পুলিশের কাছে হেরোইন-রক্ষক যখন ভক্ষক
প্রবাদ আছে, কাক কাকের মাংস খায় না। চলতি কথায় না থাকলেও এ অনেকের জানা যে, সাধারণত পুলিশও পুলিশের অপরাধ আমলে নেয় না। উদাহরণ এন্তার। সর্বসাম্প্রতিক বড় উদাহরণ, আদালত প্রাঙ্গণে বিচারপ্রার্থী তরুণীর শ্লীলতাহানি। প্রকাশ্য দিবালোকে ঘটনা ঘটেছে, প্রিন্ট মিডিয়ায় ছবি প্রকাশিত হয়েছে, ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ভিডিও।
তবুও শনাক্ত করা হয়নি অপরাধীদের, নামকাওয়াস্তে দু'একজনকে দোষী সাব্যস্তে গুরু অপরাধে লঘুদণ্ডের ব্যবস্থা হচ্ছে। কারণ, অভিযোগের তীর পুলিশের দিকে। এই যখন পরিস্থিতি তখন তিন পুরিয়া হেরোইন বহনের অভিযোগে একজন পুলিশ সার্জেন্টের গ্রেফতার বড় ঘটনা বৈকি। সার্জেন্টের দেহ তল্লাশি করে হেরোইন পাওয়া যাওয়ায় তিনি গ্রেফতার হন। বিরল এ উদাহরণ সৃষ্টি করেছে তেজগাঁও থানা পুলিশ। আর খবরটি নিয়ে বেশ কৌতূহল ও চাঞ্চল্যও তৈরি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি পুলিশ সদস্যটি হেরোইন সেবন করতেন? পরিমাণে অল্প বলে এ সন্দেহ ওঠা স্বাভাবিক। কিন্তু পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া এটি বলা সম্ভব নয়। কিন্তু পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া সাধারণ অভিজ্ঞতা থেকে পথচারীরা এমন পুরিয়ার নানাবিধ ব্যবহার সম্পর্কে অবহিত। পুলিশের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ অভিযোগ, তারা নিরপরাধ মানুষকে বিপদে ফেলার জন্য এমন পুরিয়া ব্যবহার করেন। তল্লাশি চালাতে গিয়ে পকেট থেকে হেরোইনের পুরিয়া উদ্ধার এবং আত্মসম্মান ও নির্যাতনের ভয়ে উৎকোচ যোগে ছাড়া পাওয়ার অভিযোগ প্রায়ই ওঠে। পুলিশ সার্জেন্টের হেরোইন সেবন ও হয়রানি করার উদ্দেশ্যে পকেটে হেরোইন বহন দুটিই বড় অপরাধ। হেরোইন বহনের আর কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে কি-না তাও তদন্তসাপেক্ষে বেরিয়ে আসতে পারে। সে তদন্ত হোক, মামলাও হোক। পুলিশের মধ্যে নানা অপরাধ ছড়িয়ে পড়েছে, সে অপরাধ বাইরে থেকে এসে কারও পক্ষে দূর করা কঠিন। পুলিশের মধ্য থেকেই অপরাধ কমানোর ব্যবস্থা করতে হবে। আর এ জন্য এ ধরনের অভিযানের বিশেষ গুরুত্ব আছে।
No comments