তুমি রবে নীরবে...
যার হাত ধরে বাংলাদেশের সিনেমা সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক পরিচিতি পেয়েছেন তিনি চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ। গত বছর ১৩ আগস্ট মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকা ফেরার পথে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। আজন্ম তিনি ছিলেন সমাজ ও রাজনীতিসচেতন এক চলচ্চিত্রকার।
তার সিনেমাতে সব সময়েই উঠে এসেছিল বাংলার সাধারণ মানুষের গল্প। তারেক মাসুদ জন্মগ্রহণ করেছিলেন ৬ ডিসেম্বর, ১৯৫৬ সালে ফরিদপুরের ভাঙ্গার নূরপুর গ্রামে। তারেক মাসুদ ছাত্রজীবনের প্রথম দিকে কিছুকাল মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময়ে তার এই মাদ্রাসা শিক্ষার সমাপ্তি ঘটে। যুদ্ধ শেষে তিনি ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে ¯œাতক এবং ¯œাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন।
তারেক মাসুদ তার চলচ্চিত্র নির্মাতার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানকে নিয়ে তথ্য চিত্র ‘আদমসুরত’ নির্মাণের মধ্য দিয়ে। এই তথ্যচিত্র নির্মাণ শেষ হয় ১৯৮৯ সালে। তবে নির্মাতা তারেক মাসুদকে মানুষ অনেকদিন মনে রাখবে মুক্তিযুদ্ধের উপরে নির্মিত তার তথ্যচিত্র ‘মাটির গান’ এর কারণে। যেখানে ক্যামেরা একদল গানের শিল্পীকে অসুসরণ করে। যারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে শরণার্থী শিবিরে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের শিবিরে ঘুরে ঘুরে তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করে। এই তথ্যচিত্রটি মূলত আমেরিকান চিত্রগ্রাহক লেয়ার লেভিনের তোলা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের। বহু বছর পর তারেক লেভিনের কাছ থেকে এটি সংগ্রহ করেন। তারেক মাসুদের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘মাটির ময়না’। যেটি কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রথম দেখানো হয়। এই ছবির গল্প তারেক মাসুদ তার নিজের জীবন থেকেই অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। এই ছবির মধ্য দিয়ে তিনি ২০০২ সালে জিতে কান চলচ্চিত্র উৎসবের মর্যাদাপূর্ণ ‘আন্তর্জাতিক সমালোচক পুরস্কার’। শুধু তাই নয় এই ছবি হ”েছ প্রথম কোন বাংলাদেশি ছবি যা বাংলাদেশ থেকে অস্কার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য পাঠানো হয় ।
এরপর তিনি নির্মাণ করেন সিনেমা ‘অন্তর্যাত্রা’। এই ছবিতে তিনি দুই প্রজন্মের বাংলাদেশীদের শিকড়ের টানে ঘরে ফেরার কথা বলতে চেয়েছেন। তারেক মাসুদ সাম্প্রতিক তাঁর শেষ সিনেমা নির্মাণ করেছিলেন ‘রানওয়ে’। এই ছবিতে তারেক মাসুদ আমাদের বর্তমান সমাজ বাস্তবতার কথাই বলতে চেয়েছেন। যেখানে ক্রমাগত জঙ্গীবাদের উত্থান ঘটছে এবং এর থাবায় বিপর্যস্ত হচ্ছে গোটা সমাজ। এই ছবিতে সিনেমাটোগ্রাফার হিসেবে ছিলেন বরেণ্য চিত্রগ্রাহক মিশুক মুনীর। সিনেমাটিতে অসাধারণ দৃশ্যকল্প তুলে এনেছিলেন তিনি।
তারেক মাসুদ দীর্ঘদিন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তাঁর পরবর্তী ছবি ‘কাগজের ফুল’ নির্মাণের জন্য। এজন্য দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু ১৩ আগস্ট ২০১১ তে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঘিওরে একটি বিপজ্জনক পয়েন্টে সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি হারিয়ে যান না ফেরার দেশে। মূলত কাগজের ফুল ছবির লোকেশন দেখে মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকায় ফিরছিলেন তিনি। তাঁর সাথে স্ত্রী ক্যাথেরিন মাসুদ আহত হলেও ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান তিনি। এই ছবিতে তারেক মাসুদ তুলে আনতে চেয়েছিলেন ১৯৪৭ সালের দেশভাগ এবং সমকালীন সমাজ বাস্তবতা। কিন্তু ঘাতক বাস তাকে সে সুযোগ দিল কই? মেধাবী নির্মাতা তারেক মাসুদের সাথে আমরা আরো হারাই আরেক মেধাবী চিত্রগ্রাহক মিশুক মুনীরকে। তারেক মাসুদের মতো গুণী নির্মাতাকে হারানো নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের সিনেমার জন্য এক বড় আঘাত। তারেক মাসুদের প্রতিটি সিনেমায় উঠে এসেছিল শিকড় আর ইতিহাস সন্ধানের এক অনন্য প্রচেষ্টা। তারেক মাসুদ বেঁচে থাকবেন তাঁর নির্মিত সিনেমায় আর আগামী দিনের চলচ্চিত্র নির্মাতাদের অনুপ্রেরণার উৎসস্থল হয়ে।
