জনগণ রাজনীতি থেকে কোনো আশা দেখছে না byআনু মুহাম্মদ
বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কী আর বলব। আসলে সরকারের একটি দায়িত্ব ছিল পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার। কিন্তু তারা সে দায়িত্ব পালন করতে পারেনি। সত্যি কথা বলতে কী, বাংলাদেশের রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বা ক্ষেত্র তৈরি হয়ে উঠছে না। যে দল ক্ষমতায় আসছে, তাদের মধ্যেই চিরকাল ক্ষমতায় থাকার মানসিকতা গড়ে উঠছে। শাসনক্ষমতায় যারা থাকে, তাদের সঙ্গে জনগণের অংশগ্রহণ থাকছে না। অর্থাৎ বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে জনগণ দূরে থেকে যাচ্ছে।
মানুষের যেন এই অশুভ রাজনীতি থেকে কোনো মুক্তি নেই। দিন দিন দেশের জনগণ আরো অসহায় হয়ে পড়ছে। দেশের মানুষ সাধারণত সরকার যখন দেশ পরিচালনায় দুর্বলতা প্রদর্শন করে, তখন ভরসা করে বিরোধী দলের ওপর। কিন্তু বিরোধী দলের দিকে তাকিয়ে তারা আরো ভয়াবহ ছবি দেখতে পাচ্ছে। সামনে মানুষ যে কিছু আশা করবে, এমন কোনো ভরসা তাদের নেই। একটি জাতি যখন সংকটে পতিত হয়, তখন তাকে উদ্ধারের প্রয়োজন হয়। সেই উদ্ধার করার শক্তি যেন অনুপস্থিত।
বর্তমানে যে সংকট তৈরি হয়েছে, তার পেছনে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক দুটি চক্রই সক্রিয় আছে। মানে একটি শ্রেণীই দেশ শাসন করে, যারা দেশের বা রাষ্ট্রের সম্পদ ভাগাভাগি করে নেয়। এদের আপনি দলনিরপেক্ষ স্বার্থান্বেষীও বলতে পারেন। এদের একটি দুষ্ট হাত রাজনীতির মধ্যে সক্রিয় থাকে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার পেছনে বহুজাতিক কম্পানিগুলোর দেশীয় প্রতিনিধি এবং দূতাবাসগুলোর একটি ভূমিকা আছে। দেখুন, রামপাল নিয়ে একটি সর্বনাশা চুক্তি হয়ে গেছে গতকাল। এ সংবাদ কালের কণ্ঠেই প্রকাশ পেয়েছে। চুক্তি হয়েছে ভারতের ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কম্পানির সঙ্গে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের। সুন্দরবনের পাশে এ তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করা হলে পৃথিবীর অন্যতম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট ভয়াবহ হুমকির মধ্যে পড়বে। সুন্দরবন মানুষের সৃষ্ট কোনো অবকাঠামো নয়। অর্থের বিচারে সুন্দরবনের লাভ-ক্ষতি দেখার কোনো সুযোগ নেই। এ সম্পদ অর্থের তুলনায় অনেক বড়। প্রকৃতি তার এ সম্পদ দিয়েছে। অথচ এই সম্পদকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়ে যে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে, তা চলে যাবে ভারতে।
আমার মাঝেমধ্যে মনে হয়, বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার পেছনে এসব চুক্তির একটি ঘনিষ্ঠ, অদৃশ্য যোগাযোগ রয়েছে। দেখবেন, যখনই একটি বড় চুক্তি হয়, তখনই কোনো না কোনো কারণে একটি রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়। রামপালের চুক্তি নিয়ে আগে থেকেই প্রতিবাদ ছিল, আছে। চুক্তি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ নিয়ে জনগণ সোচ্চার হয়ে উঠত। ঠিক তখনই জনগণকে ঠেলে দেওয়া হলো রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে। এখন জনগণ আতঙ্কে থাকবে, রাজনৈতিক পরিস্থিতি কী হয় তা নিয়ে। গণমাধ্যমও ব্যস্ত থাকবে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে। গত রবিবার যে দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে তা বাংলাদেশের রাজনীতিকে আরো অস্থির করে তুলতে পারে। এ পরিস্থিতি মোটেই শুভ
লক্ষণ নয়।
লেখক : অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
বর্তমানে যে সংকট তৈরি হয়েছে, তার পেছনে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক দুটি চক্রই সক্রিয় আছে। মানে একটি শ্রেণীই দেশ শাসন করে, যারা দেশের বা রাষ্ট্রের সম্পদ ভাগাভাগি করে নেয়। এদের আপনি দলনিরপেক্ষ স্বার্থান্বেষীও বলতে পারেন। এদের একটি দুষ্ট হাত রাজনীতির মধ্যে সক্রিয় থাকে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার পেছনে বহুজাতিক কম্পানিগুলোর দেশীয় প্রতিনিধি এবং দূতাবাসগুলোর একটি ভূমিকা আছে। দেখুন, রামপাল নিয়ে একটি সর্বনাশা চুক্তি হয়ে গেছে গতকাল। এ সংবাদ কালের কণ্ঠেই প্রকাশ পেয়েছে। চুক্তি হয়েছে ভারতের ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কম্পানির সঙ্গে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের। সুন্দরবনের পাশে এ তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করা হলে পৃথিবীর অন্যতম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট ভয়াবহ হুমকির মধ্যে পড়বে। সুন্দরবন মানুষের সৃষ্ট কোনো অবকাঠামো নয়। অর্থের বিচারে সুন্দরবনের লাভ-ক্ষতি দেখার কোনো সুযোগ নেই। এ সম্পদ অর্থের তুলনায় অনেক বড়। প্রকৃতি তার এ সম্পদ দিয়েছে। অথচ এই সম্পদকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়ে যে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে, তা চলে যাবে ভারতে।
আমার মাঝেমধ্যে মনে হয়, বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার পেছনে এসব চুক্তির একটি ঘনিষ্ঠ, অদৃশ্য যোগাযোগ রয়েছে। দেখবেন, যখনই একটি বড় চুক্তি হয়, তখনই কোনো না কোনো কারণে একটি রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়। রামপালের চুক্তি নিয়ে আগে থেকেই প্রতিবাদ ছিল, আছে। চুক্তি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ নিয়ে জনগণ সোচ্চার হয়ে উঠত। ঠিক তখনই জনগণকে ঠেলে দেওয়া হলো রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে। এখন জনগণ আতঙ্কে থাকবে, রাজনৈতিক পরিস্থিতি কী হয় তা নিয়ে। গণমাধ্যমও ব্যস্ত থাকবে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে। গত রবিবার যে দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে তা বাংলাদেশের রাজনীতিকে আরো অস্থির করে তুলতে পারে। এ পরিস্থিতি মোটেই শুভ
লক্ষণ নয়।
লেখক : অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
No comments