ঢাকায় সার্ক অর্থমন্ত্রীদের বৈঠক-সমস্যা মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকটের পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশের অবনতির মতো সমস্যার মোকাবিলায় সার্কভুক্ত দেশগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সোমবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে সার্ক অর্থমন্ত্রীদের পঞ্চম বৈঠকের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী এ গুরুত্বারোপ করেন। খবর বাসস ও ইউএনবির।


প্রধানমন্ত্রী সার্কের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে চিন্তাচেতনা, দৃষ্টিভঙ্গি ও কর্মকাণ্ডে দক্ষিণ এশীয় ধারণা সঞ্চারে সংস্থার নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘২৫ বছরের বেশি আগে পারস্পরিক একাত্মবোধ, সহযোগিতা, কল্যাণ এবং সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য সামনে রেখে সার্ক গঠিত হয়েছিল। কিন্তু আমাদের চিন্তাচেতনা ও কর্মে দক্ষিণ এশীয় বোধ এখনো সঞ্চারিত হয়নি।’
আঞ্চলিক যোগাযোগের ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই অঞ্চলে বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং এর সুফল ও সম্ভাবনার সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহারের লক্ষ্যে সব কর্মকাণ্ড পরিচালিত হওয়া জরুরি। এ জন্য জনগণের সমৃদ্ধি ও সামাজিক কল্যাণে আঞ্চলিক যোগাযোগ সম্প্রসারণে কাজ করা আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো পরস্পরের প্রতিবেশী, এ ধারণা থেকে বেরিয়ে সার্কের মধ্যে আজ আমরা আমাদের সবার মূল্যবোধ, প্রত্যাশা ও উদ্যোগের সম্ভাবনাময় একটি পরিবারকে দেখতে পাই।’
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ভুটানের অর্থমন্ত্রী লিওনপো ওয়াংদি নরবু বক্তৃতা করেন। অর্থসচিব মোহাম্মদ তারেক এতে স্বাগত বক্তৃতা করেন। দিনব্যাপী এ বৈঠকে সার্কের আট দেশের অর্থমন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যোগ দেন। এতে একটি ‘কাস্টম ইউনিয়ন’ প্রতিষ্ঠার রূপরেখা প্রণয়নের পাশাপাশি একটি অর্থনৈতিক ইউনিয়ন গঠনে আর্থিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বৃহত্তর সহযোগিতা ও সমন্বয় সাধনের বিষয়ে আলোচনা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো বেশ ভালোভাবেই বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করছে।
উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপে চলমান অর্থনৈতিক সংকট সার্ক অর্থনীতিতে মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যার প্রভাব ও পরিবেশের অবনতি এ পরিস্থিতিকে আরও তীব্র করছে।
পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয়ের চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জনে সামগ্রিকভাবে সার্কভুক্ত দেশগুলোর নীতিমালায় সামঞ্জস্য বিধানের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সামাজিক অগ্রগতি ও সামষ্টিক স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের ক্ষেত্রে কোনো আপস করা উচিত নয়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সার্ক অর্থমন্ত্রীদের আন্তঃসরকার বিশেষজ্ঞ গ্রুপ ইতিমধ্যে সমন্বয় সাধনের মূল্য ও সুফল দেখেছে এবং তারা ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ও পুঁজিবাজারের উন্নয়নের কথা ভাবছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ এশীয় উন্নয়ন তহবিল (এসএডিএফ) পরিচালনার বিষয়ে সার্ক অর্থমন্ত্রীরা আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন এবং ইতিমধ্যে ঢাকায় দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক মান সংস্থার (সারসো) কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
বৈশ্বিক সংকটের পটভূমিতে অর্থমন্ত্রীদের এ বৈঠককে সময়োচিত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই অঞ্চলের সব দেশেই কমবেশি অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব পড়েছে।

No comments

Powered by Blogger.