মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার-ব্যক্তির পাশাপাশি সংগঠনেরও বিচার চাই : শাহরিয়ার কবির
একাত্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ব্যক্তির পাশাপাশি সংগঠনেরও বিচার করার দাবি জানিয়েছেন সংগঠক, লেখক ও সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির। নুরেমবার্গ ট্রাইব্যুনালে বিচারের ইতিহাস টেনে তিনি ট্রাইব্যুনালে বলেন, সেখানে ২১ জন শীর্ষস্থানীয় যুদ্ধাপরাধীর বিচারের পাশাপাশি নাৎসিদের সাতটি সংগঠনের বিচার করা হয়েছিল।
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রথম সাক্ষী হিসেবে গতকাল রবিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ জবানবন্দি দেন শাহরিয়ার কবির। তাঁকে জেরা শুরু করার পর আদালত মুলতবি করা হয়। আগামী ৩০ আগস্ট তাঁকে জেরা করবেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা।
জবানবন্দিতে শাহরিয়ার কবির বলেন, শান্তি কমিটির ওপর জামায়াতে ইসলামীর নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব ছিল না। নিজেদের অধীনে একটি ঘাতক বাহিনী গঠন করার প্রয়োজনে জামায়াতে ইসলামী আলবদর ও রাজাকার বাহিনী গঠন করেছিল। এই দুটির ভেতর আলবদর বাহিনী সম্পূর্ণভাবে গড়ে ওঠে জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতাদের দ্বারা, যে নেতাদের ভেতর আজকের মামলার আসামি আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ অন্যতম।
শাহরিয়ার কবীর বলেন, জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা আবু আলী মওদুদী '১৯৭১ সালে লাহোরে আহমাদিয়া মুসলিম সম্প্রদায়কে অমুসলিম ঘোষণার দাবি জানিয়েছিলেন এবং সহিংস আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন। এর ফলে কয়েক হাজার নিরীহ কাদিয়ানিকে জীবন দিতে হয়েছে। এই ঘটনার পর সামরিক আদালতে মওদুদীর বিচার হয়েছিল। এই গণহত্যার জন্য তাঁকে প্রাণদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। সৌদি আরব ও পূর্ব পাকিস্তানের অন্যান্য দলের নেতাদের অনুরোধে ওই দণ্ড রহিত করা হয়। ধর্মের নামে হত্যা ও নির্যাতনসহ যাবতীয় অপরাধকে বৈধতা দিয়েছেন মওদুদী, যার চূড়ান্ত রূপ আমরা প্রত্যক্ষ করি ১৯৭১ সালের ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধে।'
শাহরিয়ার কবির বলেন, 'আলবদর বাহিনী ছিল গোপন সংগঠন। জামায়াতের যে ঐতিহাসিকরা আলবদরের ইতিহাস লিখেছেন, তাঁরা দলের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কর্মকাণ্ডের বর্ণনা দিলেও নেতৃত্বের পুরো কাঠামো সম্পর্কে কিছু লেখেননি। কিন্তু সেলিম মনছুর খালেদের লেখা থেকে এবং অন্যান্য সূত্র থেকে তথ্যানুযায়ী আমরা এ কথা নির্দ্বিধায় বলতে পারি, ১৯৭১ সালে জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠনের ইসলামী ছাত্রসংঘ কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত বদর বাহিনীতে রূপান্তরিত হয়েছিল। আলবদরের নেতা হিসেবে নিজামী এবং মুজাহিদ কী বলেছেন, তার প্রচুর বিষয় পাওয়া যাবে ১৯৭১ সালে প্রকাশিত জামায়াতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রাম ও অন্যান্য সংবাদপত্রে। এ মুহূর্তে একটি উদাহরণ আমি দিতে পারি। ১৯৭১ সালের ৭ নভেম্বর বদর দিবস পালন উপলক্ষে আলবদরের এক সভায় মুজাহিদ পাকিস্তান এবং ইসলামের দুশমন ও ভারতীয় এজেন্টদের খতম করার শপথ পরিচালনা করেছিলেন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের প্রধান সহযোগী ঘাতক বাহিনী বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকদের দুষ্কৃতকারী, ইসলামের দুশমন, ভারতের এজেন্ট, নমরুদ, জারজ প্রভৃতি বলেছে। বিশেষ করে গোলাম আযম ও নিজামী এমন কথাও বলেছেন, পাকিস্তান হচ্ছে আল্লার ঘর। পাকিস্তানকে হেফাজত করার জন্য জিহাদ করতে হবে।'
