গাড়ি ছিনতাই-কৌশলের শেষ নেই
রাজধানীতে নানা কৌশলে ছিনতাই করা হচ্ছে গাড়ি। গত এক বছরে রাজধানীতে প্রায় ২ হাজার গাড়ি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। সবচেয়ে শঙ্কার কথা হলো, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পোশাক পরেও ছিনতাইকারী চক্র গাড়ি ছিনতাই করছে। এর জন্য রাজধানীর ব্যস্ত সড়কেও বসানো হচ্ছে ভুয়া পুলিশ চেকপোস্ট।
গাড়ি থামিয়ে কাগজপত্র দেখার নাম করে ছিনতাই করা হচ্ছে মোটরসাইকেল ও দামি গাড়ি। রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায় পুলিশ বাহিনীর উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও কীভাবে একটি চক্র এভাবে গাড়ি ছিনতাইয়ের কাজ করছে তা প্রশ্নসাপেক্ষ ব্যাপার। মঙ্গলবার সমকালে 'ভুয়া চেকপোস্ট বসিয়ে গাড়ি ছিনতাই' শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা গেছে, ছিনতাইকারী চক্র এক বছর ধরে ২৫টি গ্রুপে ভাগ হয়ে রাজধানীতে গাড়ি ছিনতাই করছে। সম্প্রতি ছিনতাইকারী চক্রের তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রশ্ন হলো, যেখানে পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়ে গাড়ি ছিনতাই করা হচ্ছে, সেখানে চক্রের সদস্যদের ধরতে এক বছর সময় লেগে গেল কেন! এখনও ছিনতাইকারী চক্রের দলনেতাকেই ধরা সম্ভব হয়নি। ফলে গাড়ির মালিকদের নিরাপত্তা এখনও নিশ্চিত হয়নি। পুলিশের এই ব্যর্থতার কারণ গোয়েন্দাদের বরাতে জানা গেছে। ছিনতাইকারী চক্রের সঙ্গে পুলিশ ও পুলিশের সোর্সরাও জড়িত বলে জানা গেছে। এর বিনিময়ে পুলিশ মাসোয়ারা নিয়ে থাকে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এভাবে কোনো ছিনতাইকারী চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়লে নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে কীভাবে? সমকালের প্রতিবেদনে গাড়ি ছিনতাইয়ের বিভিন্ন কৌশলের কথা এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে ছিনতাই, বিশেষ চাবি ব্যবহার করে ছিনতাই। অনেক সময় আবার যাত্রীর বেশে গাড়ি ছিনতাই করছে এই চক্র। এমনকি মিরপুর ও আশুলিয়ার বেড়িবাঁধে গাড়ি ছিনতাইয়ের জন্য ঢিল পার্টি সক্রিয় রয়েছে বলে জানা গেছে। চলন্ত গাড়িতে টিল ছুড়ে থামানো হচ্ছে এবং তারপর ড্রাইভারকে আঘাত করে ছিনতাই করা হচ্ছে গাড়ি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সক্রিয় না হলে এ ধরনের ছিনতাই থামানো সম্ভব নয়। ছিনতাইকারী চক্রের কয়েকজনকে গ্রেফতারের জন্য প্রশংসা পেতে পারে পুলিশ বাহিনী। তবে এই বাহিনীর যারা ছিনতাইকারী চক্রের মাসোয়ারা নেওয়ার মাধ্যমে সহায়তা করে যাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিলে জনগণের আরও প্রশংসা পুলিশ বাহিনী পাবে বলে আমরা মনে করি।
No comments