ট্রুথ কমিশনের দায়মুক্তি টিকছে না
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ট্রুথ কমিশনকে অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া হাইকোর্টের রায়ই বহাল রেখেছেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে যে আপিল আবেদন করা হয়েছিল, গত সোমবার তা খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে নিজের অপরাধ স্বীকার করে এবং জরিমানা দিয়ে যাঁরা সত্য ও জবাবদিহিতা কমিশন (ট্রুথ কমিশন) থেকে দায়মুক্তি নিয়েছিলেন, তাঁদের পুনরায় বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় তাঁদের শাস্তি ভোগ করতে হবে।
বিগত সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রাষ্ট্রপতির এক অধ্যাদেশে এই সত্য ও জবাবদিহিতা কমিশন গঠিত হয়েছিল। পরবর্তীকালে এটি ট্রুথ কমিশন হিসেবেই বেশি পরিচিত হয়। এই কমিশনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একই বছরের ২৫ আগস্ট একটি রিট আবেদন করা হয়েছিল এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে ১৩ নভেম্বর হাইকোর্ট এই কমিশনকে অবৈধ ঘোষণা করেছিলেন। এরপর রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করা হলে একই বছরের ১৬ নভেম্বর চেম্বার জজ হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেন। আপিল আবেদন খারিজ করে দেওয়া বর্তমান রায়ের ফলে দায়মুক্তি নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন বা দুদকের মামলা ছিল, সে মামলাগুলো আপনা থেকেই পুনরায় সক্রিয় হবে। আর যাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়নি কিংবা বিস্তারিত অনুসন্ধান করা হয়নি, তাদের বিরুদ্ধে দুদক এখন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
আপিল বিভাগের এ রায়কে আমরা অবশ্যই স্বাগত জানাই। এ ধরনের কোনো কমিশন অবশ্যই সংবিধান ও প্রচলিত আইনকানুন মেনে গঠিত হতে হবে। পাশাপাশি যাদের ক্ষমা করা হবে, আগে তাদের অপরাধের প্রকৃত মাত্রা ও পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে। কিন্তু যে ৪৫২ জন ট্রুথ কমিশন থেকে দায়মুক্তি নিয়েছিলেন, তাঁদের সবার অপরাধের যথাযথ তদন্তই হয়নি। তাঁরা রাষ্ট্রের কী পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন অথবা রাষ্ট্রের কতটুকু ক্ষয়ক্ষতি করেছেন, তা নিশ্চিত হওয়ার আগেই তাঁদের দায়মুক্তি দেওয়াটা সাধারণ বুদ্ধিতেও যুক্তিগ্রাহ্য নয়। এ রায়ের ফলে আরো একটি বিষয় পরিষ্কার হলো যে অসাংবিধানিক সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের প্রতি আস্থা রাখাটা বিরাট ভুল। পাশাপাশি আরো একটি বিষয় আমাদের মনে রাখতে হবে, তাঁরা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে দায়মুক্তি চেয়েছেন এবং অর্থদণ্ডের মাধ্যমে কিছুটা হলেও শাস্তি পেয়েছেন। কিন্তু যাঁরা একই অপরাধ করেছেন, অথচ দায়মুক্তি চাননি কিংবা অর্থদণ্ড দেননি_সমাজে তাঁদের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। তাই দায়মুক্তি নেওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনার পাশাপাশি দায়মুক্তি না নেওয়া অপরাধীদের চিহ্নিত করা এবং অপরাধ প্রমাণ করার জন্য দুদককে অধিক শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে হবে। যদিও বর্তমান সরকারের আমলে তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির বিপরীত অবস্থান থেকে দুদকের ক্ষমতা অনেকটাই খর্ব করা হয়েছে, অনেক বাধা-বিপত্তি তৈরি করা হয়েছে এবং তাদের জনবলও অত্যন্ত সীমিত_তবু জনগণের প্রত্যাশা পূরণে দুদককে সাধ্যমতো প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। ভবিষ্যতে তার ওপরই নির্ধারিত হবে দুদকের সাফল্য।
আপিল বিভাগের এ রায়কে আমরা অবশ্যই স্বাগত জানাই। এ ধরনের কোনো কমিশন অবশ্যই সংবিধান ও প্রচলিত আইনকানুন মেনে গঠিত হতে হবে। পাশাপাশি যাদের ক্ষমা করা হবে, আগে তাদের অপরাধের প্রকৃত মাত্রা ও পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে। কিন্তু যে ৪৫২ জন ট্রুথ কমিশন থেকে দায়মুক্তি নিয়েছিলেন, তাঁদের সবার অপরাধের যথাযথ তদন্তই হয়নি। তাঁরা রাষ্ট্রের কী পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন অথবা রাষ্ট্রের কতটুকু ক্ষয়ক্ষতি করেছেন, তা নিশ্চিত হওয়ার আগেই তাঁদের দায়মুক্তি দেওয়াটা সাধারণ বুদ্ধিতেও যুক্তিগ্রাহ্য নয়। এ রায়ের ফলে আরো একটি বিষয় পরিষ্কার হলো যে অসাংবিধানিক সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের প্রতি আস্থা রাখাটা বিরাট ভুল। পাশাপাশি আরো একটি বিষয় আমাদের মনে রাখতে হবে, তাঁরা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে দায়মুক্তি চেয়েছেন এবং অর্থদণ্ডের মাধ্যমে কিছুটা হলেও শাস্তি পেয়েছেন। কিন্তু যাঁরা একই অপরাধ করেছেন, অথচ দায়মুক্তি চাননি কিংবা অর্থদণ্ড দেননি_সমাজে তাঁদের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। তাই দায়মুক্তি নেওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনার পাশাপাশি দায়মুক্তি না নেওয়া অপরাধীদের চিহ্নিত করা এবং অপরাধ প্রমাণ করার জন্য দুদককে অধিক শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে হবে। যদিও বর্তমান সরকারের আমলে তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির বিপরীত অবস্থান থেকে দুদকের ক্ষমতা অনেকটাই খর্ব করা হয়েছে, অনেক বাধা-বিপত্তি তৈরি করা হয়েছে এবং তাদের জনবলও অত্যন্ত সীমিত_তবু জনগণের প্রত্যাশা পূরণে দুদককে সাধ্যমতো প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। ভবিষ্যতে তার ওপরই নির্ধারিত হবে দুদকের সাফল্য।
No comments