শাহরিয়ার কবীর বলেন, "১৯৭১ সালে আলবদর বাহিনীর সবচেয়ে নৃশংস রূপ ছিল সুপরিকল্পিতভাবে বুদ্ধিজীবী হত্যা। ১৯৭১ সালের ১৫ নভেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত তালিকা প্রস্তুত করে আলবদর ঘাতকরা হাজার হাজার বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবীকে হত্যা করে। এই তালিকায় ছিলেন বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ মনীষী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক, লেখক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবীসহ বিভিন্ন স্তরের পেশাজীবীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিয় শিক্ষকের নাম বলতে পারি। মুনির চৌধুরী, আনোয়ার পাশা, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী আমার শিক্ষক ছিলেন। সাংবাদিকদের ভেতর সারা পাকিস্তানে অগ্রগণ্য নাম ছিল শহীদুল্লা কায়সারের। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর আলবদর ঘাতকরা তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছে। শহীদুল্লা কায়সার আমার বড়দা, জেঠাতো ভাই। তিনি শুধু বড়দাই ছিলেন না, আমাদের গোটা পরিবারের অভিভাবক ছিলেন। ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি হানাদারকবলিত ঢাকার মিরপুর মুক্ত করতে গিয়ে মুক্তিবাহিনীর শতাধিক সদস্যের সঙ্গে শহীদ হয়েছিলেন আমার অন্য জেঠাতো ভাই বরেণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা ও লেখক জহির রায়হান। জহির রায়হান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। একাত্তরের গণহত্যার অসামান্য প্রামাণ্যচিত্র 'স্টপ জেনোসাইড'সহ মুক্তিযুদ্ধের ওপর চারটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছিলেন। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর তিনি দেশে ফিরে এসে বুদ্ধিজীবী হত্যার তদন্তের জন্য একটি নাগরিক কমিশন গঠন করেছিলেন। ডিসেম্বরের চতুর্থ সপ্তাহে এই কমিশনের এক সংবাদ সম্মেলনে জহির রায়হান বুদ্ধিজীবী হত্যার জন্য আলবদরকে দায়ী করেছিলেন। জহির রায়হান পাকিস্তানি হানাদারদের এ দেশীয় সহযোগীদের হাতে নিহত হওয়ার প্রামাণ্য বিবরণ রয়েছে সাংবাদিক জুলফিকার আলী মানিকের লেখা 'মিরপুর মুক্তিযুদ্ধের শেষ রণাঙ্গন গ্রন্থে'।"
শাহরিয়ার কবীর আরো বলেন, একাত্তরে গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য আমরা ৪০ বছর ধরে আন্দোলন করছি। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সব রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, পেশাজীবী সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন এবং একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে ১৯৯২ সালের ২৬ মার্চ যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতা গোলাম আযমের প্রতীকী বিচার অনুষ্ঠিত হয়। তৎকালীন সরকারের সব বাধা উপেক্ষা করে সেদিন সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে পাঁচ লাখের বেশি মানুষের সামনে এই গণ-আদালতে প্রতীকী বিচার হয়। তারপর আমরা মাঠপর্যায়ে অনুসন্ধান করি। যুদ্ধাপরাধের তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহের জন্য বরেণ্য কবি সুফিয়া কামালের নেতৃত্বে জাতীয় গণতদন্ত কমিশন গঠন করি। কমিশন মাঠপর্যায়ে অনুসন্ধান করে এবং বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে ১৬ জনের যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার প্রমাণ সংগ্রহ করেছে। সেই ১৬ জনের অন্যতম হচ্ছেন আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ। আমরা ১৯৯২ সাল থেকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ব্যক্তির পাশাপাশি সংগঠনেরও বিচার দাবি করছি।'
