মৃতদেহ ১৪১-মেঘনাপারে লাশ নিয়ে ছাড়পত্রের জন্য অপেক্ষা
দুর্ঘটনার পর থেকেই মেঘনাপারে প্রতীক্ষা স্বজনদের। স্বজন হারানোর শঙ্কা আর বেদনা সবার চোখে-মুখে। সবারই প্রতীক্ষা শেষ পর্যন্ত অন্তত লাশটি পাওয়ার। একসময় স্বজনের প্রাণহীন দেহটিও মিলেছে। কিন্তু তা বাড়ি নিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। প্রশাসনের ছাড়পত্র লাগবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিআইডাব্লিউটিএর বরাদ্দ করা দাফনের খরচটাও পাওয়া দরকার।
অথচ তারা কেউ ঘটনাস্থলে নেই। অগত্যা স্বজনের গলিত লাশ সামনে নিয়ে এবার প্রশাসন আর বিআইডাব্লিউটিএর কর্মকর্তাদের জন্য প্রতীক্ষা।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা নদীতে সোমবার গভীর রাতে লঞ্চডুবির পর গতকাল বৃহস্পতিবার নদীতীরে এমন মর্মান্তিক ও অমানবিক চিত্র দেখা গেছে। অথচ গতকাল আরো ২৯টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে উদ্ধার হওয়া লাশের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪১টি।
এদিকে দুর্ঘটনার তিন দিন পরও ঘাতক কার্গোটি শনাক্ত করা যায়নি বলে জানিয়েছেন নৌপবিহনমন্ত্রী শাজাহান খান। গতকাল দুপুরে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, নদী ভাঙন ও নৌপথে চাঁদাবাজি সংক্রান্ত এক বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তিনি বলেন, তিনটি তদন্ত কমিটি একযোগে কাজ করছে। সময়মতোই তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া যাবে।
মন্ত্রী এ সময় মোট ১১৭ জনের লাশ পাওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, '৬০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। আর কেউ নিখোঁজ আছে বলে আমার জানা নেই।' অথচ মন্ত্রীর ওই তথ্যের পর গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত উদ্ধারকৃত লাশের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪১টি।
জানা গেছে, বুধবার বিআইডাব্লিউটিএ লঞ্চ উদ্ধার পর্ব আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত ঘোষণার পর জেলা প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা সবাই চলে যান। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত গজারিয়া থানার পুলিশের একটি দল ছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে কাউকে দেখা যায়নি। মিডিয়ার পক্ষ থেকে বিষয়টি মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক আজিজুল আলমকে জানানোর পর দুপুর সোয়া ১টার দিকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মাহফুজুল হক ও সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শামসুল আলম ঘটনাস্থলে যান।
এস এম মাহফুজুল হক বলেন, 'আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বিআইডাব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ বুধবার উদ্ধারকাজ পুরোপুরি শেষ না করেই চলে গেছে। উদ্ধারকারী জাহাজ দুটি এখনো সরিয়ে নেওয়া হয়নি। উদ্ধার করা লঞ্চের ভেতরে আরো লাশ থাকতে পারে।'
নিখোঁজদের স্বজন সোহেল অভিযোগ করেন, 'লাশ নদীতে ভাসছে। প্রশাসনকে খবর দিলে তারা লাশ আনতে যায় না। নিরুপায় হয়ে আমাদেরই লাশ উদ্ধারের ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে।'
