গাড্ডায় পড়েছে বাংলাদেশ রেলওয়েঃ অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন
রাষ্ট্রীয় দূরদৃষ্টির অভাব এবং বিভিন্ন দাতা সংস্থার পরামর্শে দিন দিনই সঙ্কুচিত হয়ে পড়ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। বেদখল হয়ে যাচ্ছে রেলের হাজার হাজার একর জমি। এরই মধ্যে লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় দু’হাজার কোটি টাকা। অব্যবস্থাপনার ফলে রেলওয়েতে কাগজে-কলমে যেসব প্রকল্প রয়েছে চুক্তি অনুযায়ী তার কাজ শুরু হয়নি। এদিকে লোকবল সঙ্কটে একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে স্টেশন। এভাবেই একটি লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে যাচ্ছে দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রীয় সেবামূলক গণপরিবহন সংস্থা বাংলাদেশ রেলওয়ে।
১৯৪৭ সালে দেশে ৩ হাজার কিলোমিটার রেলপথ ছিল। তখন পর্যন্ত রেলই ছিল দেশের সবচেয়ে লাগসই গণপরিবহন। রেলে চড়ে যাত্রীরা যেতেন দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। স্থলপথে মালামাল আনা-নেয়ার ক্ষেত্রেও রেলের বিকল্প ছিল না। কিন্তু যথেষ্ট উপযোগিতা থাকা সত্ত্বেও তখন থেকেই রেললাইন পরিত্যক্ত হতে থাকে। বর্তমানে রেললাইনের মোট পরিমাণ ২ হাজার ৭শ’ কিলোমিটার। এদিকে সেই আমলের ৪শ’ কিলোমিটার পাকা সড়ক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার কিলোমিটারে। এভাবে রেলপথও যদি বৃদ্ধি পেত তাহলে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে শুধু সময়ের অপচয়ই কমতো না, বিপুল পরিমাণ জ্বালানিরও সাশ্রয় হতো। এছাড়া নিত্যনতুন বিলাসবহুল বাস-গাড়ি আমদানি খাতে যে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয়, তার পরিমাণও কমতো। কিন্তু পাকিস্তান আমল থেকে শুরু করে বাংলাদেশের প্রায় চার দশকের মধ্যে রেলপথের উন্নয়ন তো হয়ইনি, বরং ক্রমশ তা নানা মুসিবতে লোকসানি খাতে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে পরিবহন ব্যবস্থার বহুমুখী সঙ্কট যতই বাড়ছে ততই রেলওয়ের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি হচ্ছে।
রেল-সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়, বিশ্বব্যাংক, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থার পরামর্শ, রাষ্ট্রীয় অদূরদর্শিতা, অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা, সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দিন দিন একটি ফতুর সংস্থায় পরিণত হচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। গত এক দশকে দুই হাজার কোটি টাকার লোকসান হয়েছে এ খাতে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ রলওয়ের মোট জমির পরিমাণ ৬৩ হাজার ৩৩২ একর। এর মধ্যে বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অবৈধ দখলে রয়েছে প্রায় ২০ হাজার একর জমি। এদিকে সংস্কারের অভাবে বিভিন্ন রেললাইন পড়ে আছে অব্যবহৃত অবস্থায়। বিভিন্ন ডিভিশনে পর্যাপ্ত কোচ নেই। কোচ ও ইঞ্জিনের অনেকগুলোই মেয়াদোত্তীর্ণ। রেলওয়ের পূর্ব ও পশ্চিম জোনে বর্তমানে যে কোচ রয়েছে তার মাত্র ৭০ ভাগ ব্যবহরোপযোগী। ২৮৬টি ইঞ্জিনের মধ্যে প্রতি মাসেই বহু ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ছে। পশ্চিমাঞ্চলের জনৈক রেল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এখনও রেলে ব্যবহৃত হচ্ছে ৫০/৫৫ বছরের পুরনো ইঞ্জিন।
প্রসঙ্গত, ষাটের দশকে রেলের যাত্রী পরিবহনের হার ছিল ৫০ থেকে ৫২ শতাংশ। এখন তা নেমে এসেছে ১২ শতাংশে। এ থেকে সহজেই আঁচ করা যায় রেলওয়ের অবস্থা অনেকটা বলদটানা গাড়ির পর্যায়ে চলে এসেছে। তারপরেও রেলওয়ে যাত্রী পরিবহনের সুবিধা বাড়ানোর জন্য ইঞ্জিন ও কোচ সংগ্রহের ব্যবস্থা না করে ইন্টার-লকিং সিগন্যাল ব্যবস্থা প্রবর্তনের কাজ করছে রেল। বর্তমানে কোচ সংস্কার, বিভিন্ন লাইন সংস্কার বাবদ ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকার যে ৩৪টি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে, তার কয়েকটির মেয়াদ প্রায় শেষ পর্যায়ে চলে এলেও অগ্রগতি শূন্য। জানা গেছে, বর্তমানে পূর্বাঞ্চলে ৩৩টি স্টেশন বন্ধ রয়েছে; পশ্চিমাঞ্চলে বন্ধ ৭৩টি। ঝুঁকি এড়াতে ট্রেনের গতি কমিয়ে রাখতে হচ্ছে। –লে বিলম্বিত হচ্ছে সার্বিক ট্রেন পরিষেবা। এ অবস্থায় যাত্রীদের মনে পড়ছে সেই পুরনো প্রবাদ— ‘নয়টার ট্রেন কয়টায় ছাড়বে?’
সার্বিক বিবেচনায় বর্তমানে এই গুরুত্বপূর্ণ গণপরিবহন খাতটি আক্ষরিক অর্থেই গাড্ডায় পড়েছে। সরকার তথা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রেলওয়ের সংস্কারে পরিকল্পনা প্রণয়নে যতটা এগিয়ে, বাস্তবায়নে ঠিক ততটাই পিছিয়ে। এই পিছিয়ে যাওয়া মানে দেশের সার্বিক উন্নয়নকেই কমবেশি পিছিয়ে দেয়া। এ অবস্থায় রেলের বেহাত হওয়া জমি উদ্ধার, রেললাইন সংস্কার, স্টেণন বাড়ানোসহ হাতে নেয়া প্রকল্পগুলো যথাসময়ে বাস্তবায়ন জরুরি। দাতা সংস্থার পরামর্শে নয়, দেশীয় বাস্তবতাকে সামনে রেখেই এই বৃহত্তম রাষ্ট্রীয় সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ও গণপরিবহন সংস্থাকে লোকসানি অবস্থা থেকে টেনে তুলে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে হবে।
রেল-সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়, বিশ্বব্যাংক, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থার পরামর্শ, রাষ্ট্রীয় অদূরদর্শিতা, অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা, সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দিন দিন একটি ফতুর সংস্থায় পরিণত হচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। গত এক দশকে দুই হাজার কোটি টাকার লোকসান হয়েছে এ খাতে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ রলওয়ের মোট জমির পরিমাণ ৬৩ হাজার ৩৩২ একর। এর মধ্যে বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অবৈধ দখলে রয়েছে প্রায় ২০ হাজার একর জমি। এদিকে সংস্কারের অভাবে বিভিন্ন রেললাইন পড়ে আছে অব্যবহৃত অবস্থায়। বিভিন্ন ডিভিশনে পর্যাপ্ত কোচ নেই। কোচ ও ইঞ্জিনের অনেকগুলোই মেয়াদোত্তীর্ণ। রেলওয়ের পূর্ব ও পশ্চিম জোনে বর্তমানে যে কোচ রয়েছে তার মাত্র ৭০ ভাগ ব্যবহরোপযোগী। ২৮৬টি ইঞ্জিনের মধ্যে প্রতি মাসেই বহু ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ছে। পশ্চিমাঞ্চলের জনৈক রেল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এখনও রেলে ব্যবহৃত হচ্ছে ৫০/৫৫ বছরের পুরনো ইঞ্জিন।
প্রসঙ্গত, ষাটের দশকে রেলের যাত্রী পরিবহনের হার ছিল ৫০ থেকে ৫২ শতাংশ। এখন তা নেমে এসেছে ১২ শতাংশে। এ থেকে সহজেই আঁচ করা যায় রেলওয়ের অবস্থা অনেকটা বলদটানা গাড়ির পর্যায়ে চলে এসেছে। তারপরেও রেলওয়ে যাত্রী পরিবহনের সুবিধা বাড়ানোর জন্য ইঞ্জিন ও কোচ সংগ্রহের ব্যবস্থা না করে ইন্টার-লকিং সিগন্যাল ব্যবস্থা প্রবর্তনের কাজ করছে রেল। বর্তমানে কোচ সংস্কার, বিভিন্ন লাইন সংস্কার বাবদ ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকার যে ৩৪টি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে, তার কয়েকটির মেয়াদ প্রায় শেষ পর্যায়ে চলে এলেও অগ্রগতি শূন্য। জানা গেছে, বর্তমানে পূর্বাঞ্চলে ৩৩টি স্টেশন বন্ধ রয়েছে; পশ্চিমাঞ্চলে বন্ধ ৭৩টি। ঝুঁকি এড়াতে ট্রেনের গতি কমিয়ে রাখতে হচ্ছে। –লে বিলম্বিত হচ্ছে সার্বিক ট্রেন পরিষেবা। এ অবস্থায় যাত্রীদের মনে পড়ছে সেই পুরনো প্রবাদ— ‘নয়টার ট্রেন কয়টায় ছাড়বে?’
সার্বিক বিবেচনায় বর্তমানে এই গুরুত্বপূর্ণ গণপরিবহন খাতটি আক্ষরিক অর্থেই গাড্ডায় পড়েছে। সরকার তথা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রেলওয়ের সংস্কারে পরিকল্পনা প্রণয়নে যতটা এগিয়ে, বাস্তবায়নে ঠিক ততটাই পিছিয়ে। এই পিছিয়ে যাওয়া মানে দেশের সার্বিক উন্নয়নকেই কমবেশি পিছিয়ে দেয়া। এ অবস্থায় রেলের বেহাত হওয়া জমি উদ্ধার, রেললাইন সংস্কার, স্টেণন বাড়ানোসহ হাতে নেয়া প্রকল্পগুলো যথাসময়ে বাস্তবায়ন জরুরি। দাতা সংস্থার পরামর্শে নয়, দেশীয় বাস্তবতাকে সামনে রেখেই এই বৃহত্তম রাষ্ট্রীয় সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ও গণপরিবহন সংস্থাকে লোকসানি অবস্থা থেকে টেনে তুলে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে হবে।
No comments