এ কলঙ্ক বড়ই যাতনাময় by আতাউস সামাদ
বাংলাদেশে সম্ভবত এখনও অধিকাংশ পরিবারের ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে পারে না, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া তো অনেক দূরের কথা। তাই যে পরিবারের সন্তানেরা উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পায় তারা নিজেদের অবশ্যই ভাগ্যবান মনে করে। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হলে সাধারণত শহরে থাকতে হয়। তাই হোস্টেলে ও হলে থাকার প্রয়োজন হয় বহু ছাত্রছাত্রীর।
আজকাল অনেক ছেলেমেয়ে বাড়ি ভাড়া করে ‘মেস’ করে থাকে। তাদের নিয়ে অভিভাবকরা কিছুটা দুশ্চিন্তায় থাকেন। ভাবেন, কেমন জানি আছে, কী জানি করছে? তাছাড়া এভাবে থাকার জন্য খরচও বেশি হয়। ফলে ছাত্রছাত্রীরা কলেজের হোস্টেল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে জায়গা পেলে তাদের পিতা-মাতারা যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন। একে তো থাকার নিশ্চয়তা পাওয়া গেল এবং থাকা-খাওয়ার খরচ হবে কম, তার সঙ্গে শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে থাকার ফলে লেখাপড়াও হবে ভালো। তদুপরি তাদের সন্তানেরা নিরাপদে থাকবে বলেও আশা করেন অভিভাবকরা। কিন্তু সেই সুদিন শেষ। ছাত্রাবাসে সশস্ত্র দুর্বৃত্তদের উপদ্রব ও অবৈধভাবে বসবাস করা আর ছাত্রীদের হল-হোস্টেলের ওপর নারী ও পুরুষ দেহব্যবসায়ীদের নজর পড়ায় চরম অস্বস্তির মধ্যে পড়েছে বাংলাদেশের সমাজ। রাজধানী ঢাকার ইডেন মহিলা কলেজে গত শুক্রবার ১২ মার্চ ছাত্রলীগের দুই গোষ্ঠীর ছাত্রীদের মধ্যে সংঘর্ষের পর পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে জঘন্য অপরাধ ও চরম দুর্নীতির কাহিনী। এখন যাব কোথায়? জাত-মান রাখি কীভাবে, এই প্রশ্ন তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে আমাদের। এ লজ্জাজনক পরিস্থিতি আলোচনার জন্য আমি তিনটি পত্রিকার প্রতিবেদন থেকে উদ্ধৃতি দিচ্ছি। তবে সেগুলোর মধ্যে ‘আমার দেশ’ পত্রিকার রিপোর্ট ব্যবহার করিনি, কারণ তাহলে হয়তোবা কেউ সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরীর মতো বলে বসবেন, ‘আমার দেশ মিথ্যা ও অসত্য সংবাদ দেয়।’ কাজেই এই লেখাটি পড়ে দেখার কোনো দরকারই নেই। এছাড়াও আবার কোনো আততায়ী আরেক দফা ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের দিকে হাতুড়ি বা ছুরি নিয়ে তেড়ে আসুক, তাও চাইছি না আমি। তিনি তো অনেক বিপদে আছেন। তাকে আরও বিপন্ন করতে চাই না। তাছাড়া আমার দেশ পত্রিকার যে সাংবাদিক ছাত্রলীগের ওই নারী নেতাদের দ্বন্দ্ব ও সংঘর্ষ নিয়ে রিপোর্ট করেছেন তাকে এরই মধ্যেই ‘শিক্ষা দেয়া হবে’ বলে হুমকি দেয়া হয়েছে।
ছাত্রলীগের ইডেন মহিলা কলেজ শাখার নেত্রীরাই ওই বিদ্যালয়ের হোস্টেলের কিছু মেয়েকে দেহব্যবসায় নামানোর অপরাধের কথা ফাঁস করে দিয়েছে। তবে সেটা তারা করেছেন নিজের দোষ স্বীকার করে নয়, বরঞ্চ একে অপরকে দোষারোপ করতে গিয়ে। আর এসব মাতব্বর নারী তাদের লোভ ও জঘন্য কাজের শিকার করতে চেয়েছেন যে সাধারণ ছাত্রীদের, তাদেরও কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন সাংবাদিকদের কাছে। ঢাকার বেশ কয়েকটি দৈনিক পত্রিকা গত শনিবার (মার্চ ১৩, ২০১০) মোটামুটি বিস্তারিত জানিয়েছে সরকারি দলের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের নারী নেত্রীদের কুকীর্তি।
