দলীয় কর্মীদের মধ্যে সরাসরি খাসজমি বণ্টনঃ মাইনাস পাওয়ারের চশমা দরকার
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার আর কিছু বাকি রাখল না। এখন ভূমিহীনদের মধ্যে খাসজমি বণ্টনের নামে যেভাবে দলীয় লোকদের সর্বত্র বসিয়ে দেয়া হচ্ছে তাতে প্রায় দেড় শতাব্দী আগে যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলে বিশাল বিশাল র্যাঞ্চমালিক কর্তৃক অনুগত নেস্টারদের বসতি গড়ে তোলা এবং এ নিয়ে রক্তক্ষয়ী দাঙ্গা-ফ্যাসাদের কথা অনেকের হয়তো মনে পড়ে যায়।
এতদিন লোকে রসিকতা করে বলত, আওয়ামী লীগ যে করে সে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মুক্তিযোদ্ধা হয়ে যায়; এমনকি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হামাগুড়ি দেয়ার বয়স হলেও অথবা জন্ম না হলেও তার বা তাদের ‘মুক্তিযোদ্ধা’ হতে বাধে না। এখন দেখা যাচ্ছে, আওয়ামী লীগ করলে ভূমিহীনও হওয়া যায় এবং সে সুবাদে অট্টালিকার মালিক হয়েও সরকারি খাসজমি বরাদ্দ পাওয়া যায়। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসেই দেশের নিষ্কণ্টক খাসজমি ভূমিহীন পরিবারগুলোকে বরাদ্দ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের প্রথম পর্বে ২০০৯ সালের ৩১ জুন পর্যন্ত সময়ে প্রতিটি উপজেলায় ২০টি করে ৯ হাজার ৭০০ পরািরকে খাসজমি বন্দোবস্ত দেয়া হয়েছে। সরকারি দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত পরিবারগুলোর ভাগ্যেই খাসজমি বন্দোবস্তের শিকে ছিঁড়েছে। এখন চলছে দ্বিতীয় পর্বের খাসজমি বন্দোবস্ত দেয়ার পালা। এ পর্যায়ে ৪৪ হাজার ভূমিহীনকে ১১ হাজার একর বা ৩৩ হাজার বিঘা খাসজমি বরাদ্দ দেয়া হবে। সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতিটি উপজেলায় কমপক্ষে ১০১টি ভূমিহীন পরিবার এ সুযোগ পাবে। কৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত নীতিমালা অনুযায়ী কোনো পরিবার এক একরের বেশি জমি পাবে না।
আপাতদৃষ্টিতে ব্যাপারটা সুন্দর মনে হলেও গোল বাধিয়েছে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ। আগে খাসজমি বন্দোবস্ত পাওয়ার যোগ্য পরিবারগুলোর তালিকা তৈরি করত প্রশাসন। এখন এ কাজে প্রাধান্য বিস্তার করেছেন সরকারদলীয় স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। জেলা ও থানা পর্যায়ে এ সংক্রান্ত ১১ সদস্য ও ১ উপদেষ্টা মিলিয়ে ১২ জনের যে কমিটি করা হয়েছে তার ৬ জন হচ্ছেন স্থানীয় রাজনীতিক; এককথায় আওয়ামী লীগের লোক। ফলে তারা যেভাবে চাইছেন সেভাবেই ভূমিহীনদের তালিকা হচ্ছে। প্রকৃত ভূমিহীনদের স্থান হচ্ছে না এই তালিকায়। তারপরও আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় এমন দু’চারটি পরিবারের নাম যদি ফাঁক গলে তালিকায় উঠে যায় তাহলে জমি বুঝে পেতে এবং জমিতে দখল কায়েম রাখতে সরকারদলীয় স্থানীয় নেতাদের খুশি করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এভাবে সরকারি খাসজমির আওয়ামীকরণ প্রক্রিয়া চললেও বেদখল হয়ে যাওয়া লাখ লাখ একর খাসজমি উদ্ধারের কোনো গরজ দেখা যাচ্ছে না। হয়ত খাসজমিতে অবৈধ দখল বজায় রাখতে এসব বেদখলকারী এখন রাতারাতি ‘বঙ্গবন্ধুর সৈনিক’ সেজে বসে আছে। অতএব, তাদের সাতখুন মাফ না হয়ে যায় কোথায়!
