স্মার্ট ফ্যাশন গার্মেন্টে অগ্নিকাণ্ড- অবহেলার কারণে ঝরে গেল ৭টি প্রাণ by আমিনুল ইসলাম
গার্মেন্টে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থাসহ নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করার কথা
থাকলেও মোহাম্মদপুরের স্মার্ট গার্মেন্টে তা ছিল না। গার্মেন্ট প্রতিষ্ঠার
সময়ই নিরাপত্তার বিষয়টিতে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়ে থাকে।
অথচ
এই গার্মেন্টটিতে তার কিছুই মানা হয়নি। মানা হয়নি বিজিএমইএ’র কোনো
নির্দেশনা। তার পরও অতি লোভের আশায় প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা শ্রমিকদের জীবন
মৃত্যুর দুয়ারে রেখে ব্যবসায় চালিয়ে গেছেন। অথচ বিজিএমইএ এ ব্যাপারে কোনো
খোঁজখবর নেয়নি। অবশেষে গার্মেন্টটিতে আগুন লেগে সাতটি তাজা প্রাণ অসময়ে
ঝরে পড়েছে তখন এগিয়ে এসেছে বিজিএমইএসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা।
গতকাল এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন আগুন থেকে বেঁচে যাওয়া শ্রমিক বিলকিস। তিনি বলেন, আমরা খেয়ে পরে কোনো রকমে বেঁচে থাকার জন্য গ্রাম ছেড়ে ঢাকায় এসে গার্মেন্টে কাজ করি। আর সেখানেই আমাদের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। আগুন লাগার সাথে সাথে অনেক বড় বড় লোক আসে। তারা অনেক কথা বলে যায়। কিন্তু পরে আর কোনো খোঁজ থাকে না। উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণী পাস করা এই গার্মেন্ট শ্রমিক বলেন, এই রকম ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এই ধরনের ঘটনা প্রতি নিয়তই ঘটছে। আশুলিয়ার তাজরীন গার্মেন্টে আগুন লেগে কতগুলো শ্রমিক জীবন্ত দগ্ধ হয়েছেন। দেশের ইতিহাসে সেটাই ছিল সব থেকে ভয়াবহ আগুন। ওই ঘটনার পর সরকার, বিজিএমইএসহ সংশ্লিষ্ট সব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান গার্মেন্টে শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে নানা কথা বলেছেন। তাতে কী লাভ হলো। অবৈধভাবে নিয়ম নীতি না মেনে গার্মেন্ট পরিচালিত হলো। আবার সেখানে শ্রমিকেরাও প্রাণ হারালো। তাহলে সরকার ও ওইসব বড় বড় প্রতিষ্ঠানের বড় বড় কর্তাদের বক্তব্য কোথায় গেল। তিনি আরো বলেন, আর কত লাশ লাগবে সরকারের বা মালিকপক্ষের টনক নড়তে।
আরিফা নামে এক শ্রমিক বলেন, দুর্ঘটনার সময় দ্রুত ভবন থেকে বাইরে আসার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। এমনকি এই বিষয়ে শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দেয়ার কথা থাকলেও মালিকপক্ষ তা কখনোই করেনি। মালিকপক্ষের লোকজন অতিমাত্রায় লাভে পড়ে ভুলে যায় শ্রমিকদের জীবনের ন্যূনতম নিরাপত্তার কথাটি। যার খেসারত দিতে হচ্ছে জীবিকার তাগিদে গার্মেন্টে কাজ করতে আসা এই নিরীহ মানুষের জীবন দিয়ে। এ ধরনের কোনো একটি ঘটনায় কিছু মানুষের প্রাণ যাওয়ার পর সরকার ও বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে গার্মেন্টগুলোর নিরাপত্তাব্যবস্থা মনিটরিং করার কথা বলা হয়ে থাকে। কিন্তু কার্যত এই কথাগুলোর কোনো বাস্তব পদক্ষেপ থাকে না বলে অভিযোগ রয়েছে। এ দিকে শোকের মাতম চলছিল নিহতদের স্বজনদের মধ্যে। নিহত শ্রমিক নাসিমার স্বামী শফিক কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, ‘সকালে নাসিমা আমারে সাবধানে গাড়ি চালাতে বইলা বাড়ি থিকা বারাইয়্যা নিজেই আমাগো ছাইড়া চইলা গেল। এখন আমি কী করে থাকবো। দু’টি সন্তানকে কী বলে সান্তনা দেবো। শফিক