ইয়াবা-ফাঁদে র্যাবই ধরা
ইয়াবা বড়িসহ এক বাড়ির মালিককে ধরার জন্য ফাঁদ পেতেছিল র্যাব, সেই ফাঁদে ধরা পড়েছে র্যাবেরই সোর্স। আরেক সোর্স পালিয়ে যান বোরকা পরে। অবস্থা বেগতিক দেখে অভিযান না করেই চলে যায় র্যাবের দলটি। গতকাল শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম শহরের লাভ লেইন এলাকার আবেদীন কলোনির একটি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
চট্টগ্রাম র্যাবের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর জিয়াউল আহসান সরওয়ার ঘটনার কথা স্বীকার করে প্রথম আলোকে বলেন, র্যাব সোর্সের প্রতারণার শিকার হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, লাভ লেইন এলাকার আবেদীন কলোনির একটি বাড়ি নিয়ে ছালেহ আহমেদের ছেলেদের সঙ্গে অন্য পক্ষের দীর্ঘদিন ধরে মামলা-মোকদ্দমা চলছে। প্রতিপক্ষের লোকজন অনেক চেষ্টা করেও বাড়িটি দখল করতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত র্যাব দিয়ে অভিযান চালিয়ে তাদের উচ্ছেদের পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনা ছিল, ইয়াবাসহ ছালেহ আহমেদের পরিবারের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা, যাতে প্রতিপক্ষের লোকজন সহজেই বাড়িটি দখল করতে পারে।
বাড়িটির মালিক ছালেহ আহমেদের ছেলে সাইফুল ইসলাম এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘সকাল সাড়ে নয়টার দিকে দুই সোর্স নিয়ে র্যাবের একটি দল বাড়িতে আসে। তারা আমাদের বাড়িতে ঢুকতে চাইলে আমরা তল্লাশির অনুমতিপত্র দেখতে চাই। র্যাব আমাদের কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এ নিয়ে বাগিবতণ্ডার একপর্যায়ে র্যাবের সঙ্গে আসা সোর্স এবাদুর রহমান গোপনে স্টোর রুমে ঢুকে পড়েন। সেখান থেকে আরেকটি কক্ষে গিয়ে কোমর থেকে এক পোঁটলা ইয়াবা বড়ি ফেলে দেয়।’
বাড়ির মালিকের আরেক ছেলে সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘র্যাবের সোর্স এবাদুর রহমান হঠাৎ বাড়ির ভেতরে ঢুকলে আমার ছোট ভাইয়ের বউ তাঁকে দেখে চিৎকার করে ওঠেন। আমার ছোট ভাই শরিফুল ইসলাম এবাদুরকে জাপটে ধরে ফেলেন। এ সময় এবাদুরের ডান হাতে নীল রঙের প্লাস্টিকের প্যাকেট দেখা যায়। হইচই শুনে আমি তৃতীয় তলা থেকে দ্রুত নিচতলায় চলে আসি। ঘরে ঢোকার কারণ জিজ্ঞেস করলে এবাদুর নিজেকে র্যাবের সোর্স বলে পরিচয় দেন এবং ফটকের বাইরে ডিএডি আলী হায়দারসহ র্যাবের কয়েকজন সদস্য আছেন বলে জানান।’
সাইফুল আরও বলেন, বাড়ির বাইরে র্যাবের লোকজন সাদা পোশাকে ছিলেন। পরে তাঁরা জ্যাকেট পরে ভেতরে ঢোকেন এবং এবাদুরকে তাঁদের সোর্স বলে জানান। তাৎক্ষণিক বিষয়টি কোতোয়ালি থানার পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে এবাদুরকে ইয়াবাসহ নাতেনাতে গ্রেপ্তার করে। এ সময় আরেক সোর্স বোরকা পরে পালিয়ে যান। র্যাব সদস্যারাও চলে যান।
গ্রেপ্তারের পর সোর্স এবাদুর জানান, তাঁর বাড়ি দক্ষিণ পতেঙ্গার দক্ষিণপাড়া এলাকায়। আগে তিনি টেম্পো ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালাতেন। সাত-আট বছর ধরে র্যাবের সোর্স হিসেবে কাজ করছেন। তিনি জানান, বোরকা পরে পালিয়ে যাওয়া আরেক সোর্সের নাম আইয়ুব খান। তাঁর বাড়ি কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে আনোয়ারা এলাকায়।
