জাতীয় সঙ্গীতে বিকৃতি! ‘ক্ষ’র স্পর্ধা প্রতিহত এখনই by মাহমুদ মেনন
জাতীয় সঙ্গীত ভুলভাবে গেয়ে কেউ পার পেয়ে যেতে পারে না, একথা বলেছেন
রবীন্দ্র সঙ্গীত জগতের অন্যতম শিল্পী মিতা হক। অপর পুরোধা শিল্পী সাদি
মহম্মদ বলেছেন জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করার সুযোগ নেই।
এ কাজ
যারা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হওয়া উচিত। আর ছায়ানটের
সাধারণ সম্পাদক খায়রুল আনাম শাকিল বলেছেন এর এখনি প্রতিবাদ হওয়া উচিত।
বাংলাদেশের নাগরিকতো বটেই কোন ভিনদেশিও বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতকে ভুলভাবে,
উল্টো করে গাইতে পারেন না।
বাংলানিউজের সঙ্গে এমনই ক্ষুব্ধ
প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তিন প্রথিতযশা শিল্পী। তারা কথা বলছিলেন সম্প্রতি
অনলাইনে প্রকাশিত একটি মিউজিক ভিডিও নিয়ে। যেটি তৈরি হয়েছে লন্ডনে। লন্ডন
স্কুল অব মিউজিক-এর এক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ভিডিওটি অনলাইনে ছেড়েছেন ‘ক্ষ’
নামের একটি ব্যান্ড দলের ব্যানারে। যাতে বিকৃতভাবে গাওয়া হয়েছে ১৬ কোটি
বাঙালীর প্রাণের সঙ্গীত ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।’
দেশের প্রতিটি মানুষের প্রাণের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা এই গান। যে গান বাংলার প্রতিটি সন্তানকে দেশকে ভালোবাসতে উদ্বুদ্ধ করে। যে গানে জড়িয়ে আছে দেশের রূপ, রস গন্ধের সঠিক চিত্রায়ন। যে গান দেশের জাতীয় গান হিসেবে সাংবিধানিকভাবেই স্বীকৃত। তার প্রতি অবমাননা করেই তৈরি হয়েছে মিউজিক ভিডিওটি। সঙ্গীতজ্ঞ ও শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলে তেমন মতামতই পাওয়া গেছে।
দেশের প্রতিটি মানুষের প্রাণের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা এই গান। যে গান বাংলার প্রতিটি সন্তানকে দেশকে ভালোবাসতে উদ্বুদ্ধ করে। যে গানে জড়িয়ে আছে দেশের রূপ, রস গন্ধের সঠিক চিত্রায়ন। যে গান দেশের জাতীয় গান হিসেবে সাংবিধানিকভাবেই স্বীকৃত। তার প্রতি অবমাননা করেই তৈরি হয়েছে মিউজিক ভিডিওটি। সঙ্গীতজ্ঞ ও শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলে তেমন মতামতই পাওয়া গেছে।
‘ক্ষ’
নামের এই ব্যান্ড দলটি কাদের? সে তথ্য তালাশে জানা যায় এটি লন্ডনভিত্তিক
একটি ব্রিটিশ-বাংলাদেশি ব্যান্ড। তাদের দাবি বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীতে
আধুনিক সুরারোপ করাই তাদের উদ্দেশ্য।
কিন্তু তাদের এই আধুনিকতার চর্চার ক্ষেত্র জাতীয় সঙ্গীত হতে পারে কি?
