চাই বিদ্যুতের নিশ্চয়তা by হারুনুর রশিদ শাহীন
স্বাধীনতার চার দশক পার হলেও আমরা উন্নয়নশীলতার গণ্ডি থেকে বের হতে পারিনি। আসেনি আশানুরূপ অগ্রগতি। এর পেছনে প্রতিবন্ধক হয়ে আছে আমাদের আলস্য, নৈতিকতার অভাব, কাজের চেয়ে বেশি কথা বলার প্রবণতা এবং আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে অগ্রসর না হওয়া। ফলে আমাদের সবকিছুই হচ্ছে মন্থরগতিতে।
সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে বলা হয়, দেশের বর্তমান তরুণ প্রজন্মের বড় শক্তি প্রযুক্তি। এ প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করে দেশকে বদলে দিতে পারে তারা। এমন বক্তব্য আমাদের সবসময় আশান্বিতই করে।
প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপান্তর করার ঘোষণা দেওয়ার ফলে গত কয়েক বছরে দেশে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির বিস্তার ঘটেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বলতে আমরা বুঝি, সারা দেশের কর্মকাণ্ডকে আধুনিক কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সিস্টেমের মাধ্যমে প্রযুক্তির ব্যবহার দিয়ে গতিশীল করে তোলা। সরকারি অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় সব জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়ে দেশের কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আনা। কিন্তু আমরা যখন দেখি বিদ্যুৎ না থাকায় রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা পরিষদের অফিস সহকারীর পুরনো একটি টাইপরাইটারে খটখট আওয়াজ তুলে লেখা, তখন তা আমাদের আশাহতই করে। কম্পিউটার ছেড়ে কেন এ টাইপরাইটার জানতে চাইলে বলেন, কম্পিউটারে দাফতরিক কাজ চালিয়ে আসছিলাম। লোডশেডিংয়ের কারণে কাজ করতে পারছি না, তাই জরুরি প্রয়োজনে একটি চিঠি লিখতে গিয়ে মেশিনটি বের করতে হলো।
এ রকম অবস্থা এখন আমরা হরমামেশাই দেখি। লোডশেডিংয়ের জবাবদিহিতার কারণে সম্প্রতি বিদ্যুৎ সচিব সংসদীর কমিটির তোপের মুখে পড়েন। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে কমিটির সদস্যদের প্রশ্নবাণে তিনি জর্জরিত হন। বৈঠকে বলা হয়, নতুন ৫০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৩ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে কিন্তু তারপরও সারাদেশে ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের পর জনগণ এর সুফল পাচ্ছে না। তাছাড়া পিডিবির হিসাব অনুযায়ী এখন চাহিদা ও উৎপাদনের মধ্যে ঘাটতি ৮০০ মেগাওয়াটের মতো। সারাদেশে এই ঘাটতি ভাগ করে দিলে কোনো জায়গায় প্রতি ঘণ্টায় লোডশেডিং হওয়ার কথা নয়। অথচ এখন গ্রামাঞ্চলে সেচের ভর মৌসুম চলছে। অনেক জায়গায় সেচ দিতে না পারায় খেতের ধান পুড়ে যাচ্ছে। সামনে শুরু হচ্ছে বিভিন্ন পরীক্ষা। বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিশ্চিত করতে না পারলে পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনা মারাত্মক ব্যাহত হবে। ফলে কাঙ্ক্ষিত জাতি গঠনে আমরা অনেক পিছিয়ে যাব।
আবার সম্প্রতি সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিদ্যুতের বাড়তি দাম। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ৫ দফা বিদ্যুতের দাম বাড়ল। এভাবে দফায় দফায় দাম বাড়ার ফলে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়বে। ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে সবকিছুতে।
আমরা সবাই জানি, আধুনিক ও উন্নত জীবনের ক্ষেত্রে বিদ্যুতের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। বিদ্যুৎই আজ বিশ্বকে জয় করেছে। হাজার হাজার জনশক্তি যে কাজ করতে পারে না বিদ্যুৎ মারফত সে কাজ সুইচ টিপে নিমেষেই করা যায়। মানুষের জীবনকে সর্বাঙ্গ সুন্দর করতে বিদ্যুৎ অভূতপূর্ব অবদান রাখছে। বিদ্যুতের সরবরাহ নিশ্চিত করেই জীবনযাপন হয়ে ওঠে স্বাচ্ছন্দ্যময়। তাই এদিকটিতে আমাদের সবচেয়ে নজর দিতে হবে বেশি।
এ ছাড়া একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তথ্যপ্রযুক্তি। এ প্রযুক্তি মানুষের ভাষা ও জীবনধারা বদলে দিচ্ছে। বদলে দিচ্ছে পৃথিবী ও মানব সভ্যতার চেহারা। পাল্টে যাওয়ার গতি এত দ্রুত যে, আগামী ৫০ বছরে পৃথিবীর চেহারা কেমন হবে তা এখনও মানুষের কল্পনার বাইরে। বিশ শতকের শেষ দিকে এসে তথ্যপ্রযুক্তি আমূল পাল্টে দিয়েছে মানুষের জীবনধারা। ফলে পৃথিবী এসে গেছে হাতের মুঠোয়। স্বল্পতম সময়ে অনেক দূরে বসেও পরামর্শ নেওয়া যায়। আর এসবের মূলে রয়েছে বিদ্যুৎ শক্তির ব্যবহারের নিশ্চয়তা। আমরাও এটি নিশ্চিত করে অনায়াসে এগিয়ে যেতে চাই স্বনির্ভর দেশের তালিকায়। আর এটির নিশ্চয়তার ব্যাপারটি সরকারকেই করতে হবে।
