৭১'র 'যুদ্ধাপরাধী'র বিরুদ্ধে কানাডায় পরোয়ানা জারি
যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত প্রবাসী এক বাংলাদেশিকে কানাডার বর্ডার সার্ভিস এজেন্সি (সিবিএসএ) তাদের চিহ্নিত অপরাধীদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। ওই ব্যক্তির নাম মো. আলী ইমাম (৫৯)। কানাডায় বসবাসরত বিদেশি নাগরিকদের মধ্যে পাঁচজনকে গত বৃহস্পতিবার 'ওয়ান্টেড' তালিকাভুক্ত করে সংস্থাটি।
বাকি চারজন জ্যামাইকা, ইকুয়েডর ও আজারবাইজানের নাগরিক। তাঁরাও বিভিন্ন অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত।
ন্যাশনাল পোস্ট নামের একটি বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, অভিযুক্ত আলী ইমাম দেশটির মন্ট্রিয়েল শহরে বসবাস করতেন। বর্ডার সার্ভিসের তালিকাভুক্ত হওয়ার পর থেকে তিনি আত্মগোপন করেছেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ করার বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে কানাডাজুড়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। তবে তাঁর অপরাধের বিশদ বিবরণ প্রকাশ করা হয়নি। পুলিশ তাঁকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। ধরা পড়লে তাঁকে কানাডা থেকে বের করে দেওয়া হবে। এ ছাড়া অন্য শাস্তিও হতে পারে।
তালিকাভুক্ত অন্য চার অভিযুক্ত হচ্ছেন জ্যামাইকার নাগরিক ডারব্যান্ট ডেভ জ্যাক ও ডোনোভান সিনক্লেয়ার, ইকুয়েডরের মার্কোস ইয়ামিল ডি মোলিনা ও আজারবাইজানের ফরিদ ইউসুপোভ। তাঁরা বিভিন্ন ধরনের অপরাধ করে দেশ থেকে পালিয়ে কানাডায় এসে নির্বাসিত জীবন যাপন করছিলেন।
সিবিএসএ গত জুলাই মাসে তাদের ওয়েবসাইটে চিহ্নিত অপরাধীদের যে তালিকা প্রকাশ করে, তাতে মো. আলী ইমামসহ বেশ কিছু বিদেশির নাম অন্তর্ভুক্ত হয়। এই তালিকা অনুসরণ করে দেশটির ফেডারেল ইমিগ্রেশন এনফোর্সমেন্ট এজেন্সি ২৭ জন বিদেশিকে চিহ্নিত করে। তাঁদের মধ্যে ১৯ জনকে এরই মধ্যে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। আলী ইমামসহ অন্যদের সে দেশে ঘোষিত ঠিকানায় খুঁজে না পাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার নতুন করে ওই পাঁচজনের বিরুদ্ধে কানাডাজুড়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
কানাডা বর্ডার সার্ভিস এজেন্সির ওয়েবসাইটে আলী ইমাম সম্পর্কে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, তাতে তাঁর নাম মো. আলী ইমাম। এ ছাড়া তিনি সে দেশে ইমাম এ হোসাইন, আলী মোহাম্মদ ইমাম, ইমাম আলী ইত্যাদি নামেও পরিচিত। বসবাস করতেন কুইবেক অঙ্গরাজ্যের মন্ট্রিয়েল শহরে। তাঁকে শনাক্ত করার বিশেষ কোনো চিহ্ন বা তথ্য কানাডা পুলিশের কাছে নেই। তাঁর সম্পর্কে মন্তব্য করা হয়েছে, 'এই ব্যক্তিকে কানাডা থেকে বের করে দেওয়ার জন্য দেশজুড়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হলো। এটা প্রতীয়মান হয়েছে যে তিনি মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধ অপরাধ অথবা আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে মানবতা ও আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করেছেন। তাই তিনি কানাডায় আর গ্রহণীয় নন।'
তবে সমালোচকরা কানাডা সরকারের এই উদ্যোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অপরাধের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির লোক দেখানো কড়া পদক্ষেপ হিসেবে সমালোচনা করেছেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও এতে আপত্তি জানিয়ে বলেছে, যুদ্ধাপরাধী হিসেবে কাউকে শনাক্ত করা হলে তাঁকে দেশে ফেরত না পাঠিয়ে কানাডাতেই বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।
No comments