প্রাইভেটকারচালক। তার স্ত্রী নাসিমা বছর খানেক ধরে ওই গার্মেন্টে অপারেটর হিসেবে কাজ করত। মোহাম্মদপুরের কাদিরাবাদ হাউজিংয়ে থাকেন। গ্রামের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিনে। তাদের দু’টি সন্তান রয়েছে। এ দিকে আগুনের ঘটনায় স্মার্ট ফ্যাশন পোশাক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের তিন মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। গত শনিবার গভীর রাতে আগুনের ঘটনায় নিহত শ্রমিক রাজিয়ার বাবা আলতাফ হোসেন মামলাটি করেন।
মোহাম্মদপুর থানার ওসি আজিজুর হক জানান, শনিবার মধ্যরাতে করা এই মামলার এজাহারে ‘বিজেএমইএ’ তালিকায় অনুমোদিনহীন স্মার্ট ফ্যাশনের তিন পরিচালক শ্রী সুভাষ, মো: শরীফ ও জাকির আহমেদ মালিককে আসামি করা হয়েছে। সাথে অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। তিনি বলেন, মালিকপক্ষের অবহেলা ও গাফিলতির কারণে ওই অগ্নিকাণ্ড ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেছেন বাদি। মামলার সূত্র ধরে আসামি ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান। তবে ঘটনার পর থেকেই গাঢাকা দিয়েছেন এই গার্মেন্টের মালিকপক্ষের সবাই।
এ দিকে এই ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের উদ্যোগে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেনÑ ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক (প্রশাসন) ভরত চন্দ্র বিশ্বাস, সহকারী পরিচলক (ঢাকা) মো: মনির হোসেন, উপসহকারী পরিচালক মামুন মাহমুদ ও মোহাম্মদপুর ইউনিটের স্টেশন অফিসার মো: আবদুল আলিম। কমিটিকে স্বল্প সময়ের মধ্যে ঘটনা তদন্ত করে প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে বলে কমিটি সূত্রে জানা গেছে। আগুনের সূত্রপাত বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে নাকি নাশকতা বা অন্য কোনো কারণ রয়েছে তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার দুপুরে মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় স্মার্ট ফ্যাশন গার্মেন্ট নামক একটি প্রতিষ্ঠানে আগুনে লেগে সাতজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আহত প্রায় ১৫ জন শ্রমিক।
গতকাল এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন আগুন থেকে বেঁচে যাওয়া শ্রমিক বিলকিস। তিনি বলেন, আমরা খেয়ে পরে কোনো রকমে বেঁচে থাকার জন্য গ্রাম ছেড়ে ঢাকায় এসে গার্মেন্টে কাজ করি। আর সেখানেই আমাদের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। আগুন লাগার সাথে সাথে অনেক বড় বড় লোক আসে। তারা অনেক কথা বলে যায়। কিন্তু পরে আর কোনো খোঁজ থাকে না। উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণী পাস করা এই গার্মেন্ট শ্রমিক বলেন, এই রকম ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এই ধরনের ঘটনা প্রতি নিয়তই ঘটছে। আশুলিয়ার তাজরীন গার্মেন্টে আগুন লেগে কতগুলো শ্রমিক জীবন্ত দগ্ধ হয়েছেন। দেশের ইতিহাসে সেটাই ছিল সব থেকে ভয়াবহ আগুন। ওই ঘটনার পর সরকার, বিজিএমইএসহ সংশ্লিষ্ট সব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান গার্মেন্টে শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে নানা কথা বলেছেন। তাতে কী লাভ হলো। অবৈধভাবে নিয়ম নীতি না মেনে গার্মেন্ট পরিচালিত হলো। আবার সেখানে শ্রমিকেরাও প্রাণ হারালো। তাহলে সরকার ও ওইসব বড় বড় প্রতিষ্ঠানের বড় বড় কর্তাদের বক্তব্য কোথায় গেল। তিনি আরো বলেন, আর কত লাশ লাগবে সরকারের বা মালিকপক্ষের টনক নড়তে।