harunoor_rashid@yahoo.com
প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপান্তর করার ঘোষণা দেওয়ার ফলে গত কয়েক বছরে দেশে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির বিস্তার ঘটেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বলতে আমরা বুঝি, সারা দেশের কর্মকাণ্ডকে আধুনিক কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সিস্টেমের মাধ্যমে প্রযুক্তির ব্যবহার দিয়ে গতিশীল করে তোলা। সরকারি অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় সব জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়ে দেশের কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আনা। কিন্তু আমরা যখন দেখি বিদ্যুৎ না থাকায় রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা পরিষদের অফিস সহকারীর পুরনো একটি টাইপরাইটারে খটখট আওয়াজ তুলে লেখা, তখন তা আমাদের আশাহতই করে। কম্পিউটার ছেড়ে কেন এ টাইপরাইটার জানতে চাইলে বলেন, কম্পিউটারে দাফতরিক কাজ চালিয়ে আসছিলাম। লোডশেডিংয়ের কারণে কাজ করতে পারছি না, তাই জরুরি প্রয়োজনে একটি চিঠি লিখতে গিয়ে মেশিনটি বের করতে হলো।
এ রকম অবস্থা এখন আমরা হরমামেশাই দেখি। লোডশেডিংয়ের জবাবদিহিতার কারণে সম্প্রতি বিদ্যুৎ সচিব সংসদীর কমিটির তোপের মুখে পড়েন। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে কমিটির সদস্যদের প্রশ্নবাণে তিনি জর্জরিত হন। বৈঠকে বলা হয়, নতুন ৫০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৩ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে কিন্তু তারপরও সারাদেশে ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের পর জনগণ এর সুফল পাচ্ছে না। তাছাড়া পিডিবির হিসাব অনুযায়ী এখন চাহিদা ও উৎপাদনের মধ্যে ঘাটতি ৮০০ মেগাওয়াটের মতো। সারাদেশে এই ঘাটতি ভাগ করে দিলে কোনো জায়গায় প্রতি ঘণ্টায় লোডশেডিং হওয়ার কথা নয়। অথচ এখন গ্রামাঞ্চলে সেচের ভর মৌসুম চলছে। অনেক জায়গায় সেচ দিতে না পারায় খেতের ধান পুড়ে যাচ্ছে। সামনে শুরু হচ্ছে বিভিন্ন পরীক্ষা। বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিশ্চিত করতে না পারলে পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনা মারাত্মক ব্যাহত হবে। ফলে কাঙ্ক্ষিত জাতি গঠনে আমরা অনেক পিছিয়ে যাব।
আবার সম্প্রতি সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিদ্যুতের বাড়তি দাম। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ৫ দফা বিদ্যুতের দাম বাড়ল। এভাবে দফায় দফায় দাম বাড়ার ফলে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়বে। ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে সবকিছুতে।
আমরা সবাই জানি, আধুনিক ও উন্নত জীবনের ক্ষেত্রে বিদ্যুতের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। বিদ্যুৎই আজ বিশ্বকে জয় করেছে। হাজার হাজার জনশক্তি যে কাজ করতে পারে না বিদ্যুৎ মারফত সে কাজ সুইচ টিপে নিমেষেই করা যায়। মানুষের জীবনকে সর্বাঙ্গ সুন্দর করতে বিদ্যুৎ অভূতপূর্ব অবদান রাখছে। বিদ্যুতের সরবরাহ নিশ্চিত করেই জীবনযাপন হয়ে ওঠে স্বাচ্ছন্দ্যময়। তাই এদিকটিতে আমাদের সবচেয়ে নজর দিতে হবে বেশি।
এ ছাড়া একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তথ্যপ্রযুক্তি। এ প্রযুক্তি মানুষের ভাষা ও জীবনধারা বদলে দিচ্ছে। বদলে দিচ্ছে পৃথিবী ও মানব সভ্যতার চেহারা। পাল্টে যাওয়ার গতি এত দ্রুত যে, আগামী ৫০ বছরে পৃথিবীর চেহারা কেমন হবে তা এখনও মানুষের কল্পনার বাইরে। বিশ শতকের শেষ দিকে এসে তথ্যপ্রযুক্তি আমূল পাল্টে দিয়েছে মানুষের জীবনধারা। ফলে পৃথিবী এসে গেছে হাতের মুঠোয়। স্বল্পতম সময়ে অনেক দূরে বসেও পরামর্শ নেওয়া যায়। আর এসবের মূলে রয়েছে বিদ্যুৎ শক্তির ব্যবহারের নিশ্চয়তা। আমরাও এটি নিশ্চিত করে অনায়াসে এগিয়ে যেতে চাই স্বনির্ভর দেশের তালিকায়। আর এটির নিশ্চয়তার ব্যাপারটি সরকারকেই করতে হবে।
harunoor_rashid@yahoo.com
No comments