৫ম সংশোধনীর পূর্ণাঙ্গ রায় ঝুলে রইলঃ ব্যত্যয় ঘটেছে প্রচলিত রীতির
৭ ফেব্রুয়ারি অবসর নিয়েছেন দেশের ১৭তম প্রধান বিচারপতি মোঃ তাফাজ্জাল ইসলাম। এতে অস্বাভাবিকতার কিছু ছিল না। তার বিদায় নেয়ার বয়স হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তারপরও প্রধান বিচারপতির অবসরে যাওয়া নিয়ে কথা উঠেছে একটি মামলাকে কেন্দ্র করে।
অবসর নেয়ার আগে তিনি সর্বশেষ যে মামলার শুনানি শোনেন, সেটা হচ্ছে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী সংক্রান্ত মামলা। তার নেতৃত্বে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের ফুলবেঞ্চে ওই মামলার শুনানি হয়েছে। মামলার রায়ও হয়েছে। তবে সে রায় পূর্ণাঙ্গ নয়। সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা লিভ টু আপিল ২ ফেব্রুয়ারি খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতি মোঃ তাফাজ্জাল ইসলামের নেতৃত্বে গঠিত আপিল বিভাগের ফুলবেঞ্চ। খারিজাদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘আপিল ডিসমিস উইথ মডিফিকেশনস অ্যান্ড অবজারভেশনস’। অর্থাত্ আপিল খারিজ করা হলেও হাইকোর্ট বিভাগের রায় পুরোপুরি অবিকৃত নেই। এর সঙ্গে কিছু সংশোধন ও পর্যবেক্ষণ যুক্ত হয়েছে। কিন্তু কী সংশোধন করা হয়েছে এবং কী পর্যবেক্ষণ যোগ হয়েছে, তা জানা যায়নি। এ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে পূর্ণাঙ্গ রায় হাতে পাওয়ার পর। তবে এটা কিছুটা সময়সাপেক্ষ। ফুলবেঞ্চের প্রত্যেক বিচারপতি আলাদাভাবে ডিকটেশন দেবেন। সেসব ডিকটেশন টাইপ করা হবে। টাইপ করা কপিগুলোর সমন্বয় করে বিচারপতিদের দেখানো হবে। পরে প্রয়োজনীয় সংশোধনসহ খসড়া চূড়ান্ত করে বিচারপতিদের সই নেয়া হবে। এই প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগেই প্রধান বিচারপতি অবসরে গেছেন। এতে অবশ্য চূড়ান্ত রায়ে তার সই করতে আইনি বাধা নেই। তবে ব্যত্যয় ঘটল কনভেনশনের। প্রচলিত রীতি হচ্ছে, কোনো সংশোধন বা পর্যবেক্ষণ মুক্ত আদালতে দেয়া হয়। আলোচ্য ক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতি অবসরে যাওয়ায় সেটা সম্ভব হচ্ছে না। হলে ভালো হতো।
মামলাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। এর সঙ্গে রাষ্ট্র কীভাবে পরিচালিত হবে, সেই দিকনির্দেশনার প্রশ্ন জড়িত। রাজধানী ঢাকার মুন সিনেমা হলের মালিকানা নিয়ে দায়ের করা রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০০৫ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট বিভাগের তত্কালীন বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ও বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করে রায় দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে সরকার লিভ টু আপিল দায়ের করে। কিন্তু চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপিতে বিচারপতিদের স্বাক্ষরের পর সার্টিফাইড কপি না পাওয়ায় লিভ টু আপিলের শুনানি সম্ভব হয়নি। জোট সরকার ক্ষমতা ছাড়ার মাত্র কয়েকদিন আগে সার্টিফাইড কপি সরবরাহ করা হয়। ওই সময় সরকারের লিভ টু আপিল দায়েরের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগের রায় স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। বর্তমান সরকার লিভ টু আপিল না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে তা প্রত্যাহারের আবেদন জানায়। এ আবেদনের আগেই প্রথমে তিনজন আইনজীবী এবং পরে বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন মামলাটিতে পক্ষভুক্তির আবেদন জানালে আপিল বিভাগ শুনানি শেষে তা গ্রহণ করেন। তাদের করা লিভ টু আপিল খারিজ হয় ২ ফেব্রুয়ারি।
