ফেনী নদী থেকে ভারতের পানি প্রত্যাহার- বেপরোয়া মনোভাবের আরেক নজির
ফেনী ও চট্টগ্রাম জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় সেচ ও কৃষি উৎপাদন এবং বন্যা
নিয়ন্ত্রণের জন্য মুহুরি প্রকল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পানিসম্পদের দিক
দিয়ে দেশের এই দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রকল্পের দিকেও প্রতিবেশী রাষ্ট্রের এখন
শ্যেন দৃষ্টি। নয়া দিগন্তে প্রকাশিত সরেজমিন সচিত্র প্রতিবেদনে জানানো
হয়েছে, মুহুরি প্রকল্পের সঞ্চিত পানি শুকনো মওসুমে তুলে নেয়ার উদ্দেশ্যে
ভারত ফেনী নদী নিয়ে আগ্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ফেনীর ছাগলনাইয়া
সংবাদদাতার পাঠানো রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ফেনী নদীর উৎপত্তি ভারতীয়
ভূখণ্ডে বলে তাদের যে দাবি, তা ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়েছে। এ দিকে কোনো
চুক্তি ছাড়াই ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ফেনী নদীর পানি তার ত্রিপুরা রাজ্যের জন্য
অবৈধভাবে সরিয়ে নিচ্ছে। মিরসরাই ও রামগড় উপজেলা সীমান্তে বৈদ্যুতিক
পাম্প দিয়ে এটা করা হচ্ছে। প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, ভারত উজানে পানি
তুলে নেয়ায় ভাটিতে ফেনী নদীর শুভপুর সেতুর নিচে শুকনা জমি খাঁ খাঁ করছে।
জানা গেছে, অতীতে ফেনী নদীতে নামতেও বিএসএফ ভয় পেত। আর এখন এই নদীতে নামতে
এবং তীর সংরক্ষণকাজে ওরা উল্টো বাংলাদেশকে বাধা দিচ্ছে। এ অবস্থা চললে
ভবিষ্যতে ফেনী নদীর পুরোটাই ভারত দখল করে নেয়ার আশঙ্কা করছেন নদী-তীরবর্তী
এলাকাবাসী। ভারতের পানি প্রত্যাহারে ২০ হাজার হেক্টরে ইরি-বোরো আবাদ এবার
সম্ভব হয়নি। এ নদীর ওপর লাখ লাখ মানুষের জীবিকা নির্ভরশীল। নদীটি কয়েক
হাজার মৎস্যজীবী পরিবারের আয়ের উৎস। পানির অভাবে অসংখ্য মৎস্যখামার শুধু
নয়, খোদ মুহুরি প্রকল্পই অকার্যকর হয়ে পড়তে পারে।
ভারত কর্তৃক অন্যায়ভাবে বাংলাদেশকে বঞ্চিত করে অভিন্ন নদীর পানি প্রত্যাহার এবারই প্রথম নয়। যেখানে এ দেশের একটি প্রধান নদী, গঙ্গা বা পদ্মার পানি ইচ্ছেমতো সরিয়ে নিয়ে আমাদের দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে শুকিয়ে মারতে ‘বড় পড়শি’ সামান্য দ্বিধাগ্রস্ত হয়নি, সেখানে তিস্তা, মহানন্দা, মুহুরি, ফেনী, বরাক প্রভৃতি নদ-নদীর পানিপ্রবাহের ন্যায্য হিস্যা থেকে বাংলাদেশকে বঞ্চিত করার ক্ষেত্রে ভারত যে কোনো কিছুর তোয়াক্কা করবে না, তা বলাই বাহুল্য। ভারত নিজেকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলে গর্ব করে থাকে। তদুপরি, বাংলাদেশের নাকি সবচেয়ে বড় বন্ধুদেশ ভারত। আর এই প্রচারণায় এখনকার বাংলাদেশ সরকারও কম যায়নি। বাস্তবে নয়াদিল্লির শাসক মহলের মনমানসিকতা বরাবরই অন্য রকম। নিজেদের পাওনা কড়ায়গণ্ডায় (সম্ভব হলে অতিরিক্ত আদায়) বুঝে নিতে তারা ভুল করেন না কখনো। এ জন্য ুদ্র বাংলাদেশকে সব উপায়ে চাপে রাখতেও বৃহৎ ভারত পিছপা হয় না। অথচ বাংলাদেশের অধিকারের স্বীকৃতিদান এবং প্রাপ্য পরিশোধের বেলায় ভারতের ওজর-আপত্তির অভাব নেই। অভিন্ন নদীর পানিপ্রবাহের ন্যায়সঙ্গত অংশীদারিত্ব পাওয়া বাংলাদেশের আইনগত ও নৈতিক অধিকার। