বহুগুণ বেশি ব্যয়ে কাজ পাচ্ছে ভারতীয়রাঃ দেশের চামড়া দিয়ে ঋণ পরিশোধের চিন্তা!
চামড়া শিল্পও ভারতের হাতে তুলে দেয়ার আয়োজন চলছে পুরোদমে। দৈনিক আমার দেশ’র এক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, সাভারে যে ট্যানারি কমপ্লেক্স স্থাপিত হতে যাচ্ছে তার সেন্ট্রাল ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বা সিইটিপি তৈরির কাজ ভারতীয় প্রতিষ্ঠানকে পাইয়ে দেয়ার কৌশল নেয়া হয়েছে। এজন্য এমন কিছু শর্ত চাপানো হয়েছে যাতে বাংলাদেশের কোনো প্রতিষ্ঠান টেন্ডারে অংশ না নিতে পারে।
শর্তের বেড়াজালে আটকে পড়ায় বাস্তবেও দেশি প্রতিষ্ঠানগুলো টেন্ডার দিতে পারছে না। ট্যানারি মালিক সমিতির হস্তক্ষেপে দেশি একটি প্রতিষ্ঠানকে শিডিউল দেয়া হলেও তথ্যাভিজ্ঞদের আশঙ্কা, প্রতিষ্ঠানটিকে কাজ না দেয়ার সম্ভাবনাই বেশি। অথচ ভারতীয় প্রতিষ্ঠান যেখানে চারশ’ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রাথমিক ধারণা দিয়েছে সেখানে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, দেড়শ’ কোটি টাকাতেই সিইটিপি তৈরির কাজ সমাপ্ত করা সম্ভব। অন্যকিছু কারণেও ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প চামড়া শিল্পের জন্য ধ্বংসাত্মক হবে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। যেমন, উষ্ণমণ্ডলীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশে বায়োলজিক্যাল ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করা হলে প্রতি বর্গফুট চামড়া উত্পাদনে ৪৫ থেকে ৮০ পয়সা ব্যয় হবে। অন্যদিকে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাবে কেমিক্যাল প্লান্ট স্থাপন করা হলে প্রতি বর্গফুটে খরচ হবে পাঁচ থেকে নয় টাকা। কথা শুধু এটুকুই নয়। প্লান্ট চালু রাখার জন্য আবার বিপুল পরিমাণ কেমিক্যালও আমদানি করতে হবে, তা অবশ্যই ভারত থেকে। এজন্য বছরে ব্যয় করতে হবে একশ’ কোটি টাকা। ফলে সব মিলিয়ে উত্পাদন ব্যয়ও কয়েকগুণ বাড়বে। আর ব্যয় বাড়ায় বাংলাদেশকে চামড়া রফতানিতেও পিছিয়ে পড়তে হবে, যার পরিপূর্ণ সুযোগ নেবে ভারত। এজন্যই চামড়া শিল্পে জড়িতরা অভিযোগ করেছেন, সরকার চামড়া শিল্পকে ভারতের হাতে তুলে দিতে চাচ্ছে।
ওপরের তথ্যগুলোর আলোকে অভিযোগটিকে অস্বীকার করারও উপায় নেই। একটি উদাহরণ হিসেবে সিইটিপি স্থাপনে ২৮ বছরের অভিজ্ঞতা চাওয়ার কথা উল্লেখ করা যায়। কারণ, বাংলাদেশের ট্যানারি শিল্পে এ পর্যন্ত সিইটিপি স্থাপিতই হয়নি। বিশেষজ্ঞরা তাই বলেছেন, ভারতের হাতে তুলে দেয়ার উদ্দেশ্য রয়েছে বলেই উদ্ভট শর্তটি চাপানো হয়েছে। এখানে দেখা দরকার ছিল, প্রতিষ্ঠানটি আগে কখনও ইটিপি স্থাপন করেছে কিনা। তাছাড়া বর্তমান যুগে আধুনিক টেকনোলজির ব্যাপারে জোর দেয়া দরকার ছিল, যা এ দেশের অনেক প্রতিষ্ঠানেরই রয়েছে। ব্যয়সাশ্রয়ী বায়োলজিক্যাল ট্রিটমেন্ট প্লান্টের পরিবর্তে বহুগুণ ব্যয়বহুল কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট প্লান্ট নিয়ে মাতামাতি করার পেছনেও ভারতের হাতে তুলে দেয়ার একই উদ্দেশ্য কাজ করেছে। একই কারণে দেশের একমাত্র বিশেষায়িত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজির কোনো শিক্ষক-বিশেষজ্ঞের সঙ্গেও পরামর্শ করা হয়নি। সব মিলিয়ে পরিষ্কার হয়েছে, সরকার চামড়া শিল্পকে সম্পূর্ণ রূপে ভারতের ইচ্ছাধীন করতে চাচ্ছে। আমরা বেশি উদ্বিগ্ন এজন্য যে, স্বাধীনতা-পরবর্তী আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষতিকর নীতি ও কর্মকাণ্ডের পরিণতিতে বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল পাট ও পাটশিল্প ধ্বংস হয়ে গেছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, বাংলাদেশের পাটকলগুলো যখন কাঁচা পাটের অভাবে বন্ধ থাকে, সীমান্তের ওপারে তখন নতুন নতুন পাটকল প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের পাট দিয়ে সেগুলোতে উত্পাদনও চলে রাত-দিন। একই দল এখনও ক্ষমতায় রয়েছে বলেই চামড়া শিল্পের ভবিষ্যত্ নিয়ে আশঙ্কা বাড়ছে। আমরা সরকারের এই ভারতপন্থী নীতি-কৌশল ও কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করি। সরকারের উচিত নতুন করে টেন্ডার আহ্বান করা এবং বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠানগুলোকে অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া। ব্যয়সাশ্রয়ী বায়োলজিক্যাল ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপনসহ সব বিষয়েই এমন ব্যবস্থা নেয়া দরকার, যাতে রফতানি আয়ের অন্যতম খাত চামড়া শিল্প ভারতের ইচ্ছাধীন না হয়ে পড়ে। ঋণ পরিশোধ করার প্রশ্নই যদি থাকে, তাহলে দেশের চামড়া দিয়েই তা পরিশোধ করতে হবে কেন?
ওপরের তথ্যগুলোর আলোকে অভিযোগটিকে অস্বীকার করারও উপায় নেই। একটি উদাহরণ হিসেবে সিইটিপি স্থাপনে ২৮ বছরের অভিজ্ঞতা চাওয়ার কথা উল্লেখ করা যায়। কারণ, বাংলাদেশের ট্যানারি শিল্পে এ পর্যন্ত সিইটিপি স্থাপিতই হয়নি। বিশেষজ্ঞরা তাই বলেছেন, ভারতের হাতে তুলে দেয়ার উদ্দেশ্য রয়েছে বলেই উদ্ভট শর্তটি চাপানো হয়েছে। এখানে দেখা দরকার ছিল, প্রতিষ্ঠানটি আগে কখনও ইটিপি স্থাপন করেছে কিনা। তাছাড়া বর্তমান যুগে আধুনিক টেকনোলজির ব্যাপারে জোর দেয়া দরকার ছিল, যা এ দেশের অনেক প্রতিষ্ঠানেরই রয়েছে। ব্যয়সাশ্রয়ী বায়োলজিক্যাল ট্রিটমেন্ট প্লান্টের পরিবর্তে বহুগুণ ব্যয়বহুল কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট প্লান্ট নিয়ে মাতামাতি করার পেছনেও ভারতের হাতে তুলে দেয়ার একই উদ্দেশ্য কাজ করেছে। একই কারণে দেশের একমাত্র বিশেষায়িত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজির কোনো শিক্ষক-বিশেষজ্ঞের সঙ্গেও পরামর্শ করা হয়নি। সব মিলিয়ে পরিষ্কার হয়েছে, সরকার চামড়া শিল্পকে সম্পূর্ণ রূপে ভারতের ইচ্ছাধীন করতে চাচ্ছে। আমরা বেশি উদ্বিগ্ন এজন্য যে, স্বাধীনতা-পরবর্তী আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষতিকর নীতি ও কর্মকাণ্ডের পরিণতিতে বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল পাট ও পাটশিল্প ধ্বংস হয়ে গেছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, বাংলাদেশের পাটকলগুলো যখন কাঁচা পাটের অভাবে বন্ধ থাকে, সীমান্তের ওপারে তখন নতুন নতুন পাটকল প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের পাট দিয়ে সেগুলোতে উত্পাদনও চলে রাত-দিন। একই দল এখনও ক্ষমতায় রয়েছে বলেই চামড়া শিল্পের ভবিষ্যত্ নিয়ে আশঙ্কা বাড়ছে। আমরা সরকারের এই ভারতপন্থী নীতি-কৌশল ও কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করি। সরকারের উচিত নতুন করে টেন্ডার আহ্বান করা এবং বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠানগুলোকে অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া। ব্যয়সাশ্রয়ী বায়োলজিক্যাল ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপনসহ সব বিষয়েই এমন ব্যবস্থা নেয়া দরকার, যাতে রফতানি আয়ের অন্যতম খাত চামড়া শিল্প ভারতের ইচ্ছাধীন না হয়ে পড়ে। ঋণ পরিশোধ করার প্রশ্নই যদি থাকে, তাহলে দেশের চামড়া দিয়েই তা পরিশোধ করতে হবে কেন?
No comments