কাঁঠালের হাট-মহাসড়কে যানজট কাম্য নয়
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দুই পাশের পুরোটা দখল করে কাঁঠালের হাট বসায় এ সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট লেগে থাকে। সড়কের জৈন্তাপুর এলাকা থেকে কাঁচা-পাকা মৌসুমি ফলের সমারোহের যে ছবিটি ক্যাপশনসহ গত শুক্রবার সমকালের লোকালয় পাতায় প্রকাশ পেয়েছে তাতেই এর সত্যতা মেলে।
অথচ যারা এ পথ দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন তারা অনেকেই এ ধরনের একটি মহাসড়কে পাইকারি ফল বিক্রির জন্য যানজট সৃষ্টি হলেও এটাকে প্রতিকারহীন ভেবে বিরক্তির সঙ্গে মেনে নেন। কেউ কেউ যানজটের সুযোগে কাঁঠাল বা রসালো কোনো ফল কিনে নিয়ে যেতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করেন; কিন্তু এহেন যানজটের কারণে অনেক সময় অনেকের গুরুত্বপূর্ণ কাজের ক্ষতিও হয়। আসলে আমাদের দেশে সময়ের মূল্য এখনও অনেক মানুষের বোধের মধ্যে আসেনি। খোদ রাজধানীতেই যখন সামান্য কয়েক কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লেগে যায় যানজটের কারণে এবং যখন এ সমস্যার হাত থেকে সহসা নিস্তার নেই বলে নাগরিক ও সরকার উভয় পক্ষই একপ্রকার মেনে নিয়েছে, তখন মহাসড়কে ফল, মাছ বা শাকসবজির পাইকারি বাজার বসে যানজট সৃষ্টি হলে বড় ধরনের নাগরিক প্রতিক্রিয়া দেখা না দেওয়াটাই তো স্বাভাবিক। মেগাসিটির যানজট সমস্যা সমাধানের জন্য মেগা প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন এবং তার জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন; কিন্তু অভ্যাসবশে মহসড়কে যানজট সৃষ্টি করার ব্যামো সারানো অসাধ্য নয়। এ জন্য স্থানীয় পর্যায়ে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। এসব ফল, সবজি বা মাছ পাইকারি বিক্রির জন্য নির্দিষ্ট মহাসড়কের কাছাকাছি জায়গায় স্থায়ী বাজার গড়ে তোলা যায়। কোনো কোনো স্থানে এ ধরনের বাজারের অস্তিত্বও বিদ্যমান; কিন্তু তারপরও বাজার ছাড়িয়ে ফলসহ পচনশীল পণ্যের পসরা নিয়ে উৎপাদকরা মহাসড়ক বা অন্যান্য সড়কের ওপর বসে পড়েন। আর এ বদ-অভ্যাস বা কু-অভ্যাসের খেসারত দিতে হচ্ছে ওইসব পথ দিয়ে যাতায়াতকারীদের। তাই মহাসড়কের দু'পাশে বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে যাতে কেউ যানজট সৃষ্টি না করে সে জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। এতে চলাচলে সময় ও জ্বালানি সাশ্রয় সম্ভব হবে। বিপুল অর্থ ব্যয়ের কোনো ঝক্কি যখন নেই, তখন মহাসড়কে এ ধরনের যানজট নিরসনে আর দেরি করা কেন?
No comments