মেঘনাতীরে মাতম চলছে, মামলা-আরও ২৭ লাশ উদ্ধার
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় মেঘনা নদীতে লঞ্চডুবির ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার আরও ২৭ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে চারজন শিশু, তিনজন নারী ও ২০ জন পুরুষ। এ নিয়ে গত তিন দিনে ১৩৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হলো।
এ দিকে গজারিয়ার চরকিশোরগঞ্জ ও চররমজান বেগ এলাকায় গতকালও লঞ্চের নিখোঁজ যাত্রীদের স্বজনদের মাতম অব্যাহত ছিল। লাশের উত্কট গন্ধ বের হওয়ায় লোকজনকে নাক চেপে থাকতে দেখা গেছে।
উদ্ধার হওয়া এমভি শরীয়তপুর-১ লঞ্চটি রাখা হয়েছিল চররমজান বেগের তীরে। লঞ্চটির বাঁ দিকের পেছনের অংশে ভেঙে দেবে গেছে। গত সোমবার দিবাগত রাতে ঢাকায় যাওয়ার পথে ওই এলাকায় মালবাহী একটি জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চটি উল্টে গিয়ে ডুবে যায়। লঞ্চটি যেখানে ডুবে ছিল, অধিকাংশ লাশ তার আশপাশে ভেসে ওঠে।
গতকাল সকালে লঞ্চে মাল রাখার স্থান থেকে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। দুপুরে লঞ্চ থেকে শাহজালাল রাঢ়ী (২২) নামের এক তরুণের লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশটি শনাক্ত করেন তাঁর বাবা সিরাজ রাঢ়ী।
সিরাজ রাঢ়ী বলেন, ‘বুধবার ডুবুরিরা আমারে লঞ্চে উঠতে দেয় নাই। তারা বলে, লঞ্চে আর কোনো লাশ নাই। লাশ না থাকলে এতজন নিখোঁজ হইল, তাগো লাশ গেল কই?’
সিরাজ রাঢ়ী আরও বলেন, ‘এহনও লঞ্চের ডেকের মধ্যে মরিচ ও ধইন্যার বস্তা। ডেক থিকা গন্ধ বাইর হইতাছে। ওই বস্তাগুলো বাইর কইরা ডেকের মধ্যে খুঁজলে আরও লাশ পাওয়া যাইব।’
এ দিকে নিখোঁজ যাত্রীদের কয়েকজন স্বজন অভিযোগ করেন, স্রোতের কারণে লাশ আশপাশে ছড়িয়ে পড়েছে। পাশের জেলা চাঁদপুরের মতলবের ষাটনল থেকেও লাশ পাওয়া গেছে। স্বজনদের অভিযোগ, দুর্ঘটনার পর গত মঙ্গল ও বুধবার স্থানীয় প্রশাসন, বিআইডব্লিউটিএসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা লাশ উদ্ধার নিয়ে যে রকম আন্তরিকতা ও তত্পরতা দেখিয়েছিলেন, গতকাল তা ছিল না।
তাই স্বজনেরা গতকাল নিজেরাই নিখোঁজ স্বজনদের লাশ মেঘনায় খুঁজে বেড়ান। উদ্ধারকাজে তাঁদের সহযোগিতা করেন জেলে ও আশপাশের এলাকার লোকজন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল নয়টার দিকে গজারিয়ার বালুরচরে একটি লাশ ভাসতে দেখে এলাকাবাসী তা উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেয়। পরে সেই লাশ চরকিশোরগঞ্জে মেঘনার তীরে আনা হয়। আরও একটি লাশ ভেসে ওঠে চরঝাপটা এলাকায়। নৌকার জেলে মো. হোসেন মিজি বলেন, ‘নৌকায় ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাত্ নৌকার সঙ্গে কী যেন ধাক্কা খায়। ছিল দুর্গন্ধ। পরে উঠে দেখি, একটি লাশ। পরে তা চরকিশোরগঞ্জে পাঠানোর ব্যবস্থা করি।’
