ব্যবস্থাপত্র ছাড়া মিলছে ভায়াগ্রা জাতীয় ওষুধ, স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা by প্রণব বল
চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই মিলছে ভায়াগ্রা জাতীয় ওষুধ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন ওষুধের অপব্যবহারে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়তে পারে। শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর কেবল চিকিৎসকের পরামর্শমতো এমন ওষুধ সেবন করতে হবে।
গত মে মাসে ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কমিটির সভায় ভায়াগ্রা জাতীয় ওষুধ উৎপাদনের অনুমতি দেওয়া হয়। দেশের প্রায় ১০টি ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি ট্যাডালাফিল ও সিলডেনফিল গ্রুপের ভায়াগ্রা জাতীয় বা যৌন উত্তেজক ওষুধ উৎপাদন করছে। ২৫, ৫০ ও ১০০ মিলিগ্রাম মাত্রায় এসব বড়ি পাওয়া যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম মহানগরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে, আন্দরকিল্লা, চকবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে ওষুধের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, অন্যান্য ওষুধের মতো যেকোনো ব্যক্তি চাইলেই এসব ওষুধ কিনতে পারছে।
আসকারদীঘির পাড়ে একটি ওষুধের দোকানের মালিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কাছে তরুণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের লোক এই ওষুধের খোঁজ করেন।’
চট্টগ্রাম বিভাগের ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক শংকর কুমার সরকার দোকানিরা নিয়ম না মেনে ওষুধ বিক্রি করছেন বলে স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘কোনো ওষুধই ব্যবস্থাপত্র ছাড়া বিক্রির নিয়ম নেই। কিন্তু আমরা যতক্ষণ তাঁদের কাছে থাকি, তখন তাঁরা এসব মেনে চলেন।’
সার্ক ও বাংলাদেশ ডার্মাটোলজি সোসাইটির সভাপতি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক অধ্যাপক এ কিউ এম সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ভায়াগ্রা জাতীয় ওষুধের অপব্যবহারে রোগীর হূদেরাগের ঝুঁকিসহ নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। অনুমোদনের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ব্যতীত কেউ এই ওষুধ লিখতে পারবেন না—এমন বাধ্যবাধকতার দরকার ছিল।
অপব্যবহার: চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের চর্ম ও যৌনরোগ বহির্বিভাগে গত সপ্তাহে দেখা গেছে, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ভায়াগ্রা জাতীয় ওষুধ খেয়েছেন এমন ১২ জন রোগী চিকিৎসার জন্য এসেছেন। তাঁরা সবাই তরুণ ও মধ্যবয়সী। শারীরিক ও দাম্পত্য সমস্যা নিয়ে তাঁরা আসেন। ওষুধ খাওয়ার পর মাথা ঘোরানো, গোপনাঙ্গে ব্যথাসহ নানা শারীরিক সমস্যা তাঁদের মধ্যে দেখা গেছে।
সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের মতে, তিন মাস আগে এই সংখ্যা ছিল অনেক কম। তখন সপ্তাহে গড়ে দু-তিনজন রোগী পাওয়া যেত, যাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ভায়াগ্রা জাতীয় ওষুধ খেতেন।
হাসপাতালের চর্ম ও যৌনরোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রফিকুল মওলা বলেন, ওষুধগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মারাত্মক। এতে রোগীর রক্তচাপ কমে যায়। এ ছাড়া, গোপনাঙ্গে রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে। তখন অস্ত্রোপচারেরও প্রয়োজন হতে পারে। আর হূদেরাগীদের ক্ষেত্রে তা ব্যবহার করা অনেক জটিল।
রফিকুল মওলা আরও জানান, ব্যতিক্রম ছাড়া তরুণদের এই ওষুধ ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন এমন রোগীদের নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এটা দেওয়া যেতে পারে।
যেভাবে অনুমোদন: ওষুধ প্রশাসন সূত্রে গেছে, ট্যাডালাফিল ও সিলডেনফিল গ্রুপের এসব ভায়াগ্রা জাতীয় ওষুধ উৎপাদনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি আবেদন জানিয়ে আসছিল। কিন্তু সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কমিটি এই আবেদন স্থগিত রেখেছিল।
গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কমিটির টেকনিক্যাল উপকমিটির সভায় বলা হয়, ‘দুর্বল যৌনরোগীর চিকিৎসায় এই ওষুধ অত্যন্ত কার্যকর। দেশে এমন রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপব্যবহারের বিষয় ভেবে এসব প্রয়োজনীয় ওষুধের নিবন্ধন বন্ধ রাখা সমীচীন হবে না। দেশে এ জাতীয় নিবন্ধনবিহীন ওষুধ অনিয়ন্ত্রিতভাবে ব্যবহূত হচ্ছে। তাই সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় ওষুধগুলো উৎপাদনে অনুমোদন দেওয়া যেতে পারে।’
২০ মে অনুষ্ঠিত ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কমিটির সভায় টেকিনিক্যাল উপকমিটির সুপারিশের সঙ্গে একমত পোষণ করা হয়। সভার সভাপতি সচিব হুমায়ুন কবির তখন বলেন, ‘চিকিৎসার প্রয়োজন হলে অপব্যবহারের অজুহাতে কোনো ওষুধের অনুমোদন বন্ধ রাখা সঠিক হবে না।’