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ভারত আন্তর্জাতিক আইনকানুন ও রীতিনীতি, এমনকি দ্বিপক্ষীয় চুক্তিও লঙ্ঘন করার প্রমাণ রেখেছে।
আমরা মনে করি, পরিস্থিতির আরো অবনতির আগেই সরকারের যথাসাধ্য তৎপর হওয়া উচিত। ফেনী ও মুহুরিসহ প্রতিটি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এ জন্য কূটনৈতিক ও আইনি উপায়ে সম্ভাব্য সব পন্থায় প্রয়াস চালানোর বিকল্প নেই। পানির অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে নতজানু নীতি এবং অন্যায় ছাড় দেয়ার অর্থ, দেশের সার্বভৌমত্বের অমর্যাদা।
ভারত কর্তৃক অন্যায়ভাবে বাংলাদেশকে বঞ্চিত করে অভিন্ন নদীর পানি প্রত্যাহার এবারই প্রথম নয়। যেখানে এ দেশের একটি প্রধান নদী, গঙ্গা বা পদ্মার পানি ইচ্ছেমতো সরিয়ে নিয়ে আমাদের দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে শুকিয়ে মারতে ‘বড় পড়শি’ সামান্য দ্বিধাগ্রস্ত হয়নি, সেখানে তিস্তা, মহানন্দা, মুহুরি, ফেনী, বরাক প্রভৃতি নদ-নদীর পানিপ্রবাহের ন্যায্য হিস্যা থেকে বাংলাদেশকে বঞ্চিত করার ক্ষেত্রে ভারত যে কোনো কিছুর তোয়াক্কা করবে না, তা বলাই বাহুল্য। ভারত নিজেকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলে গর্ব করে থাকে। তদুপরি, বাংলাদেশের নাকি সবচেয়ে বড় বন্ধুদেশ ভারত। আর এই প্রচারণায় এখনকার বাংলাদেশ সরকারও কম যায়নি। বাস্তবে নয়াদিল্লির শাসক মহলের মনমানসিকতা বরাবরই অন্য রকম। নিজেদের পাওনা কড়ায়গণ্ডায় (সম্ভব হলে অতিরিক্ত আদায়) বুঝে নিতে তারা ভুল করেন না কখনো। এ জন্য ুদ্র বাংলাদেশকে সব উপায়ে চাপে রাখতেও বৃহৎ ভারত পিছপা হয় না। অথচ বাংলাদেশের অধিকারের স্বীকৃতিদান এবং প্রাপ্য পরিশোধের বেলায় ভারতের ওজর-আপত্তির অভাব নেই। অভিন্ন নদীর পানিপ্রবাহের ন্যায়সঙ্গত অংশীদারিত্ব পাওয়া বাংলাদেশের আইনগত ও নৈতিক অধিকার। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ভারত আন্তর্জাতিক আইনকানুন ও রীতিনীতি, এমনকি দ্বিপক্ষীয় চুক্তিও লঙ্ঘন করার প্রমাণ রেখেছে।
আমরা মনে করি, পরিস্থিতির আরো অবনতির আগেই সরকারের যথাসাধ্য তৎপর হওয়া উচিত। ফেনী ও মুহুরিসহ প্রতিটি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এ জন্য কূটনৈতিক ও আইনি উপায়ে সম্ভাব্য সব পন্থায় প্রয়াস চালানোর বিকল্প নেই। পানির অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে নতজানু নীতি এবং অন্যায় ছাড় দেয়ার অর্থ, দেশের সার্বভৌমত্বের অমর্যাদা।
No comments