২৯ জানুয়ারি থেকে বসছে স্কাউটিংয়ের সবচেয়ে বড় আসর by এ রহমান মুকুল
দেবীগঞ্জের ময়নামতির চরটি এখন আলোকিত নগরী। দিন-রাত সমান। সন্ধ্যার পরই বিদ্যুতের আলোয় ঝলমল করছে পুরো চর এলাকা। বিশাল এলাকাজুড়ে বনবীথি।
ফাঁকে ফাঁকে সারিবদ্ধভাবে টানানো হয়েছে সাত শ’রও বেশি তাঁবু। ‘শান্তি ও উন্নয়নে স্কাউটিং’ এই সেøাগানকে সামনে রেখে ১৩টি চ্যালেঞ্জ নিয়ে এখানে ২৯ জানুয়ারি থেকে বসছে স্কাউটিংয়ের সবচেয়ে বড় আসর দশম জাতীয় রোভারমুট ও পঞ্চম জাতীয় কমডেকার। চলবে ৪ আয়োজন করেছে তাঁরই গড়া সংগঠন ছায়ানট। সকাল থেকেই শুরু হবে স্মরণের এ আয়োজন। সকাল সাতটা থেকে ৮টা পর্যন্ত গানে গানে স্মরণ করা হবে এই গুণীজনকে। এ পর্বে ছায়ানটের শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করবে বিশটি সম্মেলক গান। সন্ধ্যা সাতটার অনুষ্ঠানসূচিতে রয়েছে তাঁকে স্মরণ করে গান, কবিতা আবৃত্তি, স্মৃতিচারণা ও পাঠ। শুরুতেই ওয়াহিদুল হককে নিবেদিত কথামালায় অংশ নেবেন ছায়ানট সভাপতি সন্্জীদা খাতুন। আর কথামালার সঙ্গে কবিতা আবৃত্তি করবেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর। গানের পাশাপাশি আলোচনা করবেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি তারেক আলী। এছাড়াও স্মৃতিচারণের পাশাপাশি গান শোনাবেন রবীন্দ্রসঙ্গীতশিল্পী ইফ্্ফাত আরা দেওয়ান।দেশের সংস্কৃতিচর্চার পথ নির্মাণে অগ্রপথিক ছিলেন ওয়াহিদুল। সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত থাকলেও তাঁর সবচেয়ে বড় অবদান সংস্কৃতির ক্ষেত্র প্রস্তুত করা। বাঙালিত্বের গর্ব নিয়ে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার জন্য আজীবন মানুষ গড়েছেন, সংঘবদ্ধ করেছেন, পথ দেখিয়েছেন ওয়াহিদুল হক। তিনি ছিলেন বাংলার মানুষের শিক্ষা-সংস্কৃতি ও মননের আজীবনসঙ্গী। ষাটের দশকের গোড়াতে ছায়ানট আন্দোলন ও একে স্থায়ী প্রতিষ্ঠানে রূপদানকারী ব্যক্তিদের মধ্যে তিনি অন্যতম। ১৯৬১ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত এ প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং ১৯৯৯ থেকে আমৃত্যু সহ-সভাপতি ছিলেন। এছাড়াও আবৃত্তি প্রতিষ্ঠান ‘কণ্ঠশীলন’, মৃত্যুর কিছুদিন আগে গড়ে তোলা ‘নালন্দা’ প্রভৃতি প্রতিষ্ঠা এবং তাঁকে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর উপর প্রতিষ্ঠা করা ওয়াহিদুল হকের সবচেয়ে বড় অবদান। পাশাপাশি তিনি রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ গঠন করে সারা দেশে রবীন্দ্রসঙ্গীত চর্চায় মানুষকে আগ্রহী করে তোলার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটান তিনি। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ ব্রতচারী সমিতির সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ আবৃত্তি ফেডারেশনের (পরে আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং একাত্তরের স্বাধীন বাংলা শিল্পী সংস্থার অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন। এছাড়া আবৃত্তি সংগঠন কণ্ঠশীলনের সঙ্গে তিনি আমৃত্যু যুক্ত ছিলেন।
তিনি অবজারভারের শিফট-ইন-চার্জ, ডেইলি স্টারের যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। দি পিপল পত্রিকায় সম্পদনা বিভাগে কাজ করেছেন। নিউ নেশন ও মর্নিং নিউজেও তিনি কাজ করেন। এছাড়া প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের খ-কালীন শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন। জীবনের শেষ দিকে ‘অভয় বাজে হৃদয় মাঝে’ ও ‘এখনও গেল না আঁধার’ শিরোনামে নিয়মিত কলাম লিখেছেন দৈনিক জনকণ্ঠ ও দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকায়।
No comments