পবিত্র কোরআনের আলো-ইহুদি ও খ্রিস্টানদের জীবনাচরণের গোড়ার কথা বলা হচ্ছে জগদ্বাসীর জন্য
৭৪. আফালা- ইয়াতূবূনা ইলাল্লা-হি ওয়া ইয়াছতাগ্ফিরূনাহূ; ওয়াল্লা-হু গাফূরুর্ রাহীম। ৭৫. মালমাছীহুব্নু মারইয়ামা ইল্লা রাসূল; ক্বাদ খালাত মিন্ ক্বাবলিহির্ রুসুল; ওয়া উম্মুহূ সিদ্দীক্বাতুন; কা-না ইয়া'কুলা-নিত্ত্বাআ'-ম; উনযুর কাইফা নুবায়্যিনু লাহুমুল আ-ইয়া-তি ছুম্মান যুর আন্না- ইউ'ফাকূন।
৭৬. ক্বুল আতা'বুদূনা মিন দূনিল্লা-হি মা লা-ইয়ামলিকু লাকুম দ্বার্রান ওয়া লা নাফআ'ন ওয়াল্লাহু হুওয়াস সামীউ'ল আ'লীম।
[সুরা : আল মায়েদা, আয়াত : ৭৪-৭৬]
অনুবাদ
৮৪. তারা কি আল্লাহর কাছে তওবা করবে না? এবং তারা কি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার জন্য এগিয়ে আসবে না? (এরপরও এটাই সত্য যে) আল্লাহ তায়ালা বড়ই ক্ষমাশীল ও দয়াময়।
৭৫. মরিয়মপুত্র মাসীহ তো রাসুল ছিলেন। তাঁর আগেও অনেক রাসুল গত হয়েছেন। তাঁর মা ছিলেন একজন সত্যনিষ্ঠ নারী। তাঁরা (মা ও ছেলে) উভয়েই আর সব মানুষের মতোই খাবার খেতেন। আপনি লক্ষ করে দেখুন। আমি কিভাবে আয়াতগুলো খুলে খুলে বর্ণনা করছি। আপনি আরো লক্ষ করে দেখুন, এরা যেন উল্টো কোনো দিকে যাচ্ছে।
৭৬. (হে নবী!) আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন কিছুর উপাসনা করছ, যে তোমাদের কোনো ক্ষতি বা উপকার কিছুই করার ক্ষমতা রাখে না। আল্লাহ তায়ালা সব শোনেন এবং সব জানেন।
ব্যাখ্যা
এসব আয়াতেও ইহুদি ও খ্রিস্টানদের প্রসঙ্গই আলোচিত হয়েছে। খ্রিস্টান ধর্মের নবী হজরত ঈসা (আ.) ইহুদি বংশেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সে অর্থে তিনি ইহুদিদেরই নবী; কিন্তু ইহুদিরা শেষ পর্যন্ত তাঁকে গ্রহণ করেনি এবং তাঁর শিক্ষা থেকে সত্যপথের দীক্ষা নেয়নি। তবে নবী হজরত ঈসা (আ.)-এর শিক্ষা পরবর্তীকালে অ-ইহুদি কোনো কোনো সম্প্রদায়ের মধ্যে বিস্তৃতি লাভ করে। এভাবেই ইহুদি সম্প্রদায়ের নবীর শিক্ষা কালক্রমে অ-ইহুদি সম্প্রদায়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের আবির্ভাব ঘটে। কিন্তু এই খ্রিস্টান সম্প্রদায়ও কালক্রমে নবী ঈসা (আ.)-এর মূল শিক্ষা ও আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে শিরক ও কুফরির দিকে যেতে থাকে। তারা ঈসা (আ.)-কে আল্লাহর পুত্র বলে তাঁর সঙ্গে শরিক করতে থাকে। তিন খোদার তত্ত্ব দাঁড় করায়।
এভাবে একত্ববাদের মহান শিক্ষা থেকে তারা বিচ্যুত হয়ে যায়। এভাবেই মানবসভ্যতার অনন্যসাধারণ ঐতিহ্যবাহী ও পুরোধা সম্প্রদায় ইহুদি ও খ্রিস্টানরা বিভ্রান্ত জাতিতে পরিণত হয়। এদের লক্ষ্য করেই ৭৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা নিজেই খেদ ব্যক্ত করেছেন, তারা কি আল্লাহর কাছে তওবা করবে না এবং তারা কি তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে না? অর্থাৎ এরপরও আল্লাহ রাব্বুল আলামিন গাফুরুর রাহিম। তিনি প্রতীক্ষায় আছেন, তারা কখন তওবা করে ক্ষমা চাইবে, তখন তিনি তাদের ক্ষমা করবেন।
৭৫ নম্বর আয়াতে নবী মাসীহ ঈসা ও তাঁর মা মরিয়মের ওই মানবিক সম্মানের প্রসঙ্গ আলোচনা করা হয়েছে। পক্ষান্তরে বলা হয়েছে তারা মানুষ ছিলেন। মানুষ হিসেবে মা মরিয়ম অত্যন্ত সত্যনিষ্ঠ মানুষ এবং তাঁর পুত্র মাসীহ সর্বোপরি মানবিক বৈশিষ্ট্যের অন্তর্ভুক্ত মানুষ ছিলেন। তাঁকেও আর দশজন মানুষের মতো আহার করতে হতো। ক্ষুধা, তৃষ্ণা, নিদ্রা, ব্যথা-বেদনা, ক্লান্তি-ক্লেশ এ সবকিছুরই অধীন ছিলেন তিনি। এভাবেই আল্লাহ তায়ালা একেকজন নবীকে পাঠিয়ে মানুষকে সুপথ দেখানোর চেষ্টা করেছেন। ৭৬ নম্বর আয়াতে মুশরিকদের চোখ খুলতে সাহায্য করার জন্য শিরকের অসারতা ও নির্বুদ্ধিতা যুক্তি দিয়ে ব্যক্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ কাফের ও মুশরিকরা যে তাদের বানানো দেব-দেবীর পূজা করছে, সেই মিথ্যা উপাস্যরা তো তাদের কোনো উপকার বা ক্ষতি কোনোটাই করার ক্ষমতা রাখে না। তা হলে কেন এই মিথ্যা ও উপাস্যের কাছে মাথা নত করা।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