দেখা যাচ্ছে, এটি একটি জটিল মামলা। এ মামলার চূড়ান্ত ও পূর্ণাঙ্গ রায়ের সঙ্গে রাষ্ট্র পরিচালনার ভবিষ্যত্ জড়িত। প্রধান বিচারপতি তাফাজ্জাল ইসলাম যেহেতু ফুলবেঞ্চের প্রধান হিসেবে মামলাটির শুনানি শুনেছেন, তাই তিনি কর্মরত থাকা অবস্থায় পূর্ণাঙ্গ রায়ে সই করে যেতে পারলে বিষয়টি সর্বাঙ্গীন সুন্দর হতো। যে কোনো মামলার রায় সব পক্ষকে সন্তুষ্ট করতে পারে না। তাই মামলার রায় শুধু নয়, রায় প্রদানের প্রক্রিয়াও যাতে নিখুঁত হয়, সেদিকে সবার দৃষ্টি রাখা উচিত। এতে কারও বাড়তি পরিশ্রম করতে হলেও আইনি প্রক্রিয়ার সুস্থতার স্বার্থে তা জরুরি।
মামলাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। এর সঙ্গে রাষ্ট্র কীভাবে পরিচালিত হবে, সেই দিকনির্দেশনার প্রশ্ন জড়িত। রাজধানী ঢাকার মুন সিনেমা হলের মালিকানা নিয়ে দায়ের করা রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০০৫ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট বিভাগের তত্কালীন বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ও বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করে রায় দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে সরকার লিভ টু আপিল দায়ের করে। কিন্তু চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপিতে বিচারপতিদের স্বাক্ষরের পর সার্টিফাইড কপি না পাওয়ায় লিভ টু আপিলের শুনানি সম্ভব হয়নি। জোট সরকার ক্ষমতা ছাড়ার মাত্র কয়েকদিন আগে সার্টিফাইড কপি সরবরাহ করা হয়। ওই সময় সরকারের লিভ টু আপিল দায়েরের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগের রায় স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। বর্তমান সরকার লিভ টু আপিল না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে তা প্রত্যাহারের আবেদন জানায়। এ আবেদনের আগেই প্রথমে তিনজন আইনজীবী এবং পরে বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন মামলাটিতে পক্ষভুক্তির আবেদন জানালে আপিল বিভাগ শুনানি শেষে তা গ্রহণ করেন। তাদের করা লিভ টু আপিল খারিজ হয় ২ ফেব্রুয়ারি।
দেখা যাচ্ছে, এটি একটি জটিল মামলা। এ মামলার চূড়ান্ত ও পূর্ণাঙ্গ রায়ের সঙ্গে রাষ্ট্র পরিচালনার ভবিষ্যত্ জড়িত। প্রধান বিচারপতি তাফাজ্জাল ইসলাম যেহেতু ফুলবেঞ্চের প্রধান হিসেবে মামলাটির শুনানি শুনেছেন, তাই তিনি কর্মরত থাকা অবস্থায় পূর্ণাঙ্গ রায়ে সই করে যেতে পারলে বিষয়টি সর্বাঙ্গীন সুন্দর হতো। যে কোনো মামলার রায় সব পক্ষকে সন্তুষ্ট করতে পারে না। তাই মামলার রায় শুধু নয়, রায় প্রদানের প্রক্রিয়াও যাতে নিখুঁত হয়, সেদিকে সবার দৃষ্টি রাখা উচিত। এতে কারও বাড়তি পরিশ্রম করতে হলেও আইনি প্রক্রিয়ার সুস্থতার স্বার্থে তা জরুরি।
No comments