আনন্দকণ্ঠ ডেস্ক
তারেক মাসুদ তার চলচ্চিত্র নির্মাতার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানকে নিয়ে তথ্য চিত্র ‘আদমসুরত’ নির্মাণের মধ্য দিয়ে। এই তথ্যচিত্র নির্মাণ শেষ হয় ১৯৮৯ সালে। তবে নির্মাতা তারেক মাসুদকে মানুষ অনেকদিন মনে রাখবে মুক্তিযুদ্ধের উপরে নির্মিত তার তথ্যচিত্র ‘মাটির গান’ এর কারণে। যেখানে ক্যামেরা একদল গানের শিল্পীকে অসুসরণ করে। যারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে শরণার্থী শিবিরে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের শিবিরে ঘুরে ঘুরে তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করে। এই তথ্যচিত্রটি মূলত আমেরিকান চিত্রগ্রাহক লেয়ার লেভিনের তোলা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের। বহু বছর পর তারেক লেভিনের কাছ থেকে এটি সংগ্রহ করেন। তারেক মাসুদের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘মাটির ময়না’। যেটি কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রথম দেখানো হয়। এই ছবির গল্প তারেক মাসুদ তার নিজের জীবন থেকেই অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। এই ছবির মধ্য দিয়ে তিনি ২০০২ সালে জিতে কান চলচ্চিত্র উৎসবের মর্যাদাপূর্ণ ‘আন্তর্জাতিক সমালোচক পুরস্কার’। শুধু তাই নয় এই ছবি হ”েছ প্রথম কোন বাংলাদেশি ছবি যা বাংলাদেশ থেকে অস্কার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য পাঠানো হয় ।
এরপর তিনি নির্মাণ করেন সিনেমা ‘অন্তর্যাত্রা’। এই ছবিতে তিনি দুই প্রজন্মের বাংলাদেশীদের শিকড়ের টানে ঘরে ফেরার কথা বলতে চেয়েছেন। তারেক মাসুদ সাম্প্রতিক তাঁর শেষ সিনেমা নির্মাণ করেছিলেন ‘রানওয়ে’। এই ছবিতে তারেক মাসুদ আমাদের বর্তমান সমাজ বাস্তবতার কথাই বলতে চেয়েছেন। যেখানে ক্রমাগত জঙ্গীবাদের উত্থান ঘটছে এবং এর থাবায় বিপর্যস্ত হচ্ছে গোটা সমাজ। এই ছবিতে সিনেমাটোগ্রাফার হিসেবে ছিলেন বরেণ্য চিত্রগ্রাহক মিশুক মুনীর। সিনেমাটিতে অসাধারণ দৃশ্যকল্প তুলে এনেছিলেন তিনি।
তারেক মাসুদ দীর্ঘদিন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তাঁর পরবর্তী ছবি ‘কাগজের ফুল’ নির্মাণের জন্য। এজন্য দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু ১৩ আগস্ট ২০১১ তে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঘিওরে একটি বিপজ্জনক পয়েন্টে সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি হারিয়ে যান না ফেরার দেশে। মূলত কাগজের ফুল ছবির লোকেশন দেখে মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকায় ফিরছিলেন তিনি। তাঁর সাথে স্ত্রী ক্যাথেরিন মাসুদ আহত হলেও ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান তিনি। এই ছবিতে তারেক মাসুদ তুলে আনতে চেয়েছিলেন ১৯৪৭ সালের দেশভাগ এবং সমকালীন সমাজ বাস্তবতা। কিন্তু ঘাতক বাস তাকে সে সুযোগ দিল কই? মেধাবী নির্মাতা তারেক মাসুদের সাথে আমরা আরো হারাই আরেক মেধাবী চিত্রগ্রাহক মিশুক মুনীরকে। তারেক মাসুদের মতো গুণী নির্মাতাকে হারানো নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের সিনেমার জন্য এক বড় আঘাত। তারেক মাসুদের প্রতিটি সিনেমায় উঠে এসেছিল শিকড় আর ইতিহাস সন্ধানের এক অনন্য প্রচেষ্টা। তারেক মাসুদ বেঁচে থাকবেন তাঁর নির্মিত সিনেমায় আর আগামী দিনের চলচ্চিত্র নির্মাতাদের অনুপ্রেরণার উৎসস্থল হয়ে।
আনন্দকণ্ঠ ডেস্ক
No comments