[সুরা : আল মায়েদা, আয়াত : ৭৪-৭৬]
অনুবাদ
৮৪. তারা কি আল্লাহর কাছে তওবা করবে না? এবং তারা কি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার জন্য এগিয়ে আসবে না? (এরপরও এটাই সত্য যে) আল্লাহ তায়ালা বড়ই ক্ষমাশীল ও দয়াময়।
৭৫. মরিয়মপুত্র মাসীহ তো রাসুল ছিলেন। তাঁর আগেও অনেক রাসুল গত হয়েছেন। তাঁর মা ছিলেন একজন সত্যনিষ্ঠ নারী। তাঁরা (মা ও ছেলে) উভয়েই আর সব মানুষের মতোই খাবার খেতেন। আপনি লক্ষ করে দেখুন। আমি কিভাবে আয়াতগুলো খুলে খুলে বর্ণনা করছি। আপনি আরো লক্ষ করে দেখুন, এরা যেন উল্টো কোনো দিকে যাচ্ছে।
৭৬. (হে নবী!) আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন কিছুর উপাসনা করছ, যে তোমাদের কোনো ক্ষতি বা উপকার কিছুই করার ক্ষমতা রাখে না। আল্লাহ তায়ালা সব শোনেন এবং সব জানেন।
ব্যাখ্যা
এসব আয়াতেও ইহুদি ও খ্রিস্টানদের প্রসঙ্গই আলোচিত হয়েছে। খ্রিস্টান ধর্মের নবী হজরত ঈসা (আ.) ইহুদি বংশেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সে অর্থে তিনি ইহুদিদেরই নবী; কিন্তু ইহুদিরা শেষ পর্যন্ত তাঁকে গ্রহণ করেনি এবং তাঁর শিক্ষা থেকে সত্যপথের দীক্ষা নেয়নি। তবে নবী হজরত ঈসা (আ.)-এর শিক্ষা পরবর্তীকালে অ-ইহুদি কোনো কোনো সম্প্রদায়ের মধ্যে বিস্তৃতি লাভ করে। এভাবেই ইহুদি সম্প্রদায়ের নবীর শিক্ষা কালক্রমে অ-ইহুদি সম্প্রদায়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের আবির্ভাব ঘটে। কিন্তু এই খ্রিস্টান সম্প্রদায়ও কালক্রমে নবী ঈসা (আ.)-এর মূল শিক্ষা ও আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে শিরক ও কুফরির দিকে যেতে থাকে। তারা ঈসা (আ.)-কে আল্লাহর পুত্র বলে তাঁর সঙ্গে শরিক করতে থাকে। তিন খোদার তত্ত্ব দাঁড় করায়।
এভাবে একত্ববাদের মহান শিক্ষা থেকে তারা বিচ্যুত হয়ে যায়। এভাবেই মানবসভ্যতার অনন্যসাধারণ ঐতিহ্যবাহী ও পুরোধা সম্প্রদায় ইহুদি ও খ্রিস্টানরা বিভ্রান্ত জাতিতে পরিণত হয়। এদের লক্ষ্য করেই ৭৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা নিজেই খেদ ব্যক্ত করেছেন, তারা কি আল্লাহর কাছে তওবা করবে না এবং তারা কি তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে না? অর্থাৎ এরপরও আল্লাহ রাব্বুল আলামিন গাফুরুর রাহিম। তিনি প্রতীক্ষায় আছেন, তারা কখন তওবা করে ক্ষমা চাইবে, তখন তিনি তাদের ক্ষমা করবেন।
৭৫ নম্বর আয়াতে নবী মাসীহ ঈসা ও তাঁর মা মরিয়মের ওই মানবিক সম্মানের প্রসঙ্গ আলোচনা করা হয়েছে। পক্ষান্তরে বলা হয়েছে তারা মানুষ ছিলেন। মানুষ হিসেবে মা মরিয়ম অত্যন্ত সত্যনিষ্ঠ মানুষ এবং তাঁর পুত্র মাসীহ সর্বোপরি মানবিক বৈশিষ্ট্যের অন্তর্ভুক্ত মানুষ ছিলেন। তাঁকেও আর দশজন মানুষের মতো আহার করতে হতো। ক্ষুধা, তৃষ্ণা, নিদ্রা, ব্যথা-বেদনা, ক্লান্তি-ক্লেশ এ সবকিছুরই অধীন ছিলেন তিনি। এভাবেই আল্লাহ তায়ালা একেকজন নবীকে পাঠিয়ে মানুষকে সুপথ দেখানোর চেষ্টা করেছেন। ৭৬ নম্বর আয়াতে মুশরিকদের চোখ খুলতে সাহায্য করার জন্য শিরকের অসারতা ও নির্বুদ্ধিতা যুক্তি দিয়ে ব্যক্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ কাফের ও মুশরিকরা যে তাদের বানানো দেব-দেবীর পূজা করছে, সেই মিথ্যা উপাস্যরা তো তাদের কোনো উপকার বা ক্ষতি কোনোটাই করার ক্ষমতা রাখে না। তা হলে কেন এই মিথ্যা ও উপাস্যের কাছে মাথা নত করা।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments