ফারুক হোসেন হত্যা মামলা-নিজামী মুজাহিদসহ ১০৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র চূড়ান্ত by আনু মোস্তফা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতা ফারুক হোসেন হত্যা মামলার অভিযোগপত্র চূড়ান্ত। দুই বছরের বেশি সময় তদন্ত শেষে চাঞ্চল্যকর এই মামলায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ জামায়াত-শিবিরের ১০৯
নেতা-কর্মীকে প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অবশ্য তাঁদের মধ্যে একজন ইতিমধ্যে নিহত হওয়ায় তাঁর নাম বাদ দেওয়ার সুপারিশ থাকছে।
গত ১০ মার্চ মামলার মেমো অব এভিডেন্স (এমই) অনুমোদন করা হয়েছে। রাজশাহীর পাবলিক প্রসিকিউটরের (পিপি) মতামতের জন্য আগামী রবিবার তদন্তের ফল ও সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করা হবে।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) কর্মকর্তারা জানান, মামলার তদন্ত শেষ করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একাধিকবার তাগাদা দেওয়া হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী সপ্তাহেই অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হবে।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হলে মামলার পরবর্তী দিনে নিজামী, মুজাহিদ, সাঈদীসহ গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের রাজশাহীর সংশ্লিষ্ট আদালতে হাজির করা হবে।
মামলার প্রধান তত্ত্বাবধানকারী রাজশাহী মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (পূর্ব) শাহ আবু সালেহ মোহাম্মদ গোলাম মাহমুদ গতকাল বৃহস্পতিবার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'ফারুক হোসেন হত্যা মামলার তদন্তকাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। নির্দিষ্ট করে বলতে পারব না ঠিক কবে বা কোন দিন চার্জশিট দাখিল করা সম্ভব হবে। তবে শিগগির তা হবে এটা আমরা আশা করতে পারি।' এর বেশি কিছু বলতে তিনি রাজি হননি।
আরএমপির সূত্রগুলো জানায়, দীর্ঘ তদন্ত শেষে সম্প্রতি ফারুক হোসেন হত্যা মামলার অভিযোগপত্র চূড়ান্ত করা হয়েছে। এই মামলায় কেন্দ্রীয় জামায়াতের তিন শীর্ষ নেতা নিজামী, মুজাহিদ, সাঈদীসহ একই দলের স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ের ১০৯ জন নেতা-কর্মীকে প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্ত অন্যদের মধ্যে রয়েছেন রাজশাহী মহানগর জামায়াতের আমির অধ্যাপক আতাউর রহমান, সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ, শুরার সদস্য সিদ্দিকুর রহমান, গিয়াসউদ্দিন ওরফে গিয়াস কাইঠ্যা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিবিরের তৎকালীন সভাপতি সামসুল আলম গোলাপ, সেক্রেটারি মোবারক হোসেন, আমির আলী হলের সভাপতি ইকরাম, হবিবুর রহমান হলের সভাপতি রাইজুল ইসলাম প্রমুখ।
সূত্র মতে, অভিযুক্ত ১০৯ আসামির মধ্যে এজাহার থেকে ৩৪ জনের নাম এসেছে। বাকি ৬১ জনের নাম এসেছে তদন্তে। অন্যতম অভিযুক্ত শাহীন ঘটনার এক সপ্তাহ পর চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হয়। তদন্তে মামলায় দায় থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। ফলে বর্তমানে এই মামলায় বিচারাধীন আসামির সংখ্যা দাঁড়াল ১০৮ জনে। তাঁদের মধ্যে নিজামী, মুজাহিদ, সাঈদীসহ ২৯ জন গ্রেপ্তার এবং ৫১ জন জামিনে রয়েছেন। বাকি ২৮ জন পলাতক।