ভারত থেকে রফতানি হচ্ছে বাংলাদেশের পাটঃ এরপর কিসের পালা
বাংলাদেশী পাট বিদেশে রফতানি হচ্ছে ভারত থেকে, সেদেশের কাঁচা পাট পরিচয়ে—অদ্ভুত এ খবরটি আমাদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার বিশৃঙ্খলা ও নড়বড়ে দশাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। গতকাল আমার দেশ-এর প্রথম পাতায় প্রকাশিত প্রধান খবর থেকে জানা যায়, এরই মধ্যে পাকিস্তানকে পাট কেনার আমন্ত্রণ জানিয়েছে ভারতের কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।
এসব প্রতিষ্ঠান বিদেশ থেকে কাঁচা পাট আমদানি করে থাকে। আমদানিকারক কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কোন জাদুতে রফতানিকারকে পরিণত হলো, তা বুঝতে অসুবিধা হয় না। এসব প্রতিষ্ঠানের অবস্থান বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি। বাংলাদেশ সরকার পাট রফতানি সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করার পর ওইসব ভারতীয় প্রতিষ্ঠান হঠাত্ পাট রফতানিকারক হয়ে গেছে! অথচ ভারত কখনও পাট রফতানিকারক দেশ ছিল না। বাংলাদেশের কাঁচা পাটের বৃহত্তম ক্রেতা হচ্ছে ভারত। ভারতের পাটকলগুলোর প্রায় ৭০ ভাগই বাংলাদেশের কাঁচা পাটের ওপর নির্ভরশীল। ভারত গত অর্থবছরে বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশ থেকে সর্বমোট প্রায় ৬ হাজার কোটি রুপির কাঁচা পাট আমদানি করেছে। ভারতের রয়েছে পাটজাত পণ্যের বিশাল অভ্যন্তরীণ বাজার। এই বাজারের চাহিদা মেটানোর জন্য সেদেশের পাটকলগুলো তিন শিফটে কাজ করে চলেছে। সেক্ষেত্রে ভারতে কাঁচা পাট উদ্বৃত্ত হওয়ার কথা নয়, যদি অন্য কোনো উত্স থেকে পাটের বাড়তি জোগান না আসে। বাংলাদেশ থেকে পাট রফতানি বন্ধ করে দেয়ার পর ভারত পাটে উদ্বৃত্ত দেশে পরিণত হওয়ায় এটা নিশ্চিত করে বলা যায় যে, চোরাইপথে বাংলাদেশী পাট ভারতে চলে যাচ্ছে। এই চলে যাওয়ার পরিমাণ এতটা বিপুল যে, ভারত এখন পাট রফতানির স্বপ্নই শুধু দেখছে না, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে তত্পর হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি কলকাতার কংকরিয়া গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান অম্বিকা জুট মিলস লিমিটেড পাকিস্তানের সারগোদা জুট মিলকে বাংলাদেশের চেয়ে কম দামে কাঁচা পাট রফতানির প্রস্তাব দিয়েছে। জুট মিল কাঁচা পাট কেনে, বেচে না। অথচ ভারতের অম্বিকা জুট মিল দেখা যাচ্ছে চটের বদলে কাঁচা পাট বিক্রির ব্যবসায় নেমেছে।
বাংলাদেশ সরকার কাঁচা পাট রফতানির ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশের চটকলগুলোতে ঠিকমত কাঁচা পাট সরবরাহ নিশ্চিত করার স্বার্থে। এবছর ফলন কম হওয়ায় মৌসুমের শুরু থেকে পাটের দাম বেশি ছিল। চাষীদের ঘর থেকে আড়তদারের গুদামে উঠে যাওয়ার পর কাঁচা পাটের দাম হু হু করে বাড়তে থাকে। সরকার ভেবেছিল পাট রফতানির ওপর যদি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়, তবে দাম বাড়ার প্রবণতা বন্ধ হবে। সরকারি পাটকলগুলোও মিল চালু রাখার জন্য পর্যাপ্ত পাট কিনতে পারবে। কিন্তু রফতানি বন্ধ করা হলে পাট যে চোরাইপথে ভারতে পাচার হয়ে যেতে পারে—সেটা বিবেচনায় আনা হয়নি। অথচ বাস্তবে এটি ঘটেছে। এতে পাটের দাম তেমন একটা কমেনি। বাংলাদেশ নিজেদের রফতানি বাজার হারাতে বসেছে। মাঝখান থেকে পোয়াবারো হয়েছে ভারতের।
বিশ্বব্যাংকের প্ররোচনায় আদমজীসহ দেশের বড় পাটকলগুলো বন্ধ করে দিয়ে এদেশের পাট শিল্পে যে বিপর্যয় ডেকে আনা হয়েছে, তা সংশোধন করা কোনোদিন সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। এরপর ভরসা ছিল কাঁচা পাট। সেটাও হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশী কাঁচা পাট ভারতীয় কাঁচা পাটে রূপান্তরিত হয়ে ভারতের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা আনছে, আর বাংলাদেশের চোরাকারবারিরা কাঁচা পাটের বিনিময়ে ফেনসিডিল আর হেরোইন পেয়েই খুশি। এ অবস্থা যদি স্থায়ী রূপ নেয়, তবে পাট খাত যে আমাদের হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। পাট গেল, ট্রানজিট এলো, এবার কার পালা!
বাংলাদেশ সরকার কাঁচা পাট রফতানির ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশের চটকলগুলোতে ঠিকমত কাঁচা পাট সরবরাহ নিশ্চিত করার স্বার্থে। এবছর ফলন কম হওয়ায় মৌসুমের শুরু থেকে পাটের দাম বেশি ছিল। চাষীদের ঘর থেকে আড়তদারের গুদামে উঠে যাওয়ার পর কাঁচা পাটের দাম হু হু করে বাড়তে থাকে। সরকার ভেবেছিল পাট রফতানির ওপর যদি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়, তবে দাম বাড়ার প্রবণতা বন্ধ হবে। সরকারি পাটকলগুলোও মিল চালু রাখার জন্য পর্যাপ্ত পাট কিনতে পারবে। কিন্তু রফতানি বন্ধ করা হলে পাট যে চোরাইপথে ভারতে পাচার হয়ে যেতে পারে—সেটা বিবেচনায় আনা হয়নি। অথচ বাস্তবে এটি ঘটেছে। এতে পাটের দাম তেমন একটা কমেনি। বাংলাদেশ নিজেদের রফতানি বাজার হারাতে বসেছে। মাঝখান থেকে পোয়াবারো হয়েছে ভারতের।
বিশ্বব্যাংকের প্ররোচনায় আদমজীসহ দেশের বড় পাটকলগুলো বন্ধ করে দিয়ে এদেশের পাট শিল্পে যে বিপর্যয় ডেকে আনা হয়েছে, তা সংশোধন করা কোনোদিন সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। এরপর ভরসা ছিল কাঁচা পাট। সেটাও হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশী কাঁচা পাট ভারতীয় কাঁচা পাটে রূপান্তরিত হয়ে ভারতের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা আনছে, আর বাংলাদেশের চোরাকারবারিরা কাঁচা পাটের বিনিময়ে ফেনসিডিল আর হেরোইন পেয়েই খুশি। এ অবস্থা যদি স্থায়ী রূপ নেয়, তবে পাট খাত যে আমাদের হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। পাট গেল, ট্রানজিট এলো, এবার কার পালা!
No comments