এমন প্রশ্নে খায়রুল আনাম শাকিল বাংলানিউজকে বলেন, কোনো ভাবনা থেকেই জাতীয়
সঙ্গীতকে বিকৃত করা যাবে না। জাতীয় সঙ্গীত যেখানে সেখানে যেনো তেনো ভাবে
গাওয়ার বিষয় নয়। এটি সংবিধানের স্বীকৃত গান। এর সুর সাংবিধানিকভাবে
স্বীকৃত। এর ব্যতয় করার সুযোগ কারোরই নেই।
শাকিল বলেন, এই মুহ’র্তেই কড়া প্রতিবাদ করে এ গান বন্ধ করে দেওয়া উচিত।
সাদি মহম্মদ বাংলানিউজকে বলেন, জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে এই কাজ দেশদ্রোহিতার সামিল। যারা এটা করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেওয়া উচিত। তিনি বলেন, জাতীয় সঙ্গীতকে যেভাবে গাওয়া হয়েছে তা ফাজলামো ছাড়া আর কিছুই নয়।
সাদি মহম্মদ বাংলানিউজকে বলেন, জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে এই কাজ দেশদ্রোহিতার সামিল। যারা এটা করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেওয়া উচিত। তিনি বলেন, জাতীয় সঙ্গীতকে যেভাবে গাওয়া হয়েছে তা ফাজলামো ছাড়া আর কিছুই নয়।
শান্তিনিকেতন থেকে সঙ্গীত শিক্ষায় শিক্ষিত সাদি মহম্মদ বলেন, জাতীয়
সঙ্গীত নিয়ে দুরভীসন্ধি আমরা আগেও দেখেছি। একাজ সেই দুরভীসন্ধীর অংশও হতে
পারে। নতুন সুরারোপের জন্য ‘ক্ষ’ কেনো বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতকেই খুঁজে
পেলো সে প্রশ্ন তুলে রবীন্দ্রসঙ্গীতের এই প্রথিতযশা শিল্পী বাংলানিউজকে
বলেন, কোনো মৌলবাদী গোষ্ঠীরও কাজ হতে পারে এটি।
আর কাজটিকে ন্যক্কারজনক বলে মত দিয়ে রবীন্দ্রসঙ্গীতের কালোত্তীর্ণ শিল্পী মিতা হক বাংলানিউজকে বলেন, সারাজীববন এসব উল্টোপাল্টা অপসংস্কৃতির চর্চার বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। এদের বিষয়ে কথা বলার রুচিও হারিয়ে ফেলেছি।
তিনি বলেন ‘ক্ষ’ অনেক দূরের একটি বিষয়। এদের নিয়ে কথা বলতে চাই না। তবে একটি কথা বলবো শুভবুদ্ধি সম্পন্ন ছেলে মেয়েরা এমন কাজ করতে পারে না। যারা বাংলাদেশের ইতিহাস পড়েছে, যারা বাংলার রূপ দেখেছে, সভ্যতা সংস্কৃতির কথা জেনেছে তারা বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে এমন অপকর্মে লিপ্ত হবে না।
‘ক্ষ’র গানটি নিয়ে ক্রেজ সৃষ্টি হয়েছে এমন প্রসঙ্গে বাংলানিউজকে ব্যান্ড সঙ্গীত তারকা মাকসুদ বলেন, এটি এমন কোনো উত্তীর্ণ কাজ হয়নি যা নিয়ে এতো মাতামাতি করার প্রয়োজন রয়েছে। তিনি বলেন এর থেকে হাজারো ভালো কাজ বাংলাদেশিদের রয়েছে। আমাদের উচিত সেগুলো নিয়ে কথা বলা। মাকসুদ বলেন, আসলে গানটির সঙ্গে ব্রিটিশদের সংযুক্ত দেখেই আমাদের মধ্যে মাতামাতি শুরু হয়ে গেছে। এটি আমাদের উপনিবেশিক মানসিকতা। এ জায়গা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
আর কাজটিকে ন্যক্কারজনক বলে মত দিয়ে রবীন্দ্রসঙ্গীতের কালোত্তীর্ণ শিল্পী মিতা হক বাংলানিউজকে বলেন, সারাজীববন এসব উল্টোপাল্টা অপসংস্কৃতির চর্চার বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। এদের বিষয়ে কথা বলার রুচিও হারিয়ে ফেলেছি।