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ২০১০ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী রাজশাহীতে এক জনসভায় যোগদান শেষে সন্ধ্যায় নগরীর বিনোদপুরে ইসলামিয়া কলেজে দলীয় গোপন সভা করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী রাবি ও বহিরাগত জামায়াত-শিবির ক্যাডাররা ঘটনার এক দিন আগে ইসলামী কলেজসহ আরো কয়েকটি স্থানে গোপনে সভা করে হলে হলে আক্রমণ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের হত্যার পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে আসামিরা রাবিতে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে ফারুককে কুপিয়ে হত্যাসহ বিপুলসংখ্যক ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীকে গুরুতর জখম করেন। ১২ জন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীকে চায়নিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। তাঁদের মধ্যে পাঁচজনের পায়ের রগ কেটে দেয় শিবির ক্যাডাররা। ওই রাতে জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীরা রাতভর ক্যাম্পাসে বোমাবাজি ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। এ সংক্রান্ত আরো ১৩টি মামলা তদন্তাধীন।
ফারুক নিহত হওয়ার ঘটনার পরদিন ৯ ফেব্রুয়ারি রাবি শাখা ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম অপু বাদী হয়ে জামায়াত-শিবিরের ৩৪ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মতিহার থানায় এজাহার দাখিল করেন। পুলিশ সেটি হত্যা মামলা আকারে রেকর্ড করে।
পুলিশের সূত্রগুলো আরো জানায়, মামলার অন্যতম চার আসামি সামসুল আলম গোলাপ, আকরাম হোসেন ও গিয়াস কাইঠ্যা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁরা নিজামি, মুজাহিদ, সাঈদীসহ আরো ৮৭ জন জড়িত থাকার কথাও স্বীকার করেন।
পর্যায়ক্রমে মামলাটির তদন্ত করেছেন পাঁচ কর্মকর্তা। সর্বশেষ তদন্ত কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান বলেন, তদন্তকাজ একেবারে শেষ পর্যায়ে রয়েছে। শিগগির চার্জশিট দাখিল করা হবে।
ফারুকের বাবা যা বললেন : নিহত ফারুকের বাবা ফজলুর রহমান গতকাল ফোনে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমি সন্তান হারিয়ে আজ খুনিদের শাস্তি দেখার অপেক্ষায় প্রহর গুনছি। আশা করি, খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে। আর যেন ফারুকের মতো তাজা প্রাণ হারিয়ে না যায়।'
গত ১০ মার্চ মামলার মেমো অব এভিডেন্স (এমই) অনুমোদন করা হয়েছে। রাজশাহীর পাবলিক প্রসিকিউটরের (পিপি) মতামতের জন্য আগামী রবিবার তদন্তের ফল ও সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করা হবে।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) কর্মকর্তারা জানান, মামলার তদন্ত শেষ করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একাধিকবার তাগাদা দেওয়া হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী সপ্তাহেই অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হবে।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হলে মামলার পরবর্তী দিনে নিজামী, মুজাহিদ, সাঈদীসহ গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের রাজশাহীর সংশ্লিষ্ট আদালতে হাজির করা হবে।
মামলার প্রধান তত্ত্বাবধানকারী রাজশাহী মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (পূর্ব) শাহ আবু সালেহ মোহাম্মদ গোলাম মাহমুদ গতকাল বৃহস্পতিবার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'ফারুক হোসেন হত্যা মামলার তদন্তকাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। নির্দিষ্ট করে বলতে পারব না ঠিক কবে বা কোন দিন চার্জশিট দাখিল করা সম্ভব হবে। তবে শিগগির তা হবে এটা আমরা আশা করতে পারি।' এর বেশি কিছু বলতে তিনি রাজি হননি।