সরকারি খাসজমি নিয়ে ক্ষেত্রবিশেষে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে, আবার কখনও কখনও শক্তিশালী রাজনৈতিক পক্ষকে বখরা দিয়ে খুশি করে এভাবে নয়-ছয় চলছে বলেই দেশে ভূমিদস্যুরা প্রশ্রয় পাচ্ছে। ভূমিদস্যুদের দাপটে আজ দেশের কোথাও কারো ভূসম্পত্তি নিরাপদ নয়। এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সরকারের ভূমিনীতির দুর্বলতার কারণে; আর এ দুর্বলতার উত্স হচ্ছে নিজের লোকদের পাইয়ে দেয়ার কালচার। বর্তমান সরকারের আমলে খাসজমি বন্দোবস্ত দেয়ার প্রক্রিয়ায় যেভাবে দলীয়করণ ঘটে চলেছে তাতে পরিষ্কার যে, মহাজোট সরকার নিজেদের কাছের লোক ছাড়া আর কাউকে চোখে দেখছে না। এই মানসিক চোখের রোগ সারানো দরকার ন্যায্যতা ফিরিয়ে আনার স্বার্থে। যারা দূরের কিছু দেখে না তাদের দৃষ্টিশক্তি ঠিক করার জন্য চিকিত্সকরা মাইনাস পাওয়ারের চশমা প্রেসক্রিপশন করেন। এ ধরনের চশমা মহাজোট সরকারের প্রতিটি সদস্যের জন্য জরুরি হয়ে পড়েছে।
আপাতদৃষ্টিতে ব্যাপারটা সুন্দর মনে হলেও গোল বাধিয়েছে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ। আগে খাসজমি বন্দোবস্ত পাওয়ার যোগ্য পরিবারগুলোর তালিকা তৈরি করত প্রশাসন। এখন এ কাজে প্রাধান্য বিস্তার করেছেন সরকারদলীয় স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। জেলা ও থানা পর্যায়ে এ সংক্রান্ত ১১ সদস্য ও ১ উপদেষ্টা মিলিয়ে ১২ জনের যে কমিটি করা হয়েছে তার ৬ জন হচ্ছেন স্থানীয় রাজনীতিক; এককথায় আওয়ামী লীগের লোক। ফলে তারা যেভাবে চাইছেন সেভাবেই ভূমিহীনদের তালিকা হচ্ছে। প্রকৃত ভূমিহীনদের স্থান হচ্ছে না এই তালিকায়। তারপরও আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় এমন দু’চারটি পরিবারের নাম যদি ফাঁক গলে তালিকায় উঠে যায় তাহলে জমি বুঝে পেতে এবং জমিতে দখল কায়েম রাখতে সরকারদলীয় স্থানীয় নেতাদের খুশি করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এভাবে সরকারি খাসজমির আওয়ামীকরণ প্রক্রিয়া চললেও বেদখল হয়ে যাওয়া লাখ লাখ একর খাসজমি উদ্ধারের কোনো গরজ দেখা যাচ্ছে না। হয়ত খাসজমিতে অবৈধ দখল বজায় রাখতে এসব বেদখলকারী এখন রাতারাতি ‘বঙ্গবন্ধুর সৈনিক’ সেজে বসে আছে। অতএব, তাদের সাতখুন মাফ না হয়ে যায় কোথায়!
সরকারি খাসজমি নিয়ে ক্ষেত্রবিশেষে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে, আবার কখনও কখনও শক্তিশালী রাজনৈতিক পক্ষকে বখরা দিয়ে খুশি করে এভাবে নয়-ছয় চলছে বলেই দেশে ভূমিদস্যুরা প্রশ্রয় পাচ্ছে। ভূমিদস্যুদের দাপটে আজ দেশের কোথাও কারো ভূসম্পত্তি নিরাপদ নয়। এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সরকারের ভূমিনীতির দুর্বলতার কারণে; আর এ দুর্বলতার উত্স হচ্ছে নিজের লোকদের পাইয়ে দেয়ার কালচার। বর্তমান সরকারের আমলে খাসজমি বন্দোবস্ত দেয়ার প্রক্রিয়ায় যেভাবে দলীয়করণ ঘটে চলেছে তাতে পরিষ্কার যে, মহাজোট সরকার নিজেদের কাছের লোক ছাড়া আর কাউকে চোখে দেখছে না। এই মানসিক চোখের রোগ সারানো দরকার ন্যায্যতা ফিরিয়ে আনার স্বার্থে। যারা দূরের কিছু দেখে না তাদের দৃষ্টিশক্তি ঠিক করার জন্য চিকিত্সকরা মাইনাস পাওয়ারের চশমা প্রেসক্রিপশন করেন। এ ধরনের চশমা মহাজোট সরকারের প্রতিটি সদস্যের জন্য জরুরি হয়ে পড়েছে।
No comments