মেডিক্যালে ভর্তীচ্ছুরা ফের আন্দোলনে-আজ রিটের শুনানি

মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সে ভর্তীচ্ছুরা ঈদের আগে স্থগিত করা আন্দোলন নিয়ে গতকাল রবিবার আবার মাঠে নেমেছেন। প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতি বাতিল করে জিপিএর ভিত্তিতে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে তাঁদের এই আন্দোলন।


গতকাল দুপুর আড়াইটা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এর আগে তাঁদের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে আজ সোমবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। একই দিন প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি দেওয়া হবে।
মেডিক্যালে পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তির দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা গত ১৩ আগস্ট সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এবং ১৪ আগস্ট সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, শাহবাগ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। একই সঙ্গে তাঁরা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেন। একই বিষয়ে উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন দাখিল হলে আদালত সরকারের প্রতি রুলনিশি জারি করেন। পরে পুরনো পদ্ধতিতে মেডিক্যালে ভর্তি পরীক্ষার নির্দেশনা চেয়ে আরো একটি রিট হয়। আজ সোমবার ওই রিটের ওপর শুনানি হবে।
গতকাল দুপুর ১২টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে 'মেডিক্যাল ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী মঞ্চ' আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা জানান, তাঁরা সোমবার (আজ) সকাল ৯টায় আগের মতোই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমবেত হবেন। সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে 'সুশীল সমাবেশ'। এ সময় পরবর্তী আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে এবং একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি দেওয়া করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, দেশে এত দিন যেভাবে ভর্তি পরীক্ষা ও মেধাগত অবস্থান যাচাইয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মেডিক্যালে ভর্তি করা হতো, ওই পদ্ধতিই বহাল রাখা হোক। কারণ কোনো পাবলিক পরীক্ষার মাধ্যমে মেডিক্যালের জন্য একজন শিক্ষার্থীর যোগ্যতা পুরোপুরি যাচাই করা সম্ভব নয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন সাইফুল ইসলাম, তনয় সরকার, অনন্যা বণিক, নাজমুল হক ও ফারজানা আফরিন।
আন্দোলনকারীরা দাবি তুলে ধরে বলেন, 'আমরা চাই কখনোই জিপিএর ভিত্তিতে ভর্তি পদ্ধতির বাস্তবায়ন না হোক। এর পরও যদি সরকার চায় সেক্ষেত্রে অন্তত ২০১৬ সালের আগে জিপিএর ভিত্তিতে ভর্তি পদ্ধতি চালু করা যাবে না। কারণ চলতি বছরে মাধ্যমিক পাস করা শিক্ষার্থীরা ২০১৫ সাল পর্যন্ত মেডিক্যালে পরীক্ষা দিতে পারবে।'
আজ শুনানি : এদিকে পুরনো পদ্ধতিতেই (পরীক্ষার মাধ্যমে) মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজে এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সে ভর্তির নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে দাখিল করা আবেদনের ওপর গতকাল শুনানি হয়নি। আজ এ বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত। আবেদন-সংক্রান্ত নথি আদালতের সামনে উপস্থাপন না হওয়ায় শুনানি পিছিয়েছে।
বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চে শুনানি হবে।
জিপিএর ভিত্তিতে মেডিক্যালে ভর্তির সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তার কারণ জানতে চেয়ে গত ১৪ আগস্ট রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এ রুলের সম্পূরক হিসেবে আবেদনটি করেছেন রিট আবেদনকারী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. ইউনুস আলী আকন্দ।
গতকাল হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চে সম্পূরক আবেদনের ওপর শুনানির জন্য কার্য তালিকাভুক্ত ছিল। এ কারণে আদালতে হাজির হয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, এ আবেদনের ওপর শুনানির প্রয়োজন নেই। মূল রুলের শুনানি শেষে আদালত আদেশ দেবেন। কিন্তু রিট আবেদনকারী বলেন, মূল রুলের ওপর শুনানি করতে গেলে সেশনজট সৃষ্টি হবে। শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এ সময় আদালত রিট আবেদনকারীর নথি খোঁজ করেন। কিন্তু আদালতে নথি না থাকায় আজ শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.