জবানবন্দিতে শাহরিয়ার কবির বলেন, শান্তি কমিটির ওপর জামায়াতে ইসলামীর নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব ছিল না। নিজেদের অধীনে একটি ঘাতক বাহিনী গঠন করার প্রয়োজনে জামায়াতে ইসলামী আলবদর ও রাজাকার বাহিনী গঠন করেছিল। এই দুটির ভেতর আলবদর বাহিনী সম্পূর্ণভাবে গড়ে ওঠে জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতাদের দ্বারা, যে নেতাদের ভেতর আজকের মামলার আসামি আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ অন্যতম।
শাহরিয়ার কবীর বলেন, জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা আবু আলী মওদুদী '১৯৭১ সালে লাহোরে আহমাদিয়া মুসলিম সম্প্রদায়কে অমুসলিম ঘোষণার দাবি জানিয়েছিলেন এবং সহিংস আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন। এর ফলে কয়েক হাজার নিরীহ কাদিয়ানিকে জীবন দিতে হয়েছে। এই ঘটনার পর সামরিক আদালতে মওদুদীর বিচার হয়েছিল। এই গণহত্যার জন্য তাঁকে প্রাণদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। সৌদি আরব ও পূর্ব পাকিস্তানের অন্যান্য দলের নেতাদের অনুরোধে ওই দণ্ড রহিত করা হয়। ধর্মের নামে হত্যা ও নির্যাতনসহ যাবতীয় অপরাধকে বৈধতা দিয়েছেন মওদুদী, যার চূড়ান্ত রূপ আমরা প্রত্যক্ষ করি ১৯৭১ সালের ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধে।'
শাহরিয়ার কবির বলেন, 'আলবদর বাহিনী ছিল গোপন সংগঠন। জামায়াতের যে ঐতিহাসিকরা আলবদরের ইতিহাস লিখেছেন, তাঁরা দলের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কর্মকাণ্ডের বর্ণনা দিলেও নেতৃত্বের পুরো কাঠামো সম্পর্কে কিছু লেখেননি। কিন্তু সেলিম মনছুর খালেদের লেখা থেকে এবং অন্যান্য সূত্র থেকে তথ্যানুযায়ী আমরা এ কথা নির্দ্বিধায় বলতে পারি, ১৯৭১ সালে জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠনের ইসলামী ছাত্রসংঘ কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত বদর বাহিনীতে রূপান্তরিত হয়েছিল। আলবদরের নেতা হিসেবে নিজামী এবং মুজাহিদ কী বলেছেন, তার প্রচুর বিষয় পাওয়া যাবে ১৯৭১ সালে প্রকাশিত জামায়াতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রাম ও অন্যান্য সংবাদপত্রে। এ মুহূর্তে একটি উদাহরণ আমি দিতে পারি। ১৯৭১ সালের ৭ নভেম্বর বদর দিবস পালন উপলক্ষে আলবদরের এক সভায় মুজাহিদ পাকিস্তান এবং ইসলামের দুশমন ও ভারতীয় এজেন্টদের খতম করার শপথ পরিচালনা করেছিলেন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের প্রধান সহযোগী ঘাতক বাহিনী বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকদের দুষ্কৃতকারী, ইসলামের দুশমন, ভারতের এজেন্ট, নমরুদ, জারজ প্রভৃতি বলেছে। বিশেষ করে গোলাম আযম ও নিজামী এমন কথাও বলেছেন, পাকিস্তান হচ্ছে আল্লার ঘর। পাকিস্তানকে হেফাজত করার জন্য জিহাদ করতে হবে।'
