স্ট্রবেরি ফলিয়ে লাখোপতি
দেখতে লাল টুকটুকে, খেতে সুস্বাদু নাম স্ট্রবেরি। বিদেশী ফল হলেও মাগুরায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে এ ফল। বর্তমানে গাছ থেকে ফল তোলার মৌসুম। এ বছর মাগুরায় স্ট্রবেরির ফলন ভাল হয়েছে।
অনেকে স্ট্রবেরি চাষ করে লাখোপতি হয়েছেন। মাগুরার স্ট্রবেরি ঢাকার অভিজাত দোকানগুলোতে শোভা পাচ্ছে। স্ট্রবেরি চাষ লাভজনক বলে বেকার যুবকরা স্ট্রবেরি চাষে ঝুকে পড়ছে। স্ট্রবেরি চাষের মাধ্যমে মাগুরায় বহু বেকার যুবকের মৌসুমী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। মাগুরার হাজিপুর গ্রাম স্ট্রবেরি চাষের জন্য তার নাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। সদর উপজেলার হাজিপুর গ্রামের নুরম্নল হাকিম তুহিন বাণিজ্যিকভিত্তিতে গত বছর থেকে স্ট্রবেরি চাষ শুরম্ন করেছেন। তিনি গত বছর ৪০ শতক জমিতে চাষ করলেও এ বছর ৭০ সতক জমিতে স্ট্রবেরির চাষ করেছেন। বর্তমানে স্ট্রবেরি পাকতে শুরম্ন করেছে। সবুজ গাছে পাকা স্ট্রবেরি দেখতে অপরূপ লাগে এবং স্ট্রবেরি খেতে অপূর্ব। খরচ কম এবং লাভ বেশি বলে মাগুরা এবং তার পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে স্ট্রবেরি চাষ হচ্ছে। অক্টোবর থেকে নবেম্বর মাস পর্যনত্ম জমিতে স্ট্রবেরির চারা লাগানোর মৌসুম। ফেব্রম্নয়ারির প্রথম থেকে মার্চ মাস পর্যনত্ম স্ট্রবেরি পাকে। তুহিন জানান, এ বছর তিনি স্ট্রবেরি লাগানো পাশাপাশি চারা তৈরি করে ঝিনাইদহ, মেহেরপুর এসব জেলার কৃষকদের কাছে বিক্রি করেছেন। চারা বাবদ তার আয় হয়েছে আড়াই লাখ টাকা। এ বছর স্ট্রবেরি বিক্রি করেও তিনি ১ লাখ ২০ হাজার টাকা আয় করাবেন বলে জানান। তিনি গ্রিন ভ্যালি এগ্রো এ্যান্ড নার্সারি নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। এ বছর এ পর্যনত্ম গাছ থেকে ১৪ কেজি স্ট্রবেরি তুলে বিক্রি করেছেন। প্রতি কেজি স্ট্রবেরি মৌসুমের শুরম্নতে ১ হাজার টাকা করে বিক্রি হয় এবং পরে প্রতিকেজি ৭ থেকে ৮শ' টাকা দামে বিক্রি হয়। ঢাকার পাইকার ব্যবসায়ীরা মাগুরায় এসে স্ট্রবেরি ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। ঢাকার অভিজাত দোকানগুলোতে যে স্ট্রবেরি দেখা যায় তা মাগুরার উৎপন্ন। সরেজমিনে মাগুরার স্ট্রবেরি ৰেতগুলো পরিদর্শনে দেখা যায় সবুজ গাছের মধ্যে লাল লাল স্ট্রবেরি ধরে রয়েছে। দেখতে অপরূপ দৃশ্য। স্ট্রবেরি বিদেশি ফল হলেও চাষ পদ্ধতি সহজ হওয়ায় বাণিজ্যকভাবে এর চাষ হচ্ছে। প্রথমদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চারা সংগ্রহ করলেও বর্তমানে মাগুরায় তুহিন চারা তৈরি করছেন। স্ট্রবেরি চাষে খরচ কম এবং লাভ অনেক বেশি। স্ট্রবেরি চাষে খরচের পরিমাণ খুবই কম। এই চাষে রাসায়নিক সারের প্রয়োজন হয় না। শুধু কম্পোস্ট সার ও সময়মতো পরিচর্যা করলে ব্যাপক ফলন পাওয়া যায়। তবে ১৩ ডিগ্রী তাপমাত্র স্ট্রবেরি চাষের জন্য উত্তম। এ বছর গোটা মৌসুমে তার লাগানো ৭০ শতক জমি থেকে কমপৰে ৫ মণ স্ট্রবেরি উঠবে বলে তুহিন আশা করছে। স্ট্রবেরির বাজার অত্যনত্ম ভাল। বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় পাইকাররা মাঠ থেকেই পাকা স্ট্রবেরি ক্রয় করে বাক্সবন্দী করে ঢাকায় পাঠাচ্ছেন। বেকার যুবকরা স্ট্রবেরি চাষের মাধ্যমে তাদের বেকারত্ব দূর করতে পারেন। কারণ স্ট্রবেরির চারা এখন মাগুরাতেই পাওয়া যায়। দামও ক্রয়ৰমতার মধ্যে। স্বল্প পুঁজিতে স্ট্রবেরি চাষ সম্ভব। বেকার যুবকরা এ ৰেত্রে স্ট্রবেরি চাষে এগিয়ে আসতে পারেন। এ ৰেত্রে প্রয়োজন শুধু উদ্যোগ।০ সঞ্জয় রায় চৌধুরী, মাগুরা
No comments