দৈনিক ইত্তেফাক ‘ইডেনে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে হাতাহাতি, আহত ৬’ শিরোনামে প্রথম পৃষ্ঠায় দুই কলাম খবরে লিখেছে, ‘মূলত উভয় গ্রুপের পক্ষ থেকে ঘটনার জন্য ছাত্রলীগের নৈতিকতাবিরোধী কাজে প্ররোচনার অভিযোগ রয়েছে।’ সমাজকর্ম বিভাগের ছাত্রী মাহফুজা খানম ইত্তেফাককে বলেন, ‘সভাপতি নিঝুম আমাকে সব ধরনের অফার করেছে। গত বৃহস্পতিবার রুমানার মাধ্যমে আমাকে সব ধরনের প্রস্তাব করা হয়। নিঝুমের নির্দেশে রুমানা প্রতিটি মেয়েকে বাইরে নেতার বাসায় যেতে বলে। আমি তাদের কথা না শোনায় আমার রুম ভাংচুর করে তালা দিয়ে সবকিছু তারা নিয়ে গেছে।’ উল্লেখ্য, মাহফুজা খানম যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, তার পুরো নাম জেসমিন শামীমা নিঝুম এবং তিনি ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি। অপরপক্ষে নিঝুম ইত্তেফাকে বলেছেন, ‘সংগঠনবিরোধী কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে হ্যাপী ও শর্মীকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কৃত দুই নেত্রীর সঙ্গে স্বর্ণা ও কানিজ কলেজের মেয়েদের প্রায়ই অনৈতিক প্রস্তাব দিত।’
গত শনিবার, মার্চ ১৩, ২০১০ তারিখের যুগান্তর পত্রিকার দ্বিতীয় সংস্করণের প্রথম পৃষ্ঠায় মধ্যের ভাঁজের ওপরের অংশে বাঁ দিকে চার কলামজুড়ে একটি রঙিন ছবি ছাপা হয়েছে। ছবিটিতে পনেরো-ষোলোটি কিশোরীকে (ঞববহ-ধমবত্) কোমরে ওড়না পেঁচিয়ে মোটা মোটা লাঠি হাতে দেখা যাচ্ছে। আলোকচিত্রটির নিচে ক্যাপশন লেখা হয়েছে ‘কে বলে এই নারী অবলা—ইডেন মহিলা কলেজে শুক্রবার ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ চলাকালে লাঠিসোটা নিয়ে কর্মীরা মহড়া দেয়’। পাশে ৫ম কলামে এ সংক্রান্ত খবর। সংবাদটির শিরোনাম ‘ইডেনে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ/কক্ষ ভাংচুর/আহত ১৫’। এতে এই সংঘর্ষের কারণগুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে রিপোর্ট করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে—‘অনার্সে ভর্তিতে লব্ধ আয় ভাগবাটোয়ারা এবং ছাত্রীদের দিয়ে অসামাজিক কাজ করানোর’ অভিযোগ। এ প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘বিবদমান উভয় গ্রুপ পরস্পরের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করে আরও বলেছে, দীর্ঘদিন ধরেই ছাত্রীদের জোর করে বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো ছাড়াও গাউছিয়া মার্কেটের হোটেল ও আজিমপুরে ফ্ল্যাটসহ রাজধানীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে টার্গেট থাকে সংগঠনের জুনিয়র কর্মী এবং প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের আগত ছাত্রীরা। কেউ নেত্রীদের প্রস্তাবে রাজি না হলে সংশ্লিষ্ট ছাত্রীকে হল থেকে বের করে দেয়া হয়।’