তিনি বলেন ‘ক্ষ’ অনেক দূরের একটি বিষয়। এদের নিয়ে কথা বলতে চাই না। তবে একটি কথা বলবো শুভবুদ্ধি সম্পন্ন ছেলে মেয়েরা এমন কাজ করতে পারে না। যারা বাংলাদেশের ইতিহাস পড়েছে, যারা বাংলার রূপ দেখেছে, সভ্যতা সংস্কৃতির কথা জেনেছে তারা বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে এমন অপকর্মে লিপ্ত হবে না।
‘ক্ষ’র গানটি নিয়ে ক্রেজ সৃষ্টি হয়েছে এমন প্রসঙ্গে বাংলানিউজকে ব্যান্ড সঙ্গীত তারকা মাকসুদ বলেন, এটি এমন কোনো উত্তীর্ণ কাজ হয়নি যা নিয়ে এতো মাতামাতি করার প্রয়োজন রয়েছে। তিনি বলেন এর থেকে হাজারো ভালো কাজ বাংলাদেশিদের রয়েছে। আমাদের উচিত সেগুলো নিয়ে কথা বলা। মাকসুদ বলেন, আসলে গানটির সঙ্গে ব্রিটিশদের সংযুক্ত দেখেই আমাদের মধ্যে মাতামাতি শুরু হয়ে গেছে। এটি আমাদের উপনিবেশিক মানসিকতা। এ জায়গা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
মাকসুদ বলেন, এ নিয়ে কথা বললে ওদের আরো গুরুত্ব দেওয়া হবে, আমি সেটা চাই না।
তবে গানটিকে বিকৃত বা একেবারেই খারাপ বলে উড়িয়ে দিতে নারাজ প্রচলিত ধারার বিপরীত সঙ্গীত চর্চার এই শিল্পী। তিনি বলেন, গানটিতে জ্যাজ সঙ্গীতের রূপ ও সুরারোপ করা হয়েছে। সেটি এমন কোনো দোষের নয়।
জাতীয় সঙ্গীতে এমন সুরারোপ উচিত কি না? সে প্রশ্নে মাকসুদ বাংলানিউজকে বলেন, ৫০ বছর পরে যদি রক স্টাইলে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয় সেটা কি খুব একটা অপরাধের হবে। ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানটি ভিন্ন কোনো সুরে আমরা ভাবতেই পারি না। সেটিতো গাওয়া হয়েছে। জাতীয় সঙ্গীতে সেটি কেনো পারা যাবে না? প্রশ্ন মাকসুদের।
আর এর ঠিক বিপরীত বক্তব্য খায়রুল আনাম শাকিলের তিনি বাংলানিউজকে বলেন, নতুন কিছু করার জন্য নতুন গান বেঁধে তার ওপরই চর্চা করা প্রয়োজন। যদি তা নাও হয় অন্য কোনো গান হতে পারে। রবীন্দ্র সঙ্গীতের অনেক গানেই পশ্চিমবঙ্গসহ বাংলাদেশের কেউ কেউ নতুন সুর দিচ্ছেন। আমি সেগুলো মেনে নিতে চাই না। আর জাতীয় সঙ্গীতের এমন চর্চা মেনেই নেওয়া যায় না।
আর সাদি মহম্মদ বলেছেন, এভাবে গানটি ছড়িয়ে পড়লে এক সময় নতুন প্রজন্ম ‘কি শোভা কি ছায়া গো...’ থেকে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া শুরু করবে। এদের এখনই প্রতিহত করা উচিত। জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে এমন বিকৃতির স্পর্ধা কারোই দেখানো উচিত নয়।
‘ক্ষ’ নামের যে ব্যান্ড দলটি বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত নতুন করে গেয়েছে তাতে একমাত্র বাংলাদেশি-ব্রিটিশ সদস্যের নাম সোহিনি আলম। বাকি চারজন হচ্ছেন অলিভার উইকস, বেন হিলিয়ার্ড, ডেরেক স্ক্রাল ও ড্যানিয়েল ডন্ডি।
‘আমার সোনার বাংলা’ নামের মিউজিক ভিডিওটির লিড ভোকাল সোহিনী। এটি পরিচালনা করেছেন শাহরিয়ার রহমান নামের কেউ একজন। যার নাম সঙ্গীত জগতে এর আগে শোনা যায়নি বলেই জানালেন অনেকে।
১৯০৫ সালে ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটি রচনা করেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ পল্টন ময়দানে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় সংগ্রাম পরিষদের ঘোষিত ইশতেহারে এই গানকে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এরপর ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে স্বাধীন বাংলাদেশের সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে এই গান প্রথম জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গাওয়া হয়।
তবে গানটিকে বিকৃত বা একেবারেই খারাপ বলে উড়িয়ে দিতে নারাজ প্রচলিত ধারার বিপরীত সঙ্গীত চর্চার এই শিল্পী। তিনি বলেন, গানটিতে জ্যাজ সঙ্গীতের রূপ ও সুরারোপ করা হয়েছে। সেটি এমন কোনো দোষের নয়।
জাতীয় সঙ্গীতে এমন সুরারোপ উচিত কি না? সে প্রশ্নে মাকসুদ বাংলানিউজকে বলেন, ৫০ বছর পরে যদি রক স্টাইলে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয় সেটা কি খুব একটা অপরাধের হবে। ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানটি ভিন্ন কোনো সুরে আমরা ভাবতেই পারি না। সেটিতো গাওয়া হয়েছে। জাতীয় সঙ্গীতে সেটি কেনো পারা যাবে না? প্রশ্ন মাকসুদের।
আর এর ঠিক বিপরীত বক্তব্য খায়রুল আনাম শাকিলের তিনি বাংলানিউজকে বলেন, নতুন কিছু করার জন্য নতুন গান বেঁধে তার ওপরই চর্চা করা প্রয়োজন। যদি তা নাও হয় অন্য কোনো গান হতে পারে। রবীন্দ্র সঙ্গীতের অনেক গানেই পশ্চিমবঙ্গসহ বাংলাদেশের কেউ কেউ নতুন সুর দিচ্ছেন। আমি সেগুলো মেনে নিতে চাই না। আর জাতীয় সঙ্গীতের এমন চর্চা মেনেই নেওয়া যায় না।
আর সাদি মহম্মদ বলেছেন, এভাবে গানটি ছড়িয়ে পড়লে এক সময় নতুন প্রজন্ম ‘কি শোভা কি ছায়া গো...’ থেকে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া শুরু করবে। এদের এখনই প্রতিহত করা উচিত। জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে এমন বিকৃতির স্পর্ধা কারোই দেখানো উচিত নয়।
‘ক্ষ’ নামের যে ব্যান্ড দলটি বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত নতুন করে গেয়েছে তাতে একমাত্র বাংলাদেশি-ব্রিটিশ সদস্যের নাম সোহিনি আলম। বাকি চারজন হচ্ছেন অলিভার উইকস, বেন হিলিয়ার্ড, ডেরেক স্ক্রাল ও ড্যানিয়েল ডন্ডি।
‘আমার সোনার বাংলা’ নামের মিউজিক ভিডিওটির লিড ভোকাল সোহিনী। এটি পরিচালনা করেছেন শাহরিয়ার রহমান নামের কেউ একজন। যার নাম সঙ্গীত জগতে এর আগে শোনা যায়নি বলেই জানালেন অনেকে।
১৯০৫ সালে ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটি রচনা করেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ পল্টন ময়দানে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় সংগ্রাম পরিষদের ঘোষিত ইশতেহারে এই গানকে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এরপর ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে স্বাধীন বাংলাদেশের সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে এই গান প্রথম জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গাওয়া হয়।
No comments