গজারিয়া থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশের দল ছাড়া প্রশাসনের কেউ না থাকায় স্বজনহারা মানুষগুলোকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জেলা প্রশাসক আজিজুল আলম ঘটনাস্থলে আসেন।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা নদীতে সোমবার গভীর রাতে একটি কার্গোর ধাক্কায় আড়াই শতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে যায় এমভি শরীয়তপুর-১ নামের লঞ্চটি। দুর্ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ স্বজনের খোঁজে ভিড় জমায় অসংখ্য মানুষ। বুধবার উদ্ধার করা হয় দুর্ঘটনাকবলিত লঞ্চটি। ঘটনার তিন দিনেও নিখোঁজ স্বজনের লাশ না পেয়ে অনেকেই বুকে কষ্টের পাহাড় চেপে মেঘনার তীর ছেড়ে যায়। এদিকে গতকাল সকাল থেকেই মেঘনার বুকে একের পর এক ভেসে উঠতে থাকে নিখোঁজ যাত্রীদের লাশ। গজারিয়া থানার টহল পুলিশ লাশগুলো উদ্ধার করে সারিবদ্ধভাবে মেঘনার পাড়েই শুইয়ে রাখে। খবর পেয়ে নিখোঁজদের স্বজনরা আবার পড়ি-মরি করে ছুটে আসে মেঘনার পাড়ে। কেউ স্বজনের মৃতদেহ খুঁজে পেয়ে বিলাপ শুরু করে। আবার অনেকে শেষ পর্যন্ত স্বজনের লাশটাও পেল না ভেবে কান্নায় ভেঙে পড়ে। পুরো মেঘনাপাড়ে আবার যেন ফিরে আসে পাহাড়সম শোকের আবহ।
এদিকে গতকাল বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে লাশের সংখ্যা। ভিড় বাড়তে থাকে স্বজনহারা পরিবারগুলোর। এ সময় অনেকেই নিজ উদ্যোগে ট্রলারে করে মেঘনায় খুঁজতে থাকে স্বজনের লাশ।
গজারিয়া থানার এসআই রুহুল আমিন জানান, সকাল ৯টার দিকে লঞ্চের ভেতর থেকে একটি এবং মেঘনা নদীতে ভাসমান অবস্থায় চারটি লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর থেকে কিছুক্ষণ পর পর নদীতে ভেসে উঠতে থাকে লাশ। এ সময় একের পর এক লাশ উঠাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় টহল পুলিশকে। তিনি আরো জানান, সকালের দিকে যে গলিত লাশের পরিচয় মিলেছে তাও প্রশাসনের ছাড়পত্র ও দাফনের জন্য সরকারের বরাদ্দ করা টাকা না পাওয়ায় অপেক্ষা করতে হয় দুপুর ২টা পর্যন্ত। সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৯টি লাশ উদ্ধার করা হয়। তাঁদের মধ্যে ২০ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন- শুভবাসা (৭), কাওসার (২৬), নাসিমা (৪২), রোকসানা (৩৪), তাসলিমা (২৫), খালেক (৩৫), শাহজালাল (২২), হিমা (৭), নাহিদ (৩৮), আলমগীর (৩৫), দুর্ঘটনাকবলিত লঞ্চের কেরানি ইলিয়াস (৫৫), জুবায়ের (২৪), মনির (৩৫), সোহেল (২৫), হাসেম (৫৫), রিকু (২৮), সিরাজ (২৮), নুরে আলম (২৭), আবুল হোসেন (৫৫) ও ফজলুল হক (৪৮)।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা নদীতে সোমবার গভীর রাতে লঞ্চডুবির পর গতকাল বৃহস্পতিবার নদীতীরে এমন মর্মান্তিক ও অমানবিক চিত্র দেখা গেছে। অথচ গতকাল আরো ২৯টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে উদ্ধার হওয়া লাশের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪১টি।
এদিকে দুর্ঘটনার তিন দিন পরও ঘাতক কার্গোটি শনাক্ত করা যায়নি বলে জানিয়েছেন নৌপবিহনমন্ত্রী শাজাহান খান। গতকাল দুপুরে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, নদী ভাঙন ও নৌপথে চাঁদাবাজি সংক্রান্ত এক বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তিনি বলেন, তিনটি তদন্ত কমিটি একযোগে কাজ করছে। সময়মতোই তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া যাবে।
মন্ত্রী এ সময় মোট ১১৭ জনের লাশ পাওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, '৬০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। আর কেউ নিখোঁজ আছে বলে আমার জানা নেই।' অথচ মন্ত্রীর ওই তথ্যের পর গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত উদ্ধারকৃত লাশের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪১টি।