আরএমপির সূত্রগুলো জানায়, দীর্ঘ তদন্ত শেষে সম্প্রতি ফারুক হোসেন হত্যা মামলার অভিযোগপত্র চূড়ান্ত করা হয়েছে। এই মামলায় কেন্দ্রীয় জামায়াতের তিন শীর্ষ নেতা নিজামী, মুজাহিদ, সাঈদীসহ একই দলের স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ের ১০৯ জন নেতা-কর্মীকে প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্ত অন্যদের মধ্যে রয়েছেন রাজশাহী মহানগর জামায়াতের আমির অধ্যাপক আতাউর রহমান, সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ, শুরার সদস্য সিদ্দিকুর রহমান, গিয়াসউদ্দিন ওরফে গিয়াস কাইঠ্যা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিবিরের তৎকালীন সভাপতি সামসুল আলম গোলাপ, সেক্রেটারি মোবারক হোসেন, আমির আলী হলের সভাপতি ইকরাম, হবিবুর রহমান হলের সভাপতি রাইজুল ইসলাম প্রমুখ।
সূত্র মতে, অভিযুক্ত ১০৯ আসামির মধ্যে এজাহার থেকে ৩৪ জনের নাম এসেছে। বাকি ৬১ জনের নাম এসেছে তদন্তে। অন্যতম অভিযুক্ত শাহীন ঘটনার এক সপ্তাহ পর চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হয়। তদন্তে মামলায় দায় থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। ফলে বর্তমানে এই মামলায় বিচারাধীন আসামির সংখ্যা দাঁড়াল ১০৮ জনে। তাঁদের মধ্যে নিজামী, মুজাহিদ, সাঈদীসহ ২৯ জন গ্রেপ্তার এবং ৫১ জন জামিনে রয়েছেন। বাকি ২৮ জন পলাতক।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ২০১০ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী রাজশাহীতে এক জনসভায় যোগদান শেষে সন্ধ্যায় নগরীর বিনোদপুরে ইসলামিয়া কলেজে দলীয় গোপন সভা করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী রাবি ও বহিরাগত জামায়াত-শিবির ক্যাডাররা ঘটনার এক দিন আগে ইসলামী কলেজসহ আরো কয়েকটি স্থানে গোপনে সভা করে হলে হলে আক্রমণ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের হত্যার পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে আসামিরা রাবিতে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে ফারুককে কুপিয়ে হত্যাসহ বিপুলসংখ্যক ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীকে গুরুতর জখম করেন। ১২ জন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীকে চায়নিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। তাঁদের মধ্যে পাঁচজনের পায়ের রগ কেটে দেয় শিবির ক্যাডাররা। ওই রাতে জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীরা রাতভর ক্যাম্পাসে বোমাবাজি ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। এ সংক্রান্ত আরো ১৩টি মামলা তদন্তাধীন।
ফারুক নিহত হওয়ার ঘটনার পরদিন ৯ ফেব্রুয়ারি রাবি শাখা ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম অপু বাদী হয়ে জামায়াত-শিবিরের ৩৪ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মতিহার থানায় এজাহার দাখিল করেন। পুলিশ সেটি হত্যা মামলা আকারে রেকর্ড করে।
পুলিশের সূত্রগুলো আরো জানায়, মামলার অন্যতম চার আসামি সামসুল আলম গোলাপ, আকরাম হোসেন ও গিয়াস কাইঠ্যা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁরা নিজামি, মুজাহিদ, সাঈদীসহ আরো ৮৭ জন জড়িত থাকার কথাও স্বীকার করেন।
পর্যায়ক্রমে মামলাটির তদন্ত করেছেন পাঁচ কর্মকর্তা। সর্বশেষ তদন্ত কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান বলেন, তদন্তকাজ একেবারে শেষ পর্যায়ে রয়েছে। শিগগির চার্জশিট দাখিল করা হবে।
ফারুকের বাবা যা বললেন : নিহত ফারুকের বাবা ফজলুর রহমান গতকাল ফোনে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমি সন্তান হারিয়ে আজ খুনিদের শাস্তি দেখার অপেক্ষায় প্রহর গুনছি। আশা করি, খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে। আর যেন ফারুকের মতো তাজা প্রাণ হারিয়ে না যায়।'
No comments