সদ্য প্রকাশিত কালের কণ্ঠ পত্রিকায় ভেতরের পৃষ্ঠায় দু’কলমব্যাপী শিরোনামের একটি খবরে বিষয়টির উল্লেখ এসেছে এভাবে, ‘তবে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি জেসমিন শারমিন নিঝুম সাংবাদিকদের বলেন, তিনি সংগঠন ও নৈতিকতাবিরোধী কাজের প্রতিবাদ করায় বিক্ষুব্ধরা দুই বহিষ্কৃত নেত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।’
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, বাংলাদেশের পত্রিকাগুলো বহুকাল ধরে ‘দেহব্যবসা’ ও ‘অবৈধ যৌন সম্পর্ক’ বিষয় দুটিকে সাধারণত ‘সমাজবিরোধী’ বা ‘অনৈতিক কাজ’ শব্দ দিয়ে বর্ণনা করে থাকে, যাতে পাঠকরা বিব্রত না হন। এ দেশের ইংরেজি পত্রিকাগুলোতেও 'চত্ড়ংঃরঃঁঃরড়হ' অথবা 'ওষষবমধষ ংবী ঃত্ধফব' কথাগুলোর ক্ষেত্রে 'ধহঃর-ংড়পরধষ ধপঃরারঃু' শব্দগুচ্ছটি ব্যবহার করা হয়। কাজেই উদ্ধৃত সংবাদ-অংশগুলোতে ‘অনৈতিক’ বা ‘নৈতিকতাবিরোধী’ বা ‘অসামাজিক’ শব্দগুলো আসলে যে ইডেন মহিলা কলেজের অল্পবয়সী মেয়েদের অবৈধ ফুর্তিফার্তার জন্য চাপ প্রয়োগ করা বা প্ররোচনা দেয়ার অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
ইডেন মহিলা কলেজে ছাত্রীদের সংঘর্ষ সংক্রান্ত সংবাদগুলোতে বিশেষভাবে লক্ষণীয় যে বিষয়টি আছে তা হলো, যাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে সেই দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে কলেজের কিশোরী ছাত্রীদের মধ্যে অনেককে ‘অনৈতিক’ বা ‘অসামাজিক’ কাজ করার জন্য চাপ দেয়ার এবং তাদের মধ্যে কাউকে কাউকে এভাবে চাপ দিয়ে নেতাদের বাড়িতে (এখানে নেতা শব্দটি নারী নেতা অর্থে নয়) বা বিশেষ কাজের জন্য ব্যবহৃত সস্তার হোটেলে অথবা আজিমপুরের নির্দিষ্ট কিছু ফ্ল্যাটে যেতে বাধ্য করার অভিযোগ এনেছে। উদ্ধৃত তিনটি প্রতিবেদনের দুটিতেই একথা বলা হয়েছে। তবে ‘কালের কণ্ঠ’ পত্রিকার প্রতিবেদনে এ সম্পর্কে শুধু ক্ষমতাসীন পক্ষের মন্তব্য আছে। এখন যদি দুই পক্ষেরই অভিযোগ সঠিক হয় তাহলে তো প্রমাণই হয়ে গেল যে, ইডেন কলেজে ভয়াবহ এ অপরাধটি ঘটছে। আর যদি কেবল কোনো এক পক্ষের অভিযোগ সঠিক হয় তাহলেও দেখা যাচ্ছে অপরাধ হচ্ছে।
অতএব আমরা বর্তমানে এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে বসবাস করছি। আমাদের বিপদ অনেক দিক দিয়ে। ইডেন মহিলা কলেজে যে ছাত্রীরা পড়ছে তাদের অভিভাবকরা এক চরম আতঙ্কের মধ্যে আছেন, কখন জানি তাদের স্নেহের মেয়েটিকে কতগুলো উচ্চাভিলাষী চরিত্রহীন ও মনুষ্যত্বহীন মেয়েলোক তাদের বন্ধু বা মুরব্বি পুরুষের অঙ্কশায়িনী হতে বাধ্য করে তাদের জীবন ধ্বংস করে দেয়। আরেক দুশ্চিন্তা হলো যে, ছাত্রলীগের নেত্রীদের অপকীর্তি ও তাদের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের কারণ তাদেরই মুখ দিয়ে ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর ইডেন মহিলা কলেজের ছাত্রীরা ওই প্রতিষ্ঠানে কয়েকজন বিশেষ সুবিধাভোগকারিণীর অপকর্মের জন্য সাধারণভাবে অপবাদের ভাগীদার হওয়ার ভয়ে বিমর্ষ থাকবেন। কারণ তাদেরকে পরিচিত অনেকেই দেখা হলে প্রশ্ন করবেন যে এসব ঘটনা সম্পর্কে তারা সরেজমিনে ওয়াকিবহাল কিনা, অথবা এসব অপকর্মের হোতারা তাদেরকেও বিরক্ত করেছে কিনা। তৃতীয়ত, ইডেন মহিলা কলেজের আশপাশের এলাকার বাসিন্দারাও একটা কলঙ্কের ছোঁয়া লাগার ভয়ে থাকবেন। চতুর্থত, এ ঘটনা ছাত্রলীগের গায়ে তো বটেই তাদের