প্রশাসনের বক্তব্য: লঞ্চের পাটাতনে আরও লাশ থাকার ব্যাপারে মুক্তারপুরে নৌ পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মিজান বলেন, লঞ্চের পাটাতনে রাখা মরিচের বস্তার গন্ধ ও ঝাঁজে ভেতরে যাওয়া যাচ্ছিল না।
মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ এস এম মাহফুজুল হক গতকাল রাত আটটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, সকাল থেকে এ পর্যন্ত ২৭ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ২১ জনের লাশ শনাক্ত করে স্বজনেরা নিয়ে গেছেন। পরিচয় পাওয়া যায়নি এমন ছয়জনের লাশ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
উদ্ধার তত্পরতা নিয়ে স্বজনদের অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মো. আজিজুল আলম বলেন, নদীতে লাশ উদ্ধারে কয়েকটি দল কাজ করছে। লাশ পাওয়া পর্যন্ত উদ্ধারকাজ চলবে।
উদ্ধার হওয়া লাশের মধ্যে যাদের পরিচয় মিলেছে: শুভ বাগা (৭), রোকসান বেগম (৩৩), কাওসার হাওলাদার (২৬), তাসলিমা বেগম (২৫), মো. খালেক (৩৫), শাহজালাল রাঢ়ী (২২), ইমা (৭), নাহিদ হোসেন (৩৮), আলমগীর হোসেন (৩৫), ইলিয়াস কেরানী (৪৫), মো. জুবায়ের (৪), মনির হোসেন (৩৫), সোহেল (২৫), আবুল হোসেন সৈয়াল (৫৫), রিকু ফকির (২৮), ইলিয়াস (২), জামিলা বেগম (২৬), ফজলুল হক (৪৮), সৈয়দ আবুল হোসেন (৪৫), নূরে আলম (২৭) ও রুবেল ঢালী (২৩)।
দুর্ঘটনায় মামলা: লঞ্চ দুর্ঘটনায় গতকাল দুপুরে গজারিয়া থানায় একটি মামলা করেছেন গজারিয়া থানার এসআই হায়দার আলী। মামলায় অজ্ঞাতনামা মালবাহী জাহাজের মাস্টার, সারেং ও সুকানি এবং শরীয়তপুর-১ লঞ্চের মালিক, মাস্টার, সারেং ও সুকানিকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে শরীয়তপুর-১ লঞ্চের সুকানি সাদেক আলী (৫৫), তাঁর স্ত্রী, মেয়ে ও শ্যালক মারা গেছেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, মালবাহী জাহাজটি এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
উদ্ধার হওয়া এমভি শরীয়তপুর-১ লঞ্চটি রাখা হয়েছিল চররমজান বেগের তীরে। লঞ্চটির বাঁ দিকের পেছনের অংশে ভেঙে দেবে গেছে। গত সোমবার দিবাগত রাতে ঢাকায় যাওয়ার পথে ওই এলাকায় মালবাহী একটি জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চটি উল্টে গিয়ে ডুবে যায়। লঞ্চটি যেখানে ডুবে ছিল, অধিকাংশ লাশ তার আশপাশে ভেসে ওঠে।
গতকাল সকালে লঞ্চে মাল রাখার স্থান থেকে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। দুপুরে লঞ্চ থেকে শাহজালাল রাঢ়ী (২২) নামের এক তরুণের লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশটি শনাক্ত করেন তাঁর বাবা সিরাজ রাঢ়ী।
সিরাজ রাঢ়ী বলেন, ‘বুধবার ডুবুরিরা আমারে লঞ্চে উঠতে দেয় নাই। তারা বলে, লঞ্চে আর কোনো লাশ নাই। লাশ না থাকলে এতজন নিখোঁজ হইল, তাগো লাশ গেল কই?’