কীভাবে এ অভিযানের পরিকল্পনা করা হলো, জানতে চাইলে এবাদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, লাভ লেইনের ওই বাড়িতে দুই হাজার ইয়াবা বড়ি আছে বলে র্যাবের উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) হায়দার আলীকে জানান সোর্স আইয়ুব খান। সেই তথ্যের ভিত্তিতে ডিএডি হায়দার সকালে অভিযান শুরু করেন। অভিযানের আগে সোর্স আইয়ুব এবাদুরের কোমরে ২০০টি ইয়াবার একটি পোঁটলা গুঁজে দেন।
এবাদুর আরও বলেন, ‘র্যাবের গাড়িটি সিআরবি এলাকায় এলে আইয়ুব খানকে বোরকা পরে একটি গাড়িতে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। আইয়ুব ওই গাড়ি থেকে নেমে র্যাবের গাড়িতে ওঠেন। এরপর ডিএডি হায়দারের নেতৃত্বে আমরা লাভ লেইনের উদ্দেশে রওনা হই। র্যাবের এক সদস্যকে নিয়ে আমি ওই বাড়িতে ঢুকে যাই। কিন্তু হায়দার সাহেব ও আইয়ুব বাড়ির বাইরে ছিলেন।’
এ অভিযান সম্পর্কে র্যাব-৭-এর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর জিয়াউল আহসান সরওয়ার প্রথম আলোকে বলেন, দুই সোর্স র্যাব কর্মকর্তার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। বিষয়টি জানার পরই ডিএডি হায়দার নিজের কাছা থাকা হাতকড়া এবাদুরকে পরিয়ে দেন। এরপর এবাদুরকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
মেজর জিয়াউল আরও বলেন, লাভ লেইনের ওই বাড়ি নিয়ে মামলা চলছে। একটি পক্ষের হয়ে সোর্স আইয়ুব ও এবাদুর ইয়াবা উদ্ধারের অভিযানের নামে বাড়ির মালিককে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছেন।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাড়িটি দখল হওয়ার আশঙ্কা করছিলেন মরহুম ছালেহ আহমেদের ছেলেরা। বিষয়টি আমাদের জানা আছে।’
এর আগে গত বছরের ৪ নভেম্বর আনোয়ারায় একটি দরবার শরিফে অভিযানের নামে ডাকাতি করেছে র্যাবের একটি দল। চট্টগ্রাম র্যাবের তৎকালীন অধিনায়ক লে. কর্নেল জুলফিকার আলী মজুমদারের নেতৃত্বে সেখান থেকে দুই কোটি সাত হাজার টাকা লুট করা হয় বলে মামলা হয়েছে। এ মামলায় আসামির সংখ্যা ১২।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, লাভ লেইন এলাকার আবেদীন কলোনির একটি বাড়ি নিয়ে ছালেহ আহমেদের ছেলেদের সঙ্গে অন্য পক্ষের দীর্ঘদিন ধরে মামলা-মোকদ্দমা চলছে। প্রতিপক্ষের লোকজন অনেক চেষ্টা করেও বাড়িটি দখল করতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত র্যাব দিয়ে অভিযান চালিয়ে তাদের উচ্ছেদের পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনা ছিল, ইয়াবাসহ ছালেহ আহমেদের পরিবারের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা, যাতে প্রতিপক্ষের লোকজন সহজেই বাড়িটি দখল করতে পারে।
বাড়িটির মালিক ছালেহ আহমেদের ছেলে সাইফুল ইসলাম এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘সকাল সাড়ে নয়টার দিকে দুই সোর্স নিয়ে র্যাবের একটি দল বাড়িতে আসে। তারা আমাদের বাড়িতে ঢুকতে চাইলে আমরা তল্লাশির অনুমতিপত্র দেখতে চাই। র্যাব আমাদের কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এ নিয়ে বাগিবতণ্ডার একপর্যায়ে র্যাবের সঙ্গে আসা সোর্স এবাদুর রহমান গোপনে স্টোর রুমে ঢুকে পড়েন। সেখান থেকে আরেকটি কক্ষে গিয়ে কোমর থেকে এক পোঁটলা ইয়াবা বড়ি ফেলে দেয়।’
