পবিত্র কোরআনের আলো-আল্লাহ ও রাসুলের পথে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও কাজ করতে হবে
১১৯. ইয়া-আইয়্যুহাল্লাযীনা আ-মানূত্তাক্বুল্লা-হা ওয়া কূনূ মাআ'স্ সা-দিক্বীন। ১২০. মা কা-না লিআহ্লিল মাদীনাতি ওয়া মান হাওলাহুম্ মিনাল আ'রা-বি আন ইয়্যাতাখাল্লাফূ আ'ন রাসূলিল্লা-হি ওয়া লা-ইয়ার্গাবূ বিআনফুছিহিম আ'ন নাফছিহী; যা-লিকা বিআন্নাহুম লা-ইউসীবুহুম য্বামাউন ওয়ালা- নাসাবুন ওয়ালা- মাখ্মাসাতুন ফী ছাবীলিল্লা-হি
ওয়ালা- ইয়াত্বাঊনা মাওতি্বআন ইয়্যাগীযুল কুফ্ফা-রা ওয়া লা ইয়ানা-লূনা মিন আ'দুয়্যিন নাইলান ইল্লা কুতিবা লাহুম বিহী আ'মালুন সা-লিহুন; ইন্নাল্লা-হা লা-ইউদ্বীউ' আজরুল মুহ্ছিনীন।
১২১. ওয়ালা- ইউনফিক্বূনা নাফাক্বাতান সাগীরাতান ওয়্যালা- কাবীরাতান ওয়্যালা- ইয়াক্বত্বাঊ'না ওয়া-দিইয়্যান ইল্লা- কুতিবা লাহুম লিইয়াজ্যিইয়াহুমুল্লা-হু আহ্ছানা মা কা-নূ ইয়া'মালূন।
[সুরা : আত্ তাওবা, আয়াত : ১১৯-১২১]
অনুবাদ
১১৯. হে মুমিনরা, তোমরা আল্লাহর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠ হও এবং সত্যনিষ্ঠদের সঙ্গে থাকো।
১২০. মদিনাবাসী ও তাদের আশপাশের বেদুইনদের (মুসলিম) পক্ষে এটা সঙ্গত ছিল না যে, তারা (তাবুক অভিযানে) রাসুলের অনুগমন থেকে পিছিয়ে থাকবে। আর এটাও সঙ্গত ছিল না যে, তারা নিজেদের জীবনের মায়ায় রাসুলের জীবন রক্ষার চিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে বসে থাকবে। এটা এ কারণে যে, আল্লাহর পথে তাদের (অর্থাৎ মুজাহিদদের) যে পিপাসা, ক্লান্তি ও ক্ষুধার কষ্ট দেখা দেয়, (এটা তো রয়েছেই) এ ছাড়া এটা এমন এক অভিযান যেখানে তারা যাবে সেখানে শত্রুদের ক্রোধে পড়বে কিংবা শত্রুর বিরুদ্ধে তারা সফলতা অর্জন করবে; এসব কিছুতেই তাদের আমলনামায় অবশ্যই পুণ্য লেখা হবে। জেনে রেখ, আল্লাহ সৎকর্মশীলদের কোনো কর্ম বৃথা যেতে দেন না।
১২১. তা ছাড়া তারা আল্লাহর পথে যা কিছু ব্যয় করে, সে ব্যয় অল্প হোক বা বেশি এবং তারা আল্লাহর পথে প্রান্তর অতিক্রম করে চলে তাও তাদের জন্য লিপিবদ্ধ হবে, যাতে তারা মহৎ যা কিছু অর্জন করেছে, আল্লাহ তাদের এর চেয়ে উত্তম প্রতিদান
দিতে পারেন।
ব্যাখ্যা
১১৯ নম্বর আয়াতে আগের আলোচনার উপসংহার টেনে এর মূল শিক্ষাটার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে তিনজন সত্যনিষ্ঠ মানুষের কথা বলা হয়েছে; যারা বিনা ওজরে তাবুক যুদ্ধে অংশগ্রহণ থেকে বিরত ছিল এবং পরে তারা শাস্তি মাথা পেতে নিয়ে অনুশোচনায় দগ্ধ হয়েছে। তারা নিজেদের দোষ ঢাকতে মুনাফিকদের মতো মিথ্যা ছলছুতোর আশ্রয় গ্রহণ করেননি; বরং যা সত্য তাই অকপটে প্রকাশ করেছেন। তাদের