তদন্ত কমিটির অন্য নাম হিমাগার by মোঃ হামজা কামাল মোস্তফা
ইতিমধ্যেই আমাদের আমলাতান্ত্রিক সংস্কৃতির অঙ্গে পরিণত হয়েছে 'তদন্ত কমিটি'। দাদু কেন খায় না, খোকা ধরে বায়না, মন কেন মানে না_ ইত্যাকার ঘটনার উপসংহার তদন্ত কমিটি। উপসংহারে অবশ্যই সমাধান থাকা উচিত। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, সমাধানের দৌড় তদন্ত কমিটিতে গিয়েই থমকে দাঁড়ায়।
বাংলা একাডেমীর ব্যবহারিক বাংলা অভিধানের নিরীহ শব্দ 'তদন্ত', যার ব্যুৎপত্তিগত অর্থ 'তার অন্ত বা শেষ', তবে বাস্তব প্রেক্ষাপটে এর অর্থ দাঁড়ায় ঠিক বিপরীত_'যার শুরু আছে, শেষ নেই; যার জন্ম হয় সর্বস্ব কাঁপিয়ে, অতঃপর শেষকৃত্য সর্বসাধারণের দৃষ্টিগোচর হয় না।' এমনটাই দেখা যায় আমাদের আমলাতান্ত্রিক জটিলতার অঙ্গে পরিণত হওয়া তদন্ত কমিটির বেলায়।
গড়ে প্রতি বছর কতগুলো তদন্ত কমিটি ভূমিষ্ঠ হয়? কতগুলো তদন্ত কমিটি কালের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অকালেই চিরনিদ্রায় তলিয়ে যায়? এর হিসাব কি জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোতে সংরক্ষণ হয়? দেশের অল্প কয়টি হিমাগারে আলু-পেঁয়াজের জায়গা না হলেও তদন্ত কমিটির মধ্যস্থতায় সাড়া জাগানো উত্তপ্ত ঘটনাগুলো অনন্তকালের জন্য হিমঘরের শীতল পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিতে বাধ্য হয়। যার সর্বশেষ মঞ্চায়ন হলো, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড রহস্য উন্মোচনে গঠিত '৪৮ ঘণ্টার' তদন্ত কমিটি ৪৮ দিন পরও ঘটনার কোনো সুরাহা করতে পারেনি। হয়তো এটিকেও হিমাগারস্থ করার প্রক্রিয়া চলছে।
ঘটনাকে আড়াল করেই ক্ষান্ত নয় এসব তথাকথিত 'তদন্ত কমিটি'। শীতলায়ন চক্রে আবর্তিত করছে মানুষের নিজস্বতা, তার বিবেক। খুব বেশিদিন আগের ঘটনা নয়, সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান দেশের দুই কৃতী সন্তান মিশুক মুনীর ও তারেক মাসুদ। তাদের অকাল প্রয়াণে জেগে ওঠে সমাজের বিবেক। পথে নামে প্রথম শ্রেণীভুক্ত সুশীল সমাজ। দূর থেকে সাধারণ জনগণের লেবেল এঁটে আশায় বুক বাঁধি আমরা। ধীরে ধীরে কালের অস্তাচলে হারিয়ে যায় আমাদের চেতনা। অথচ কমে না সড়ক, লঞ্চ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল। তাতে আলোড়িত হয় না আমাদের বোধ। প্রকৃত সত্য জানার আশায় গঠিত তদন্ত কমিটির পানে চাতক পাখির মতো চেয়ে থাকতে থাকতে এক সময় ঘুমিয়ে পড়ে আমাদের বিবেক। আর এই সুযোগে একের পর এক আড়াল করা হয় সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড, সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তা হত্যাকাণ্ড, সুরঞ্জিত বাবুর এপিএসের গাড়িতে ৭০ লাখ টাকার রহস্য।
ৎ শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
hamzakm12@gmail.com গড়ে প্রতি বছর কতগুলো তদন্ত কমিটি ভূমিষ্ঠ হয়? কতগুলো তদন্ত কমিটি কালের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অকালেই চিরনিদ্রায় তলিয়ে যায়? এর হিসাব কি জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোতে সংরক্ষণ হয়? দেশের অল্প কয়টি হিমাগারে আলু-পেঁয়াজের জায়গা না হলেও তদন্ত কমিটির মধ্যস্থতায় সাড়া জাগানো উত্তপ্ত ঘটনাগুলো অনন্তকালের জন্য হিমঘরের শীতল পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিতে বাধ্য হয়। যার সর্বশেষ মঞ্চায়ন হলো, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড রহস্য উন্মোচনে গঠিত '৪৮ ঘণ্টার' তদন্ত কমিটি ৪৮ দিন পরও ঘটনার কোনো সুরাহা করতে পারেনি। হয়তো এটিকেও হিমাগারস্থ করার প্রক্রিয়া চলছে।
ঘটনাকে আড়াল করেই ক্ষান্ত নয় এসব তথাকথিত 'তদন্ত কমিটি'। শীতলায়ন চক্রে আবর্তিত করছে মানুষের নিজস্বতা, তার বিবেক। খুব বেশিদিন আগের ঘটনা নয়, সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান দেশের দুই কৃতী সন্তান মিশুক মুনীর ও তারেক মাসুদ। তাদের অকাল প্রয়াণে জেগে ওঠে সমাজের বিবেক। পথে নামে প্রথম শ্রেণীভুক্ত সুশীল সমাজ। দূর থেকে সাধারণ জনগণের লেবেল এঁটে আশায় বুক বাঁধি আমরা। ধীরে ধীরে কালের অস্তাচলে হারিয়ে যায় আমাদের চেতনা। অথচ কমে না সড়ক, লঞ্চ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল। তাতে আলোড়িত হয় না আমাদের বোধ। প্রকৃত সত্য জানার আশায় গঠিত তদন্ত কমিটির পানে চাতক পাখির মতো চেয়ে থাকতে থাকতে এক সময় ঘুমিয়ে পড়ে আমাদের বিবেক। আর এই সুযোগে একের পর এক আড়াল করা হয় সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড, সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তা হত্যাকাণ্ড, সুরঞ্জিত বাবুর এপিএসের গাড়িতে ৭০ লাখ টাকার রহস্য।
ৎ শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
this writing is not permitted by the writer
ReplyDeletefrom: hamza kamal mostafa
Thank you, this is my personal collection. It is not permitted, Just copy and paste. Come, this one's ...
Delete