এ প্রসঙ্গে জানতে সচিব হুমায়ুন কবিরকে বারবার ফোন করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ওষুধ প্রশাসনের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর হোসেন মল্লিককেও ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু ফোন ধরেননি তিনি। মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।
চট্টগ্রাম মহানগরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে, আন্দরকিল্লা, চকবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে ওষুধের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, অন্যান্য ওষুধের মতো যেকোনো ব্যক্তি চাইলেই এসব ওষুধ কিনতে পারছে।
আসকারদীঘির পাড়ে একটি ওষুধের দোকানের মালিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কাছে তরুণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের লোক এই ওষুধের খোঁজ করেন।’
চট্টগ্রাম বিভাগের ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক শংকর কুমার সরকার দোকানিরা নিয়ম না মেনে ওষুধ বিক্রি করছেন বলে স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘কোনো ওষুধই ব্যবস্থাপত্র ছাড়া বিক্রির নিয়ম নেই। কিন্তু আমরা যতক্ষণ তাঁদের কাছে থাকি, তখন তাঁরা এসব মেনে চলেন।’
সার্ক ও বাংলাদেশ ডার্মাটোলজি সোসাইটির সভাপতি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক অধ্যাপক এ কিউ এম সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ভায়াগ্রা জাতীয় ওষুধের অপব্যবহারে রোগীর হূদেরাগের ঝুঁকিসহ নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। অনুমোদনের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ব্যতীত কেউ এই ওষুধ লিখতে পারবেন না—এমন বাধ্যবাধকতার দরকার ছিল।
অপব্যবহার: চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের চর্ম ও যৌনরোগ বহির্বিভাগে গত সপ্তাহে দেখা গেছে, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ভায়াগ্রা জাতীয় ওষুধ খেয়েছেন এমন ১২ জন রোগী চিকিৎসার জন্য এসেছেন। তাঁরা সবাই তরুণ ও মধ্যবয়সী। শারীরিক ও দাম্পত্য সমস্যা নিয়ে তাঁরা আসেন। ওষুধ খাওয়ার পর মাথা ঘোরানো, গোপনাঙ্গে ব্যথাসহ নানা শারীরিক সমস্যা তাঁদের মধ্যে দেখা গেছে।
সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের মতে, তিন মাস আগে এই সংখ্যা ছিল অনেক কম। তখন সপ্তাহে গড়ে দু-তিনজন রোগী পাওয়া যেত, যাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ভায়াগ্রা জাতীয় ওষুধ খেতেন।
হাসপাতালের চর্ম ও যৌনরোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রফিকুল মওলা বলেন, ওষুধগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মারাত্মক। এতে রোগীর রক্তচাপ কমে যায়। এ ছাড়া, গোপনাঙ্গে রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে। তখন অস্ত্রোপচারেরও প্রয়োজন হতে পারে। আর হূদেরাগীদের ক্ষেত্রে তা ব্যবহার করা অনেক জটিল।
রফিকুল মওলা আরও জানান, ব্যতিক্রম ছাড়া তরুণদের এই ওষুধ ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন এমন রোগীদের নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এটা দেওয়া যেতে পারে।
যেভাবে অনুমোদন: ওষুধ প্রশাসন সূত্রে গেছে, ট্যাডালাফিল ও সিলডেনফিল গ্রুপের এসব ভায়াগ্রা জাতীয় ওষুধ উৎপাদনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি আবেদন জানিয়ে আসছিল। কিন্তু সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কমিটি এই আবেদন স্থগিত রেখেছিল।
গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কমিটির টেকনিক্যাল উপকমিটির সভায় বলা হয়, ‘দুর্বল যৌনরোগীর চিকিৎসায় এই ওষুধ অত্যন্ত কার্যকর। দেশে এমন রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপব্যবহারের বিষয় ভেবে এসব প্রয়োজনীয় ওষুধের নিবন্ধন বন্ধ রাখা সমীচীন হবে না। দেশে এ জাতীয় নিবন্ধনবিহীন ওষুধ অনিয়ন্ত্রিতভাবে ব্যবহূত হচ্ছে। তাই সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় ওষুধগুলো উৎপাদনে অনুমোদন দেওয়া যেতে পারে।’
২০ মে অনুষ্ঠিত ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কমিটির সভায় টেকিনিক্যাল উপকমিটির সুপারিশের সঙ্গে একমত পোষণ করা হয়। সভার সভাপতি সচিব হুমায়ুন কবির তখন বলেন, ‘চিকিৎসার প্রয়োজন হলে অপব্যবহারের অজুহাতে কোনো ওষুধের অনুমোদন বন্ধ রাখা সঠিক হবে না।’
এ প্রসঙ্গে জানতে সচিব হুমায়ুন কবিরকে বারবার ফোন করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ওষুধ প্রশাসনের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর হোসেন মল্লিককেও ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু ফোন ধরেননি তিনি। মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।
No comments