ময়মুরব্বিদেরও কেলেঙ্কারির মধ্যে ফেলে দিল। একইসঙ্গে আমরা যদি ভর্তি বাণিজ্য থেকে অর্জিত অর্থের কথা চিন্তা করি, অভিযোগ কানে তুললে শুধু ইডেন কলেজেই যার পরিমাণ এবছরই কমপক্ষে এক কোটি টাকা হবে, তাহলে স্বীকার করে নিতে হবে যে, ইডেন মহিলা কলেজটি দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত হয়ে আছে। অবশ্য ছাত্রলীগ নেত্রীরা ভর্তি করে বা হোস্টেলে সিট দিয়ে টাকা কামানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে অভিযোগ যদি অসত্য হয় তাহলে লাঠি হাতে মারামারি কী জন্য? নেতৃত্বের জন্য? নেতৃত্বের মধু কী? এ অস্বস্তিকর পরিস্থিতির অবসান হওয়া জরুরি। ঐতিহ্যবাহী ইডেন কলেজের সুনাম পুনরুদ্ধার করার জন্য প্রথম পদক্ষেপ নিতে হবে কলেজ কর্তৃপক্ষকে। আমরা আমাদের মেয়েদের পাঠাই তাদের হেফাজতে। ছাত্রলীগ বা অন্য কোনো ছাত্র সংগঠন বা কোনো ছাত্রনেতা বা নেত্রীর হেফাজতে নয়। একইসঙ্গে দায়িত্ব বর্তায় শিক্ষামন্ত্রীর ওপর। এখন শোনা গেল ইডেন মহিলা কলেজের কথা। এর মাত্র দিনকয়েক আগে কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের সূত্র মারফত জানা গেছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে জামায়াতে ইসলামী দলটির ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের দ্বারা পরিচালিত ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নিবাসগুলোর ঘর ও সিট ভাড়া দেয়ার বাণিজ্যের কথা। তার আগে দেশের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বাণিজ্যে বিশেষ সুবিধা আদায় করার জন্য ছাত্রলীগের নেতাদের সহিংসতা ও তাদের মধ্যে কলহের ফলে সংঘর্ষ দেখা গেছে। এক্ষেত্রে শিক্ষাঙ্গনকে এই কলঙ্ক ও আবর্জনা থেকে মুক্ত করার দায়িত্ব শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সরকারকেই নিতে হবে। অবৈধ পথে অর্থ উপার্জনের লোভ ও লালসা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের মধ্যে এত ব্যাপক হয়েছে এবং এমন মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে যে, তার রাশ টেনে ধরতে হলে পুরো আওয়ামী লীগ ও তাদের পুরো সরকারকে মাঠে নামতে হবে আর এটা দৃশ্যমান হতে হবে যে, এই কর্তব্য পালনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তরিক ও সক্রিয়ভাবে তাদের সমর্থন করছেন। এখানে আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জনাব আবদুল জলিলের একটা মন্তব্য মনে পড়ছে। তিনি বলেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগ হ্যামেলিনের বংশীবাদকের দল। যার হাতে সেই জাদুর বাঁশি থাকবে সারা দল তার কথায় চলবে। আগে এ বাঁশি ছিল বঙ্গবন্ধুর হাতে, এখন সেটি আছে তার কন্যা শেখ হাসিনার হাতে।’ কিন্তু আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন এবং সহযোগী সংগঠনের লোকেরা যেভাবে দিকে দিকে স্কুল দখল, কলেজ দখল, বিশ্ববিদ্যালয় দখল, বাড়ি দখল, দোকান দখল, অফিস দখল, ব্যবসা দখল, নদী দখল, পুকুর দখল করছে (একথা বললাম দেশের বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন ও আলোকচিত্রের ভিত্তিতে) সেক্ষেত্রে এদের সবাইকে নিরস্ত না করলে শুধুই ছাত্রলীগ শীর্ষ নেত্রী বা অন্য নেতাদের কথা শুনবে কেন?
আমরা এসব কথা বললে বা লিখলে কেউ কেউ প্রশ্ন করেন, ‘বিএনপির আমলে এসব হয়নি?’ আমাদের উত্তর হচ্ছে, ‘বিএনপির বহু নেতা ও সদস্যের বিরুদ্ধে তো দুর্নীতির মামলা দেয়াই আছে। তাদের বিচার চলুক। আর তারা এখন ক্ষমতায় নেই, তাই তারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সুযোগ নিয়ে যে অত্যাচার ও দুর্নীতি হয়, তাতে অংশ নিতে পারছে না। এখন সেই বিশেষ ক্ষমতার সুযোগ নিয়ে অপরাধ করছে আওয়ামী লীগের নেতা ও সমর্থকরা। আর আমরা এখনকার দিনগুলিতে শান্তিতে বাঁচতে চাই। অতীতে তো সহ্য করেছি।’
তদুপরি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, তার মহাজোট এবং তাদের সরকারকে মনে রাখতে হবে যে, ইডেন মহিলা কলেজে কিশোরীদের বিপথে পরিচালিত করার খবর আমাদের বাংলাদেশের সামাজিক মূল্যবোধে কঠিন আঘাত হেনেছে।
ছাত্রলীগের ইডেন মহিলা কলেজ শাখার নেত্রীরাই ওই বিদ্যালয়ের হোস্টেলের কিছু মেয়েকে দেহব্যবসায় নামানোর অপরাধের কথা ফাঁস করে দিয়েছে। তবে সেটা তারা করেছেন নিজের দোষ স্বীকার করে নয়, বরঞ্চ একে অপরকে দোষারোপ করতে গিয়ে। আর এসব মাতব্বর নারী তাদের লোভ ও জঘন্য কাজের শিকার করতে চেয়েছেন যে সাধারণ ছাত্রীদের, তাদেরও কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন সাংবাদিকদের কাছে। ঢাকার বেশ কয়েকটি দৈনিক পত্রিকা গত শনিবার (মার্চ ১৩, ২০১০) মোটামুটি বিস্তারিত জানিয়েছে সরকারি দলের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের নারী নেত্রীদের কুকীর্তি।
দৈনিক ইত্তেফাক ‘ইডেনে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে হাতাহাতি, আহত ৬’ শিরোনামে প্রথম পৃষ্ঠায় দুই কলাম খবরে লিখেছে, ‘মূলত উভয় গ্রুপের পক্ষ থেকে ঘটনার জন্য ছাত্রলীগের নৈতিকতাবিরোধী কাজে প্ররোচনার অভিযোগ রয়েছে।’ সমাজকর্ম বিভাগের ছাত্রী মাহফুজা খানম ইত্তেফাককে বলেন, ‘সভাপতি নিঝুম আমাকে সব ধরনের অফার করেছে। গত বৃহস্পতিবার রুমানার মাধ্যমে আমাকে সব ধরনের প্রস্তাব করা হয়। নিঝুমের নির্দেশে রুমানা প্রতিটি মেয়েকে বাইরে নেতার বাসায় যেতে বলে। আমি তাদের কথা না শোনায় আমার রুম ভাংচুর করে তালা দিয়ে সবকিছু তারা নিয়ে গেছে।’ উল্লেখ্য, মাহফুজা খানম যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, তার পুরো নাম জেসমিন শামীমা নিঝুম এবং তিনি ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি। অপরপক্ষে নিঝুম ইত্তেফাকে বলেছেন, ‘সংগঠনবিরোধী কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে হ্যাপী ও শর্মীকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কৃত দুই নেত্রীর সঙ্গে স্বর্ণা ও কানিজ কলেজের মেয়েদের প্রায়ই অনৈতিক প্রস্তাব দিত।’