এই সত্যবাদিতার বরকতে আল্লাহ তায়ালা যে কেবল তাদের তাওবা কবুল করেছেন তাই নয়; বরং কোরআন মজিদে সত্যবাদী মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করে কিয়ামত পর্যন্ত তাদের অমরত্ব দান করেছেন। এ আয়াতে এই শিক্ষাও দেওয়া হয়েছে যে, মানুষের উচিত এমন সত্যনিষ্ঠ লোকদের সাহচার্য ও আদর্শ অবলম্বন করা। তারা মুখে সত্য বলে এবং কাজেও সততার পরিচয় দেয়। তারাই মানব সমাজের আদর্শ।
১২০ নম্বর আয়াতে রাসুল (সা.)-এর তাবুক অভিযানের গুরুত্বের প্রতি ইঙ্গিত করে তৎকালীন মুসলিম সমাজের সর্বমহলের দায়িত্ববোধ জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। মদিনাবাসী এর আশপাশের গ্রামবাসী বা বেদুইন গোত্রগুলো_এই ছিল তখনকার মূল মুসলিম সমাজ। যুদ্ধযাত্রার কষ্ট, ঝুঁকি এসব কিছু বিবেচনায় নিয়েও এই যুদ্ধে সব মুসলমানকেই রাসুলের সঙ্গে থাকা প্রয়োজন ছিল_ আর এটা ছিল ইসলামের সুরক্ষা ও প্রসারের জন্য সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ_এ কথাই এখানে বলা হয়েছে।
১২১ নম্বর আয়াতে আল্লাহর পথে যারা নিজেদের জান-মাল দিয়ে জিহাদ করতে বের হয়েছে, তাদের কাজের গুরুত্ব ও উচ্চ মর্যাদা সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। মুজাহিদদের যুদ্ধাভিজানসংক্রান্ত কাজগুলোর কোনো কোনোটির গুরুত্ব কম মনে হলেও আসলে তা কম গুরুত্বের নয়। সত্য ও ন্যায়ের পথে সব ত্যাগ-তিতিক্ষারই উচ্চমূল্য রয়েছে। আল্লাহ এ সংক্রান্ত সব কাজের জন্য উত্তম কাজের প্রতিদান দেবেন। 'ইহসান' শব্দটির অর্থ 'উৎকৃষ্ট কাজ' বলে তরজমা করেছেন বিশিষ্ট মুফাচ্ছিরদের অনেকেই।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
১২১. ওয়ালা- ইউনফিক্বূনা নাফাক্বাতান সাগীরাতান ওয়্যালা- কাবীরাতান ওয়্যালা- ইয়াক্বত্বাঊ'না ওয়া-দিইয়্যান ইল্লা- কুতিবা লাহুম লিইয়াজ্যিইয়াহুমুল্লা-হু আহ্ছানা মা কা-নূ ইয়া'মালূন।
[সুরা : আত্ তাওবা, আয়াত : ১১৯-১২১]
অনুবাদ
১১৯. হে মুমিনরা, তোমরা আল্লাহর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠ হও এবং সত্যনিষ্ঠদের সঙ্গে থাকো।
১২০. মদিনাবাসী ও তাদের আশপাশের বেদুইনদের (মুসলিম) পক্ষে এটা সঙ্গত ছিল না যে, তারা (তাবুক অভিযানে) রাসুলের অনুগমন থেকে পিছিয়ে থাকবে। আর এটাও সঙ্গত ছিল না যে, তারা নিজেদের জীবনের মায়ায় রাসুলের জীবন রক্ষার চিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে বসে থাকবে। এটা এ কারণে যে, আল্লাহর পথে তাদের (অর্থাৎ মুজাহিদদের) যে পিপাসা, ক্লান্তি ও ক্ষুধার কষ্ট দেখা দেয়, (এটা তো রয়েছেই) এ ছাড়া এটা এমন এক অভিযান যেখানে তারা যাবে সেখানে শত্রুদের ক্রোধে পড়বে কিংবা শত্রুর বিরুদ্ধে তারা সফলতা অর্জন করবে; এসব কিছুতেই তাদের আমলনামায় অবশ্যই পুণ্য লেখা হবে। জেনে রেখ, আল্লাহ সৎকর্মশীলদের কোনো কর্ম বৃথা যেতে দেন না।