আরিফা নামে এক শ্রমিক বলেন, দুর্ঘটনার সময় দ্রুত ভবন থেকে বাইরে আসার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। এমনকি এই বিষয়ে শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দেয়ার কথা থাকলেও মালিকপক্ষ তা কখনোই করেনি। মালিকপক্ষের লোকজন অতিমাত্রায় লাভে পড়ে ভুলে যায় শ্রমিকদের জীবনের ন্যূনতম নিরাপত্তার কথাটি। যার খেসারত দিতে হচ্ছে জীবিকার তাগিদে গার্মেন্টে কাজ করতে আসা এই নিরীহ মানুষের জীবন দিয়ে। এ ধরনের কোনো একটি ঘটনায় কিছু মানুষের প্রাণ যাওয়ার পর সরকার ও বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে গার্মেন্টগুলোর নিরাপত্তাব্যবস্থা মনিটরিং করার কথা বলা হয়ে থাকে। কিন্তু কার্যত এই কথাগুলোর কোনো বাস্তব পদক্ষেপ থাকে না বলে অভিযোগ রয়েছে। এ দিকে শোকের মাতম চলছিল নিহতদের স্বজনদের মধ্যে। নিহত শ্রমিক নাসিমার স্বামী শফিক কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, ‘সকালে নাসিমা আমারে সাবধানে গাড়ি চালাতে বইলা বাড়ি থিকা বারাইয়্যা নিজেই আমাগো ছাইড়া চইলা গেল। এখন আমি কী করে থাকবো। দু’টি সন্তানকে কী বলে সান্তনা দেবো। শফিক প্রাইভেটকারচালক। তার স্ত্রী নাসিমা বছর খানেক ধরে ওই গার্মেন্টে অপারেটর হিসেবে কাজ করত। মোহাম্মদপুরের কাদিরাবাদ হাউজিংয়ে থাকেন। গ্রামের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিনে। তাদের দু’টি সন্তান রয়েছে। এ দিকে আগুনের ঘটনায় স্মার্ট ফ্যাশন পোশাক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের তিন মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। গত শনিবার গভীর রাতে আগুনের ঘটনায় নিহত শ্রমিক রাজিয়ার বাবা আলতাফ হোসেন মামলাটি করেন।
মোহাম্মদপুর থানার ওসি আজিজুর হক জানান, শনিবার মধ্যরাতে করা এই মামলার এজাহারে ‘বিজেএমইএ’ তালিকায় অনুমোদিনহীন স্মার্ট ফ্যাশনের তিন পরিচালক শ্রী সুভাষ, মো: শরীফ ও জাকির আহমেদ মালিককে আসামি করা হয়েছে। সাথে অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। তিনি বলেন, মালিকপক্ষের অবহেলা ও গাফিলতির কারণে ওই অগ্নিকাণ্ড ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেছেন বাদি। মামলার সূত্র ধরে আসামি ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান। তবে ঘটনার পর থেকেই গাঢাকা দিয়েছেন এই গার্মেন্টের মালিকপক্ষের সবাই।
এ দিকে এই ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের উদ্যোগে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেনÑ ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক (প্রশাসন) ভরত চন্দ্র বিশ্বাস, সহকারী পরিচলক (ঢাকা) মো: মনির হোসেন, উপসহকারী পরিচালক মামুন মাহমুদ ও মোহাম্মদপুর ইউনিটের স্টেশন অফিসার মো: আবদুল আলিম। কমিটিকে স্বল্প সময়ের মধ্যে ঘটনা তদন্ত করে প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে বলে কমিটি সূত্রে জানা গেছে। আগুনের সূত্রপাত বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে নাকি নাশকতা বা অন্য কোনো কারণ রয়েছে তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার দুপুরে মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় স্মার্ট ফ্যাশন গার্মেন্ট নামক একটি প্রতিষ্ঠানে আগুনে লেগে সাতজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আহত প্রায় ১৫ জন শ্রমিক।
No comments