গত শনিবার, মার্চ ১৩, ২০১০ তারিখের যুগান্তর পত্রিকার দ্বিতীয় সংস্করণের প্রথম পৃষ্ঠায় মধ্যের ভাঁজের ওপরের অংশে বাঁ দিকে চার কলামজুড়ে একটি রঙিন ছবি ছাপা হয়েছে। ছবিটিতে পনেরো-ষোলোটি কিশোরীকে (ঞববহ-ধমবত্) কোমরে ওড়না পেঁচিয়ে মোটা মোটা লাঠি হাতে দেখা যাচ্ছে। আলোকচিত্রটির নিচে ক্যাপশন লেখা হয়েছে ‘কে বলে এই নারী অবলা—ইডেন মহিলা কলেজে শুক্রবার ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ চলাকালে লাঠিসোটা নিয়ে কর্মীরা মহড়া দেয়’। পাশে ৫ম কলামে এ সংক্রান্ত খবর। সংবাদটির শিরোনাম ‘ইডেনে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ/কক্ষ ভাংচুর/আহত ১৫’। এতে এই সংঘর্ষের কারণগুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে রিপোর্ট করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে—‘অনার্সে ভর্তিতে লব্ধ আয় ভাগবাটোয়ারা এবং ছাত্রীদের দিয়ে অসামাজিক কাজ করানোর’ অভিযোগ। এ প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘বিবদমান উভয় গ্রুপ পরস্পরের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করে আরও বলেছে, দীর্ঘদিন ধরেই ছাত্রীদের জোর করে বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো ছাড়াও গাউছিয়া মার্কেটের হোটেল ও আজিমপুরে ফ্ল্যাটসহ রাজধানীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে টার্গেট থাকে সংগঠনের জুনিয়র কর্মী এবং প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের আগত ছাত্রীরা। কেউ নেত্রীদের প্রস্তাবে রাজি না হলে সংশ্লিষ্ট ছাত্রীকে হল থেকে বের করে দেয়া হয়।’
সদ্য প্রকাশিত কালের কণ্ঠ পত্রিকায় ভেতরের পৃষ্ঠায় দু’কলমব্যাপী শিরোনামের একটি খবরে বিষয়টির উল্লেখ এসেছে এভাবে, ‘তবে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি জেসমিন শারমিন নিঝুম সাংবাদিকদের বলেন, তিনি সংগঠন ও নৈতিকতাবিরোধী কাজের প্রতিবাদ করায় বিক্ষুব্ধরা দুই বহিষ্কৃত নেত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।’
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, বাংলাদেশের পত্রিকাগুলো বহুকাল ধরে ‘দেহব্যবসা’ ও ‘অবৈধ যৌন সম্পর্ক’ বিষয় দুটিকে সাধারণত ‘সমাজবিরোধী’ বা ‘অনৈতিক কাজ’ শব্দ দিয়ে বর্ণনা করে থাকে, যাতে পাঠকরা বিব্রত না হন। এ দেশের ইংরেজি পত্রিকাগুলোতেও 'চত্ড়ংঃরঃঁঃরড়হ' অথবা 'ওষষবমধষ ংবী ঃত্ধফব' কথাগুলোর ক্ষেত্রে 'ধহঃর-ংড়পরধষ ধপঃরারঃু' শব্দগুচ্ছটি ব্যবহার করা হয়। কাজেই উদ্ধৃত সংবাদ-অংশগুলোতে ‘অনৈতিক’ বা ‘নৈতিকতাবিরোধী’ বা ‘অসামাজিক’ শব্দগুলো আসলে যে ইডেন মহিলা কলেজের অল্পবয়সী মেয়েদের অবৈধ ফুর্তিফার্তার জন্য চাপ প্রয়োগ করা বা প্ররোচনা দেয়ার অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
ইডেন মহিলা কলেজে ছাত্রীদের সংঘর্ষ সংক্রান্ত সংবাদগুলোতে বিশেষভাবে লক্ষণীয় যে বিষয়টি আছে তা হলো, যাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে সেই দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে কলেজের কিশোরী ছাত্রীদের মধ্যে অনেককে ‘অনৈতিক’ বা ‘অসামাজিক’ কাজ করার জন্য চাপ দেয়ার এবং তাদের মধ্যে কাউকে কাউকে এভাবে চাপ দিয়ে নেতাদের বাড়িতে (এখানে নেতা শব্দটি নারী নেতা অর্থে নয়) বা বিশেষ কাজের জন্য ব্যবহৃত সস্তার হোটেলে অথবা আজিমপুরের নির্দিষ্ট কিছু ফ্ল্যাটে যেতে বাধ্য করার অভিযোগ এনেছে। উদ্ধৃত তিনটি প্রতিবেদনের দুটিতেই একথা বলা হয়েছে। তবে ‘কালের কণ্ঠ’ পত্রিকার প্রতিবেদনে এ সম্পর্কে শুধু ক্ষমতাসীন পক্ষের মন্তব্য আছে। এখন যদি দুই পক্ষেরই অভিযোগ সঠিক হয় তাহলে তো প্রমাণই হয়ে গেল যে, ইডেন কলেজে ভয়াবহ এ অপরাধটি ঘটছে। আর যদি কেবল কোনো এক পক্ষের অভিযোগ সঠিক হয় তাহলেও দেখা যাচ্ছে অপরাধ হচ্ছে।
অতএব আমরা বর্তমানে এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে বসবাস করছি। আমাদের বিপদ অনেক দিক দিয়ে। ইডেন মহিলা কলেজে যে ছাত্রীরা পড়ছে তাদের অভিভাবকরা এক চরম আতঙ্কের মধ্যে আছেন, কখন জানি তাদের স্নেহের মেয়েটিকে কতগুলো উচ্চাভিলাষী চরিত্রহীন ও মনুষ্যত্বহীন মেয়েলোক তাদের বন্ধু বা মুরব্বি পুরুষের অঙ্কশায়িনী হতে বাধ্য করে তাদের জীবন ধ্বংস করে দেয়। আরেক দুশ্চিন্তা হলো যে, ছাত্রলীগের নেত্রীদের অপকীর্তি ও তাদের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের কারণ তাদেরই মুখ দিয়ে ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর ইডেন মহিলা কলেজের ছাত্রীরা ওই প্রতিষ্ঠানে কয়েকজন বিশেষ সুবিধাভোগকারিণীর অপকর্মের জন্য সাধারণভাবে অপবাদের ভাগীদার হওয়ার ভয়ে বিমর্ষ থাকবেন। কারণ তাদেরকে পরিচিত অনেকেই দেখা হলে প্রশ্ন করবেন যে এসব ঘটনা সম্পর্কে তারা সরেজমিনে ওয়াকিবহাল কিনা, অথবা এসব অপকর্মের হোতারা তাদেরকেও বিরক্ত করেছে কিনা। তৃতীয়ত, ইডেন মহিলা কলেজের আশপাশের এলাকার বাসিন্দারাও একটা কলঙ্কের ছোঁয়া লাগার ভয়ে থাকবেন। চতুর্থত, এ ঘটনা ছাত্রলীগের গায়ে তো বটেই তাদের ময়মুরব্বিদেরও কেলেঙ্কারির মধ্যে ফেলে দিল। একইসঙ্গে আমরা যদি ভর্তি বাণিজ্য থেকে অর্জিত অর্থের কথা চিন্তা করি, অভিযোগ কানে তুললে শুধু ইডেন কলেজেই যার পরিমাণ এবছরই কমপক্ষে এক কোটি টাকা হবে, তাহলে স্বীকার করে নিতে হবে যে, ইডেন মহিলা কলেজটি দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত হয়ে আছে। অবশ্য ছাত্রলীগ নেত্রীরা ভর্তি করে বা হোস্টেলে সিট দিয়ে টাকা কামানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে অভিযোগ যদি অসত্য হয় তাহলে লাঠি হাতে মারামারি কী জন্য? নেতৃত্বের জন্য? নেতৃত্বের মধু কী? এ অস্বস্তিকর পরিস্থিতির অবসান হওয়া জরুরি। ঐতিহ্যবাহী ইডেন কলেজের সুনাম পুনরুদ্ধার করার জন্য প্রথম পদক্ষেপ নিতে হবে কলেজ কর্তৃপক্ষকে। আমরা আমাদের মেয়েদের পাঠাই তাদের হেফাজতে। ছাত্রলীগ বা অন্য কোনো ছাত্র সংগঠন বা কোনো ছাত্রনেতা বা নেত্রীর হেফাজতে নয়। একইসঙ্গে দায়িত্ব বর্তায় শিক্ষামন্ত্রীর ওপর। এখন শোনা গেল ইডেন মহিলা কলেজের কথা। এর মাত্র দিনকয়েক আগে কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের সূত্র মারফত জানা গেছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে জামায়াতে ইসলামী দলটির ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের দ্বারা পরিচালিত ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নিবাসগুলোর ঘর ও সিট ভাড়া দেয়ার বাণিজ্যের কথা। তার আগে দেশের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বাণিজ্যে বিশেষ সুবিধা আদায় করার জন্য ছাত্রলীগের নেতাদের সহিংসতা ও তাদের মধ্যে কলহের ফলে সংঘর্ষ দেখা গেছে। এক্ষেত্রে শিক্ষাঙ্গনকে এই কলঙ্ক ও আবর্জনা থেকে মুক্ত করার দায়িত্ব শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সরকারকেই নিতে হবে। অবৈধ পথে অর্থ উপার্জনের লোভ ও লালসা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের মধ্যে এত ব্যাপক হয়েছে এবং এমন মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে যে, তার রাশ টেনে ধরতে হলে পুরো আওয়ামী লীগ ও তাদের পুরো সরকারকে মাঠে নামতে হবে আর এটা দৃশ্যমান হতে হবে যে, এই কর্তব্য পালনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তরিক ও সক্রিয়ভাবে তাদের সমর্থন করছেন। এখানে আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জনাব আবদুল জলিলের একটা মন্তব্য মনে পড়ছে। তিনি বলেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগ হ্যামেলিনের বংশীবাদকের দল। যার হাতে সেই জাদুর বাঁশি থাকবে সারা দল তার কথায় চলবে। আগে এ বাঁশি ছিল বঙ্গবন্ধুর হাতে, এখন সেটি আছে তার কন্যা শেখ হাসিনার হাতে।’ কিন্তু আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন এবং সহযোগী সংগঠনের লোকেরা যেভাবে দিকে দিকে স্কুল দখল, কলেজ দখল, বিশ্ববিদ্যালয় দখল, বাড়ি দখল, দোকান দখল, অফিস দখল, ব্যবসা দখল, নদী দখল, পুকুর দখল করছে (একথা বললাম দেশের বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন ও আলোকচিত্রের ভিত্তিতে) সেক্ষেত্রে এদের সবাইকে নিরস্ত না করলে শুধুই ছাত্রলীগ শীর্ষ নেত্রী বা অন্য নেতাদের কথা শুনবে কেন?
আমরা এসব কথা বললে বা লিখলে কেউ কেউ প্রশ্ন করেন, ‘বিএনপির আমলে এসব হয়নি?’ আমাদের উত্তর হচ্ছে, ‘বিএনপির বহু নেতা ও সদস্যের বিরুদ্ধে তো দুর্নীতির মামলা দেয়াই আছে। তাদের বিচার চলুক। আর তারা এখন ক্ষমতায় নেই, তাই তারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সুযোগ নিয়ে যে অত্যাচার ও দুর্নীতি হয়, তাতে অংশ নিতে পারছে না। এখন সেই বিশেষ ক্ষমতার সুযোগ নিয়ে অপরাধ করছে আওয়ামী লীগের নেতা ও সমর্থকরা। আর আমরা এখনকার দিনগুলিতে শান্তিতে বাঁচতে চাই। অতীতে তো সহ্য করেছি।’
তদুপরি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, তার মহাজোট এবং তাদের সরকারকে মনে রাখতে হবে যে, ইডেন মহিলা কলেজে কিশোরীদের বিপথে পরিচালিত করার খবর আমাদের বাংলাদেশের সামাজিক মূল্যবোধে কঠিন আঘাত হেনেছে।
No comments