১২১. তা ছাড়া তারা আল্লাহর পথে যা কিছু ব্যয় করে, সে ব্যয় অল্প হোক বা বেশি এবং তারা আল্লাহর পথে প্রান্তর অতিক্রম করে চলে তাও তাদের জন্য লিপিবদ্ধ হবে, যাতে তারা মহৎ যা কিছু অর্জন করেছে, আল্লাহ তাদের এর চেয়ে উত্তম প্রতিদান
দিতে পারেন।
ব্যাখ্যা
১১৯ নম্বর আয়াতে আগের আলোচনার উপসংহার টেনে এর মূল শিক্ষাটার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে তিনজন সত্যনিষ্ঠ মানুষের কথা বলা হয়েছে; যারা বিনা ওজরে তাবুক যুদ্ধে অংশগ্রহণ থেকে বিরত ছিল এবং পরে তারা শাস্তি মাথা পেতে নিয়ে অনুশোচনায় দগ্ধ হয়েছে। তারা নিজেদের দোষ ঢাকতে মুনাফিকদের মতো মিথ্যা ছলছুতোর আশ্রয় গ্রহণ করেননি; বরং যা সত্য তাই অকপটে প্রকাশ করেছেন। তাদের এই সত্যবাদিতার বরকতে আল্লাহ তায়ালা যে কেবল তাদের তাওবা কবুল করেছেন তাই নয়; বরং কোরআন মজিদে সত্যবাদী মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করে কিয়ামত পর্যন্ত তাদের অমরত্ব দান করেছেন। এ আয়াতে এই শিক্ষাও দেওয়া হয়েছে যে, মানুষের উচিত এমন সত্যনিষ্ঠ লোকদের সাহচার্য ও আদর্শ অবলম্বন করা। তারা মুখে সত্য বলে এবং কাজেও সততার পরিচয় দেয়। তারাই মানব সমাজের আদর্শ।
১২০ নম্বর আয়াতে রাসুল (সা.)-এর তাবুক অভিযানের গুরুত্বের প্রতি ইঙ্গিত করে তৎকালীন মুসলিম সমাজের সর্বমহলের দায়িত্ববোধ জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। মদিনাবাসী এর আশপাশের গ্রামবাসী বা বেদুইন গোত্রগুলো_এই ছিল তখনকার মূল মুসলিম সমাজ। যুদ্ধযাত্রার কষ্ট, ঝুঁকি এসব কিছু বিবেচনায় নিয়েও এই যুদ্ধে সব মুসলমানকেই রাসুলের সঙ্গে থাকা প্রয়োজন ছিল_ আর এটা ছিল ইসলামের সুরক্ষা ও প্রসারের জন্য সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ_এ কথাই এখানে বলা হয়েছে।
১২১ নম্বর আয়াতে আল্লাহর পথে যারা নিজেদের জান-মাল দিয়ে জিহাদ করতে বের হয়েছে, তাদের কাজের গুরুত্ব ও উচ্চ মর্যাদা সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। মুজাহিদদের যুদ্ধাভিজানসংক্রান্ত কাজগুলোর কোনো কোনোটির গুরুত্ব কম মনে হলেও আসলে তা কম গুরুত্বের নয়। সত্য ও ন্যায়ের পথে সব ত্যাগ-তিতিক্ষারই উচ্চমূল্য রয়েছে। আল্লাহ এ সংক্রান্ত সব কাজের জন্য উত্তম কাজের প্রতিদান দেবেন। 'ইহসান' শব্দটির অর্থ 'উৎকৃষ্ট কাজ' বলে তরজমা করেছেন বিশিষ্ট মুফাচ্ছিরদের অনেকেই।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments