হাতিরঝিল প্রকল্প উন্মুক্ত করলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল
হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। এর ফলে নগরীর পরিবেশ
উন্নয়ন, যোগাযোগব্যবস্থার সম্প্রসারণ,
বৃষ্টি ও বন্যাজনিত পানি ধারণ, পানি
নিষ্কাশন ও নান্দনিক সৌন্দর্য বৃদ্ধির এই সমন্বিত প্রকল্পটি সবার জন্য
উন্মুক্ত হলো।মোট আট দশমিক ৮০ কিলোমিটার সার্ভিস রোড,
ফুটপাথসহ আট কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে, চারটি সেতু, তিনটি ছোট সেতু ও চারটি
ওভারপাসসহ এ প্রকল্পের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি হচ্ছে
রাজধানীবাসীর জন্য তার সরকারের নববর্ষের উপহার। লেকের গুলশান
পয়েন্টে এক অনুষ্ঠানে ভাষণকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার বুড়িগঙ্গার
তীরে তিল তিল করে গড়ে ওঠা ঢাকা মহানগরীর হারানো ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে
অঙ্গীকারবদ্ধ। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সম্মিলিত প্রয়াস ও সহযোগিতার
মাধ্যমে আমরা ঢাকা মহানগরীকে আগামী প্রজন্মের জন্য বসবাসযোগ্য করতে সম
হবো।’
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে সাধারণ নির্বাচনে তার দলের প্রতি জনগণের ম্যান্ডেটে তার সরকার এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। আওয়ামী লীগ সব সময় জনগণের কল্যাণ, জনগণের মৌলিক অধিকার পূরণ এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের মাঝে দেশকে মর্যাদায় আসীন করতে অগ্রাধিকার দেয়।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী তার সমালোচকদের বর্তমান সরকারের ইতিবাচক সমালোচনার আহ্বান জানিয়ে বলেন, জনগণের মাঝে হতাশা সৃষ্টি নয়, বরং বস্তুনিষ্ঠভাবে ভুলত্র“টি ধরিয়ে দিতে হবে।
এলজিআরডি ও সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খান, এ কে এম রহমতউল্লাহ এমপি, আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি, প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু সাঈদ এম মাসুদ এবং রাজউকের চেয়ারম্যান নুরুল হুদা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন গণপূর্ত সচিব ডা: খন্দকার শওকত হোসেন।
হাতিরঝিলের উন্নয়নের বিভিন্ন দিক উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ প্রকল্পে পূর্ব-পশ্চিম সংযোগ সড়ক, ইউ লুপ, ব্রিজ ও ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। লেকের উভয় পাশের সার্ভিস রোড কয়েকটি স্থানীয় রাস্তার সাথে সংযুক্ত হয়েছে। এতে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হবে। এর পাশাপাশি লেকের পানির দূষণ রোধে পয়ঃনিষ্কাশন ও পয়ঃবর্জ্য অপসারণের অত্যাধুনিক ব্যবস্থা রয়েছে।
প্রকল্পের দ্বিতীয়পর্যায়ে আড়াই হাজার আসনবিশিষ্ট দেশের বৃহত্তম উন্মুক্ত মঞ্চ, ভিউইং ডেক, ওয়াটার টেক্সি টার্মিনাল, ফুটব্রিজ এবং সাংস্কৃতিক ও ব্যবস্থাপনা ভবন নির্মিত হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর তার সরকার রাজধানী ঢাকার উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আসছে। এ ল্েয এই মহানগরীর উন্নয়ন পরিকল্পনা, আঞ্চলিক পরিকল্পনা ও মাঝারি শহর অবকাঠামো উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ চলছে।
শেখ হাসিনা বলেন, কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনার আওতায় (এসটিপি) ঢাকার চার পাশে ওয়াটার ওয়ে ছাড়াও ফাইওভার, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কমিউটার ট্রেন সার্ভিস, আন্ডারগ্রাউন্ড টানেল ও লিংক রোড নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বিচারে জলাধার ধ্বংস বন্ধে ঢাকার জন্য প্রথমবারের মতো জিআইএস ভিত্তিক ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) অনুমোদন করা হয়েছে। এ ছাড়া ২০১৬ থেকে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত পরবর্তী ২০ বছরের জন্য ড্যাপ প্রণয়নের কাজ চলছে।
No comments