শাহরিয়ার কবীর বলেন, "১৯৭১ সালে আলবদর বাহিনীর সবচেয়ে নৃশংস রূপ ছিল সুপরিকল্পিতভাবে বুদ্ধিজীবী হত্যা। ১৯৭১ সালের ১৫ নভেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত তালিকা প্রস্তুত করে আলবদর ঘাতকরা হাজার হাজার বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবীকে হত্যা করে। এই তালিকায় ছিলেন বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ মনীষী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক, লেখক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবীসহ বিভিন্ন স্তরের পেশাজীবীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিয় শিক্ষকের নাম বলতে পারি। মুনির চৌধুরী, আনোয়ার পাশা, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী আমার শিক্ষক ছিলেন। সাংবাদিকদের ভেতর সারা পাকিস্তানে অগ্রগণ্য নাম ছিল শহীদুল্লা কায়সারের। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর আলবদর ঘাতকরা তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছে। শহীদুল্লা কায়সার আমার বড়দা, জেঠাতো ভাই। তিনি শুধু বড়দাই ছিলেন না, আমাদের গোটা পরিবারের অভিভাবক ছিলেন। ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি হানাদারকবলিত ঢাকার মিরপুর মুক্ত করতে গিয়ে মুক্তিবাহিনীর শতাধিক সদস্যের সঙ্গে শহীদ হয়েছিলেন আমার অন্য জেঠাতো ভাই বরেণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা ও লেখক জহির রায়হান। জহির রায়হান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। একাত্তরের গণহত্যার অসামান্য প্রামাণ্যচিত্র 'স্টপ জেনোসাইড'সহ মুক্তিযুদ্ধের ওপর চারটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছিলেন। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর তিনি দেশে ফিরে এসে বুদ্ধিজীবী হত্যার তদন্তের জন্য একটি নাগরিক কমিশন গঠন করেছিলেন। ডিসেম্বরের চতুর্থ সপ্তাহে এই কমিশনের এক সংবাদ সম্মেলনে জহির রায়হান বুদ্ধিজীবী হত্যার জন্য আলবদরকে দায়ী করেছিলেন। জহির রায়হান পাকিস্তানি হানাদারদের এ দেশীয় সহযোগীদের হাতে নিহত হওয়ার প্রামাণ্য বিবরণ রয়েছে সাংবাদিক জুলফিকার আলী মানিকের লেখা 'মিরপুর মুক্তিযুদ্ধের শেষ রণাঙ্গন গ্রন্থে'।"
শাহরিয়ার কবীর আরো বলেন, একাত্তরে গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য আমরা ৪০ বছর ধরে আন্দোলন করছি। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সব রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, পেশাজীবী সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন এবং একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে ১৯৯২ সালের ২৬ মার্চ যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতা গোলাম আযমের প্রতীকী বিচার অনুষ্ঠিত হয়। তৎকালীন সরকারের সব বাধা উপেক্ষা করে সেদিন সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে পাঁচ লাখের বেশি মানুষের সামনে এই গণ-আদালতে প্রতীকী বিচার হয়। তারপর আমরা মাঠপর্যায়ে অনুসন্ধান করি। যুদ্ধাপরাধের তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহের জন্য বরেণ্য কবি সুফিয়া কামালের নেতৃত্বে জাতীয় গণতদন্ত কমিশন গঠন করি। কমিশন মাঠপর্যায়ে অনুসন্ধান করে এবং বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে ১৬ জনের যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার প্রমাণ সংগ্রহ করেছে। সেই ১৬ জনের অন্যতম হচ্ছেন আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ। আমরা ১৯৯২ সাল থেকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ব্যক্তির পাশাপাশি সংগঠনেরও বিচার দাবি করছি।'
No comments