কলাবাগানের ফ্ল্যাটে ঠিকাদার খুন, লাশ উদ্ধার- রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪ জন নিহত

রাজধানীর কলাবাগানের একটি ফ্ল্যাটে এক ঠিকাদারের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার হয়েছে। নিহতের নাম জিয়াউল ইসলাম রিপন (৪২)। তিনি ওয়াসার প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার ছিলেন এবং আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমএ জলিলের সহকারী একান্ত সচিব ছিলেন। এদিকে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় এক শিশুসহ চারজন নিহত হয়েছে।


রবিবার সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র থেকে জানা গেছে, রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় পুলিশ কলাবাগান থানাধীন গ্রীন রোড এলাকার ৫৯ নম্বর এ্যাপার্টমেন্টের দ্বিতীয় তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে জিয়াউল ইসলাম রিপন (৪২) নামে এক ব্যক্তির হাত-পা ও গলায় তোয়ালে পেঁচানো লাশ উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। পুলিশ জানায়, ওই ফ্ল্যাটে দ্বিতীয় তলার দুই রুম ভাড়া নিয়ে থাকতেন জিয়াউল ইসলাম। একটি রুমে তিনি থাকতেন। আরেকটি রুম কয়েক যুবক ভাড়া নিয়েছেন। ঘটনার পর থেকে তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশ ধারণা করছে, রিপনকে হাত বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। তাঁর মাথায় আঘাতের ক্ষত চিহ্ন ছিল। লাশের পাশে একটি হাতুড়ি পাওয়া গেছে। ওই হাতুড়ি দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করা হয়। তাঁর হাত-পা বাঁধা ও মুখে বালিশ চাপা দেয়া ছিল।
কলাবাগান থানা ওসি এনামুল হক জানান, রিপন দোতলার ফ্ল্যাটের দুই রুম ভাড়া নিয়ে একটি রুমে সাবলেট থাকতেন। অন্য রুমটি কয়েকজনকে ভাড়া দেয়া হয়েছে। ঘটনার পর থেকে তাদের পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের খোঁজা হচ্ছে। তাঁর মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে দুর্বল করে ফেলা হয়। এরপর তাঁর হাত-পা বেঁধে ফেলে মুখে বালিশ অথবা তোয়ালে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। ঘটনার পর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও অপরাধ তদন্ত বিভাগ ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। নিহতের বড় ভাই নাসিরুল ইসলাম জানান, জিয়াউল অবিবাহিত ছিলেন। ওই ফ্ল্যাটটিতে রিপন একটি রুমে একা থাকতেন। তবে খাওয়া-দাওয়া করতেন তার ইন্দিরা রোডের বাসায়।
তিনি জানান, শুক্রবার থেকে রিপন বাসায় যায়নি। মোবাইল করে তাকে পাওয়া যায়নি। তা বন্ধ ছিল। শনিবার বিকেলে তিনি তাঁর মেয়েকে নিয়ে ছোট ভাই রিপনের গ্রিন রোডের ওই ফ্ল্যাটে যান। দরজা তালা দেখতে পান। পরে তারা ফিরে যান। পরেরদিন ওই ফ্ল্যাটের ডুবলিকেট চাবি নিয়ে তালা খুলে দেখেন, ছোট ভাই রিপনের লাশ বিছানায় পড়ে আছে। পরে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। সেখানে শোবার ঘরে খাটের ওপর গামছা দিয়ে হাত বাঁধা ও গলায় তোয়ালে পেঁচানো ছিল রিপনের শরীর। তবে পুলিশ জানায়, দুপুর ১টায় ডিবি পুলিশ নিহতের বড় ভাই নাসিরুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ব্যাপারে ডিবির সহকারী কমিশনার হাসান আরাফাত জানান, খুনীরা পরিচিত। হত্যার পর তারা বাইরে দিয়ে তালা লাগিয়ে পালিয়ে গেছে। নিহতের বাবার নাম মোঃ রফিকুল ইসলাম। গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদরের রোলপুর গ্রামে।
সড়ক দুঘর্টনায় নিহত ৪ ॥ অপরদিকে জানা গেছে, রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মতিঝিলের শাপলা চত্বরের সামনে রাস্তা পার হচ্ছিলেন মোঃ রাজ্জাক ম-ল (৬০) নামে এক ব্যক্তি। এ সময় ক্যাফে যমুনা রেস্টুরেন্টসংলগ্ন গলির সামনে মিনিবাসের ধাক্কায় তিনি গুরুতর আহত হন। পরে পথচারীরা রাজ্জাক ম-লকে দ্রুত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর দেড়টায় তার মৃত্যু ঘটে। খবর পেয়ে স্বজনরা হাসপাতালে ছুটে আসেন। নিহতের পরিবাররা জানান, নিহতের বাবার নাম মৌলভী আকবর আলী। গ্রামের বাড়ি জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর থানার বিহারী গ্রামে। তিনি মতিঝিলে আমেরিকান লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। থাকতেন ফকিরাপুলে। এদিকে শনিবার রাত সাড়ে ১২টায় খিলগাঁও মেরাদিয়া বাজারের পশ্চিমের রাস্তায় আবু তাহের (৩৫) নামের এক ব্যক্তিকে বেপরোয়া গতির একটি প্রাইভেটকার চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে খিলগাঁও থানার এসআই আসলাম মিয়া পথচারী আবু তাহেরকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে আনলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি পূর্ব রামপুরার ৩৮০/১৮/বি নম্বর পূর্ব কুঞ্জবনে থাকতেন। অন্যদিকে একই সময়ে দারুস সালাম থানাধীন গাবতলী এলাকা থেকে মোঃ হাসানকে (১০) নামে এক শিশুকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করেন। রবিবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই শিশুর মৃত্যু ঘটে। অপরদিকে একই সময়ে মিরপুর মডেল থানা এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নাজমা বেগম (৩০) নামে এক মহিলা গুরুতর আহত হন। পরে নাজমাকে আহত অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালে আনলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

No comments

Powered by Blogger.