বাড়ির মালিকের আরেক ছেলে সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘র্যাবের সোর্স এবাদুর রহমান হঠাৎ বাড়ির ভেতরে ঢুকলে আমার ছোট ভাইয়ের বউ তাঁকে দেখে চিৎকার করে ওঠেন। আমার ছোট ভাই শরিফুল ইসলাম এবাদুরকে জাপটে ধরে ফেলেন। এ সময় এবাদুরের ডান হাতে নীল রঙের প্লাস্টিকের প্যাকেট দেখা যায়। হইচই শুনে আমি তৃতীয় তলা থেকে দ্রুত নিচতলায় চলে আসি। ঘরে ঢোকার কারণ জিজ্ঞেস করলে এবাদুর নিজেকে র্যাবের সোর্স বলে পরিচয় দেন এবং ফটকের বাইরে ডিএডি আলী হায়দারসহ র্যাবের কয়েকজন সদস্য আছেন বলে জানান।’
সাইফুল আরও বলেন, বাড়ির বাইরে র্যাবের লোকজন সাদা পোশাকে ছিলেন। পরে তাঁরা জ্যাকেট পরে ভেতরে ঢোকেন এবং এবাদুরকে তাঁদের সোর্স বলে জানান। তাৎক্ষণিক বিষয়টি কোতোয়ালি থানার পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে এবাদুরকে ইয়াবাসহ নাতেনাতে গ্রেপ্তার করে। এ সময় আরেক সোর্স বোরকা পরে পালিয়ে যান। র্যাব সদস্যারাও চলে যান।
গ্রেপ্তারের পর সোর্স এবাদুর জানান, তাঁর বাড়ি দক্ষিণ পতেঙ্গার দক্ষিণপাড়া এলাকায়। আগে তিনি টেম্পো ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালাতেন। সাত-আট বছর ধরে র্যাবের সোর্স হিসেবে কাজ করছেন। তিনি জানান, বোরকা পরে পালিয়ে যাওয়া আরেক সোর্সের নাম আইয়ুব খান। তাঁর বাড়ি কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে আনোয়ারা এলাকায়।
কীভাবে এ অভিযানের পরিকল্পনা করা হলো, জানতে চাইলে এবাদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, লাভ লেইনের ওই বাড়িতে দুই হাজার ইয়াবা বড়ি আছে বলে র্যাবের উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) হায়দার আলীকে জানান সোর্স আইয়ুব খান। সেই তথ্যের ভিত্তিতে ডিএডি হায়দার সকালে অভিযান শুরু করেন। অভিযানের আগে সোর্স আইয়ুব এবাদুরের কোমরে ২০০টি ইয়াবার একটি পোঁটলা গুঁজে দেন।
এবাদুর আরও বলেন, ‘র্যাবের গাড়িটি সিআরবি এলাকায় এলে আইয়ুব খানকে বোরকা পরে একটি গাড়িতে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। আইয়ুব ওই গাড়ি থেকে নেমে র্যাবের গাড়িতে ওঠেন। এরপর ডিএডি হায়দারের নেতৃত্বে আমরা লাভ লেইনের উদ্দেশে রওনা হই। র্যাবের এক সদস্যকে নিয়ে আমি ওই বাড়িতে ঢুকে যাই। কিন্তু হায়দার সাহেব ও আইয়ুব বাড়ির বাইরে ছিলেন।’
এ অভিযান সম্পর্কে র্যাব-৭-এর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর জিয়াউল আহসান সরওয়ার প্রথম আলোকে বলেন, দুই সোর্স র্যাব কর্মকর্তার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। বিষয়টি জানার পরই ডিএডি হায়দার নিজের কাছা থাকা হাতকড়া এবাদুরকে পরিয়ে দেন। এরপর এবাদুরকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
মেজর জিয়াউল আরও বলেন, লাভ লেইনের ওই বাড়ি নিয়ে মামলা চলছে। একটি পক্ষের হয়ে সোর্স আইয়ুব ও এবাদুর ইয়াবা উদ্ধারের অভিযানের নামে বাড়ির মালিককে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছেন।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাড়িটি দখল হওয়ার আশঙ্কা করছিলেন মরহুম ছালেহ আহমেদের ছেলেরা। বিষয়টি আমাদের জানা আছে।’
এর আগে গত বছরের ৪ নভেম্বর আনোয়ারায় একটি দরবার শরিফে অভিযানের নামে ডাকাতি করেছে র্যাবের একটি দল। চট্টগ্রাম র্যাবের তৎকালীন অধিনায়ক লে. কর্নেল জুলফিকার আলী মজুমদারের নেতৃত্বে সেখান থেকে দুই কোটি সাত হাজার টাকা লুট করা হয় বলে মামলা হয়েছে। এ মামলায় আসামির সংখ্যা ১২।
No comments