সিরাজ রাঢ়ী আরও বলেন, ‘এহনও লঞ্চের ডেকের মধ্যে মরিচ ও ধইন্যার বস্তা। ডেক থিকা গন্ধ বাইর হইতাছে। ওই বস্তাগুলো বাইর কইরা ডেকের মধ্যে খুঁজলে আরও লাশ পাওয়া যাইব।’
এ দিকে নিখোঁজ যাত্রীদের কয়েকজন স্বজন অভিযোগ করেন, স্রোতের কারণে লাশ আশপাশে ছড়িয়ে পড়েছে। পাশের জেলা চাঁদপুরের মতলবের ষাটনল থেকেও লাশ পাওয়া গেছে। স্বজনদের অভিযোগ, দুর্ঘটনার পর গত মঙ্গল ও বুধবার স্থানীয় প্রশাসন, বিআইডব্লিউটিএসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা লাশ উদ্ধার নিয়ে যে রকম আন্তরিকতা ও তত্পরতা দেখিয়েছিলেন, গতকাল তা ছিল না।
তাই স্বজনেরা গতকাল নিজেরাই নিখোঁজ স্বজনদের লাশ মেঘনায় খুঁজে বেড়ান। উদ্ধারকাজে তাঁদের সহযোগিতা করেন জেলে ও আশপাশের এলাকার লোকজন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল নয়টার দিকে গজারিয়ার বালুরচরে একটি লাশ ভাসতে দেখে এলাকাবাসী তা উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেয়। পরে সেই লাশ চরকিশোরগঞ্জে মেঘনার তীরে আনা হয়। আরও একটি লাশ ভেসে ওঠে চরঝাপটা এলাকায়। নৌকার জেলে মো. হোসেন মিজি বলেন, ‘নৌকায় ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাত্ নৌকার সঙ্গে কী যেন ধাক্কা খায়। ছিল দুর্গন্ধ। পরে উঠে দেখি, একটি লাশ। পরে তা চরকিশোরগঞ্জে পাঠানোর ব্যবস্থা করি।’
প্রশাসনের বক্তব্য: লঞ্চের পাটাতনে আরও লাশ থাকার ব্যাপারে মুক্তারপুরে নৌ পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মিজান বলেন, লঞ্চের পাটাতনে রাখা মরিচের বস্তার গন্ধ ও ঝাঁজে ভেতরে যাওয়া যাচ্ছিল না।
মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ এস এম মাহফুজুল হক গতকাল রাত আটটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, সকাল থেকে এ পর্যন্ত ২৭ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ২১ জনের লাশ শনাক্ত করে স্বজনেরা নিয়ে গেছেন। পরিচয় পাওয়া যায়নি এমন ছয়জনের লাশ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
উদ্ধার তত্পরতা নিয়ে স্বজনদের অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মো. আজিজুল আলম বলেন, নদীতে লাশ উদ্ধারে কয়েকটি দল কাজ করছে। লাশ পাওয়া পর্যন্ত উদ্ধারকাজ চলবে।
উদ্ধার হওয়া লাশের মধ্যে যাদের পরিচয় মিলেছে: শুভ বাগা (৭), রোকসান বেগম (৩৩), কাওসার হাওলাদার (২৬), তাসলিমা বেগম (২৫), মো. খালেক (৩৫), শাহজালাল রাঢ়ী (২২), ইমা (৭), নাহিদ হোসেন (৩৮), আলমগীর হোসেন (৩৫), ইলিয়াস কেরানী (৪৫), মো. জুবায়ের (৪), মনির হোসেন (৩৫), সোহেল (২৫), আবুল হোসেন সৈয়াল (৫৫), রিকু ফকির (২৮), ইলিয়াস (২), জামিলা বেগম (২৬), ফজলুল হক (৪৮), সৈয়দ আবুল হোসেন (৪৫), নূরে আলম (২৭) ও রুবেল ঢালী (২৩)।
দুর্ঘটনায় মামলা: লঞ্চ দুর্ঘটনায় গতকাল দুপুরে গজারিয়া থানায় একটি মামলা করেছেন গজারিয়া থানার এসআই হায়দার আলী। মামলায় অজ্ঞাতনামা মালবাহী জাহাজের মাস্টার, সারেং ও সুকানি এবং শরীয়তপুর-১ লঞ্চের মালিক, মাস্টার, সারেং ও সুকানিকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে শরীয়তপুর-১ লঞ্চের সুকানি সাদেক আলী (৫৫), তাঁর স্ত্রী, মেয়ে ও শ্যালক মারা গেছেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, মালবাহী জাহাজটি এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
No comments