছে, ‘এই ধারায় উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, যদি কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বা ভূখণ্ডের বাহিরে অসৎ উদ্দেশ্যে অপর কোনো ব্যক্তিকে আইনী পন্থায় বা অন্যভাবে কাজের বা চাকরীর উদ্দেশ্যে গমন, অভিবাসন বা বহির্গমন করিতে প্রলুব্ধ বা সহায়তা করে ইহা জানা সত্ত্বেও যে ঐ অপর ব্যক্তি আসলে বাধ্যতামূলক শ্রম বা সার্ভিচিউডের অনুরূপ শোষণমূলক শ্রম-পরিস্থিতিতে অথবা এই ধারায় বর্ণিত কোনো প্রকার শোষণমূলক পরিস্থিতিতে নিপতিত হইবে তাহা হইলে ঐ ব্যক্তির উক্ত কর্ম উপধারা (১)-এর সংজ্ঞায়িত “মানবপাচার”-এর অন্তর্ভুক্ত হইবে।’
প্রস্তাবিত আইনের ওপরে উদ্ধৃত ৩(২) ধারার বিধান পাঠে স্পষ্ট যে, ‘বহির্গমন অধ্যাদেশ ১৯৮২-এর আওতায় সম্পাদিত/সংঘটিত অভিবাসন কার্যক্রমকেও মানবপাচার রূপে গণ্য বা পরিগণিত করা যাবে, কেননা এই অনুচ্ছেদে ব্যক্তি আসলে বাধ্যতামূলক শ্রম বা সার্ভিচিউডের অনুরূপ শোষণমূলক শ্রম-পরিস্থিতিতে অথবা এই ধারায় বর্ণিত কোনো প্রকার শোষণমূলক পরিস্থিতিতে নিপতিত হইবে তাহা হইলে ঐ ব্যক্তির উক্ত কর্ম উপধারা (১) এর সংজ্ঞায়িত “মানবপাচার”-এর অন্তর্ভুক্ত হইবে।’ এ বিষয়টি নিয়ে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ও আপত্তি তুলেছিল। তারাও স্পষ্টত বলতে চেয়েছে, এই ধারা-উপধারা বহাল থাকলে জনশক্তি রপ্তানির ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে।
গত ২৩ জানুয়ারি প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে উপসচিব সুধাকর দত্ত কর্তৃক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর যে চিঠি পাঠানো হয়, তাতে প্রবর্তিত নতুন ধারাটি নিয়ে সংশয় এবং বিকল্প মতামত প্রদান করা হয়। ওই মতামতে বলা হয়, ১৯৮২ সালের বহির্গমন অধ্যাদেশের আওতায় অভিবাসনের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের শতাধিক দেশে এ পর্যন্ত ৭০ লাখ কর্মী প্রেরণ করা হয়েছে। বিধিসম্মতভাবে কর্মরত এসব কর্মীর অভিবাসনসহ যাবতীয় বিষয় তত্ত্বাবধান করা, সমন্বয় করা চাকরিসহ বেতন-ভাতাদি নিশ্চিত করা, কোনো আইনি সমস্যা হলে তার বিষয়ে সহযোগিতা প্রদান করা ইত্যাদি এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্য সব কার্যক্রম ওই অধ্যাদেশের আলোকে হয়ে থাকে, যা প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় তত্ত্বাবধান করে থাকে। এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসসহ মন্ত্রণালয়, বিএমইটি, সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সি, পুলিশের বহির্গমন বিভাগ সংশ্লিষ্ট থাকে। চাহিদা প্রদানকারী দেশের নিয়োগকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়েরও সম্পৃক্ততা রয়েছে এই কার্যক্রমে। বহির্গমন অধ্যাদেশের আওতায় অভিবাসনকারী বিপুলসংখ্যক কর্মীর কষ্টার্জিত রেমিট্যান্স (প্রবাসী-আয়) দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখাসহ আর্থসামাজিক উন্নয়নে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। প্রস্তাবিত মানবপাচার প্রতিরোধ আইনের সঙ্গে অত্র মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন বহির্গমন অধ্যাদেশ, ১৯৮২-এর সম্পৃক্ততা থাকায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রণীত ‘মানবপাচার প্রতিরোধ আইন, ২০১১’ শীর্ষক খসড়া এই মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করা হয়েছে। পর্যালোচনায় প্রতীয়মান হয়েছে যে খসড়াটিতে এমন কিছু বিধান সন্নিবেশ করা হয়েছে, যা (প্রয়োগের ক্ষেত্রে) মানবপাচারের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সংজ্ঞা ও পরিধি অতিক্রম করে আইনগতভাবে সিদ্ধ দীর্ঘ প্রচলিত অভিবাসন কার্যক্রমকে ব্যাহত করতে পারে।
খোদ প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে এ ধরনের আরও সংশয় ব্যক্ত করা হয়েছে, বলার অপেক্ষা রাখে না যে উপর্যুক্ত অনুমান বা শর্ত এতটাই ভাববাচক যে একে অপ্রমাণ বা খণ্ডন করা বাস্তবিকই অসম্ভব হবে। প্রস্তাবিত আইনের ১৫(৩) উপধারায় এর অধীনে কোনো মামলায় অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে সরকারের পূর্বানুমতিরও প্রয়োজন হবে না মর্মে বিধান সংযোজন করা হয়েছে।
আমরা মনে করি, দেশের জনশক্তি রপ্তানির খাতকে আরও সচল-সক্রিয় রাখতে বর্তমান সরকারের উচিত এই খাতে যাতে কোনো ধরনের বাধা তৈরি না হয়, সে বিষয়ে সঠিক ও সতর্ক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় ৮০ লাখ অভিবাসী শ্রমিক বৈধভাবে কাজ করছে এবং এসব শ্রমিক জিডিপিতে প্রায় ১২ শতাংশ অবদান রাখছে। দেশের অর্থনৈতিক বিশ্লেষকেরাও বলেছেন, দেশের অর্থনীতি আরও সচল রাখতে হলে এই খাতকে আরও শক্তিশালী করতে হবে, যাতে আরও বেশি করে বিভিন্ন দেশে শ্রমিক পাঠানো যায়। কিন্তু আমরা দেখছি, বিভিন্ন সময় এই খাত ঘিরে নানা জটিলতা তৈরি হওয়ার কারণে এবং পুরোনো জটিলতাগুলোর সঠিক সমাধান না করতে পারার কারণে আমাদের এই খাত আরও যতটা প্রসারিত হওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি। জনশক্তি বাজারকে আরও প্রসারের লক্ষ্যে আইনের মারপ্যাঁচ নয়, সরকারের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ ও সুবিবেচনাই বেশি কাম্য।
হাসান আহমেদ চৌধুরী: চেয়ারম্যান, ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।
kirondebate@gmail.com
No comments