জানা গেছে, বুধবার বিআইডাব্লিউটিএ লঞ্চ উদ্ধার পর্ব আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত ঘোষণার পর জেলা প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা সবাই চলে যান। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত গজারিয়া থানার পুলিশের একটি দল ছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে কাউকে দেখা যায়নি। মিডিয়ার পক্ষ থেকে বিষয়টি মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক আজিজুল আলমকে জানানোর পর দুপুর সোয়া ১টার দিকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মাহফুজুল হক ও সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শামসুল আলম ঘটনাস্থলে যান।
এস এম মাহফুজুল হক বলেন, 'আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বিআইডাব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ বুধবার উদ্ধারকাজ পুরোপুরি শেষ না করেই চলে গেছে। উদ্ধারকারী জাহাজ দুটি এখনো সরিয়ে নেওয়া হয়নি। উদ্ধার করা লঞ্চের ভেতরে আরো লাশ থাকতে পারে।'
নিখোঁজদের স্বজন সোহেল অভিযোগ করেন, 'লাশ নদীতে ভাসছে। প্রশাসনকে খবর দিলে তারা লাশ আনতে যায় না। নিরুপায় হয়ে আমাদেরই লাশ উদ্ধারের ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে।'
গজারিয়া থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশের দল ছাড়া প্রশাসনের কেউ না থাকায় স্বজনহারা মানুষগুলোকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জেলা প্রশাসক আজিজুল আলম ঘটনাস্থলে আসেন।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা নদীতে সোমবার গভীর রাতে একটি কার্গোর ধাক্কায় আড়াই শতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে যায় এমভি শরীয়তপুর-১ নামের লঞ্চটি। দুর্ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ স্বজনের খোঁজে ভিড় জমায় অসংখ্য মানুষ। বুধবার উদ্ধার করা হয় দুর্ঘটনাকবলিত লঞ্চটি। ঘটনার তিন দিনেও নিখোঁজ স্বজনের লাশ না পেয়ে অনেকেই বুকে কষ্টের পাহাড় চেপে মেঘনার তীর ছেড়ে যায়। এদিকে গতকাল সকাল থেকেই মেঘনার বুকে একের পর এক ভেসে উঠতে থাকে নিখোঁজ যাত্রীদের লাশ। গজারিয়া থানার টহল পুলিশ লাশগুলো উদ্ধার করে সারিবদ্ধভাবে মেঘনার পাড়েই শুইয়ে রাখে। খবর পেয়ে নিখোঁজদের স্বজনরা আবার পড়ি-মরি করে ছুটে আসে মেঘনার পাড়ে। কেউ স্বজনের মৃতদেহ খুঁজে পেয়ে বিলাপ শুরু করে। আবার অনেকে শেষ পর্যন্ত স্বজনের লাশটাও পেল না ভেবে কান্নায় ভেঙে পড়ে। পুরো মেঘনাপাড়ে আবার যেন ফিরে আসে পাহাড়সম শোকের আবহ।
এদিকে গতকাল বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে লাশের সংখ্যা। ভিড় বাড়তে থাকে স্বজনহারা পরিবারগুলোর। এ সময় অনেকেই নিজ উদ্যোগে ট্রলারে করে মেঘনায় খুঁজতে থাকে স্বজনের লাশ।
গজারিয়া থানার এসআই রুহুল আমিন জানান, সকাল ৯টার দিকে লঞ্চের ভেতর থেকে একটি এবং মেঘনা নদীতে ভাসমান অবস্থায় চারটি লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর থেকে কিছুক্ষণ পর পর নদীতে ভেসে উঠতে থাকে লাশ। এ সময় একের পর এক লাশ উঠাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় টহল পুলিশকে। তিনি আরো জানান, সকালের দিকে যে গলিত লাশের পরিচয় মিলেছে তাও প্রশাসনের ছাড়পত্র ও দাফনের জন্য সরকারের বরাদ্দ করা টাকা না পাওয়ায় অপেক্ষা করতে হয় দুপুর ২টা পর্যন্ত। সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৯টি লাশ উদ্ধার করা হয়। তাঁদের মধ্যে ২০ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন- শুভবাসা (৭), কাওসার (২৬), নাসিমা (৪২), রোকসানা (৩৪), তাসলিমা (২৫), খালেক (৩৫), শাহজালাল (২২), হিমা (৭), নাহিদ (৩৮), আলমগীর (৩৫), দুর্ঘটনাকবলিত লঞ্চের কেরানি ইলিয়াস (৫৫), জুবায়ের (২৪), মনির (৩৫), সোহেল (২৫), হাসেম (৫৫), রিকু (২৮), সিরাজ (২৮), নুরে আলম (২৭), আবুল হোসেন (৫৫) ও ফজলুল হক (৪৮)।
No comments